×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

হোমিওপ্যাথিক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ডাঃ ডি. কর
2019-03-27 12:51:25

আমরা প্রত্যেকেই সাইড এফেক্ট বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কথাটির সঙ্গে পরিচিত। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মানে ‘কোনো ক্রিয়া হেতু সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া’। শব্দটি ডাক্তারি স্বাস্থ্যে বহুল ব্যবহৃত। দেখা যায় কোনো ওষুধ একটি নির্দিষ্ট রোগকে সারাচ্ছে, কিন্তু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় অন্য একটি রোগ তৈরি হচ্ছে। যেমন পেন কিলার বা NSAID (নন স্টেরয়েডাল অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ড্রাগস) ব্যথা বা প্রদাহ কমায় ঠিকই, ‍কিন্তু গ্যাসট্রিক ইরিটেশন বা গ্যাসট্রিক আলসার তৈরি করে। বেশি অ্যান্টিবায়োটিক পেটের রোগ বাধায়, অ্যাস্টি অ্যালার্জিক মেডিসিন কিডনি এফেক্ট করে। একটি ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চললে এর সম্ভাবনা কম।

হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনে কোনো সাইড এফেক্ট হয় না। অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিক ওষুধ একটি রোগ সারিয়ে নতুন রোগ তৈরি করে না। হয় রোগ সারবে, নয় সারবে না—অন্য কোনো ক্ষতি হবে না। তা বলে কি হোমিওপ্যাথিক ওষুধের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই? নিশ্চয় আছে, সে জন্যই অনেক সময় দেখা যায় হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খাবার পর রোগের লক্ষণ বেড়ে গেল। অনেকেই প্রশ্ন করেন—ডাক্তারবাবু ওষুধ খেলে রোগটা বেড়ে যাবে না তো?  এই ঘটনাকে বলা হয় মেডিসিনাল এগ্রাভেসন। হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের কাজ হল—যে রোগের জন্য দেওয়া হয় তার মতো লক্ষণ তৈরি করা। অনেক সময় ওষুধের ডোজ বেশি হলে রোগের লক্ষণের সঙ্গে ওষুধের তৈরি লক্ষণের সম্মিলিত ক্রিয়ার রোগীর কষ্ট বৃদ্ধি পায়। যাকে মেডিসিনাল এগ্রাভেসন বলে। এক্ষেত্রে ওষুধ বন্ধ রাখতে হয় বা প্রয়োজনে অ্যান্ডিডোট করলে রোগী দ্রুত আরাম পায় এবং রোগটি নির্মূল হয়। এটা হোমিওপ্যাথিক সাইড এফেক্ট নয়, ওষুধের প্রাইমারি অ্যাকশন।

কোনো হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সুস্থ মানুষ দিনের পর দিন খেতে থাকলে তার মধ্যে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ তৈরি হয়। কিন্তু প্রকৃত রোগ সৃষ্টি হয় না। একে বলা হয় ড্রাগ প্রুভিং। যেমন চেলিডোনিয়াম ৬ রোজ খেতে থাকলে আপনার মধ্যে জনডিসের লক্ষণ দেখা দেবে কিন্তু রক্ত পরীক্ষায় কোনো জনডিস ধরা পড়বে না, বিলিরুবিন লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করলে ধীরে ধীরে লক্ষণগুলিও দূর হবে। েএটি হোমিওপ্যাথিক ওষুধের কিউরেটিভ অ্যাবশন। অর্থাৎ জনডিস রোগীকে চেলিডোনিয়াম খাওয়ালে আরোগ্য হবে।

অসুস্থ রোগী যদি সঠিক ওষুধ সঠিক মাত্রায় খেতে থাকেন, প্রথমে আরোগ্য হবেন। কিন্তু তার পরেও যদি ওষুধ খেতে থাকেন তখন ওষুধ তার লক্ষণ দিতে থাকবে। অসুস্থ ব্যক্তি যদি ভুল ওষুধ দিনের পর দিন খেতে থাকেন, তবুও ওষুধের কোনো প্রভাব পড়ে না বা ওষুধ কোনো লক্ষণ তৈরি করে না। রোগ তার নিজের পথে বাড়তে পারে, কিন্তু ভুল ওষুধে কোনো ক্ষীত হবে না। এটা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার একটি অসাধারণ লাভদায়ক দিক।

হোমিওপ্যাথি অনেক সময় পুরনো রোগ ফিরিয়ে আনে। দেখা যায়, কোনো পুরাতন রোগের চিকিৎসায় উন্নতির শেষদিকে একটি নতুন রোগের আবির্ভাব ঘটে। ইতিহাস খুজে দেখা যায় নতুন রোগটি অতীতে রোগীকে আক্রমণ করেছিল। তখন রোগটিকে ভালো করে চিকিৎসা করে সারানো হয়নি, রোগটিকে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল মাত্র। সঠিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেই অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করে। যেমন হাপানি রোগের শেষ দিকে পুরাতন একজিমা ফিরে আসে। দুটি রোগ একই সঙ্গে সেরে যায়, আর ফিরে আসে না। এটাকে হোমিওপ্যাথির সাইড এফেক্ট বলা যায় না। এটাই আইডিয়াল ওয়ে অফ কিওর।

সুতরাং হোমিওপ্যাথিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলে কিছু হয় না। হোমিওপ্যাথিক ওষুধগুলি এত সূক্ষ্ম মাত্রায় প্রয়োগ করা হয় যার মধ্যে মেটেরিয়াল কোয়ানটিটি প্রায় থাকেই না। নিম্ন শক্তির ওষুধে মেটেরিয়াল থাকে সামান্য। আর উচ্চ শক্তির ওষুধে মেটেরিয়াল তো দূরের কথা, অনু-পরমাণু বলেও কিছু থাকে না। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ ডাইনামিক মোডে ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ যৌগের অনু-পরমাণু ভেঙে যে শক্তি সৃষ্টি হয়, সেই শক্তিকে রোগ সারাতে ব্যবহার করা হয়। তাই আপনার শরীরে নতুন রোগ সৃষ্ট করার কোনো ক্ষমতা হোমিওপ্যাথিক ওষুধের নেই। তাই বলে ডাক্তারের পরামর্শ না মেনে ওষুধ খেলে ডাইনামিক পয়জনিং হতে পারে।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন