×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

সন্দেহ ও অবিশ্বাস

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-10-24 13:49:29

মন আমাদের মিত্র আবার মন আমাদের শত্রুও বটে। মনকে সুমন না রাখতে পারলে মন হয় মিত্র, আবার মনকে সুমনে রাখতে পারলে মন হয় মিত্র। শত্রু বা মিত্র যাই হোক না কেন, মনটাতো আমরাই, তাই মনের সাথে থেকে মনকে পরিবর্তন করতে হয়। না হলে নান ব্যাধিতে যেমন আক্রান্ত হতে হয় তেমনি নিজেরও অন্যের শান্তিও বিঘ্নিত হয়। সন্দেহ ও অবিশ্বাস এই শব্দ দুটো, যতই ছোট হোক না কেন, এর থেকে হতে পারে নানা ব্যাধি ও পারিবারিক বিচ্ছেদ। শুধু তাই নয়, আত্মহত্যার প্রবণতা যে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার মূলেও এই দুটো শব্দ বিষধর সাপের মতো কাজ করে থাকে। সন্দেহ ও অবিশ্বাস থেকে তালাক বা ডির্ভোস হয়ে যায় কিন্তু সন্দেহ বা অবিশ্বাসকে ডির্ভোস দেওয়া যায় না। এ এমন বিষক্ত চিন্তা যার ভেতরে (মনে) প্রবেশ করেছে তাকে সুস্থ করে তোলা যথেষ্ট কষ্টকর ব্যাপার। যিনি সন্দেহ বা অবিশ্বাস করেন তার যেমন ক্ষতি হয় আবার যার প্রতি করা হয় তারও ক্ষতি হয়ে থাকে। ইংরেজিতে এই সন্দেহের পোশাকি নাম হল প্যারানোইয়া। প্যারানোইয়া কথাটি মূলত গ্রিক শব্দ যার অর্থ মন বা মাইন্ড এব্য পারিবারিক সাইড। অর্থাৎ মনের পাশাপাশি সমান্তরাল অন্য মন। প্যারানোইয়া বলতে তীব্র সন্দেহকেই বোঝানো হয়।  সন্দেহ ও অবিশ্বাসের কারণগুলো বিশ্লেষণ করলে অনায়াসে বোঝা যাবে এই মানসিক রোগ দুটো কত ভয়নোক। বহুদিন ধরে মন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছি মন আমাদের মিত্র আবার মন আমাদের শত্রুও বটে।  মনকে সুমনে রাখতে পারলে মন হয় মিত্র। শত্রু বা মিত্র যাই হোক না কেন, মনটাতো আমারই, তাই মনের সাথে থেকে মনকে পরিবর্তন করতে হয়।  না হলে নানা ব্যাধিতে যেমন আক্রান্ত হতে হয় তেমনি নিজের ও অন্যের শান্তিও বিঘ্নিত হয়। এত যে অনিদ্রা ও পেটের সমস্যা তার জন্য যা কিছু দায়ী তার মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস অন্যতম। এ মানসিক সমস্যা থেকে সৃষ্টি হয় অনিদ্রা, আই.বি.এস. সমস্যা, মাথাধরা, বদহজম, চুল পড়ে যাওয়া , হাত-পা জ্বালা করা ইত্যাদি। আবার সন্দেহ ও অবিশ্বাস থেকে ক্রোধ সৃষ্টি হয়। এই ক্রোধ থেকে হাইপারটেনশন, হার্টের রোগ সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। সন্দেহ ও অবিশ্বাসের কারণে মানুষ খুন করে, অপরাধমূলক কাজ করে থাকে এমনকী আত্মহত্যা করতেও দ্বিধা করে না। বিভিন্ন কারণে এই দুটো মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। মূল কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করলে এর গভীরতা  ও ব্যাপ্তি সমন্ধে জানা যাবে। ক্ষতির ভাবনা: যে কোনো ক্ষতি একবার হয়ে গেলে সেই অতীতের ভাবনা এমন ভাবে শিকড় গেড়ে বসে যে প্রতিনিয়ত মনে হয়, এই বুঝি ক্ষতি হয়ে গেল। অতীতের কথা যেহেতু ভোলা যাচ্ছে না সেহেতু যে কোনো কাজ বা সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ক্ষতির ভাবনা এসে যায়।  এর থেকে সন্দেহ ও অবিশ^াস জন্ম নেয়। ফলে আরশোলাকে ঈগল মনে হয়। দাঁত ব্যথাকে ক্যানসার মনে হয়। শস্যকে পাহাড় মনে হয়। যে কোনো ছোটখাটো সমস্যাকে বড় মনে হয়। ভালোলোকেও খারাপ মনে হয়। এমনকি যে খাবার খাওয়া হোক না কেন তা ঠিক কি না ভাবতে ভাকতে খাবারটাই শরীরে গিয়ে ক্ষতি সৃষ্টি করে (বদহজমের মাধ্যমে )। এ হেন ব্যক্তির রোগে আক্রান্ত হয়। বারবার স্নান করা, হাত-পা ধোওয়া, সব কিছু খারাপ বোধ হওয়া ইত্যাদিতে ভোগে। চুন খেয়ে মুখ জ্বলে গেলে দই দেখলেও ভয় পায়। সন্দেহ ও অবিশ্বাস থেকে জন্ম নেয় ভয় বা আতঙ্ক। একটা থেকে আরেকটার সৃষ্টি হয় যার জন্য সুন্দর জীবনটাই ব্যর্থ হযে যায়। ভুল বোঝার ভাবনা: ভুল বোঝার থেকে এমন ফোবিয়া সৃষ্টি হয় যে, ভালো কথার মধ্যেও খারাপ মনে হয়। বহু ভুল অহেতুক হলেও তবুও ভুল মনে করা, বা ভালোটাকে খারাপ মনে করা, স্ত্রীর সাথে ভুল বোঝাবুঝি থেকে সন্দেহ ও অবিশ^াস তৈরি হওয়া ইত্যাদি খবই মারাত্মক মানসিক সমস্যা। এই সমস্যা সন্দেহ ও অবিশ্বাস থেকে ক্রোধ সৃষ্টি হয়। এই ক্রোধ থেকে হাইপারটেনশন, হার্টের রোগ সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। সন্দেহ ও অবিশ্বাসের কারণেই মানুষ খুন করে, অপরাধমূলক কাজ করে থাকে এমনকী আত্মহত্যা করতেও দ্বিধা করে না। ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ে। কেই যদি বলে, এখন শোওয়ার সময় শুয়ে পড়ো। তখন মনে করে এর পিছনেও কোনো বদ উদ্দেশ্য আছে। ফলে আর ঘুমোতে যায় না। এইভাবে চলা যায় না। কিন্তু চলতে হচ্ছে। ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়্ এমনকি ওষুধও খেতে চায় না, ভাবে এর পিছন হয়তো কোনো ষড়যন্ত্র আছে। এমন অবস্থায় ভোর থেকে রাত অবধি জীবনের সব ছন্দ হারিয়ে যায়, ড্রিপ্রেশনের শিকার হতে হয়। শারীরিক ভাবনা: কোনো রোগ নেই তবুও সন্দেহ, রোগ আছে। বারবার ডাক্তারবাবুর কাছে যেতে থাকে। কিছুদিন পর ডাক্তার, ওষুধ সব কিছুর ওপর অবিশ্বাস জন্মায়। এরপর নাড়ি ধরে বসে থাকে। বলে, আমি ভালো নেই। অথচ কোনো রোগ নেই। এর থেকে সৃষ্টি হয় খিটখিটে মেজাজ, ক্রোধ, অশান্তি এবং হাইপারটেনশন। ঠকে যাওয়ার ভাবনা: অনেক সময় এই ধরনের বিভ্রান্তিতে অনেক আক্রান্ত হয়ে থাকে। ঠকতে ঠকতে এমন অবস্থায় এসে যায় যে, ভাবে এই বুঝি ঠকে গেলাম। টাকা বারবার গোনা, তালা লাগিয়ে বার বার দেখা, বাড়ির দলিলপত্র বারবার দেখা ও লুকিয়ে রাখা, চাবি বিভিন্ন জায়গাতে লুকিয়ে রেখে পরে না পেয়ে সন্দেহ ও অবিশ^াসের কারণে হৈ-চৈ করা হয়ে যায়। এমনকি অফিসে, ব্যাঙ্কে, বাজাওে, দোকানে যেখানেই যাক না কেন, এই সন্দেহ ও অবিশ্বাসের জন্য বিভিন্ন ঝামেলা হয়। এর থেকে আসে  ফ্রাসটেশন। অলীক কল্পনার বশীভূত হয়ে সন্দেহ ও অবিশ্বাস: যেমন ভূতের  ভয়, ভবিষ্যতের ভয়, ট্রেন ফেল করার ভয়, জলের ভয়, পশু-পাখিতে ভয়, নিজেকে অনুপযুক্ত মনে করে ভয়, মৃত্যু ভয়, বিয়েতে সুখী হতে পারবে কি নি তার ভয়, সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় যদি মেয়ে হয় তার বয়, পরীক্ষা দেবার সময় পারবে কি না এই ভয় ইত্যাদি ভয় থেকে টেনশন আর টেনশন থেকে অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কখনও অপরাধমূলক বা অনৈতিক কাজও সংগঠিত হয়ে থাকে এই ভয়ের জন্য। ভয়ের জন্মদাতা হল সন্দেহ ও অবিশ্বাস। নিজের ওপরে এবং অন্যের ওপরও। সমস্যা হয়তো আরও আছে কিন্তু সমস্যার কথা তিনিই ভালো বলতে পারবেন যার সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা আছে, হয়তো থাকবেও কিন্তু সমাধানগুলো জানা থাকলে বা ব্যবস্থা নিতে পারলে পঁচাত্তর থেকে আশি শতাংশ উপকৃত হওয়া যাবে। জেনে রাখা দরকার  পরের সমস্যাগুলো সবই মানসিক। এর প্রকৃত চিকিৎসা ব্যবস্থা সহজ নয়। তাই নিজের ভালো যদি করতে হয় সমাধানের যে পথ দেখানো হল সেই পথে চলতে হবে। সমস্যাকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে। তার জন্য মনের শক্তিকে বাড়াতে হবে। সমাধানের পথে

  • কমনকে খালি রাখা উচিত নয়। ব্যর্থ ও বিষাক্ত চিন্তা থেকে সনকে ঘুরিয়ে দিয়ে সুস্থ মানসিকতা আসতে হবে, মনকে বন্ধুর মতো কাজে লাগাতে হবে।
  • যে সমস্ত কারণে সন্দেহ ও সৃষ্টি হয় সেই সমস্ত কারণগুলোকে গুডবাই জানাতে হবে।
  • সন্দেহ ও অবিশ্বাস মনের ভ্রম। মনে পাহারাদার লাগান (ইতিবাচক ও শ্রেষ্ঠ চিন্তার দ্বারা) যাতে মন ভ্রমের শিকার না হতে পারে।
  • সকালে উঠে হাঁটতে আরম্ভ করুন। মানুষের সাথে মিশুন, মন্দিরে যান,সেবামূলক কাজ করুন। মন ভালো থাকবে।
  • আনন্দ ও খুশির মতো এমন ওষুধ আর নেই। তাই আধ্যাত্মিকতার সাথে নিজেকে যুক্ত করুন। আনন্দ ও খুশিতে থাকতে পারবেন। সত্যকে জানতে পারবেন। সন্দেহ ও অবিশ্বাস জন্ম নিতে পারবে না।
  • সন্দেহ ও অবিশ্বাস দেখা দিলে নিজের কাউন্সেলিং নিজে করুন। কোথা থেকে সৃষ্টি হচ্ছে দেখুন, তারপর কারণকে নিবারণ করুন।
  • জ্ঞান এক শক্তির কাজ করে। যত জানবেন ততই কাজে লাগাতে পারবেন। এই জন্য বই পড়–ন বা এই ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ম্যাগাজিন পড়ুন।
সন্দেহ ও অবিশ্বাস যত বাড়াবেন ততই বাড়বে নাহলে মৃত্যুই শ্রেয় মনে হবে।এর জন্য এই সন্দেহ ও অবিশ্বাস দেখা দিলে বাবাড়তে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • অযথা ওষুধ খাবেন না। কারণ মনের সমস্যা দূরীকরণে মেডিটেশন বা ধ্যান একমাত্র ওষুধ। রোজ সকাল-বিকেল মেডিটেশন ( সহজ রাজযোগ) অভ্যাস করলে এই ধরনের ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
  • সন্দেহ ও অবিশ্বাস যত বাড়াবেন ততই বাড়বে নাহলে মৃত্যুই শ্রেয় মনে হবে। এর জন্য এই সন্দেহ ও অবিশ্বাস দেখা দিলে বা বাড়তে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • যখনই সন্দেহ বা অবিশ্বাস দেখা দেবে তখনই জল খাবেন, অনুলোম-বিলোম প্রাণায়াম করবেন।
  • লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিজের মনের কথা লিখুন তারপর জলে ফেলে দিন।
  • রোজ সকালে বিছানা থেকে নেমেই প্রতিজ্ঞা করবেন, এই দুটো শত্রুকে আর সঙ্গে রাখা নয় বা এদর সঙ্গী আর হব না। আমি ভালো আছি, ভালো থাকব, সবার ভালো করব।
অবশেষে ছোট-বড় সবাই আর কিছু করুন আর নাই করুন নিয়মতি মনের ব্যায়াম মেডিটেশন অভ্যাস করুন। মেডিটেশন এই ধরনের মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।