×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

থাইরয়েডের গন্ডোগোলে জটিল সমস্যা

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-10-24 14:16:10

থাইরয়েড হরমোনের বৈশিষ্ট্য হল এই হরমোন রক্তনালী দিয়ে প্রবাহিত হয় না বরং রক্তে সরাসরি মিশে যায়। শুধুমাত্র রোগা, মোটা বা লম্বা হওয়ার নয়, খিদে হওয়া, বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে নিঃসরণ, প্রজনন ক্ষমতা, বুদ্ধি ও মানসিক ভারসাম্য এবং হার্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কার্যক্ষমতা নির্ধারণের ক্ষেত্রেও এর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।   অনেকের থাইরয়েড সম্বন্ধে একটা ভুল ধারণা আছে, তারা এটাকে অসুখ মনে করেন। আসলে থাইরয়েড কোনো অসুখের নাম নয়, এটা আমাদের শরীরের একটা গ্রন্থি বা গ্যান্ড। যা টি-ফোর বা থাই রক্সিন এবং টি-থ্রি বা ট্রাইআরওডো হরমোন নিঃসরণ করে আমাদের শরীরের মটেবলিজম রক্ষায় সহায়তা করে। এই হরমোন নিঃসরণ গ্রন্থি আমাদের গলার মধ্যভাগে প্রজাপতির আকারে অন্যান্য স্ট্রাকচারের ওপরে বর্ম বা শিল্ডের মতো অবস্থান করে। ঢোঁক গেলার সময় এই গ্রন্থি ওঠানামা করে। এই গ্রন্থিটি শরীরের নানান শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করে। আসলে থাইরয়েড থেকে হরমোন নিঃসরণ হয়। আর এই হরমোন নিঃসরণের মাত্রা কমবেশি থেকেই থাইরয়েডজনিত রোগের উদ্ভব। থাইরয়েড হরমোনের বৈশিষ্ট্য হল এই হরমোন রক্তনালী দিয়ে প্রবাহিত হয় না বরং রক্তে সরাসরি মিশে যায়।শুধুমাত্র রোগা, মোটা বা লম্বা হওয়ার নয়, খিদে হওয়া,বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে নিঃসরণ, প্রজনন ক্ষমতা, বুদ্ধি ও মানসিক ভারসাম্য এবং হার্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কার্যক্ষমতা নির্ধারণের ক্ষেত্রেও এর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে। সেজন্য সব সময় মনে রাখা দরকার, সময়মতো চিকিৎসা না হলে থাইরয়েডজনিত সমস্যা শুধু থাইরয়েডই সীমাবদ্ধ থাকে না, শরীরে নানান সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি জীবন সংশয়ের মতো অবস্থাও তৈরি হয়। থাইরয়েড হরমোনের বিশেষ ও কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে আমাদের শরীরে। থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোন থাইরক্সিন দৈহিক যৌন লক্ষণ বৃদ্ধির পিছনেও রয়েছে এই হরমোনের কার্যকরী ভূমিকা। তাই থাইরক্সিনের নিঃসরণ কম হলে বড়দের মিক্সিমিয়া ও ছোটদের ক্রেটিনিজম রোগ হয়। নিঃসরণ বেশি হলে থাইরোটক্সিস রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এছাড়া হৃদস্পন্দনের কমাবাড়া ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও থাইরয়েডের হরমোন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। মহিলাদের স্তনে দুধ আসার বিষয়টিও এর ওপর নির্ভরশীল। থাইরয়েড অসুখকে আমরা প্রধানত দু’ভাগে ভাগে করতে পারি-প্রথমটি হল জন্মগত বা কনজেনিটাল এবং দ্বিতীয়টি হল জন্মগত বা কনজেনিটাল এবং দ্বিতীয়টি হল জন্মগত বা কনজেনিটাল এবং দ্বিতীয়টি হল অ্যাকোয়ার্ড বা যেটা জীবন প্রক্রিয়া চলার সময় কোনো না কোনোভাবে আমাদের শরীরে হাজির হয়। কনজেনিটাল বলতে বোঝাং শিশু যখন মায়ের জঠরে থাকে সময় তার থাইরয়েড গ্ল্যান্ড তৈরি হয় জিভের গোড়ার থেকে এবং গ্রন্থিটি তৈরি হবার পর তার নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে। যদি গ্রন্থিটি তৈরি বা উৎপত্তির পর তার সুনির্দিষ্ট স্থানে না পৌছায় বা বিচ্যুতি ঘটে তাকে লিঙ্গুয়াল থাইরয়েড বলে। এটি একটি অ্যানাটমিক্যাল অর্থাৎ শরীর গঠনের বিচ্যুতি। বহু বাচ্চার ক্ষেত্রে দেখা য়ায় থাইরয়েড গ্রস্থিটি ঠিকমতো জোড়া লাগেনি। সেক্ষেত্রে এক ধরনের কনজেনিটাল অ্যাবনর্মালিটি তৈরি হয়। যা এক ধরনের সিস্টের আকার নেয়। একে থাইরোগøসাল সিস্ট বলে। পরবর্তী সময়ে এই সিস্টে সংক্রমণ ঘটে তাতে পুঁজ হতে পারে, ব্যথা হতে পারে বা স্ফীতিভাব দেখা দিতে পারে। সার্জারি ছাড়াও হোমিওফ্যাথিতে ঠিকমতো ওষুধেই এই সমস্যা নিরসন করা সম্ভব। অ্যাকোয়ার্ড বা জীবন প্রক্রিয়া চলার সময় কোনো না কোনোভাবে যেটা হাজির হয় তাতে মুখ্য ভূমিকা থাকে আয়োডিনের, যেটার সঙ্গে থাইরয়েডের একটা বিরাট সম্পর্ক আছে। বিশেষত গ্রাম অঞ্চলে বা পাহাড়ি অঞ্চলে খাদ্য ও পানীয়ে আয়োডিনের অভাবে মানুষের গলায় এই থায়রয়েড গ্ল্যান্ডের যে স্ফীতিভাব দেখা দেয়। সেটা গলগন্ড বা গয়টার নামে পরিচিত। থাইরয়েড হরমোনের গন্ডগোলের ফলে প্রধানত চার ধরনের রোগ দেখা যায়। গলগন্ড, হাইপো থাইরয়েড, হাইপার থাইরয়েড এবং থাইরয়েডের প্রদাহ।  আমরা প্রায়শই শুনতে পাই হাইপো থাইরয়েডিজম এবং হাইপার থাইরয়েডিজমের কথা। এই অসুখের মূল কারণ হচ্ছে অটো ইমিউনিটি। অটো ইমিউন অসুখ এমন এক ধরনের অসুখ , যেখানে নিজের শরীরের বিভিন্ন অংশ বা স্ট্রাকচারের বিরুদ্ধে দেহ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এটা কিন্তু স্বাভাবিক নয়। হাইপো থাইরয়েডিজম কী এবং এটা শরীরের কী কী ক্ষতি করতে পারে? প্রথমত, হাইপো থাইরয়েডিজম-এর অর্থ টি.এস.এইচ নামক হরমোনটি কম থাকা অর্থাৎ এই হরমোন রক্তে যে মাত্রায় থাকা উচিত তার তুলনায় কম থাকা। অনেক কারণে এই অসুখটি হতে পারে। যেমন – টি.এস.এইচ তৈরিতে গন্ডগোল, সার্জারিতে থাইরয়েড গ্রন্থি বাদ গেলে তার ফলেও হতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর কোনো কারণই খুঁজে পাওয়া যায় না। এছাড়া দায়ী থাইরয়েড গ্রন্থি তৈরিতে জন্মগত ক্রুটি এবং কিছু থাইরয়েডের অসুখ এমন একটা সমস্যা যার রোগ নির্ণয় অত্যন্ত সহজ এবং চিকিৎসা অত্যন্ত সুলভ, সহজ ও ফলপ্রসূ। থাইরয়েডের ক্যানসারও এমন ধরনের ক্যানসার যা ঠিক সময়ে ধরা পড়লে একবং সঠিক চিকিৎসা হলে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।   ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া । এইসব কারণে এই টি.এস.এইচ যখন কমে যায় তখন শরীরে কিছু লক্ষণ ফুটে ওঠে। যেমন অলসতা, চুল পড়ে যাওয়া, অত্যধিক ঋতুস্রাব, বন্ধ্যাত্ব, শিশুর ক্ষেত্রে বাড়-বৃদ্ধি কমে যাওয়া, মানসিক অবসাদ, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামান্দা, দুর্বলতা, ত্বকে শুষ্ক খসখসে ভাব, পুরুষের যৌন ক্ষমতা হ্রাস, হার্টের চারপাশে জল জমা (পেরিকার্ডিয়াল ইাফউশন), মাংসপেশির দুর্বলতা, গলার স্বর ব্যাঙের মতো হওয়া ইত্যাদি। আবার ঠিক এর উল্টোটা ঘটে হাইপার থাইরয়েডিজমে। এখানে টি-থ্রি, টি-ফোর নামক হরমোনগুলির মাত্রা রক্তে স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়। এই অবস্থায় যেসব লক্ষণ ফুটে ওঠে সেগুলো হচ্ছে খিদে অত্যন্ত বেড়ে যাওয়া, ওজন কমতে থাকা, হাত-পা কাঁপা, চোখ বাইরের দিকে বার হয়ে আসা ইত্যাদি। মহিলাদের ক্ষেত্রে দুটোর ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষণ ঋতুস্রাবের অস্বভাবিকতা। থাইরয়েডের প্রদাহের কারণ ভাইরাসের সং ক্রমণ। এই রোগ হঠাৎ করেই শরীরে বাসা বাঁধে, আবার নিজে থেকেই সারে। সঠিক সময় রোগ নির্ণয় এবং রোগের যথোপযুক্ত চিকিৎসা, থাইরয়েডের সমস্যার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে আয়োডিনের অভাবজনিত কারণে যে গলগন্ড হয় তা অনেকটাই প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে খাদ্যে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের ফলে। উন্নত দেশে শিশুর জন্মেও সঙ্গে সঙ্গে থাইরয়েডের রক্ত পরীক্ষা প্রচলন আছে। একে ইউনিভার্সাল নিওনেটাল স্ক্রিনিং বলে। দুর্ভাগ্যবশত ভারতে এই রক্ত পরীক্ষাটি এখনও বাধ্যতামূলক নয়। থাইরয়েডের অসুখ এমন একটা সমস্যা যার রোগ নির্ণয় অত্যনাত সহজ এবং চিকিৎসা অত্যন্ত সুলভ, সহজ ও ফলপ্রসূ। থাইরয়েডের ক্যানসারও এমন ধরনের ক্যানসার যা ঠিক সময়ে ধরা পড়লে একবং সঠিক চিকিৎসা হলে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। হোমিওপ্যাথিতে থাইরয়েডের চিকিৎসায় থাইরয়েডিনাম ছাড়াও আয়োডিন, নেট্রাম মিউর, লাইকোপিডিয়াম, সাইলেসিয়া, ফিডোরিনাম ইত্যাদি ওষুধ রয়েছে। এছাড়াও প্যারাইটাকার-এর মতো বহু প্রকার ওষুধ রয়েছে। তবে কখনোই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাবেন না। কারণ চিকিৎসক তার অভিজ্ঞতার আলোকে ওষুধ নির্বাচন করে থাকেন যা চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বফ’র্ণ। কারণ ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ক্ষতির সম্ভবনা প্রবল থাকে।  সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন