×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস থেকেও হতে পারে হার্টের অসুখ

ডাঃ অভিজিৎ মজুমদার
2019-05-21 12:30:57

রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস একটি ক্রনিক সিস্টেমেটিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ, যেখানে দেহের একাধিক জয়েন্টের প্রদাহ হয় এবং সেগুলোর কার্যকারিতা হ্রাস করার মাধ্যমে দেহের স্বাভাবিক সচলতাকে বিনষ্ট করে। সাধারণত এই রোগে প্রাথমিক ভাবে বিভিন্ন জয়েন্টের পেরিআর্টিকুলার টিস্যু এবং সাইনোভিয়াল মেমব্রেন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদেরই এই রোগ বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। যদিও যে কোনো বয়সেই এই রোগ শরীরে থাবা বসাতে পারে, তবুও দেখা যায় কুড়ি থেকে চল্লিশ বছর বয়সে এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সাধারণত বংশে এই রোগ থাকলে রোগের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় জয়েন্টের প্রদাহ হয় এবং পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে জয়েন্টগুলো তাদের স্বাভাবিক নড়াচড়া, মুভমেন্ট করার ক্ষমতা হারায় এবং ফাইব্রাস অ্যাষ্কোলাইসিস ডেভেলপ করে।

কারণ

  • অনেকে ক্ষেত্রেই রোগটির কারণ অজানা রহস্যাবৃত হয়ে থেকে যায়।
  • এই রোগটি পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হবার সম্ভাবন প্রায় তিনগুণ বেশি।
  • রোগটি যে বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে অতিমাত্রায় লক্ষ্য করা যায় তা হল পঁয়ত্রিশ থেকে চল্লিশ বছর। যদিও কুড়ি থেকে পঁচাত্তর সব বয়সেই এই রোগ হবার সম্ভাবনা থেকে যায়।
  • রক্তে এক বিশেষ ধরনের অ্যান্টিবডির মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি থাকলে এই রোগ হবার সম্ভাবনা প্রবল হয়।
  • দেহের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেমে গন্ডগোল থেকে এই রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে।

লক্ষণ

  • রোগীর ক্লান্তি এবং দুর্বলতা লক্ষ করা যায়।
  • রোগের প্রথম অবস্থায় জ্বর আসতে পারে এবং রোগটি দ্রুত বিভিন্ন জয়েন্টে ছড়িয়ে পড়ে।
  • রোগ অত্যধিক বাড়াবাড়ির পর্যায়ে গেলে অ্যামাইলইডোসিস এবং সেপটিক আর্থ্রাইটিস হতে পারে।
  • রোগের চরম পর্যায়ে মাংসপেশির খিঁচুনি, যন্ত্রণা হয় এবং জয়েন্টগুলোকে একেবারেই খোলা যায় না।
  • রোগের প্রথম দিকে নাড়ির গতি থাকে দ্রুত, রক্তাল্পতা দেখা যায়, ই.এস.আর-এর বৃদ্ধি হয়, অ্যালবুমিনের মাত্রা কমে যায় এবং রক্তে অল্টার্ড প্লাজমা প্রোটিনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
  • রোগের পরবর্তী পর্যায়ে জয়েন্টের স্ফীতি উল্লেখযোগ্য ভাবে লক্ষ্য করা যায়।
  • সর্বপ্রথম হাতের আঙুল এবং পায়ের বুড়ো আঙুলে রোগ-লক্ষণ প্রকাশিত হয় এবং ধীরে ধীরে তা কবজি, কনুই, কাঁধ, গোড়ালি এবং হাঁটুর জয়েন্টে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • দেহের দু’দিকের জয়েন্টগুলোতে একই সাথে রোগ-লক্ষণ আসতে পারে, জয়েন্টগুলো গরম যন্ত্রণাদায়ক হয় থাকে।
  • প্রায় কুড়ি শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে হাড়ের ওপর এক ধরনের নডিউল লক্ষ্য করা যায়।
  • সাধারণত রক্তে রিউম্যাটয়েড ফ্যাক্টরের বৃদ্ধির সাথে এই ধরনের নডিউল হবার একটি প্রত্যক্ষ সম্পর্কে থাকে।
  • অনেক ক্ষেত্রে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের সাথে পেরিকার্ডাইটিস জাতীয় হার্টের অসুখ এবং প্লুরাল ডিজিজ জাতীয় ফুসফুসের রোগ লক্ষ্য করা যায়।
  • অল্প সংখ্যকরোগীর ক্ষেত্রে স্প্লিনের বৃদ্ধি এবং লিম্ফনোডের বৃদ্ধিও ঘটে।

জটিলতা

আর্থ্রাইটিস।

কারপাল টানেল সিনড্রোম।

সেজর্নস সিন্ড্রোম।

পেরিকার্ডাইটিস।

প্লুরাল ইফিউশান।

হার্টের ভালবের ডিজিজ।

করণীয়

  • ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে যন্ত্রণার সাময়িক উপশম হতে পারে।
  • বাড়িতে বসে না থেকে রোগীর দৈনন্দিন কাজকর্মের মাধ্যমে দেহকে সচর রাখার চেষ্টা করা উচিত।
  • সহজপাচ্য এবং হাই প্রোটিন ডায়েট গ্রহণ করা উচিত।
  • যে জয়েন্টটি আক্রান্ত হয়েছে সেটিকে সুরক্ষিত এবং বিশ্রামে রাখা প্রয়োজন যাতে না সেই জয়েন্টের বিকৃতি ঘটে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

  • সেরাম সিসিপি অ্যান্টিবডি পরীক্ষা।
  • সেরাম রিউম্যাটয়েড ফ্যাক্টর পরীক্ষা।
  • সেরাম আই.জি.জি, আই.জি.এম।
  • টোটাল হিমোগ্রাম।

চিকিৎসা

হোমিওপ্যাথিতে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস অত্যন্ত সুফলদায়ী চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে অবশ্যই রোগীকে ধৈর্য ধরে ওষুধ খেতে হবে এবং নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। হোমিওপ্যাথি ওষুধের কোনোরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকায় দীর্ঘদিন ওষুধ খেলেও অন্যান্য কোনোরকম জটিলতা আসার সম্ভাবনা থাকে না। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস বংশে থাকলে রোগীর এই রোগ হবার সম্ভাবনা প্রবল হয়। ফলে বোঝাই যাচ্ছে জিনগত ভাবে এই রোগ বংশানুক্রমিক ভাবে প্রবাহিত হয়। ক্নিতু হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে সেই প্রবণতাকেও আটকানো যায়। যা রোগীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এক পরম প্রাপ্তি। সাধারণত যে ওষুধগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলো হল রডড্রেনড্রন, মেডোরহিনাক্স, এক্স-রে, রেডিয়াম ব্রোম, কস্টিকাম, স্পাইরিয়েটা, অ্যাঙ্গাসটেরা ভেরা, স্টেলারিয়া মেড, মঙ্গোলিয়া গ্রান্ড প্রভৃতি। তবে কখনোই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়। এবং নিয়মিত চিকিৎসকের ফলোআপে থাকা উচিত।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন