×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

বয়স্কদের হার্টের অসুখ

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-07 15:41:52

হার্টের নানারকম অসুখ। রিউম্যাটিক হার্ট, ইসকিমিক হার্ট, হাই পারটেনসিভ হার্ট, থাইরোটক্সিকোসিস হার্ট, কার্ডিওমায়োপ্যাথি ও মায়োকার্ডাটিস। এছাড়া কিছু হার্টের অসুখ আছে যেগুলো পাশ্চাত্য দেশে দেখা যায়। পেনিসিলিন প্রতিষেধক ও ভালো আর্থ-সামাজিক অবস্থার দৌলতে রিউম্যাটিক হার্ট ডিজিজ পাশ্চাত্য দেশ থেকে উধাও। আমাদের লজ্জার ব্যাপার এই রোগ দেখার জন্য পাশ্চাত্য দেশের লোকেরা আমাদের মেডিকেল কলেজগুলোতে ভিড় জমান। এছাড়া আছে বয়স্কদের জন্মগত হার্টের অসুখ ও হার্টের কনডাক্টিং সিস্টেম বিকলতার জন্য সিক সাইনাস সিনড্রোম বা হার্ট ব্লকের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুতর অসুখ। বেশি বয়সে শরীরবৃতাতীয় প্রক্রিয়াগুলোর পরিবর্তন ঘটে, যার প্রভাব আবশ্যকীয়ভাবে হার্টের ওপর এসে পড়ে। হোমিওস্ট্যাসিস রিজার্ভের সংকোচন শুরু হয়। আশ্চার্যের ব্যাপার এটি শুরু হয় তিন দশক থেকে এবং ধীরে ধীরে বাড়দে থাকে। এর জন্য বয়স্ক ব্যক্তিদের রোগের একদম প্রথম অবস্থায় লক্ষণ দেখা দেয়। দু’ একটি উদাহরণ দিই। মাঝবয়সী কারও থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেশি হলে (হাইপার থাইরয়েডিজম) হার্টের ওপর তার প্রভাব নাও পড়তে পারে। বয়স্কদের এটা শুরু হয় হার্ট ফেলিওর দিয়ে। রক্তে সুগারের মাত্রাধিক্যে বয়স্কেরা অনেক সময় ননকিটোটিক হাইপারঅসমোলার কোমর চলে যেতে পারেন। গড় আয়ু আগের তুলনায় এখন অনেক বেড়েছে। সুতরাং ক্যানসারের মতো বয়স্কদের হার্টের রোগগুলোর প্রকোপ দিন দিন বেড়ে চলেছে। যদিও এই অসুখগুলোর ক্ষেত্রে জেনেটিক ও লাইফস্টাইল ফ্যাক্টর কাজ করে। বয়স হচ্ছে প্রধান রিস্ক ফ্যাক্টর। বয়স বাড়ার সাথে হার্ট ও রক্তনালীরে যে পরিবর্তন ঘটে তা সংক্ষেপে বলি। বয়স বাড়ার সাথে ধমনীর দেওয়াল শক্ত হয়ে যায় (ইনটিমাল থিকেনিং) “বয়স বাড়ার সাথে কার্ডিয়াক ইনডেক্স ও হার্ট রেট পঁচিশ শতাংশ কমে যায়। হার্টের এনডায়াস্টলিক ভল্যুউম ত্রিশ শতাংশ বাড়ে। পাম্পিং ক্ষমতা পনেরো শতাংশ কমে যায়। রক্তে ক্যাটেকোলামিন বাড়ে। বিটা অ্যাড্রেনারজিক উত্তেজক হার্টের প্রতিক্রিয়া কমে যায়। ” ধমনীর স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়। ব্লাড প্রেসার নির্ধারিত হয় কার্ডিয়াক আউটপুট ও পেরিফেরাল ক্ষেত্রে অনেকটা নির্ভর করে রক্তনালীর নমনীয়তার ওপর। রক্তনালীর মধ্যে এন্ডোথেলিয়াল কোষ থাকে। হার্ট ফেলিওর, হাইপর টেনশন রক্তে লিপিডের আধিক্য, সুগারের আধিক্য এই রোগগুলির এন্ডোথিলিয়ান ডিসফাংশন হয়। এই কোষগুলো থেকে নাই ট্টিক অক্সাইড ড, এনডোথিলিন-১ নির্গত হয় যা ধমনীর নমনীয়ত বাড়ায়। বয়স বাড়লে রক্তনালীর ওপর এইনমনীয়তা কমে যায়। ন্যাশনাল হেল্থ ও নিউট্রিশান এক্সামিনেশন ও ফার্মিহাম হার্ট স্টাডিতে দেখা গেছে বয়স বাড়ার সাথে হাইপার টেনশন, বাম নিলয়ের সাইজ বৃদ্ধি ও হৃদযন্ত্রের ছন্দবৈকল্য বাড়ে। বয়স বাড়ার সাথে কনডাক্টিং সিস্টেমের পরিবর্তন হয়। হার্টের পেসমেকার সাইসোএট্রিয়াল নোডেল চারপাশে ফাইব্রোসিস হতে থাকে। সাইটোস্কেলিটনের চারপাশে কমবেশি ক্যালসিফিকেশন হতে শুরু করে। এ.ডি নোড, বান্ডেল অফ হিস কাছাকছি থাকতে সিক সাইনাস সিনড্রোম ও হার্ট ব্লক হয়। বয়স বাড়ার সাথে কার্ডিয়াক ইনডেক্স ও হার্ট রেট পঁচিশ শতাংশ কমে যায়। হার্টের এনডায়াস্টলিক ভল্যুউম ত্রিশ শতাংশ বাড়ে। পাম্পিং ক্ষমতা পনেরো শতাংশ কমে যায়। রক্তে ক্যাটেকোলামিন বাড়ে। বিটা অ্যাড্রেনারজিক উত্তেজক হার্টের প্রতিক্রিয়া কমে যায়। হার্ট ভালভের অসুখ চারটি ভালভের মধ্যে মাইট্রাল ও অ্যাওরটিক ভালভের রোগ বেশি। অনেক ক্ষেত্রে অল্প বয়স  ও মাঝবয়সী রিউম্যাটিক মাইট্রাল স্টেনোসিস। বেশি বয়সে ধরা পড়ে। এছড়া বয়স বাড়ার সাথে ভালভের চারপাশে ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ  জমা হতে শুরু করে ও ভাল্ভ সরু হয়ে যায় (এনরিউম্যাটিক মাইট্রাল স্টেনোসিস) ভাল্ভের মিক্সোমেটাস ডিজেনাশেন ও ইস্কোমিয়া থেকে মাইট্রাল রিগারজিটেশন হতে পারে। বয়স বাড়ার সাথে অ্যাওরটিক ভাল্ভে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস ও ডিজেনারেটিভ পরিবর্তন হয়। তা সত্ত্বেও ভাল্ভ স্বাভাবিক কাজ করতে পারে বা মাইট্রাল ভাল্ভের মতো স্টেনোসিস বা রিগারজিটেশন ঘটাতে পারে। ইকোকার্ডিওগ্রাফি ও এল. ডি অ্যাঞ্জিও করে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। দুটো ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি অনুযায়ী সারাজীবন ওষুধ দিয়ে বা অ্যাসথেটিক ভালভ প্রতিস্থাপনের কথা ভাবা হয়। হার্ট অ্যাটাক ও ইস্কেমিয়া বয়স বাড়ার সাথে হার্টের ধমনীর অ্যাথেরোস্ক্লেরোটিক বাধা বেড়ে যায়। ঠিকঠাক চিকিৎসা না হলে পরিণতি হয় অ্যাকিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা হার্ট অ্যাটাক। হার্ট অ্যাটাক হতে হলে রিস্ক ফ্যাক্টর থাকতে হবে। এটা পরিবর্তনীয় বা অপরিবর্তনীয় হতে পারে। প্রথমগুলো হল ধূমপান, রক্তে লিপিডের আধিক্য, বেশি রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, বসে থাকা জীবনযাপন ও টাইপ-এ পার্সোনালিটি (সবসময় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত)। অপরিবর্তনীয় রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো হল বয়স, ছেলে ও বাড়িতে কারও(প্রথম ডিগ্রি আত্নীয়) হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। মাসিকবন্ধের আগে হরমোনজনিত কারণে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অ্যাটাক কম হয়। বন্ধ হয়ে গেলে হরমোন প্রতিরক্ষা থাকে না এবং বেশি বয়সে মেয়েদের অ্যাটাক তুলনামূলকভাবে বেশি হয় এবং অ্যাটাক তুলনামূলকভাবে বেশি হয় এবং অ্যাটাক পরবর্তী জটিলতাও (কমপ্লিকেশন) মেয়েদের বেশিথাকে (সাইলেন্ট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন)। বয়স্ক লোক ছাড়া ডায়াবেটিস, হাইপারটেশন ও অপারেশন পরবর্তী রোগীদের ক্ষেত্রে এস.এম.আই বেশিমাত্রায় হয়। বয়স্কদের হার্ট অ্যাটাকের সন্দেহ হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়ির মধ্যে র‌্যানিটিডিন ও ফ্যামোটিডিন জাতীয় ওষুধ খাইয়ে দিয়ে দুটো অ্যাসপিরিন জাতীয় ট্যাবলেট (১৫০ মিগ্রা) চিবিয়ে খাইয়ে দিন। যদি অ্যাসপিরিন অ্যালার্জি থাকে তাহলে দুটো ক্লোগিডেগ্রল (৭০ মিগ্রা)। সিস্টোলিক ব্লাড প্রেসার ১০০ মিমি পারদের মাত্রা বেশি থাকলে জিভের নীচে নাইট্রোগ্লিসারিন ট্যাবলেট (৫ বা ১০ মিগ্রা) দেওয়া যায়। গ্রাম বা শহরে বাড়িতে বসে সাধারণ লোকের পক্ষে এর চেয়ে বেশি কিছু করা যায় না। হার্ট অ্যাটাকের প্রথম তিন ঘন্টা স্বর্ণময় মুহূর্ত ধরা হেয় (গোল্ডেন টাইম)। কারণ এই সময়ের মধ্যে বয়স বা অন্যান্য কারণে রোগীর থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি শুরু করা না গেলে করোনারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি (প্রাইমারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি) বা বাইপাসের কথা ভাবা হয়। থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি শুরু করার পর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হলে সেটাকে বলা হয় রেসকিউ অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। হৃদযন্ত্রের ছন্দবৈকল্য হৃদযন্ত্রের ডান অলিন্দের (অ্যার্টিয়াম) ভিতরে এস.এ. নোডের মধ্যে থাকে হার্টের আসল পেসকার। এর কাজ হল মিনিটে ষাট থেকে সত্তর পরিচালিত করা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে হৃদযন্ত্রের ছন্দবৈকল্য শুরু হতে পারে যদি হার্টের কোনো অসুখ থাকে এবং ঠিকঠাক চিকিৎসা করা না হয়। অ্যার্টিয়াল এক্টোপিক, ভেনট্রিকুলার এক্টোপিক, অ্যার্টিয়াল ও ভেন্ট্রিকুলার ফিব্রিলেশন হার্টে বিভিন্ন রকমের ছন্দবৈকলের লক্ষণ। এছাড়া বয়স বাড়ার সাথে কিছু ক্ষেত্রে হার্টের পেসমেকারের পাশে ফাইবব্রোসিস ও অবক্ষয়জনিত কারণে (ডিজেনারেটিভ) তৈরি হয় সিক সাইনাস সিন সাইনাস সিনড্রোম ও সম্পূর্ণ হার্ট ব্লক (লেভস্ ও লেনেগ্রা ডিজিজ)। যে কারণে ছন্দবৈকল্য হয় (ইস্কেমিয়া, হাইপারটেনশন, থাইরয়েড) তার চিকিৎসা সাথে চলে। তবে শেষের দুটো কারণে চিকিৎসা হার্টের মধ্যে আর্টিফিসিয়াল পেসমেকার ইমপ্ল্যান্টেশন। যাদের পেসমেকার বসানো আছে, তারা বুক পকেটে মোবাইল রাখবেন না এবং যেকোনো ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ডিভাইস থেকে পেসমেকারের দূরত্ব হবে নূন্যতম ছয় ইঞ্চি। হার্ট ফেলিওর হার্ট ফেলিওরের অনেকগুলো কারণের মধ্যে প্রধান দুটি কারণ বয়স্কদের মধ্যে হল হাইপারটেনশন ও ইস্কোমিয়া। হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় বা চোখের সামনে আঁধার দেখা বা অঞ্জান হয়ে পড়ে যাওয়া ফেলিওরের অন্যতম লক্ষল। এছাড়া রাত্রে ঘুমের ঘোরে হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট হয়ে উঠে পড়া (প্যারুক্সিম্যাল নকচারনাল ডিসপিনিয়া) লেফ্ট ভেন্ট্রিকুলার ফেলিওয়ের লক্ষণ। বুকের এক্স-রে, ই.সি.জি ও ইকোকার্ডিওগ্রাফি রোগ নির্ণয় ও সুনিশ্চিত করার মূল অস্ত্র। হার্ট ফেলিওর হলে পাম্পিং ক্ষমতা (ইজেকশন ফ্র্যাকশান) কমে যায়। বৃদ্ধ বয়সে হার্টের গুরুত্কপূর্ণ অসুখ হল ইস্কেমিক কার্ডিও মায়োপ্যাথি যাতে পাম্পিং ক্ষমতা ভীষণভাবে কমে যায়। সারাজীবন চেক আপ ও ওষুধপত্র খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের সমাজে বয়স্করা আজও অবহেলিত। সংসার সারা জীবন দিয়েও এই বয়সে পাই খুব কম। বেশিরভাগ সরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালগুলিতে জেরিয়াট্রিক মেডিসিন ও কার্ডিওলজি বিভাগ আছে। বয়স্করা এই সুযোগ গ্রহণ করে সুস্থ থাকুন। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন