×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

অতিরিক্ত ওজন হার্নিয়া ডেকে আনতে পারে

ডাঃ শান্তনু গাঙ্গুলী
2019-05-07 11:24:50

হার্নিয়া হলে কোনো অঙ্গের বহিরাগত অংশ, যেমন বাওয়েল বা অন্ত্র যে ক্যাভিটিতে থাকে তার পেশির দুর্বলতার কারণে দেওয়ালের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে আসে। সাধারণত এই অবস্থায় অ্যাবডোমিনাল ওয়ালে দুর্বলতা সৃষ্টি হয়, যে কারণে এই সময় অ্যাবডোমিনাল ক্যাভিটির ভেতরকার বস্তু বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে।

হার্নিয়ার প্রকারভেদ

 সবথেকে বেশি পরিচিত হার্নিয়া হল গ্রোইন হার্নিয়া যা অনেক সময় ইঙ্গুইনাল কিংবা ফিমোরাল হার্নিয়া হয়ে থাকে। এছাড়াও হার্নিয়া আম্বিলিকাসের (নাভি) মধ্যে দিয়ে কিংবা নাভির চারপাশেও দেখা যায়, যা আম্বিলিকাল বা প্যারা আম্বিলিক্যাল হার্নিয়া নামে পরিচিত। আগের কোনো শল্য চিকিৎসা বা অপারেশনজনিত কারণে সৃষ্ট ক্ষত থেকেও হার্নিয়া হতে পারে যা ইনসিসনাল হার্নিয়া নামে পরিচিত। জন্মের সঙ্গে সঙ্গে কিংবা তার কিছুদিন পরে যে হার্নিয়া দেখা যায় তাকে কনজেনিটাল হার্নিয়া বলা হয়।

হার্নিয়ার কারণ

  • খুব জোরে বা অনেক দূর পর্যন্ত ক্রমাগত হাঁটা কিংবা অনেক উঁচু পাহাড় ইত্যাদিতে ওঠা, ঘোড়ায় চড়া, যে সকল বাদ্যযন্ত্র ফুঁ-এর মাধ্যমে ও জোর করে অনেকদিন বাজানো।
  • ভারি ওজনের জিনিস, সাধ্যের বাইরে গিয়ে তোলা।
  • কোষ্টবদ্ধতার জন্যে অতিরিক্ত বেগ দেওয়া, জোরে বেগ দিয়ে প্রস্রাব করা, পেটের ওপর জোর চাপ দেওয়া, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও হুপিংকাশির দরুন পেটের ওপর ক্রমাগত চাপ পড়ার ফলে হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।

হার্নিয়ার সাধারণ উপসর্গ বা লক্ষণ

অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর সাধারণত কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। রুটিন মেডিকেল পরীক্ষার দ্বারা তা শনাক্ত হয়। রোগীরা সাধারণত কুঁচকি বা নাভির কাছে স্ফীত ভাব, হালকা যন্ত্রণা এবং অস্বস্তি নিয়ে ডাক্তারবাবুর কাছে আসেন।

রোগীর শরীরে যন্ত্রণা যখন তীব্র আকার ধারণ করে তখন ডাক্তারবাবুরা কিছু জটিলতর হার্নিয়া যেমন অবস্ট্রাকটেড এবং ম্ট্রাঙ্গুলেটেড হার্নিয়ার উপস্থিতি সম্পর্কে চিন্তা করে থাকেন।

হার্নিয়া থেকে জটিলতা

হার্নিয়ার মূল জটিলতা হল অবস্ট্রাকটেড বা স্ট্রাঙ্গুলেটেড হার্নিয়া। যখন হার্নিয়ার স্ফীতি কমে না কিংবা তীব্র যন্ত্রণা, বমি, শরীরে নিচের অংশ ফুলে যাওয়া, রোগীর খাদ্যগ্রহণ ও মলত্যাগের অক্ষমতা দেখা দেয় তখন উপরোক্ত জটিলতার কথা আশষ্কা করা হয়। এক্ষেত্রে ডাক্তারবাবুরা অনুমান করে থাকেন যে অন্ত্রের কোনো লুপ হার্নিয়ার মধ্যে আটকে এবং তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়, ফলস্বরূপ অন্ত্রের মধ্যে রক্ত সঞ্চালনও বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই পরিস্থিতিতে রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা হয়। এই সকল সমস্যার কারণে ডাক্তারবাবুরা প্রত্যেক রোগীকেই জটিলতার অপেক্ষা না করে আগেই পরিকল্পিতভাবে অপারেশনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

রিস্ক ফ্যাক্টর

হার্নিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যে যে রোগীর ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে দেখা যায়---

  • ক্রনিক কাফ বা দীর্ঘদিনের কাশি এবং ব্রষ্কাইটিসের সমস্যা।
  • দীর্ঘদিনের কোষ্টকাঠিন্য।
  • প্রস্টেট স্ফীতি এবং সঙ্গে মূত্রত্যাগের অসুবিধে, প্রস্টেটোমেগালি।
  • গর্ভাবস্থা
  • স্থূলতা।
  • পূর্বের কোনো অপারেশন
  • অ্যাসাইটিস: পেটের মধ্যে জলীয় ফ্লুইড জমা হওয়া।

হার্নিয়ার চিকিৎসা

প্রাথমিক অবস্থায় রোগীর উপশমের ক্ষেত্রে লক্ষণ অনুসারে কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা যেতেই পারে কিন্তু বাস্তবিক অর্থে স্থায়ী প্রতিকারের ক্ষেত্রে রোগীকে অপারেশনের দ্বারস্থ হতেই হয়। জেনারেল অ্যানাস্থেশিয়া, স্পাইনাল অ্যানাস্থেশিয়া কিংবা লোকাল অ্যানাস্থেশিয়ার সাহায্যে এর অপারেশন করা হয়। প্রকৃতপক্ষে হার্নিয়া দু’ভাগে অপারেশন করা হয়ে থাকে—ওপেন পদ্ধতি এবং ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতি। উভয় পদ্ধতিতেই সিন্থেটিক মেস দ্বারা ক্ষতস্থান মেরামত করা হ য়। প্রসঙ্গত এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিটি একটু ব্যয়সাপেক্ষ।

ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে

অপারেশনের সুবিধে

  • অপারেশন পরবর্তী যন্ত্রণা কম হওয়া।
  • স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় দ্রুত ফিরে আসা ইত্যাদি। যদিও দক্ষ এবং অভিজ্ঞ শল্য চিকিৎসক দ্বারা অপারেশনের ফল আশানুরূপ হয়ে থাকে।
  • এই অপারেশন খুব অল্প সময়ের মধ্যে করা সম্ভব।

ওপেন পদ্ধতিতে

অপারেশনের সুবিধে

  • এটি সময় সাপেক্ষ
  • এটি অল্প খরচেও করা সম্ভব।
  • জটিলতার হার কম।
  • বিশেষ কোনো যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না।
  • কম অভিজ্ঞতা সমম্পন্ন সার্জন দ্বারাও ভালো ফল লাভ সম্ভব।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন