×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

ব্রেন স্ট্রোকের রোগীরা বেশি মারা যান হার্ট অ্যাটাকে

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-05 14:07:31

বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এবং টেলিভিশনের দৌলতে এখন প্রায় সবাই জানে যে হার্ট অ্যাটাক হল হার্টেও কোনো শিরা হঠাৎ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হার্টের খানিকটা অংশে রক্ত সরবরাহ না হওয়া এবং খুব তাড়াতাড়ি আবার রক্ত সঞ্চালন শুরু করতে না পারালে হার্টেও খানিকটা মাংসপেশির মৃত্যু। ব্রেন স্ট্রোক বা চলতি কথায়  পক্ষাঘাত হচ্ছে মস্তিস্কের কোনো শিরা হঠাৎ বন্ধ হয়ে মস্তিস্কের কোনো অংশে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং তাড়াতাড়ি সেই সরবরাহ পুনরায় চালু করতে না পারলে মস্তিস্কের সেই অংশের যা কাজ তা হারিয়ে যাওয়া। এই ব্রেন স্ট্রোকের বৈচিত্র্য কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের থেকে অনেক বেশি। প্রথমত হল, ব্রেন স্ট্রোক দুটি প্রধান পদ্ধতিতে হয়--- প্রথমটি হল, শিরার রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হওয়া। একে বলে ‘ইনফার্ক্ট’ (Infract) । আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ বা হেমারেজ (Hemorrhage)। মোটামুটিভাবে শতকরা সত্তর ভাগ স্ট্রোক হচ্ছে ইনফার্ক্ট। আর বাকিটা রক্তক্ষরণ। পর্যবসিত হয়। হার্ট অ্যাটাকে কিন্তু এই হার্টের পেশিতে রক্তক্ষরণের কোনো ঘটনা ঘটে না। দ্বিতীয়ত, হার্ট যেহেতু একটাই কাজ করে, অর্থাৎ সারা শরীর থেকে দূষিত রক্ত সংগ্রহ করে তাকে ফুসফুস পাঠিয়ে শোধিত করে আবার সারা শরীরে সঞ্চলিত করে। কাজেই হার্ট অ্যাটাক হলে প্রধানত এই রক্ত সঞ্চলন প্রক্রিয়াইবন্ধ হয়ে যায় বা কমজোরী হয়ে যায়। কিন্তু মস্তিস্ক অতি বিচিত্র এবং এর এখনো অনেকটাই অনাবিস্কৃত। যেহেতু সারা শরীরের সব কাজইমস্তিস্ক নিয়ন্ত্রণ করে তাই ব্রেন স্ট্রোক হলে যেমন হাত-পায়ে পক্ষাঘাত হতে পারে, তেমনি কথা  বলাও বন্ধ হতে পারে, দৃষ্টি চলে যেতে পারে। অর্থাৎ কোনো নির্দিস্ট উপসর্গ নেই- অনেক কিছুই হতে পারে। মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ (যদি আঘাতজনিত না হয়) প্রধানত দুটি কারণ হয় এবং দুটি ভিন্ন বয়সে। বৃদ্ধ বয়সে  উচ্চরক্তচাপই রক্তক্ষরণের প্রধান কারণ। আর অল্প বয়সে রক্তক্ষরণ হয় মস্তিস্কের শিরায় জন্মগত ক্রটি থাকলে। হার্ট অ্যাটাক সম্পূর্ণ  অন্য অসুখ এবং মস্তিস্কের রক্তক্ষরণের সঙ্গে এর যোগাযোগ খুব ক্ষীণ। এবার বলা যাক ইনফার্ক্ট ব্রেন স্ট্রোক কীভাবে হয়। এখানে আমরা দুটি পৃথক পদ্ধতি পাই। একটি হল মস্তিস্কেও শিরার কোলেস্টেরল জমে, তাতে ক্যালসিয়াম  জমে, শিরা শক্ত হয়ে গিয়ে হঠাৎ পুরো বন্ধ হয়ে যায়। এই পদ্ধতিটি একেবারে হার্টের শিরা বন্ধ হয়ে হার্ট অ্যাটাকের মতো। কিন্তু অন্তত শতকরা তিরিশ ভাগ ক্ষেত্রে এই ইনফার্ক্ট হয় দূরবর্তী কোনো জায়গা থেকে  ছোট ছোট জমাট বাঁধা রক্ত বা কোলেস্টেরলের ছোট ছোট দলা রক্তে ভাসতে ভাসতে এসে মস্তিস্কের ছোট শিরায় আটকে গিয়ে।  একে বলে ‘এম্বোলিক স্ট্রোক’। এই জিনিস আবার হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে খবই কম পাওয়া যায়। সাধারণত হার্টের ছন্দপতন হলে বা মহাধমনী কিংবা গলার শিরার দেওয়ালে জমাট বাঁধা কোলেস্টেরল থাকলে এই এম্বোলিক স্ট্রোক হয়। কাজেই এই পদ্ধতির সঙ্গেও হার্ট অ্যাটাকের যোগাযোগ প্রতক্ষ নয়, পরোক্ষ। বাকি রইল আথেরোথ্রম্বোটিক ইস্কিমিক স্ট্রোক আর হার্ট অ্যাটাক। এবার দেখা যাক এদের কার্যকারণে মিল কতটুকু আর অমিলই বা কোথায়। দুটি অসুখই বয়স বাড়ার সঙ্গে বাড়ে। তবে চল্লিশের কমে হার্ট অ্যাটাক যে পরিমাণে বাড়ছে, অল্প বয়সে স্ট্রোক সেই পরিমাণে বাড়েনি। হার্ট অ্যাটাক সব বয়সের ছেলেদের মধ্যে বেশি, তবে ঋতুবন্ধের পর মহিলাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা পুরুষদের মতোই হয়ে যায়। কিন্তু স্ট্রোক মহিলাদের মধ্যে বেশি। কতকগুলি কারণ দুটি ক্ষেত্রেই কমন। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, বেশি কোলেস্টেরল, ধুমপান, ডায়াবেটিস। স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রথম কারণ হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ, যেখানে হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে প্রথম কারণ হচ্ছে রক্তে বাড়তি কোলেস্টেরল। রক্তচাপের ঠিকমতো চিকিৎসা করলে স্ট্রোক কমিয়ে ফেলা যায় ষাট শতাংশ। আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করলে হার্ট অ্যাটাক কমানো যায় শতকরা ২৫ ভাগ। হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে পারিবারিক প্রবণতা থাকে অনেক বেশি। বিশেষত কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে। স্ট্রোকের বেলায় এই পারিবারিক প্রবনতা বেশি নয়। মানসিক চিন্তামুক্ত থাকা, আদর্শ শারীরিক ওজন রাখা, ফল-শাকসবজি বেশি পরিমাণে খাওয়া, ধুমপান না করা, অতিরিক্ত মদ্যপান না করা, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা ইত্যাদির সুফল হার্ট অ্যাটাক এবং ব্রেন স্ট্রোক দুটির ক্ষেত্রেই অতুলনীয়। পরিশেষে বলি, প্রথম যাদের ব্রেন স্টোক হয়, পরবর্তীকালে তাদেও মধ্যে বেশিরভাগই মারা যান হার্ট অ্যাটাকে। তাই একটি অসুখ হলেই অন্যটি সম্বেন্ধে সতর্কতা বিশেষ জরুরি। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন