×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

কী কী কারণে বন্ধ হয় ফ্যালোপিয়ান টিউব

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-10 13:58:20

ফ্যালোপিয়ান টিউব হচ্ছে সেই পথ যে পথ দিয়ে ডিম্বানু জরায়ুর দিকে এগোত থাকে, আর শুক্রাণু ইউটেরাসের মধ্যে দিয়ে গিয়ে এই ডিম্বাণুকে ফ্যালোপিয়ান টিউবে নিষিক্ত বা ফ্যার্টিলাইজড করে। তার মানে প্রজননের শুরর কথাই হচ্ছে ফ্যালোপিয়ান টিউব বন্ধ্যাত্বের সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। এর অনেকগুলো কারণ আছে। অন্যতম প্রধান কারণ মেয়েরা বিয়ে করছে দেরিতে। বিয়ে যদি বা করে শুরুতেই সন্তান ধারণের ব্যাপারটা নিয়ে অত মাথায় ঘামায় না। তাদের দোষ দেওয়াও যায় না। আজকের দিনে মেয়েরা লেখাপড়া শিখে প্রথমে কেরিয়ার তৈরি করতে চায়। রোজগার করতে না পারলে বা একটি চাকরি হাতে না নিয়ে কেই বিয়ে করতে চায় না। এর জন্য কিছুটা আর্থসামাজিক কারণ দায়ী। দ’ জনেই চাকরি না করলে আজকাল কোনোভাবেই স্বচ্ছল থাকা সম্ভব নয়। এর পর সেই চাকরিকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্বও থাকে। কারণ ভীষণ রকম প্রতিযোগিতা চাকরির বাজারে। তাই স্বাভাবিকভাবে বিয়ে বা গর্ভধারণে দেরি হয়ে যায়। যখন তারা গর্ভধারণের জন্য ভাবনা-চিন্তা করছেন, তখন তাদের বয়স ত্রিশ পেরিয়ে যাচ্ছে। এই বয়সে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে দেখ যায় অনেক মেয়েরই ফ্যালোপিয়ান টিউবে ব্লকেজ। রোগ নির্ণয়ের জন্য আগে প্রচলিত পরীক্ষা ছিল এই চ.এস.জি বা হিস্টোরোস্যালপিঙ্গোগ্রাফি। অতি বেদনাদায়ক এই পরীক্ষা।  কারণ কোনোরকম অ্যানেন্থেশিয়া ছাড়াই এক্স-রে ডিপার্টমেন্ট এই পরীক্ষা করা হত। তখন এর থেকে বেশি ভালো উপায় ছিল না যার মাধ্যমে টিউবটা সমন্ধে জানা যাবে। এখন অবস্থা অনেক বদলাছে। এখন সোনোস্যালপিঙ্গোগ্রাফি করা যায় আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যেমে। এবং তার থেকেও ভালো যে ব্যবস্থা বেরিয়েছে তা হল ল্যাপেরোস্কোপি ডাই টেস্ট। যেকোনো ইনফার্টিলিটি রোগী, যারা বেশ কিছুদিন ধরে সন্তান ধারণের চেষ্টা করে গর্ভসঞ্চারে ব্যর্থ হচ্ছে, তাদের নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়, কেন তারা অসফল হচ্ছেন জানতে। আলট্রাসনোগ্রাফি, হরমোন ব্লাড টেস্ট, সিমেন পরীক্ষা-এইসব পরীক্ষাতে যখন কোনো কারণ খুঁজে পাওয়ার যায় না কিংবা কারণ পাওয়া গেলেও টিউব টেস্টে অবশ্যই বাঞ্চনীয়। কারণ ফ্যালোপিয়ান টিউব হচ্ছে সেই পথ যে পথ দিয়ে ডিম্বানু জরায়ুর দিকে এগোত থাকে, আর শুক্রাণু ইউটেরাসের মধ্যে দিয়ে গিয়ে এই ডিম্বাণুকে ফ্যালোপিয়ান টিউবে নিষিক্ত বা ফ্যার্টিলাইজড করে। তার মানে প্রজননের শুরর কথাই হচ্ছে ফ্যালোপিয়ান টিউব ফ্যালোপিয়ান টিউবে ফার্টিলাইজেশন হয় অর্থাৎ তৈরি হয় ভ্রুণ। সেই ভ্রুণ পাঁচদিন পর এই ফ্যালোপিয়ান টিউব থেকে ধীরে ধীরে গড়িয়ে ইউটেরাসে এসে প্রতিস্থাপিত হয়। এটা অনেকটা বীজতলায় চারা তৈরি করা, সেই্ চারা মাঠে নিয়ে গিয়ে মাঠে রোপণ করার মতো। এই ফ্যালোপিয়ান টিউব ওভামকে নিজের মধ্যে নিয়ে নেই। যেমন হাতি তার শুঁড়ের মধ্যে দিয়ে খাবারকে নিয়ে নেয় ঠিক তেমন। ওভারি থেকে ডিম্বাণুকে পিক আপ করে সেই ডিম্বাণুকে সঠিক সময়ের জন্য নিজের কাছে দুই থেকে তিন দিনে রেখে দেয় যাতে শুক্রাণু এসে নিষেক ঘটাতে পারে। এই ফ্যালোপিয়ান টিউবের অনেক রকম কার্যকলাপ আছে। যার অনেকটাই এখনো চিকিৎসা বিজ্ঞানের বাইরে। কী রাসায়নিক আকৃষ্ট টিউব ডিম্বাণুকে নিজের ভিতর টেনে নেয় সেটা একটা বিস্ময়। ঠিক সেইরকম ডিম্বাণুকে কীভাবে দুই থেকে তিনদিন নিজের কাছে রেখে দেয় এবং নিষিক্তকরণের জন্য একটা পরিবেশ তৈরি করার পর নিষিক্তকরণে সফল হলে তাকে পরবর্তী দুই থেকে তিন-চারদিন প্রতিপালন করে এবং সঠিক সময়ে নিষিক্ত ভ্রুণকে ঠেলে নিয়ে গিয়ে ইউটেরাসে প্রতিস্থাপন করে তা এক অতি বিস্ময়। কী কী কারণে টিউব বন্ধ হতে পারে

  • জন্মগতভাবে অনেকেরই টিউবের নালীটি বন্ধ থাকে। এটা হল জন্মগত কারণ।
  • বেশিরভাগ টিউব খোলা নিয়েই জন্মায়। পরবর্তীকারে পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (পি.আই.ডি) অর্থাৎ যৌনাঙ্গ কিংবা তলপেটের কোনো সংক্রমণ থেকে টিউব বন্ধ হতে পারে।
  • এছাড়া এন্ডোমেট্রিওসিসও একটা কারণ।
  • পেটের কোনো অস্ত্রোপচর যেমন অ্যাপেন্ডিসাইটিস, ওভারিয়ান ডিজিজ এরকম ক্ষেত্রে অর্থাৎ টিউবের যারা প্রতিবেশি তাদের কোনোরকম ডিজিজ টিউবে সংক্রামিত হয়ে টিউব বন্ধ হতে পারে।
  • আমদের দেশের আর একটি খুব পরিচিত কারণ হল ইউটেরাসের টিউবার কুলোসিস। আমাদের দেশে টিবির সংক্রমণ যেকোনো কারণেই হোক বেশি ঘটে। বন্ধ্যাত্বের অনেক রোগীর ইউটেরাসের লাইনিংয়ে টিবির সংক্রামণ পাওয়া যায়। টিবি টিউব ব্লক করার একটি মেজর কারণ। যা নিঃশব্দে অনেকের দেহে ইউটেরাসের মধ্যে থাকে, ধরা পড়ে না। সেজন্য যখন কোনো বন্ধ্যাত্বের কারণ নির্ণয় করা হয় এই কথাগুলো মাথায় রেখে করতে হয়।
কীভাবে টিউব খোলা যায় যেকোনো ধরনের টিউব ব্লক হোক না কেন, ল্যাপারোস্কোপি ও হিস্টেরোস্কোপির সাহায্যে টিউব খোলার ব্যবস্থা করা যায়। অনেক সময় জরায়ুর মধ্যে থেকে হিস্টোরোস্কোপের মাধ্যমে ক্যানিউলা বা সূক্ষ্ম টিউব পাঠিয়ে দেওয়া যায়, মেকানিক্যাল কোনো ক্লক থাকলে যা অনেক সময় খুলতে সক্ষম হয়। একে বেলা হয় ‘হিস্টোরোস্কোপি ফ্যালোপিয়ান টিউব ক্যানিউলেশন’। এছাড়াও অনেক সময় ওষুধ ও ডাই-এর পেসারের মাধ্যমে দেখা গেছে যদি কোনো টিউবে মিউকাস প্লাক থাকে কিংবা ছোট কোনো লক থাকে সেটা খুলতে সফল হতে পারে। এইজন্য টিউব ব্লক থাকলে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। টিউব খোলার জন্য এবং কোন ধরনের ব্লক জানার জন্য অবশ্যই ল্যাপরোস্কোপি ও হিস্টেরোস্কোপি পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। এর ফলে টিউব যেমন ব্লক আছে কি না নিশ্চিতভাবে জানা যাবে, সেই সেঙোগ টিউব খোলার একটা প্রচেষ্টা করা যাবে। এছাড়া ওপেন সার্জারি প্রচলিত আছে, যাকে বলে টিউবো-প্লাস্টি। কিন্তু এই অপারেশনের ফলাফল আশাপদ নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরকম অপারেশনের মাধ্যমে খুলে দেওয়া টিউব ফের জুরে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। (ইনভিটো ফার্টলাইজেশন) এখন ভীষণরকম সাধারণ পদ্ধতি অনেক সময় দেখা যায় একটি টিউব ব্লক, অন্য টিউব কোলা আছে। সেক্ষেত্রে গর্ভসঞ্চায় স্বাভাবিক ভাবে অথবা কৃত্রিমভাবে আই.ইউ.আই পদ্ধতির মাধ্যমে চেষ্টা করা সম্ভব। যদি কারো দুটো ফ্যালোপিয়ান টিউব ব্লক থাকে এবং ল্যাপারোস্কোপি ও হিস্টেরোস্কোপি পদ্ধতিতে খোলা না যায়, আজেকের দিনে দাঁড়িয়ে  তাদেরও কোনো চিন্তার কারণ নেই। কারণ টেস্ট টিউব বেবি বা নলজাত শিশু, ডাক্তারি পরিভাষায় আই.ভি.এফ (ইনভিটো ফার্টলাইজেশন) এখন ভীষণরকম সাধারণ পদ্ধতি। ওষুধের মাধ্যমে ডিম্বাণু তৈরি করে আলট্রাসাউন্ড গাইডেন্স নিডল দিয়ে ভ্যাজাইনার মধ্য দিয়ে সঠিক সময়ে ডিম্বাণুকে বাইরে আনা হয়। সেই সময় ডিম্বাণুর শুক্রাণুর সাথে ল্যাবরেটরিতে ফাটিলাইজেশন করা হয়, যা টিউবে হত সেটা খুব সহজেই করে দেওয়া সম্ভব এইভাবে। এবং এই ভ্রুণ দু’ একদিনের মধ্যে ক্যানিউলা দিয়ে ইউটেরাসে প্রতিস্থাপন করে দেওয়া হয়। টেস্ট টিউব পদ্ধতি একন এত সহজেই করা সম্ভব হচ্ছে যে যাদের টিউব ব্লক আছে তাদের হতাশ হবার কোনো কারণ নেই। কিন্তু চিকিৎসাটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করে ফেলা উচিত। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন