×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি রুখতে পারে আয়ুর্বেদ

ডাঃ বেদীমাধর দাস অধিকারী
2019-03-20 15:47:05

শরীরের এক বা একাধিক সন্ধির ব্যথা, যন্ত্রণা, ফোলা প্রভৃতি হলে চিকিৎসকরা যে সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম রক্তের ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ নির্ণয়। তাছাড়া বৃক্কের ও হৃদযন্ত্রের রোগ হলেও ইউরিক অ্যাসিড পরিমাপ করা হয়। ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ স্বাভাবিকের (স্ত্রীলোকদের ক্ষেত্রে ৬ মিলিগ্রাম ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ৭ মিলিগ্রাম প্রতি ১০০ মিলিলিটার রক্তে) থেকে বেশি হলে রোগ সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু স্বাভাবিক মাত্রায় শরীরের সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং বাইকার্বোনেটের সাম্যতা রক্ষাও করে।

ইউরিক অ্যাসিড আমাদের শরীরে বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। রক্তের ইউরিক অ্যাসিডের শতকরা ৭৫ ভাগ অপরিবর্তিত অবস্থায় মূত্রপথে এবং ২০-২৫ ভাগ পরিবর্তিত অবস্থায় মলাশয়ের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রক্তে ইউরিক অ্যাসিড থাকে মোনোসোডিয়াম ইউরেট অবস্থায়। এবং এর পরিমাণ বেশি হলে অস্থি-র সন্ধিতে অথবা কিডনি জমে রোগের সৃষ্টি করে।

রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধির অর্থাৎ হাইপার ইউরিসিমিয়া ও গেটেবাতের ফলে যে সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পায় তার সঙ্গে আয়ুর্বেদে বাতরক্ত বা বাত শোণিত রোগের সাদৃশ্য আছে।

রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির কারণ

  • কিডনির বিভিন্ন অসুখে ইউরিক অ্যাসিড কম নির্গত হলে।
  • জিনগত বৈশিষ্ট্য বা উৎসেচকের বিপাকীয় বৈষম্যের ফলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেশি তৈরি হলে।
  • যে সমস্ত খাদ্যে পিউরিনের মাত্রা বেশি থাকে সেগুলো বেশি খাওয়া, যেমন পাঁঠার যকৃৎ মাশরুম, রেড মিট, ভেড়ার মাংস, শুকরের মাংস, চিকেন, সামুদ্রিক মাছ, মদ্যপান প্রভৃতি।
  • ফ্রুকটোজ বেশি আছে এরকম খাদ্য বেশি খেলে।
  • কর্ণ সিরাপ যা ভুট্ট্রা থেকে প্রস্তুত হয় এবং ঠান্ডা পানীয়তে মেশানো হয় এরকম পানীয় বেশি খেলে।
  • পলিসাইথিমিয়া, বিভিন্ন ধরনের লিউকেমিয়া ও সোরিয়াসিস রোগে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি হয়।
  • বেশি শারীরিক পরিশ্রম , ব্যায়াম, উপবাস,প্রভৃতি।
  • সবজিতে ব্যবহৃত কীটনাশক ও ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি করে।
  • টাইট-টু ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা প্রভৃতি রোগে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকে।
  • শ্রমবিমুখ ব্যক্তিরা যদি দীর্ঘদিন ঝাল, টক লবণ ও বেশি পরিমাণ তিল, কুলথু, মূলো , আচার, প্রভৃতি খায়। তাছাড়া, মলমূত্রের বেড় ধারণ , তীব্র সূর্যতাপে বেশিক্ষণ থাকলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।

চিকিৎসা

  • রোগের কারণ পরিবর্জন করা একান্ত প্রয়োজন।
  • রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে: জ্যানথিন অক্সিডেজ এর ফলে পিউরিন বিপাক হয়ে ইউরিক তৈরি হয়। কর্কটশৃঙ্গী এবং দারুচিনি-জানথিন অক্সিডেজ এর কাজ বাধা দেওয়ার ফলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে।
  • নিম্বাদিচূর্ণ : এক থেকে তিন গ্রামে মাত্রায় সকালে ও সন্ধ্যায় গুলঞ্চ ক্বাথ ও ঈষদুষ্ণ জলসহ খেলে উপকার হয়।
  • গুলঞ্চ ধ গুলঞ্চের ক্বাথ, সরস বা সত্ত্ব নির্দেশানুসারে খেতে হবে।
  • অগ্নিমন্থ : গনিয়ারি বা অগ্নিমন্থ গাছের ছালের ক্বাথ ও শিলাজতু এক থেকে তিনগ্রাম মাত্রায় মিশিয়ে খেলে উপকার হয়।

তাছাড়া বিভিন্ন প্রকার তেল, ঘি, প্রলেপ ব্যাধিত স্থানে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।

সতর্কতা

বাতশোণিত রোগ চিকিৎসায় গরম সেঁক, সর্ম্পর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এর ফলে রোগের উপসর্গগুলো বৃদ্ধি হবে।

পথ্যাপথ্য

যে সমস্ত খাদ্যদ্রব্যে ‘পিউরিন’ বেশি আছে, সেগুলো যতটুকু সম্ভব কম খাওয়া উচিত।

পিউরিন-এর মাত্রা (১৫০-৮২৫ মিলিগ্রাম প্রতি একশত গ্রামে) যে সমস্ত খাদ্যদ্রব্যে থাকে, সেগুলো হল যকৃৎ, বৃক্ক, রেড মিট, শেল ফিশ, মাংসের কিমা, মিষ্টি রুটি, সয়াবিন, রাজমা, মসুর, ডাল, মদ বিশেষত বিয়ার ও ওয়াইন।

প্রতি ১০০ গ্রামে পিউরিন ৫০-১০০ মিলিগ্রাম থাকে যে সমস্ত খাদ্যদ্রব্যে সেগুলো হল হোলগ্রেন ব্রেড, দানাশস্য, পালংশাক, ফুক কপি, মটর শুট ও ডাল, মাশরুম, শতমূল, ওটামিল, মরুগির মাংস, মিষ্টি জলের মাছ প্রভৃতি।

প্রতি একশত গ্রামে পিউরিন ০-৫০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত থাকে সেগুলো হল চা, কফি, সোডা, ডিম, চিজ, দুধ, বাদাম, তাজা শাকসবজি, ফল ও ফলের রস, মাখন ও উদ্ভিজ্জ তেল প্রভৃতি।

খাদ্য খাওয়ার বিষয়ে ওপরের তালিকা অনুসারে রোগীরা সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ অনেক চিকিৎসক পিউরিন আছে, এরকম বহু খাদ্যদ্রব্য রোগীদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা থেকে বাদি দিতে উপদেশ দিয়ে থাকেন। এর ফলে রোগীদের খাদ্যতালিকা তৈরি করাই কঠিন হয়ে ওঠে ও ফলস্বরূপ ভবিষ্যতে অনেক গুরুতর রোগে আক্রান্ত হন। তাই এ বিষয়ে সবাই সচেতন হওয়া উচিত।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন