×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

এখন হার্টে স্টেন্ট বসিয়ে এড়ানো যায় বাইপাস

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-06 13:01:19

সাধারণভাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে হার্টের রোগীর সংখ্যা বেশি দেখা যায়। এ ব্যাপারে ভারত সবার প্রথমে। ভারতে গত দশ-পনেরো বছরে হার্ট অ্যাটাকের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল খুব বেশি। হার্ট অ্যাটাকের কোনো বয়স হয় না, যেকোনো বয়সেই হতে পারে। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে অনুর্ধ্ব ৪০ বছরের মানুষদের মধ্যেও হৃদরোগের সমস্যা ক্রমবর্ধমান। এর প্রধান কারণ লাইফ স্টাইলের পরিবর্তন, নানান মানসিক জটিলতা, ধূমপান ও মদ্যপান, ক্ষতিকর খাবার অর্থাৎ জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুড খাবার প্রবণতা এবং শ্রমবিমুখতা ও শরীরচর্চার অনীহার মতো কিছূ কারণ। হার্ট অ্যটাকের বা আনস্টেবল অ্যাঞ্জাইনাতে ওষুধের যেমন একটা ভূমিকা থাকে, তেমনি ওষুধ ছাড়াও কিছু পদ্ধতি গুরুত্কপূর্ণ। অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করে অ্যাঞ্জিপ্লাস্টি করা হয়। হার্ট অ্যাটাক আক্রান্তকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেখানে কার্ডিয়াক ফেসিলিটির সম্ভব যেখানে কার্ডিয়াক ফেসিলিটির ব্যবস্থা আছে সেখানে নিয়ে পৌঁছতে পারা যায় তাহলে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে স্টেন্ট লাগিয়ে দিলে হার্টকে খুব ভালোভাবে রক্ষা করা যায়। প্রাইমারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির গুরুত্ব মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশন বা হার্ট অ্যাটাক হলে এখন ট্রিটমেন্ট অফ চয়েস হচ্ছে প্রাইমারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। অর্থাৎ রোগীগে হাসপাতালে এনে হার্ট অ্যাটাকের  ব্যাপারে নিশ্চত হওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা। এই পদ্ধতিতে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি শরীরের কোনও অঙ্গের ধমনীতে যদি ব্লকেজজনিত কারণে রক্ত চলাচলের অসুবিধা সৃষ্টি হয়, প্রয়োজনের তুলনায় কম রক্ত চলাচল করে, তাহলে ওই অংশে যে পদ্ধতির সাহায্যে ব্লকেজ দূর করে রক্ত চলাচলের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাকে বলে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতে প্রাথমিক ফল ভালো হলেও ৪০-৫০ ভাগ ক্ষেত্রে ধমনী আবার ব্লক হয়ে যায়। এই কারণে বর্তমানে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতে স্টেন্ট বসানো হয়। এই স্টেন্টের ব্যবহার ধমনী সরু হয়ে আসার যে সম্ভবনা তৈরি হত, সেই সম্ভবনা অনেকাংশে কমে যায়। স্টেন্ট বিভিন্ন রকম হয়-নন মেডিকেটেড স্টেন্ট ও মেডিকেটেড স্টেন্ট। নন মেডিকেটেড স্টেন্ট দ’রকম হয়- বেয়ার মেটাল ও কোবাল্ট ক্রোমিয়ায় বেয়ার মেটাল। স্টেন্ট ও মেডিকেটেড স্টেন্ট মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে মেডিকেটডি স্টেন্টের গায়ে একটা ওষুধ লাগানো থাকে। সেই ওষুধটা একমাস কার্যকারী থাকে। বেলুন অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিযখন করা হত তখন ধেখা যেত ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ব্লকেজ-এর ফিরে আসার সম্ভবনা থাকত। বেয়ার মেটাল স্টেন্ট ব্যবহারে সেই সম্ভবনা প্রায় শূন্য থেকে ৫ শতাংশ নামিয়ে আনা সম্ভব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখন সেই কারণে মেডিকেটেড স্টেন্ট লাগানো হয়। বিভিন্ন ধরনের মেডিকেটেড স্টেন্ট আছে। ফাস্ট জেনারেশন, সেকেন্ড জেনারেশন ইত্যাদি। এখন তো লেটেস্ট স্টেন্ট জেনারেশন লাগানো হচ্ছে। ফাস্ট জেনারেশন স্টেন্টের তুলনায় সেকেন্ড জেনারেশন স্টেন্ট অবশ্যই অনেক ভালো। কারণ খুব সুবিধা হয় বসানোর ক্ষেত্রে। এতে কিছু ড্রাগও  পলিমার থাকে যাতে পুনরায় ব্লকের সম্ভবনা কমে যায়। কিন্তু বর্তমানে যে লেটেস্ট জেনারেশন স্টেন্ট এসেছে সেগুলো বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার। অর্থাৎ মেটালের তৈরি স্টেন্টটা শরীরে থেকে যায়, তেমনি ওষুধ লাগানো পলিমারটাও থেকে যায়। পলিমারটা জড়ানো থাকে ওষুধ লাগানো স্টেন্টের গায়ে। কিন্তু লেটেস্ট সেন্টের পলিমারটা তিন মাস থেকে ন’মাসের মধে শরীরের সঙ্গে মিশে যায়। এর ফলে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির পর লং টার্ম ডুয়েল অ্যান্টিপ্লেলেট থেরাপি করতে সুবিধা হয়। মানে অ্যাসিপিরিন ও ক্লোপিডগ্রেল জাতীয় দু’রকমের ওসুধ খাওয়াতে হয় যাতে রক্ত চলাচলটা স্বাভাবিক থাকে, রক্ত তরল থাকে এবং স্টেন্টের মধে রক্ত জমাট বাঁধতে না পারে। আগে যেমন পুরনো জেনারেশসনর স্টেন্টে কম পক্ষে এক বছর থেরাপিটা দিতেই হত, নতুন বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার স্টেন্ট বাসোনোর ক্ষেত্রে তিন মাসের পর আর ডুয়েল অ্যান্টি প্লেটলেট দিতে হয় না। তাতে করে সুবিধাটা এই যে, কোনো রোগীর যতদ অন্য কোনো অপারেশন যেমন গলব্লাডার, অ্যপেন্ডিসাইটিস ইত্যাদি করতে হয় সেটা তিন মাস পর করে নেওয়া যায়। কারণ ডুয়েল অ্যান্টি প্লেটলেট চলাকালীন অপারেশন করলে ব্লিডিংয়ের সম্ভবনা বেশি থাকে। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি যেমন অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাকের লাগে তেমনি আনস্টেবল অ্যাঞ্জাইনা অর্থাৎ হার্ট অ্যাটাক হয়নি কিন্তু তার আগের স্টেজে আছে, সেক্ষেত্রেও স্টেন্ট বসানো যায়। আগে লোকের ধারণা ছিল বাইপাসটা হচ্ছে স্থায়ী সমাধান, স্টেন্ট হচ্ছে টেম্পোরারি। কিন্তু দেখা গেছে নতুন জেনারেশন যে স্টেন্টগুলো  বেরিয়েছে তাতে বাইপাস ও অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতে একইরকম ফলাফল। সার্জারি করে বাইপাস করলে একটু রিস্ক থাকে।  অপারেশনের পর যে অসুবিধাগুলো হয় অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতে সেরকম কোনো অসুবিধা হয় না । কোনো ধমনীতে ব্লক থাকার কারণে একবার স্টেন্ট বসানো হলে পরবর্তী সময়ে ধমনী বা অন্য কোনো ধমনী ব্লক হলে আবার স্টেন্ট বসানো যেতে পারে। বারবার স্টেন্ট বসানোর কোনো সমস্যা হয় না। মেডিকেটেড স্টেন্ট পলিমার দিয়ে তৈরি হওয়ার ফলে সামান্য কিছু  পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরবর্তী সময়ে দেখা দিতে পারে। কিন্তু নন-মডিকেটেড স্টেন্টে এরকম কেসো প্রতিক্রিয়া হয় না। স্টেন্ট বসানোর পর সাধারণত তিন-চার দিন পরে রোগী বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। পুনরায় যাতে ব্লকেজ ফিরে না আসে তার জন্য রোগীকে নিয়ম করে ওষুধ, জীবশৈলীর ও খাওয়া-দাওয়ার পরিবর্তন করতে হয়। যদি কেউ ভাবে স্টেন্ট লাগানো মানে ‘রি-ব্লক’ হবে না সেটা ভুল। বাইপাস হোক বা স্টেন্ট বসানোই হোক ব্লকেজ ফিরে আসতে পারে। বাইপাসের ক্ষেত্রে বহুবার দেখা গেছে পাঁচ-সাত বছর পর বাইপাসের রোগীর হার্ট পুনরায় ব্লক হয়েছে। স্টেন্ট বসালে যেটা হয় প্রথম ছ’ মাসের মধ্যেই বোঝা যায় ব্লকেজ আবার আসছে কি না। প্রথম কথা রোগীকে ঠিকাঠাক ওষুধ খেতে হবে। লাইফস্টাইল ঠিক করতে হবে। অনেকে হার্ট অ্যাটাক হলে সেই সময় নিগারেটটা ছেড়ে দিলেন, দু’বছর পর আবার ধরলেন, এরকম ক্ষেত্রে রোগ ফিরে আসার সম্ভবনা বেশি থাকে।  তবে সবকিছু ঠিকঠাক করলেও বাইপাস হলেও শতকরা ১০ ভাগ ক্ষেত্রে ব্লকেজ ফিরে আসে। মেডিকেটেড স্টেন্টে পুনরায় ব্লকেজ হওয়ার সম্ভবনা শতকরা ৫ ভাগ। ওষুধ, লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা সত্ত্বেও। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ  হল বাইপান হোক কিংবা অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হোক, নিয়মিত ওষুধ খাওয়াটা জরুরী। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয়ে গেছে মানে এই নয় যে ‘আমি আর ওষুধ খাব না’। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি আর বাইপাসে ব্লকটা খালি করেছে অর্থাৎ অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস, তার চিকিৎসা কিন্তু বাইপাস বা স্টেন্ট করে হয় না। সেটার চিকিৎসা ওষুধ খেয়েই হয়। কোনো মানুষের যদি হার্টের অসুখ ধরা পড়ে, সারাজীবন ওষুধ খাওয়া এবং নিয়মিত ফলোআপ এবং সঠিক জীবনযাত্রা দৃঢ়ভাবে মেনে চলতে হবে। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন