×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি কতটা কার্যকরী

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-06 12:40:57

চিকিৎসাশাস্ত্রের অন্তর্গত যেকোনো পদ্ধতির কার্যকারিতা নির্ভও করে কোন প্রেক্ষিতে পদ্ধতিটি ব্যবহার হচ্ছে তার ওপর। ‘অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি’ও এর ব্যকিক্রম নয়। সবাই জানে হৃদপিন্ডের ধমণীর সংকোচন বা স্টেনোসিসের চিকিৎসা ‘অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি’ বা ‘করোনারী আর্টারি বাইপাস সার্জারি’, সংক্ষেপে সি.এ.বি.জি-র মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর কোটি কোটি লোকের হৃৎপিন্ডের ধমনীর চিকিৎসা এই দুই পদ্ধতিতে সফলভাবে করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। তবু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিভিন্ন সময়ে নানান সংবাদ মাধম্যে ‘সি.এ.বি.জি’-কে একটি অপেক্ষাকৃত উন্নততর পদ্ধতি হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে এবং হয়ে চলেছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠে ‘অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি’ তাহলে কতটা কার্যকারী? অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিপদ্ধতি এই পদ্ধতিতে একটি প্রায় চুলের মতো সরু তার ধমনীর সংকোচনের মধ্যে দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর এই তারের ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় একটি পলিমারের তৈরি সরু পাইপ  যার মুখটি সংকোচনের জায়গাটিতে বেলুনের মতো করে ফুলিয়ে সংকোচনটি কিছুটা খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তী ধাপে বেলুনটি চুপসিয়ে, পাইপটি বার করে নিয়ে, আরও একটি ওরকম বেলুন পাঠানো হয়। যার গায়ে জড়ানো থাকে একটি তারের জালি, যাকে চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় বলা হয় ‘স্টেন্ট’। সংকোচনের জায়গাটিতে বেলুন ফোলালে ‘স্টেন্ট’ খুলে গিয়ে ধমনীর দেওয়ালে একবারে এঁটে বসে এবং সংকোচনটি সম্পূর্ণভাবে খুলে যায়। এরপর বেলুনটি চুপসিয়ে বার করে নেওয়া হয়। স্টেন্টটি ধমণীর দেওয়ালে এঁকে থাকে এবং তার ভিতর দিয়ে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ চলতে থাকে। অনেকের ধারণা মতো বেলুনটিকে কিন্তু কখনোই ফাটানো হয় না। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির কার্যকারিতা ‘অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি’-র বিরুদ্ধে কিছু কার্ডিয়াক সার্জেন এবং অনেক সাধারণ মানুষের প্রধান অভিযোগ এই যে, স্টেন্টটি কিছুদিন পরেই নাকি আবার বন্ধ হয়ে যায়।কিন্তু বাস্তব তা বলে না।প্রধানত লাগানোর এক বছরের মধ্যেই স্টেন্ট বন্ধ হওয়ার একটা সম্ভবনা থাকে। ওষুধ নির্গতকারী স্টেন্ট বা ‘ড্রাগ এলুটিং স্টেন্ট’-এর ক্ষেত্রে এই হার সঠিকভাবে বললে ৮-১০%। এক বছরের পরে কিন্তু স্টেন্ট বন্ধ হওয়ার থাকে না বললেই হয়। এবং সাধারণত সেটি রোগীর বাকি জীবন পর্যন্ত ভালোভাবেই কাজ করে চলে। অপরদিকে, যারা মনে করেন, বাইপাস করালে আর কোনো ঝঞ্ঝাট নেই, তাদেও জ্ঞাতার্থে জানাই পায়ের শিরা দিয়ে বাইপাস করলে ৫ বছরের মধ্যে ২৫-৫০% ক্ষেত্রে সেটি বন্ধ হয়ে যায় এবং বুকের ধমনী দিয়ে করলে ১০ বছরের মধ্যে প্রায় ১৫% বন্ধ হয়ে যায়। যেকোনো হৃদপিন্ড বিষয়ক চিকিৎসাশাস্ত্রেই কথাগুলি সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে। আসলে ধমনীর সংকোচন অনেকটা জলের কলে ময়লা জমে বন্ধ হয়ে য়ওয়ার মতো। জলের কলে ময়লা জমে প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে যেমন মিস্ত্রি ডেকে সারাতে হয়, তেমনই ধমনীর সংকোচন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় বেশি হলে ‘অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি’ বা ‘বাইপাস’ সাহায্য নিতে হয়। কিন্তু কল সারানোর পরে, জলে যদি ফিল্টার না বসানো হয় তাহলে কলটির যেমন আবার বন্ধ হবার সম্ভবনা থাকে, তেমনি ‘বাইপাস’ বা ‘অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি’র পরে ধমনীর দেওয়ালে আবার খারাপ চর্বি জমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তা আবার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই যাই করুন না কেন, তার পরে সঠিক খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা, তামাক সেবন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এবং ডায়াবেটিস রোগটিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখটা একান্ত জরুরি। কোন পদ্ধতি কতটা কার্যকরী এ নিয়ে বিতর্ক না বাড়িয়ে উপরোক্ত বিষয়ে বরং আরো মনোযোগী হওয়াটাই বেশি বাঞ্জনীয়। সাধারণভাবে একটি বা দুটি ধমণীতে অল্প জায়গা জুড়ে থাকা সংকোচন সহজভাবে খোলা যায় এবং সংকোচনগুলি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির দ্বারা খবই কার্যকরভাবে খোলা সম্ভব এবং তার ফলাফল  বিশেষ করে ‘ড্রাগ ইলিউটিং স্টেন্ট’ ব্যবহার করলে বাইপাস থেকে তা কোনো অংশে কম নয়। তবে একথা মনে রাখেতে হবে যে, ‘ড্রাগ ইলিউটিং স্টেন্ট’ সর্বক্ষেত্রে ব্যবহার করা বাঞ্জনীয় নয় এবং এর জন্য বিশেষজ্ঞের মতামত অত্যন্ত জরুরি। অন্যদিকে একটির বেশি ধমনীতে, অনেকটা জায়গা জুরে থাকা, সহজে খোলা যায় না এমন সংকোচনগুলি বাইপাসের দ্বারা চিকিৎসা করাই ভালো। বলা হয়ে থাকে, হৃদপিন্ডের  কার্যক্ষমতা হ্রাস পেলে বাইপাস সর্বোত্তম। কিন্তু এর সঙ্গে রোগীর ফুসফুসের অবস্থা, কিডনির অসুখ ইত্যাদি, আনুষঙ্গিক কিছু বিষয় দেখে নেওয়াটা জরুরী। কারণ, সেক্ষেত্রে বাইপাসের ফলে রোগীর শারীরিক অবস্থার সার্বিক অবনতি হতে পারে। আর একটা কথা ভুললে চলবে না, যে যাই বলুক, হৃৎপিন্ডের কার্যক্ষতা একবার হ্রাস পেলে সেটিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানো যায় না- সে আপনি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি বা বাইপাস যাই করান না কেন। তবে একটি ক্ষেত্রে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিও  কার্যকারিতা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। সেটি হল ‘হার্ট অ্যার্টাক’, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ‘অ্যাকিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফর্কশন’। এই ধরনের অসুখে ধমনীটি ১০০% বন্ধ হয়ে যায় এবং একমাত্র অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির দ্বারাই সেটি পুরোপুরি খুলে দেওয়া সম্ভব। একমাত্র সেক্ষেত্রে হৃৎপিন্ডের হ্রাস প্রাপ্ত কার্যক্ষমতা পুরোপুরি স্বভাবিক হয়ে যেতে পারে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে নানান সময়ে অনেক সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করা হয়ে থাকে যে ‘ হার্ট অ্যাটাক’- এর ওষধের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তব হল এই যে, ওষধ কেবলমাত্র হার্ট অ্যাটাকের প্রথম ৩ ঘন্টার মধ্যেই সবচেয়ে কার্যকারী এবং সেখানেও দেখা যায় ব্যথা কমে গেলেও ধমনীর সংকোচনটি পুরো খুলে ফেলা যায় না। ফলে অধুনা চিকিৎসাশাস্ত্রে ওষধ দেওয়া হলেও প্রতিটা হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে ‘অ্যাঞ্জিওগ্রাফি ’ এবং দরকার হলে ‘অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি ’ করতে বলা হয়। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন