×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

কোমরে চাপ পড়ে এমন কোনও কাজ নয়

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-10-08 15:42:15

কোমর-ঘাড় বা হাঁটুতে ব্যথা আজ ঘরে ঘরে এবং আজকাল খুব কম বয়স থেকেই শুরু হচ্ছে আক্রমন। তবে কোমরের বাত আর স্লিপ ডিস্ক আলাদা রোগ। লাম্বারস্পন্ডাইলোসিস হলে ব্যথা কোমরেই সীমাবদ্ধ থাকে, কিন্ত স্লিপ ডিস্কে ব্যথা এক পা বা দু’পায়েই প্রসারিত হতে পারে।
স্লিপ ডিস্ক কেন হয় ? স্লিপ মানে পিছলে যাওয়া অর্থাৎ নিজস্ব স্থান থেকে সরে যাওয়া। অর্থাৎ দুটি কশেরুকার অন্তর্বর্তী যে ডিস্ক থাকে সেটিতে একটি বিশেষ ধরনের পরির্বতন দেখা দেয়। যার ফলে ডিস্কের অংশবিশেষ মেরুদন্ডের স্নায়ুর উপর চাপ দিয়ে প্রচন্ড ব্যথার সৃৃষ্টি করে। কেন জানতে মেরুদন্ডের কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্কের অ্যানাটমি জানা দরকার। ডিস্ক হচ্ছে চাকতির  মতো একটি পদার্থ যার দুটি বিশেষ অংশ আছে। যার বহিরাবরনকে ‘অ্যানিউলাস ফাইব্রোসাস’ এবং ভিতরের জিলেটিনের মতো পদার্থকে বলে ‘নিউক্লিয়াস পালপোসাস’। এই ভিতরের পদার্থটিকে আবরনীর মতো বেঁধে রাখে ইলাস্টিকের মতো অ্যানিউলাস ফাইব্রোসাস, যা বিশেষ ধরনের ফাইব্রাস টিস্যু দ্বারা তৈরি । এটির কয়েকটি স্তর থাকে । নিউক্লিয়াস পালপোসাসের মধ্যে থাকে প্রোটিও গ্লাইকাসের ম্যাট্রিক্স যার মধ্যে জল থাকে। সেজন্য এটি তরল পদার্থের মতো। ডিস্কের দুটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অংশ যেমন  অ্যানিউলাস ফাইব্রোসাস এবং নিউক্লিয়াস পালপোসাস স্বাভাবিক অবস্থায় ঠিকঠাক থাকে। অর্থাৎ চলাফেরা , সহ্যমতো ওজন তোলা বা বহন করা, সামনে ঝোকাঁ বা বসা ইত্যাদিতে কোন অসুবিধা বা সমস্যা দেখা দেয় না। মেরুদন্ডে চাপ পড়লে অথবা ভারী কাজ করলে ডিস্কের মত শক্ত অথচ ইলাস্টিকের মতো বাইরের আবরনী ডিস্কের অভ্যন্তরস্থ জেলির মত পদার্থটিকে স্বস্থানে বেঁধে রাখে। যার জন্য কোন উপসর্গ দেখা দেয়না। কিন্তু সহ্যের অতিরিক্ত ওজনের কোন জিনিস তোলার জন্য অথবা জোরে হাঁচি-কাশি হলে বাইরের আবরনী ক্ষেত্রবিশেষে নিউক্লিয়াস পালপোসাসকে ধরে রাখতে পারে না। অ্যানিউলাস ফাইব্রোসাস যতটা সম্ভব ইলাস্টিকের মত প্রসারিত হয়ে পালপোসাসকে বেরিয়ে আসতে বাধা দেয়। কিন্তু তার ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে  নিউক্লিয়াস পালপোসাস বহিরাবরনীকে ছিন্ন করে বেরিয়ে আসে। যাকে বলে ডিস্ক প্রোলাপ্স বা ডিস্ক বালজিং।
ওই ডিস্ক প্রোলাপ্স সামান্য ধরনের হলে সমস্যা জটিল নাও হতে পারে। হয়তো কোমওে ব্যথা বা মাংসপেশিতে টান ধরে কিছুটা অস্বস্তির সৃস্টি করতে পারে। কিন্তু যদি প্রোলাপ্স খুব বেশি হয় তাহলে ওই বহিরাগত ডিস্ক নার্ভ রুটে চাপ দিয়ে পা দুটোকে অবশ করে দিতে পারে। এ ধরনের অবশ হয়ে যাওয়াটা অল্প বা ভীষন হতে পারে। প্যারাপ্লেজিয়া অর্থাৎ নিম্নাংশ পুরোপুরি অবশ হলে প্রসাবের সমস্যা হয় । কারন বেশির ভাগ রোগীরই প্রসাবের থলি বা মূত্রাশয় অকেজো হয়ে পড়ে বা সংকোচন ও প্রসারন ক্ষমতা হারেয়ে ফেলে। যার ফলে মূত্রাশয় থেকে প্রসাব বহির্গত হয়না। এর জন্য বিশেষ ধরনের নল মূত্রনালির মধ্যে দিয়ে মূত্রাশয়ে ঢোকানো হয়। এছাড়াও ভালো করে ফিজিওথেরাপি দিতে হবে। পায়ের ব্যায়াম ও ইউরিনারি ব্লাডারের এক্সারসাইজ বিজ্ঞান সম্মত ভাবে হরতে হবে। দেখা গেছে অনেক ভারী জিনিস তুলতে গিয়ে চিৎকার করে কোমড়ে হাত রেখে মেঝেতে বসে পড়েন কোমড় থেকে পা পর্যন্ত অসহ্য ব্যথা শুরু হয়। এসব ক্ষেত্রে সাধারনত স্লিপ ডিস্ক হয়ে থাকে। সাধারনত লাম্বার ফোর ও ফাইভ অথবা লাম্বার ফাইভ ও স্যাকরাল ওয়ান ভার্টিব্রার মধ্যবর্তী ডিস্কে এধরনের প্রোলাপ্স বেশি দেখা যায়। এম, আর, আই করে ওই সমস্যা সঠিকভাবে ধরা যায় এবং ডিস্ক বালজিং-এর প্রকৃতি বা গভীরতা বুঝে অপারেশন করতে হতে পারে। একবার একটি খেলাধুলার আসরে ‘টাগ অব ওয়্যার’ চলতি কথায় যাকে বলে ‘দড়ি টানাটানির’ প্রতিযোগিতা চলাকালিন একজন মোটাসোটা প্রতিযোগী ‘বাপরে কোমড় গেল’ বলে মাটিতে শুয়ে পড়ে কাতরাতে থাকেন। বুঝতে পারা গেল যে তার বড় ধরনের স্লিপ ডিস্ক হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। সেজন্য সবসময় সামনে ঝুঁকে কোন ভারী জিনিস তোলা অথবা কোমর ঝুঁকিয়ে চাপ দিয়ে কোন কাজ না করাই উচিত। বন্ধুরা ঠাট্রার ছলে অথবা রাগের বশে একজন অপরজনের মেরুদন্ডকে সমনে ঝুঁকিয়ে কোমরে প্রচন্ড চাপ দিলে স্লিপ ডিস্ক হতে পারে।
পুনশ্চঃ বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক মাসিক পত্রিকা ‘সুস্বাস্থ্য’ এ প্রকাশিত প্রবন্ধ অবলম্বনে রচিত