স্ট্রোকের পূর্বলক্ষণ ও প্রতিরোধ
ডাঃ অংশুমান মুখার্জি
2019-03-27 12:37:24
স্ট্রোক? কথাটা শুনলেই একটু আতষ্ক, ভয় কাজ করে আমাদের মনে। অনেকেই ভাবেন স্ট্রোক মানে হার্টের রোগ। স্ট্রোককে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষাই সেরিব্রাল অ্যাটাক বা ব্রেন অ্যাটাক বলে। এক কথায় ব্রেনে যদি কোনো কারণে হঠাৎ রক্ত চলাচল বিঘ্ন ঘটে, নিরবচ্ছিন্ন রক্ত সঞ্চালনের ব্যাঘাত ঘটে তাহলে ব্রেনের কোষগুলোর মৃত্যু ঘটে, প্যারালিসিস হয়ে অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে একটা সাংঘাতিক মৃত্যু ঘটে, প্যারালিসিস হাঁটাচলা, দৃষ্টিশক্তি, কথাবলা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুই গন্ডগোল হয়ে যায়। এটাই হল স্ট্রোক।
স্ট্রোক যে হতে পারে তা আমরা সাধারণ মানুষ কী করে বুঝব? এ প্রশ্ন আমাদের মধ্যে আছে কিন্তু সে কথা জানার আগে স্ট্রোকের প্রকারভেদ সম্বন্ধে কিছু কথা জানা দরকার। যেমন স্ট্রোক দু’রকমভাবে হয়। এক, ইসকিমিক স্ট্রোক, যেখানে রক্তের নালী বন্ধ হয়ে যায়। আর হেমারেজ স্ট্রোক, যেখানে রক্তের নালী ছিড়ে গিয়ে হেমারেজ হয়। হেমারেজ স্ট্রোকে ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। পরিসংখ্যান বলছে ইসকিমিক রোগীই বেশি দেখা যায়। একটা হাত অথবা পা অথবা একদিকের হাত-পা দুর্বল হয়ে যায়, ব্যালেন্সের বারবার হতে থাকলে সচেতন হওয়া দরকার। কারণ এইসব লক্ষণ মানে রোগীর স্ট্রোক হতে পারে কিংবা হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই সমস্যাগুলো দেখা দিলে অবহেলা না করে একজন নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ষাটোর্ধ্ব ব্যাক্তিদের ডায়াবেটিস প্রেসার বেশি থাকলে স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা বেশি।
প্রতিরোধ
মানুষের সচেতনতা এবং সাবধানতাই স্ট্রোক প্রতিরোধ করা অনেক সময় করে তোলে। প্রথম ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধূমপানের অভ্যাস বন্ধ করতে হবে। দেহের ওজন কমাতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রক্তে স্নেহপদার্থ ও কোলেস্টেরল কমাতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম আহারের পাশাপাশি লাইফস্টাইল বদলাতে হবে। হাইপারটেনশন কমাতে হবে।
যাদের টি.আই.এ হয়েছে তাদের তো চেক আপে থাকতে হবে। এছাড়া যাদের স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা গেছে তাদের সি.টি.স্ক্যান, এম.আর.আই, হার্ট পরীক্ষা, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, কার্ডিয়াক ডপলার করা হয়। সমস্তরকম পরীক্ষার পর ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করতে হবে।
মনে রাখতে হবে স্ট্রোক মানে মৃত্যু নয়, স্ট্রোক প্রতিহত করে বহুদিন বেচে থাকা যায়।
সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন