×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

ওষুধজনিত কারণে ভ্রুণের বিকৃতি

ডাঃ প্রজ্ঞাদ্যুতি মন্ডল
2019-03-29 11:55:53

টেরাটো (Terato) একটি গ্রীক শব্দ যার অর্থ হল দৈত্য, আর জেনেসিস মানে হল তৈরি বা জন্মানো। টেরাটোজেনেসিস শব্দের অর্থ হল জন্ম থেকে দৈত্যের আকার পাওয়া। অর্থাৎ কোনো রাসায়নিক বা ওষুধ থেকে গর্ভস্থ ভ্রুণের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আকার-আকৃতিতে যে বিকৃতি হয় তাকে টেরাটোজেনেসিস বলে। প্রায় ৭০শতাংশ ক্ষেত্রে জন্মগত ক্রুটির কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। রাসায়নিক বা ওষুধ ১ শতাংশ ক্ষেত্রে জন্মগত ক্রটির জন্য দায়ী। গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে ওষুধ ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করলে টেরাটোজেনেসিস এড়ানো যায়।

টেরাটোজেন কাকে বলে

কোনো রাসায়নিক বা ওষুধকে টেরাটোজেন হিসেবে চিহ্নিত করতে হলে তার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। যেমন---

  • রাসায়নিক বা ওষুধটি নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিকৃতি ঘটায়।
  • ভ্রুণ সৃষ্টির নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এই বিকৃতি ঘটাবে।
  • কোথায় কতটা বিকৃতি হয় তা ওষুধের ডোজের ওপর নির্ভরশীল।

টোরোটোজেনেসিটির ইতিহাস

এক্স-রে ভ্রুণের ক্ষতি করে—এই তথ্য জানা যায় ১৯২০ সালে। রুবেলার সংক্রমণ ভ্রুণের ক্ষতি করে—এই তথ্য জানা যায় আরও কুড়ি বছর পরে। ১৯৬০ সালের কাছাকাছি সময়টা চিহ্নিত হয়ে থাকবে থ্যালিডোমাইড বিপর্যয়ের জন্য। ইউরোপে ১৯৫৭ সালে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে নিরাপদ ঘুমের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার শুরু হয় থ্যালিডোমাইডের। সীলের মতো ছোট ছোট হাত-পা নিয়ে জন্মাচ্ছে শিশু। ১৯৬১ সালে এই ঘটনা নজর কাড়ে। সন্দেহ করা হয় যে থ্যালিডোমাইড এই ঘটনার জন্য দায়ী। এক সময় বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয় থ্যালিডোমাইড। তবে তার মধ্যেই হাত পায়ের ‍বিকৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে ১৫,০০ জন শিশু।

টেরাটোজেন কীভাবে ভ্রুণের ক্ষতি করে

টেরোটোজেনের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারিত হয় ভ্রুণ গঠনের কোন সময় তা টেরোটোজেনের সংস্পর্শে আসছে তার ওপর। সাধারণত ভ্রুণ তৈরি হওয়া থেকে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠাকে কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়, যার প্রথম পর্যায়টি হল ব্লাস্টোসিস্ট তৈরি হওয়া। ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর একত্র হওয়া থেকে ষোলা দিন পর্যন্ত সময়কে প্রথম পর্যায় হিসেবে ধরা হয়। এই পর্যায়ে দ্রুত কোষ বিভাজন হয়। এই সময়ের মধ্যে টেরোটোজেনিক ওষুধ দেওয়া হলে কোষ বিভাজন বন্ধে হয়ে ভ্রুণের মৃত্যুও হতে পারে। অতিরিক্ত মদ্যপান এ সময়েই ভ্রুণের ক্ষতি করে, যাকে বলে ফিটাল অ্যালকোহল সিনড্রোম।

১৭ থেকে ৬০ দিন হল ভ্রুণ গঠনের দ্বিতীয় পর্যায়। এই সময়ে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরি হয়। ভ্রুণ যদি এই সময়ে টেরোটোজেনের সংস্পর্শে আসে তাহলে ভ্রুণের চোখ, মস্তিষ্ক, হাড়, হাত-পা, হৃদযন্ত্র এবং তার সংলগ্ন বড় বড় শিরা-ধমনী, কিডনি, তালু ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিকৃতি ঘটে।

যে সময়ে টেরোটোজেন ভ্রুণের ক্ষতি বেশি পরিমাণে করতে পারে সেই সময়টি হল---তিন থেকে দশ সপ্তাহ। শেষ মাসিক হওয়ার প্রথম দিন থেকে হিসাব করলে যা দাঁড়ায় ৫ থেকে ১২ সপ্তাহ।

ভ্রূণ গঠনের শেষ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ্ধতি হল যথাযথ পুষ্টিকর পদার্থ থাকা এবং

টেরাটোজেন জাতীয় কিছু রাসায়নিকের তালিকা যা ভ্রুণের ক্ষতি করে হরমোনের পরিমাণ সঠিক থাকা। এনালপ্রিন, লোসারটান জাতীয় ওষুধ এবং স্টিলবেস্টরেল জাতীয় হরমোন এ সময়ে ভ্রুণের ক্ষতি করে।

টেরোটোজেনেসিটি কীভাবে এড়ানে যায়

কোনো রাসায়নিক টেরোটোজেনিক কি না তা গর্ভবতী ইদুর ও খরগোশের ওপর প্রয়োগ করা হয় রাসায়নিকটি নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হওয়ার আগেই। তবে অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে টেরোটোজেনিক রাসায়নিক বা ওষুধ, মানুষের ক্ষেত্রে টেরোটোজেনিক নাও হতে পারে। সুতরাং নতুন ওষুধ গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে ব্যবহার না করাই যুক্তিপূর্ণ ওষুধ ব্যবহারের অন্যতম ধাপ।


সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন