×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

বন্ধ টিউব খুলবে কিভাবে

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-10 14:42:47

আজ সায়ন্তিনীর ডাক্তারবাবু বাড়ির সবাইকে ডেকে যা বলেছে, তা শুনে সবার মন খারাপ। হিস্টেরোসালপিঙ্গোগ্রাফি রিপোর্ট এসেছে, দু’দিকেই  ফ্যালোপিয়ান টিউব বন্ধ। সুতরাং এই বন্ধ টিউব না খুললে সায়ান্তিনীর মা হওয়া হবে না। তার আগে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত এই ফ্যালোপিয়ান টিউব কী আর কোথায়ই বা আছে। ফ্যালোপিয়ান টিউব বা জরায়ুনালী হচ্ছে দু’টো সরু নালী যা জরায়ুর দু’পাশে থাকে আর দু’টো মুখেই খোলা। এর কাজ কাজ হচ্ছে ডিম্বাশয় বা ওভারি থেকে ডিমকে জরায়ুতে নিয়ে আসা এবং মাঝপথে শুক্রকীট দ্বারা ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করা। ষোড়শ শতাব্দিতে ইতালির একজন অ্যানাটমিস্ট গ্যাব্রিয়েল ফ্যালোপিও এটা আবিষ্কার করার পর তার নামেই নামকরণ হয়েছিল এই নালীর। এই ফ্যালোপিয়ান টিউবের কাজ হচ্ছে ওভারি বা ডিম্বাশয় থেকে যেই ডিম্বাণু নিঃসরণ (যাকে ডাক্তারবাবুদের ভাষায় ওভুলেশন বলে) হল তাকে ক্রিকেটের স্লিপ পজিশনে দাঁড়ানো ফিল্ডারের মতো ক্যাচ ধরে নেওয়া। ধরে নেওয়ার পরের কাজ হল ডিম্বাণুকে ভেতর দিকে চালিত করা। এ কাজে সাহায্য করার জন্য উম্মুখ হয়ে থাকে নালীর ভেতরকার দেওয়াল খুব ছোট ছোট লোমের মতো সিলিয়া। কাশের বনে বাতাস বইলে যেমন সেগুলো একদিকে হেলে যায় তেমনি ডিম্বাণু ঢোকার সাথে সাথে সিলিয়াগুলো ভেতরের দিকে হেলে গিয়ে ডিম্বাণুকে ভেতরে চালান করে দেয়।  কোনো কারণে সংক্রমণ হলে, এই সিলিয়াগুলোর কার্যকারিতা কমে গেলে ডিম্বাণু ঠিক সময়ে ঠিকভাবে চালিত হবে না। মধ্যপথেই আটকে যাবে, তাতে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হয়ে যাবর সম্ভবনা। কোনো কারণে এই টিউব যদি দু’দিকেই বন্ধ হয়ে যায় তবে ডিম্বাণুকে জরায়ুত চালিত করার কোনো উপায়ই আর থাকবে না। একমাত্র উপায় হচ্ছে টিউবকে, অন্তত  একটিকে খোলার ব্যবস্থা করা। আচ্ছা, এই যে টিউবগুলো ঠিকঠাক আছে না বন্ধ হয়ে গেছে সেটা কী করে বোঝা যাবে? বাইরের চেহারা দেখে তো কিছুই বোঝার উপায় নেই। সে ব্যাপারেই এখন আসছি। টিউব ঠিকঠাক আছে কি না জানার জন্য কতকগুলো টেস্ট ডাক্তারবাবুরা করে থাকেন। একটা অতি প্রাচীন উপায় হচ্ছে টিউবার ইনসাফলেশন টেস্ট। একটা টিউব জরায়ুমুখে লাগিয়ে কিছু হাওয়া ভিতরে চালিয়ে দিলে সেটা নালীর ভেতর দিয়ে পেটের ভিতর যাবে আর নালীর ভেতরে যাবার সময়ে যে শব্দটা হবে সেটা পেটে স্টেথেস্কোপ বসিয়ে আরো একজন পরীক্ষক দেখবেন। হাওয়ার শব্দ শুনতে না পেলে বুঝতে হবে টিউব বন্ধ আছে। কম খরচে মোটামুটি ভালো উপায় হলেও এটা সব সময় খুব বিশ্বাসযোগ্য হয় না। দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে ‍হিস্টেরোস্যালপিঙ্গোগ্রাফি। এটা বহু পরীক্ষিত একটা অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য পরীক্ষা। এটাতে জরায়ুমুখে নল লাগিয়ে সিরিঞ্জ দিয়ে একটা ওষুধ জরায়ুর ভেতরে চালিয়ে দেওয়া হয়। সেটা গিয়ে জরায়ু ভর্তি করে তারপর দু’দিকের টিউবের ভেতর দিয়ে গিয়ে পেটের অভ্যন্তরে চলে যায় অবশ্যই যদি দু’টো টিউব খোলা থাকে। তারপর ছবি তুললে যেহেতু্ এই ওষুধটাকে রঞ্জক রশ্মি ভেদ করে যেতে পরে না, সুন্দর করে ছবিতে দেখিয়ে দেবে জরায়ুর অভ্যন্তর বা টিউব দুটো ঠিক আছে কি না । বনাধ থাকলে এই ওষুধটা পেটের ভেতরে যাবেই না আর ফটোতেও সেটা বোঝা যাবে। তৃতীয় পরীক্ষা হচ্ছে অত্যন্ত আধুনিক। ল্যাপারোস্কোপিক ডাই টেস্ট। আবার সেই নীচে থেকে একটু ডাই বা রঙিন তরল ভেতরে চালিয়ে দেওয়া হবে আর ল্যাপারোস্কোপ যন্ত্র পেটের ভেতর ঢুকিয়ে ডাক্তারবাবু দেখবেন যে তরলটা টিউবের ভেতরে গিয়ে তার খোলা মুখ বেয়ে পড়ছে কি না। পড়লে টিউব খোলা। না পড়লে টিউব বন্ধ। তাহলে যদিও বা বোঝা গেল যে টিউব বন্ধ তবে এটাকে খোলানোর উপায় কী ? উপায় যে খুব সহজ নয় তা বলাই বাহুল্য। যদি আগেকার কোনো অপারেশনে অ্যাডেশন তৈরি হয় (আঠার মতো চিটিয়ে থাকা জিনিস দিয়ে আশেপাশের অন্ত্রের সাথে টিউব জড়িয়ে থাকতে পারে)  ল্যাপারোস্কোপি করে এগুলো ছাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করা যেতে পারে। তাহলে টিউব আগেকার মতো ‍মুক্ত হয়ে গেলে আর ভেতরের কিছু  জটিলতা না থাকলে খুলে যেতেই পারে। টিউবে যদি একটুখানি জায়গা বন্ধ থাকে তাহলে আগে ও পরে কেটে নিয়ে ল্যাপারোস্কোপিক টিউব্যাল সার্জারি করে দু’টো অংশ আবার জুড়ে দেওয়া যেতে পারে, যাকে টিউবো টিউব্যাল অ্যানাসটোমোসিস। বন্ধ টিউব খোলার জন্য পেট না কেটে নীচের থেকে প্লাসেন্ট্রক্স ইঞ্জেকশন বা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিয়েও অনেক চিকিৎসা সফলতা অর্জন করেছেন। প্রাথমিকভাবে এ চেষ্টা করা যেতেই পারে। বহুদিনের পুরোনো ব্লক যদি না হয় তবে অনেকসময়েই এই উপায়ে বন্ধ টিউব খুলে যায়। এতক্ষণ যা বলার বলা হল তাতে আর কিছু না হোক পঠক-পাঠিকা এটা তো নিশ্চয় বুঝতে পেরেছে যে ব্যাপারটা মোটেই শিশুর খেলনা নয়। এর জন্য দরকার চিকিৎসকের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা। তাতে যদি সফলতা অর্জন না করা যায় তবে নবজাতক শিশুর সন্ধানে যাওয়াই পরবর্তী পদক্ষেপ। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন