×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

মেজাজ ও ম্যানিয়া

ডাঃ অমরনাথ মল্লিক
2019-05-21 11:30:32

‘মন ভালো নেই’, ‘মুড অফ’, ‘মন-মেজাজ বিগড়ে আছে’ এরকম কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। মন-মেজাজ খারাপ হলেই সমস্যা হতে পারে, কিন্তু তাকে ‘অসুস্থতা’ বলা শক্ত। তবে ‘মুড ডিসঅর্ডার’ মানসিক অসুস্থতার মধ্যে অন্যতম।

মানসিক অসুস্থতা নির্ণয় করার জন্য কোনো ল্যাবরেটারি টেস্ট, এক্স-রে, সোনোগ্রাফি কিছুই নেই; রোগীর কথা ও আচরণ, অভিভাবক ও বন্ধু-আত্মীয়দের বক্তব্য ও পারিবারিক ইতিহাস বিচার-বিবেচনা করে রোগ নির্ণয় করা হয়।

মেজাজ বা মুড মানসিক রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়ে থাকে। মেজাজের ওঠানামা বা মেজাজের তারতম্য অনেক সময়েই ঘটে থাকে। কিন্তু এই মেজাজের পরিবর্তন যদি বেশিদিন ধরে চলতে থাকে, যা দৈনন্দিন কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটায় বা কাজের ক্ষতি করে তাহলে কা মানসিক অসুস্থতা মনে করা হয়।

অনেক সময় মেজাজ বেশ উঁচু তারে বাধা থাকে। অর্থাৎ অনেকেরই মেজাজ বেশ চড়ে থাকে। অতি অল্পে রেগে যায়, চেঁচিয়ে কথা বলে। এই মেজাজী মানুষের কেউ কেউ বড় বড় চিন্তাভাবনা করতে শুরু করে দেয়। অনেকে তো নিজেকে রাজা, উজির ভাবতে শুরু করে। দেদাার খরচ করে, অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে শুরু করে, দু’হাতে টাকা-পয়সা খরচ করে। তাদের ঘুম কমে যায়, কাজ করবার এনার্জি বেড়ে যায়। এই অবস্থাকে ‘ম্যানিক’ অবস্থা বলা হয়। ম্যানিয়া হল ডিপ্রেশন বা হতাশারই একটা অবস্থা, যা বাইপোলার রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।

ম্যানিয়ার মতো এত গুরুত্বর অবস্থা বেশি দেখা যায় না। কিন্তু কমবেশি মেজাজের তারতম্য অনেকেরই দেখা যায়। একটু বেশি কথা বলা, অতি উৎসাহ বা বড় বড় কথা বলা অনেকেরই যেন স্বাভাবের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের চারপাশে খুঁজলেই এমন কিছু মানুষকে পাওয়া যাবে যারা বাড়িয়ে কথা বলে বা বড় বড় ভাবনাচিন্তার কথা বলে থাকে। অনেককেই দেখবেন নানা বিষয়ে খুব বিজ্ঞের মতো মন্তব্য করে থাকে। আবার নিজেকে একজন কেউকেটা মনে করে।

অনেকে আবার আছেন যাদের মেজাজের এই বিক্ষিপ্ততার মাত্রা কম, তাদের ‘হাইপোম্যানিক’ বলা হয়। ‘ম্যানিক’দের ক্ষেত্রে বড় বড় ভাবনাচিন্তা, কথা বলা এত বেশি মাত্রায় হয় যে তাদের পারিবারিক জীবন ও কাজের জায়গায় পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। ‘হাইপোম্যানিক’দের ক্ষেত্রে দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ক্ষতি হয় না। ‘হাম বড়াই’ভাব থাকলেও অন্যেরা সহ্য করে নিতে পারে। দেখা যায় বাইপোলার রোগীদের মধ্যে নেশা করার প্রবণতা থাকে। মদ, গাঁজা প্রভৃতির নেশা করার ঝোঁক ‘ম্যানিক’ বা ‘হাইপোম্যানিক’ অবস্থায় বেড়ে যায়। এদের ঘুমের ব্যাঘাত লক্ষণীয়। অনেক রাত অবধি শুধু জেগেই থাকে না, নাচগান, হৈ-হুল্লোড় করে থাকে।

দেখবেন আমাদের আশেপাশে কিছু মানুষ আছে যারা কিছুদিন খুব হৈচৈ করে, দেখা হলে কী খবর, কেমন আছেন এই সব বলে নিজেই বকতে শুরু করে! তারাই আবার কিছুদিন পরে হঠাৎ চুপ মেরে যায়। এতই চুপচাপ হয়ে যায় যে আমরাই অবাক হয়ে যাই। এদের মেজাজ এইভাবে কিছু সময় অতি উৎফুল্ল হয় আবার কিছুদিন পর ঝিমিয়ে পড়ে। এদের চরিত্রে বাইপোলারিটির একটা ঝোঁক থাকে। মেজাজের খামখেয়ালিপনা বেশি মাত্রায় বেশিদিন চললে অবশ্যই চিকিৎসার কথা ভাবা উচিত। এই ধরনের মানুষের চিকিৎসা করাও শক্ত। তারা ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না, তারা যে অসুস্থ তা মানতে চায় না। অবশ্য চিকিৎসাও দীর্ঘদিন করে যেতে হয়। অনেক সময় সাইকোথেরাপিও করতে হয়।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন