জড়বুদ্ধিদের চিকিৎসায় উপযোগী কালার থেরাপি
হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-10-24 13:41:01
শিশু, বিষেষত জড়বুদ্ধিসম্পন্ন শিশুদের ওপর এই কালার থেরাপি বিশেষ ফলপ্রসূ। বর্তমানে কাউন্সেলিংয়ে এই থেরাপি প্রয়োগ করা হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর প্রয়োগ করে ভালো ফলও মিলছে। ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য যেমন হাসিখুশি, বদমেজাজী, উঞ্জ, সংবেদনশীল, বিচক্ষণ, দৃঢ় ইত্যাদির সঙ্গে প্রিয় ও অপ্রিয়---বিভিন্ন রঙের সম্পর্কে আছে। অন্তর্মুখী এবং বহির্মুখী ব্যক্তিত্বের সংজ্ঞা ইয়ুং-এর তত্তে¡র প্রেক্ষাপটে এই কালার থেরাপি পাশ্চাত্যে এক বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে। এই থেরাপিতে ব্যক্তিকে তার পছন্দসই রঙ দিয়ে ছবি আঁকতে বলা হয়। ছবির রঙ এবং উপস্থাপনার ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করা হয় তার ব্যত্তিত্ব।ধরুন কেউ লাল-সবুজ ব্যবহার করেছে বেশি। লাল রঙের ব্যাখ্যা হল খুব বহির্মুখী, উৎসাহ-উদ্দীপনা বেশি আর সবুজ রঙ মানুষকে বহির্জগৎ এবং অন্তর্জগৎ উভয়ের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে। কেউ ধরুন হলুদ আর নীল রঙ দিয়ে ছবি এঁকেছেন। হলুদ রঙ-ও স্টিমুলেটিং। তবে মাত্রার তারতম্যে লাল রঙের চেয়ে কম। নীল রঙ সব কিছুকে সাপ্রেস করে মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে সাহায্য করে। আবার কমলা রঙ মানুষকে অবসাদ থেকে আনন্দে দোলায়িত করে। খয়েরি এবং গোলাপি রঙের ব্যাখ্যা খানিকটা লাল-হলুদের মতো। সাদা শুদ্ধতার প্রতীক। মনস্তত্তে¡র ভাষায় ‘এমটিনেস’ আর কালো অবসাদের প্রতীক। উপস্থাপনারও ব্যাখ্যা আছে। সরলীকরণ করে যদি বলি ব্যক্তিটি পাতা জুড়ে আঁকে, তবে বাস্তবের সঙ্গে সঙ্গে তিপূর্ণভাবে চলতে পারে। আর কাগজে যদি খালি অংশ অনেকটা পরিমাণে থাকে, তবে বলতে হয় সে চেতনা বা অচেননে বাস্তবকে এড়িতে চলে। প্রসঙ্গে উল্লেখ্য পেফিস্টারের কালার পিরামিড টেস্টে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব নির্ধারণে বিশেষ উপযোগী। এখানে নির্দেশনা দেওয়া হয় একইভাবে - বিভিন্ন রঙের টুকরো টুকরো কাগজ দিয়ে সুন্দর পিরামিড বানাও, তারপর আরও সুন্দর এবং অবশেষে সবচেয়ে সবচেয়ে সুন্দর। একইভাবে বিশ্রী পিরামিড বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সুন্দর এবং বিশ্রী পিরামিডে রঙের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। পিরামিড কীভাবে গঠিত হয়েছে সেটারও ব্যাখ্যা করা হয়। সুন্দর পিরামিড চেতনা আর বিশ্যী পিরামিড অচেতন মনের ইঙ্গিত দেয়। একইভাবে ব্যক্তির পছন্দসই রঙের তালিকা থেকে ব্যক্তির নির্ধারণ করা হয়, সেটা হল ডায়াগনোস্টিক ভ্যালু। ধরা যাক কোনো ব্যক্তির অঙ্কনে লাল ও কালো রঙ প্রাধান্য পেয়েছে। অর্থাৎ ব্যক্তিটি খুবই প্রতিক্রিয়াশীল কিন্তু অবসাদে ভুগছেন। তাকে সবুজ রঙ ব্যবহার করতে শেখানো হয় এবং বলা হয় তিনি যেন বারবার ওই রঙ ব্যবহার করেন। এই অভ্যাস যদি করানো যায়, তবে দেখা যায় ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের ঘাটতি পূণে হচ্ছে। শিশু, বিশেষত জড় বুদ্ধিসম্পন্ন শিশুদের ওপর এই কালার থেরাপি বিশেষ ফলপ্রসূ। বর্তমানে কাউন্সেলিংয়ে এই থেরাপি প্রয়োগ করা হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর প্রয়োগ করে ভালো ফলও মিলছে। রঙের মেলায়, রঙের খেলায় এই থেরাপি উপযোগী। যারা এখনো দুয়োর বন্ধ করে আছেন তাদেরকে অনুরোধ দুয়োর খুলে দিন। নতুন পদ্ধতিকে স্বাগত জানান। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন