×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

কেন এত বিপজ্জনক ডায়াবেটিক ফুট আলসার

ডাঃ কুশল নাগ
2019-03-29 11:25:35

সুমন চৌধুরীর বয়স মাত্র পয়তাল্লিশ বছর। কিন্তু তিনি অনেকদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন। কিছুদিন হল পায়ের ঘা নিয়ে ব্যতিবস্ত। প্রথমদিকে যখন পায়ের ঘা-টা সামান্য ছিল তখন ততটা আমল দেননি। এখন পায়ের ঘা’টি বেশ বড় আকারে নিয়েছে এবং ওষুধ লাগানো সত্বেও কমছেনা। তাকে তার চিকিৎসক বলেছেন এটা ডায়াবেটিক ফুট আলসার।

ডায়াবেটিক ফুট কাকে বলে

লক্ষ করলে দেখবেন এই ধরনের পায়ের সমস্যা নিয়ে প্রচুর রোগী হাসপাতালে আসেন। এই কারণে ডায়াবেটিস হলে ডাক্তারবাবুরা শুরতেই নির্দেশ দেন পায়েল যত্ন নিতে হবে। এবং এটা খুবই জরুরি। ডায়াবেটিসে পায়ের  সমস্যা বোঝার জন্য দুটো পরীক্ষা করার প্রয়োজন পড়ে। কারণ পায়ের মধ্যে অবস্থিত ছোট-বড় সবরকম রক্তবাহী নালীতে ডায়াবেটিসে রোগের কারণে অ্যাথেরেস্ক্লেরোসিস হওয়ার জন্য সরু হয়ে যায় এবং রক্ত সরবরাহ  অসুবিধে হয়। এছাড়া সেপসিস সহযোগে পায়ের সমস্যা আরো বেড়ে যায় অর্থাৎ রক্ত সরবরাহ  কমে যায়। স্থানীয় নার্ভের অসাড় হওয়া এবং সংক্রমনের ফলে পায়ের যে খারাপ অবস্থা হয় তাকেই ডায়াবেটিক ফুট বলে। আর ডায়াবেটিক ফুট মানে স্নায়ু ও রক্তবাহীনালী আক্রান্ত হওয়া।

স্নায়া আক্রান্ত হলে

কী কী সমস্যার সৃষ্টি হয়

পায়ে ব্যথা-বেদনার বোধ কমে যায়। ফলে ছোটখাটো কাটাছেঁড়া, ফোস্কা পড়া, এগুলো অনুভব করতে পারেন না রোগী এবং ঠিকঠাক গুরুত্ব না দেওয়ার ফলে ধীরে ধীরে এগুলো বড় হয়ে মারাত্মক আকার ধারন করে।

আর যেহেতু কোনোরকম ব্যথা-বেদনা থাকে না তাই এইসব ক্ষত নিয়ে দিনের পর দিন চলেন। ক্রমশ এইসব ক্ষত গভীর হয়ে হাড় পর্যন্ত পৌছে যায়। জীবনের স্বার্থে তখন পা বাদ দেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ থাকে না। যদি ইস্কিমিক কারণে ঘা হয় তাহলে ব্যথা হয় বেশি । নিউরোপ্যাথিক আলসারে কোনো ব্যথা থাকে না। প্রথম পর্যায়ে অ্যাবসেস বা অস্টিওমায়ালাইটিস অর্থাৎ হাড়ে পচন, শেষে গ্যাংগ্রিন হতে পারে।

পায়ের শুকনো ফাটা চামড়া, কড়া ইত্যাদির ওপর ঘষা লেগে বা চামড়া ফেটে, ছিঁড়ে ঘা হয়ে যায়, সংক্রমণ ঘটে। এবং রক্তে যদি সুগার থাকে তাহলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে।

ডায়াবেটিক রোগীরা

পায়ের যত্ন কীভাবে করবেন

প্রথম কথা ডায়াবেটিক রোগীদের কোনো না কোনো সময় পায়ের সমস্যায় ভুগতে হয় এবং অনেক সময় এই কারণে অস্ত্রোপচারের দরকার পড়ে। ডায়াবেটিস একবার হলে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব নয় কিন্তু যদি রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা যায় তাহলে পায়ের জটিল সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। রোগীর সচেতনতা ও পায়েল জন্য চাই একটু বিশেষ যত্ন। সেই বিশেষ যত্নগুলো হল---

  • রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
  • সতর্কতার সঙ্গে প্রতিদিন পা পরিষ্কার করে শুকনো রাখতে হবে।
  • পায়ের ইনফেকশন  হচ্ছে কি না প্রতিদিন লক্ষ্য রাখতে হবে। নিয়মিত পায়ের আঙুলের নখের দিকে লক্ষ্য রাখুন এবং নখ কাটার সময় সাবধান থাকুন।
  • প্রতিদিন পায়ে অ্যান্টি ফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করুন।
  • খালি পায়ে হাঁটবেন না এবং জুতো টাইট না পরে একটু ঢিলে জুতো পরুন।
  • পায়ে যাতে কোনো আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
  • জুতো পরার আগে ভালোভাবে লক্ষ্য করুন জুতোর ভেতর কোনো কাঁকরদানা বা অসমান কোনো জিনিস বা পেরেক ইত্যাদি উঠে আছে কি না।
  • যদি কখনো পায়ে কাটাছেঁড়া হয় বা ফোস্কা পড়ে অবশ্যই ডাক্তারবাবুকে দেখান।

প্রতিরোধে করণীয়

  • নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পা পরীক্ষা করানো।
  • পায়ের সঠিক যত্ন নেওয়া।
  • পায়ে ক্ষত বা অন্য সমস্যা থাকলে উপেক্ষা না করা।
  • পায়ে ঝিনঝিনে অনুভূতি থাকলে সাবধান হওয়া।
  • কড়া, আঙুলের ফাঁকে হাজা, শুষ্ক ফাটা চামড়া, নখকুনির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
  • যদি কিছু দূর হাঁটার পর কাফ মাসলে যন্ত্রণা এবং বিশ্রাম নিলে কমে যায় তবে সাবধান থাকুন।

প্রথমে যে রোগীর কথা দিয়ে আরম্ভ করেছিলাম তার কি পা কাটা গেল? এক কথায় উত্তর—না মেডিকেটেড ড্রেসিং এবং হাইড্রোসার্জারির মাধ্যমে এই সমস্যা নিরাময় সম্ভব। এখনই অ্যাম্পুটেশসের প্রয়োজন নেই। বর্তমানে নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থা আসার ফলে পা বাদ না দিয়েও অনেকরকমের চিকিৎসা করা সম্ভব। রোগীর পায়ে সামান্য সার্জারি করে রেখে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। পা কাটতে হচ্ছে না। পায়ের আলসার কিংবা হাড় বেরিয়ে যাওয়ার সমস্যা হলেও ওষুধ, ড্রেসিং এবং সার্জারি করে পা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।

পরিশেষে বলি হাইসুগার, কোলেস্টেরল এবং ধূমপান রক্ত সংবহনে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে অক্সিজেন ও পুষ্টি ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং ধূমপান ত্যাগ করুন।


সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন