×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

জীবনভর ডায়ালিসিস লাগবে??

ডাঃ পার্থপ্রতিম দত্ত
2019-05-18 13:58:33

কিডনির অসুখে প্রস্রাবের সমস্যা অনেক রকমের হতে পারে। যেমন প্রস্রাব কমে যাওয়া, বেশি মাত্রায় প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবের সাথে রক্ত-পুঁজ আসা, প্রস্রাবের সাথে বেশি পরিমাণে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

কিডনিতে প্রস্রাব তৈরি হয়ে ইউরেটার, ব্লাডার হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। প্রস্রাবের সমস্যা বলতে যখন প্রস্রাব বেড়ে যায় বা প্রস্রাব কমে যায় তখন কিন্তু পরীক্ষা করলে দেখা যায় এর পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে।

কিডনির কার্যক্ষমতা যখন কমে আসে তখন তার সামার্থ্য অনুযায়ী সে তার কাজ করতে পারে না। কিডনির কাজ হল শরীরে যে টক্মিন মেটেরিয়াল বা বর্জ্যপদার্থ আছে সেগুলোকে বের করে দেওয়া জলের সাথে, যাকে আমরা প্রস্রাব বলি।

যদি কিডনির সমস্যা হয় যেমন গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস, তাতে কিডনির পরিশোধন ক্ষমতাটা কমে যায়। ফলে কিডনিতে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থ জমতে শুরু করে। ফ্লুইডটা জমে জাওয়ার কারণে হাত-পা-মুখ ফুলে যায়। প্রস্রাব ঠিকমতো বারনা হওয়ার কারণে সমস্যা তৈরি হয়। কিডনিতে অনেকদিন ধরে স্টোন বা টিউমার বা অন্য কারণে অবস্ট্রাকশন থাকলেও প্রস্রাব খুব অল্প পরিমাণে বেরোয়, বারবার প্রস্রাব হতে থাকে, অনেক সময় প্রস্রাব করতে যন্ত্রণাও হয়।

এই সমস্যা সাধারণত মেডিকেল জনিত সমস্যা, যেমন—নেফ্রোটিক সিনড্রোম বা গ্লোমেরুলো নেফ্রাইসি।

  • দীর্ঘদিন ধরে থাকা ডায়াবেটিস।
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • নেফ্রাইটিস।
  • মূত্র সংক্রমণ বা ই-কোলাই।
  • মূত্রনালীতে কোনো বাধা।
  • ডায়রিয়া, সাপের কামড়, পুড়ে যাওয়া বা হঠাৎ করে প্রেসার কমে গিয়ে এবং বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে যন্ত্রণা কমাবার ওষুধ খেলে কিডনির সমস্যা তৈরি হয় এবং তার থেকে প্রস্রাবের সমস্যা আসে।

ডায়াবেটিস রোগের সাথে কিডনির সমস্যার ঘনিষ্ট যোগাযোগ। কিডনিকে নষ্ট করে দেবার ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস অতি সক্রিয় ভূমিকা নেয়। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস কিডনির কোষগুলোকে নষ্ট করে দেয়। যাকে বলে ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি। প্রস্রাবের সাথে দূষিত পদার্থ বের করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ কিডনি যে ছাঁকনির কাজ করে সেটা আর ঠিকমতো হয় না। রক্তে ইউরিয়া বাড়ে, প্রস্রাব দিয়ে প্রোটিন বেরিয়ে যায়, ইউরিন বা প্রস্রাব কালচার করলে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি হয়।

ডায়াবেটিস রোগীদের এই কারণে বছরে একবার করে কিডনি ফাংশন পরীক্ষা করা উচিত। ছ’মাস অন্তর বা একবছর অন্তর ইউরিনের অ্যালবুমিন এবং রক্তের ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করতে হবে।

দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কিডনির গ্লোমেরুলাসগুলো শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায় এবং কিডনির স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। তাই বছরে একবার অন্তত উচ্চরক্তচাপ, কিডনি ফাংশন, ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার। কিডনির কারণেও প্রেসার বাড়তে পারে। এগুলো সবই চেক করানো দরকার।

প্রস্রাবের সাথে কোনো কোনো সময় পুঁজ আসতে পারে, কাস্ট আসতে পারে। এগুলো এলে কিডনিতে সংক্রমণের কথা ভাবতে হবে। এ সময় রোগীর প্রস্রাবের সাথে যদি যন্ত্রণা এবং জ্বর থাকে তাহলে ইউরিন কালচার, আলট্রাসোনোগ্রাফি করা দরকার। সিটি স্ক্যান করতেও হতে পারে।

প্রতিদিন আমরা যতটা জল খাই ঠিক কাছাকাছি বা সমান প্রসাব হয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে জল। দু’লিটার জল ভেলে প্রায় দেড় লিটার বার তার একটু বেশি প্রস্রাব শরীর থেকে বেরোবে। স্টুলের সাথেও কিছুটা ফ্লুইড বেরোয় তাই কিছুটা মাইনাস করে হিসেব করা হয়।

সংক্রমণ যদি পাওয়া যায় তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করতে হয়। কোনো কোনো সময় প্রস্রাবের সাথ প্রোটিনও বেরোতে থাকে। এমনিতে প্রোটিন ইউরিনের সাথে আসে না। কিন্তু কিডনির যখন ফিল্টারেশন করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় তখন নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম বা ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথির কারণে প্রোটিনটা আসতে থাকে। খুব বেশি পরিমাণে প্রোটিন শরীর থেকে বেরিয়ে গেলে হাইপো প্রোটিনের ফলে এমন একটা অবস্থা হয় যে হাত-পা ফুলে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্টেরয়েড দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়টা সামলাতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় কনজেনিটাল ডিজিজ, অটো-ইমিউন ডিজিজ থাকলে শেষ পর্যন্ত ডায়ালিসিস ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রয়োজন পড়ে।

একটা কিডনি বাদ গেলেও সাধারণত অন্য কিডনিটা পঞ্চাশ শতাংশ ঠিক থাকলেও কাজ চালিয়ে নিতে পারে। ভালো থাকার পরিমাণটা কুড়ি শতাংশের নীচে এলে সমস্যা হয় অনেকরকম। প্রস্রাব হবে না বা বেশি পরিমাণ প্রস্রাব হবে, পা ফোলা, মুখ ফোলা, দুর্বলতা, বমি, ওয়েট লস, হাত-পা ঝিনঝিন করার সমস্যাগুলোও আসতে থাকে। কুড়ি শতাংশের নীচে গেলে ডায়ালিসিস ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে।

ডায়ালিসিস করেও ভালো থাকা যায় কিন্তু যদি সুগার থাকে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে ডায়ালিসিস করেও কিছু করা যাবে না। সুগার পুরো ড্যামেজ করে দেবে।

ডায়ালিসিস সারা জীবন করে যেতে হবে। কারণ কিডনি কাজ করছে না বলেই ডায়ালিসিস করা এবং ডায়ালিসিসের মাধ্যমে শরীরের দূষিত পদার্থ বার করে দিতে হয়। সপ্তাহে দু’বার-তিনবার করেও ডায়ালিসিস করতে হয়।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন