হার্ট অ্যাটাকের বড় কারণ ধূমপান
হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-06 11:37:04
হার্ট হল আমাদেও বেচেঁ থাকার প্রাণভোমরা। তাই হার্টে যেকোনো রকম সমস্যা দেখা দিলে আমাদেও জীবনে বিপত্তি ঘনিয়ে আসে। অনেক সময় হার্টের কারণে জীবন সংশয় হতেও দেখা যায়। বর্তমানে হার্টের রোগ মহামারীর আকার নিয়েছে। পনেরো-কুড়ি বছর আগেও হার্টেও অসুখকে বড়লোক বা স্বচ্ছল শ্রেণীর রোগ বলা হত। বর্তমানে সে ধারনা বদলে গেছে। হার্টের অসুখের এখন কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। ৪০-৪৫ বছর বয়সেও হার্ট অ্যাটাক অহরহ হতে দেখা যায়। অনেক সময় সচেতনতার অভাবও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। কারণ হার্ট অ্যাটাকের নানান কারণ দেখা যায়। যেমন হাই পার টেনশন, মানসিক চাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, তামাক সেবন বা ধূমপান ও পারিবারিক ইতিহাস। যদিও হার্টের রোগীদের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগেরই উপরিক্ত কারণ ছাড়াই হার্টের অসুখ দেখা যায়। শুধুমাত্র হেটেঁই হার্টের অসুখের সম্ভবনা অনেকটাই কমিয়ে ফেলা সম্ভব। প্রতিদিন তিনি কিমি একটানা হাঁটতে হবে। এর ফলে হার্ট পাম্প করে বেশি করে। দেখা গেছে যারা নিয়মিত হাঁটেন তাদের হার্টের অসুখ হলেও জটিলতা থাকে না বললেই চলে। লক্ষণ গভীর রাতে যদি বুকে ব্যথায় ঘুম ভেঙে যায় তাহলে নিশ্চিত থাকুন এটা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। বুকের বাঁদিকে প্রচন্ড ব্যথা, মনে হয় যেন কেউ পাথর চাপা দিয়েছে, হাঁফ ধরা, প্রচন্ড ঘাম, বুকের বাঁদিকের ব্যথা হতের কনুই পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়লে বুঝতে হবে এটা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। গ্রামের তুলনায় শহরের লোক হার্টের অসুখে আক্রান্ত হয় বেশি। এর একটা কারণ হল জীবনশৈলী বা লাইফস্টাইলের পরিবর্তন। আমাদের দেশ যত উন্নত হচ্ছে, ততই আমরা যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়ছি। আগে মানুষ যত বেশি হাঁটাহাঁটি, খাটাখাটি করত এখন তা অনেক কমে গেছে। কোথাও যেতে গেলে আমরা গাড়ি ব্যবহার করি, সিঁড়ি ভাঙার বদলে লিফটে ওপরে উঠি, কাপঢ় কাচি ওয়াশিং মেশিনে, মশলা পিষি মিক্সিতে। এসব কারণে আমাদের শরীর দিন দিন অকেজো হয়ে পড়ছে। খাওয়া দাওয়াতেও এসেছে বিরাট পরিবর্তন। চর্বি জাতীয় খাবার, ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড হার্টের অসুখ বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্র বেড়ে হার্ট ব্লক হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং হার্টের অসুখকে দূরে রাখতে হলে বদলে ফেলতে হবে জীবনশৈলি। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটতে হবে। শুধুমাত্র হেটেঁই হার্টের অসুখের সম্ভবনা অনেকটাই কমিয়ে ফেলা সম্ভব। প্রতিদিন তিনি কিমি একটানা হাঁটতে হবে। এর ফলে হার্ট পাম্প করে বেশি করে। দেখা গেছে যারা নিয়মিত হাঁটেন তাদের হার্টের অসুখ হলেও জটিলতা থাকে না বললেই চলে। হাঁটার ব্যাপারে অনেক বুঝতে পারেন না সকালে হাঁটবেন না বিকেলে। সকালেই হাঁটাই সব থেকে ভালো। কারণ দূষণ কম থাকে, মনট্ ভালো থাকে। অনেকটা বিশ্রামের পর হাঁটা হয় বলে মনে তখন কোনো টেনশন বা চিন্তা থাকে না--একদম ফ্রেস মাইন্ড। সকালে যাদের সম্ভব হয় না তারা বিকেলে হাঁটুন, কিন্তু উপকারটা সকালে বেশী। হাঁটতে যাবার আগে যদি মনে হয় শরীরটা ভালো লাগছে না, তাহলে হাঁটতে বেরোবেন না কোনোভাবেই। শরীর খারাপ অবস্থায় হাঁটতে গেলে বিরাট ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এরকম ঘটনাও ঘটেসে যে, শরীর খারাপ লাগছে, তা সত্বেও হাঁটতে বেরিয়েছেন, রাস্তায় হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেছে। একদিন না হাঁটলে খুব বড় একটা ক্ষতির কিছু নেই। তাই শরীর খারাপ থাকলে শুয়ে বিশ্রাম নিন, বেরোবেন না। প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি ওজন বাড়াতে দেয় না। বরং ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক ফ্যাক্টর ডায়াবেটিসকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে সকালে বা বিকালে হাঁটা। যারা উঁচু বাড়িতে বসবাস করেন, যেমন দোতলা বা তিনতলা, সবসময় চেষ্টা করুন সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠতে। আর একটা দরকারি কথা হল ছ’ থেকে আট ঘন্টা দৈনিক ঘুম। ঘুম যদি নাও আসে সঠিকভাবে বিশ্রাম করুন। শুয়ে থাকুনচোখ বুজে। বিশ্রাম ঠিকভাবে না হলে ব্লাডপ্রেসার বাড়তে পারে। যাদের ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজ আছে, তাদের ক্ষেত্রে এমনকি রক্ত সঞ্চালন কম থাকে। এসব ক্ষেত্রে বিশ্রাম আরও বেশি দরকার। হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ ধূমপান। দেখা গেছে অধূমপায়ীদের থেকে ধূমপায়ীদের হার্টের অসুখের সম্ভবনা প্রায় পাঁচগুন বেশি। আবার যাদের হার্টের অসুখ আছে এমন ধূমপায়ীদের ৭০ শতাংশ মৃত্যর সম্ভাবনা বেশী থাকে অধূমপায়ীদের থেকে। ধূমপানের একটা টানও শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। অনেকে বলে টেনশনের কারণে ধূমপান করেন। এটা একটা ভুল। বরং ধূমপান করলে টেনশন আরও বাড়ে। ধূমপান করার অজুহাত সাইকোলজিক্যাল। হার্টের আর একটি বড় শক্র অতিরিক্ত ওজন ও কুঁড়েমি। ওজন বাড়ার সাথে সাথে রক্তচাপ আর ডায়াবেটিস বাড়ে। তাই প্রাতঃভ্রমণ বা সন্ধ্যাকালীন ভ্রমণের সঙ্গে সঙ্গে কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা উচিত। সচেতন থাকুন হার্টের অসুখের চিকিৎসার পাশাপাশি জীবনশৈলীর পরিবর্তন করা অবশ্য কর্তব্য। ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। শরীরচর্চা ও দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খাওয়া-দাওয়ার ধরন বদলাতে হবে। ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে হবে। মদ্যপান বন্ধ করতে হবে, না পারলে কমিয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ডাক্তারি চেকআপ ও প্রেসারের ওষধ খাওয়ার যাতে ভুল না হয় লক্ষ রাখতে হবে। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন