×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

বন্ধ্যাত্বের কারণ যখন ফ্যালোপিয়ান টিউব

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-10 15:30:10

উত্তর আমেরিকায় ছড়ানো এর রাজ্যপাট। অন্তত ৫.৫ মিলিয়নর মহিলার শরীরে নঃশব্দে এর বেড়ে ওঠা, যন্ত্রণা দেওয়ার চেনা ছবি। এন্ডোমেট্রিয়োসিস। উত্তর আমেরিকা তো বটেই, বিশ্বের অন্যত্রও মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের প্রথম তিন কারণের মধ্যে একটি। কিন্তু এটা কী? মহিলাদের ঋতুচক্রেকালীন জরায়ুর সূক্ষ্ম পর্দা এন্ডোমেট্রিয়াম আস্তে আস্তে স্ফীত হতে আরম্ভ করে। তার প্রধান কারণ ওই সময়ে গর্ভসঞ্চার হওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। কিন্তু সেই মাসে গর্ভসঞ্চার না হলে শরীর আপনা থেকেই ঋতুকালীন সময়ে ঝরিয়ে দেবে সেই স্ফীত এন্ডোমেট্রিয়াম। এটাই স্বাভাবিক পন্থা। তবে এন্ডোমেট্রিয়োসিস বিসয়টা অন্যরকম। তার সঠিককারণ অবশ্য চিকিৎসকরা এখনও অনুধাবন করতে পারেননি। এন্ডোমেট্রিয়ামের মতো সমপর্যায়ের টিস্যু জরায়ুর ভেতরে বা বাইরে বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হতে থাকে। এমন এমন জায়গায় সেগুলো তৈরি হয় যে, স্বাভাবিক অবস্থায় যেসব জায়গায় সেগুলো তৈরি হওয়ার কোনো কথাই নয়। এর আবার গঠনগত কোনো সম-নীতিও নেই। নানান আকার নিতে পার। জরায়ুর ভেতরে বা ওপরে, ফ্যালোপিয়ান টিউবে, জরায়ু এবং তার কার্যাবলীকে সুরক্ষিত রাখে এমন নানা প্রত্যঙ্গে, পেলভিক ক্যাভিটির পর্দায় এরা জন্মাতে পারে। কোনো সময় আবার সার্ভিক্স, ভ্যাজাইনা, রেক্টাম, ব্লাডার ইত্যাদি জায়গাতেও জন্মায়। সমস্যা হল স্বাভাবিক এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যুর মতোই এর ব্যবহার। ঋতুচক্রের সঙ্গে সঙ্গেই এও তীব্র হয়, ভেঙে যায়। কিন্তু এন্ডোমেট্রিয়ালের মতো শরীর থেকে একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায় না। ফলে এন্ডোমেট্রিয়োসিসের প্রভাব শরীরে অস্বস্তি, স্ফীতি, অন্য ধরনের অবাঞ্চিত টিস্যুর উৎপাদনের মতো ঘটনা ঘটতে থাকে। এর ফলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুর বেরিয়ে আসা বা শুক্রাণুর দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াটা ব্যাহত হতে থাকে। জন্ম দেয়া বন্ধ্যাত্বের। অবশ্য বন্ধ্যাত্ব ছাড়াও এন্ডোমেট্রিয়োসিসের প্রভাবে শরীরে আরও কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যেমন—

  • পেলভিন পেইন।
  • যন্ত্রণাদায়ক যৌনমিলন।
  • প্রস্রাবকালীন যন্ত্রণা।
  • ঋতুস্রাবের সময় মলত্যাগ যন্ত্রণা।
  • ঋতুস্রাবের আগে আর পরে তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা।
  • পিঠের নীচের দিকে, কোমরে ব্যথা।
  • ঋতুস্রাবের পরিমাণ অত্যন্ক বেশি হওয়া ।
  • ক্লান্তি।
অবশ্য এন্ডোমেট্রিয়োসিস থাকলেই যে এমন লক্ষণ দেখা দেবে, এমন কথা নেই কিন্তু। কিছু ক্ষেত্রে অন্যথাও দেখা গেছে। এন্ডোমেট্রিয়োসিস ও গর্ভসঞ্চার এন্ডোমেট্রিয়োসিস হলেও স্বাভাবিকভাবে গর্ভসঞ্চার হয়। কিন্তু কোনো কারণে কোনোভাবেই গর্ভধারণ করতে না পারার অন্যতম কারণ এন্ডোমেট্রিয়োসিস হতে পারে। সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারেন অবশ্য ডাক্তার, ল্যাপারোস্কোপির সাহায্যে। একটা টিউমারের মাথায় ছোট্র ক্যামেরা বসিয়ে সেটা নামানো হয় তলপেট। এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যুতে অস্বাভাবিক কিছু থাকলে এত ধরা পড়ে। তবে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়লে আরও বেশি করে নিশ্চিত হওয়ার জন্য বায়োপসির দরকার পড়ে। শুধু ওষুধ কিংবা অপারেশনেরর সঙ্গে ওষুধ টিস্যুর স্ফীতি বা যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে। যদি সার্জারি করতেই হয় তাহলে যত বেশি সম্ভব এ ধরনের টিস্যু বাদ দেওয়া যায়, ততই মঙ্গল। এমনও দেখা গেছে যে এন্ডোমেট্রিয়োসিসের টিস্যু অপারেশন করার পর পূর্ব আক্রান্ত মহিলাদের গর্ভসঞ্চারে কোনো বাধা থাকে না। তবে এন্ডোমেট্রিয়োসিস খুব মারাত্মক হয়ে দেখা দিলে, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে গর্ভসঞ্চারের হার অনেক কমে যায়। এন্ডোমেট্রিয়োসিসে আক্রান্ত মহিলাদের অনেক সময় ডিম্বাণু নির্গমনে সমস্যা ঘটলে ক্লোমিডের মতো ফার্টিলিটি ওষুধ বা হরমোন ইঞ্জেকশস প্রয়োগ কাজে দিতে পারে। যখন স্বাভাবিক ভাবে ডিম্বাণু নিঃসরণ ঘটবে তখন চিকিৎসাক কৃত্রিম উপায়ে জরায়ুর মধ্যে শুক্রাণু প্রতিস্থাপনের চিকিৎসা করাতে পারেন। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে। এন্ডোমেট্রিয়োসিসের কিছু সাধারণ চিকিৎসা গর্ভসঞ্চার ঠেকিয়ে দিতে পারে। আবার ড্যানোক্রিনের মতো হরমোন বাইরে থেকে শরীরে প্রবেশ করালে শিশুর জন্মকারীন সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই এন্ডোমেট্রিয়োসিসের চিকিৎসা করানোর সময় চিকিৎসকের যেন স্পষ্ট বলা হয়, রোগী সন্তান ধারণের চেষ্টা করছেন। ফ্যালোপিয়ান টিউবের সমস্যা বন্ধ্যাত্বের অপর এক উল্লেখযোগ্য কারণ ফ্যালোপিয়ান টিউবের সমস্যা। কোনো সময় অসুখ বা সংক্রামণের ফলস্বরূপ এই টিউব অবরুদ্ধ হয়ে যেতে পারে বা এর অন্যতর কোনো ক্ষতিও হতে পারে। ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গমণের পর তা এই ফ্যালোপিয়ান টিউবের মধ্যে দিয়েই গতিপথ খুঁজে নেয়। ফ্যালোপিয়ান টিউবের সংকীর্ণ পথটি ডিম্বাশয়কে জরায়ুর সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে সাহায্য করে। এই টিউবের মধ্যেই ডিম্বাণুর সঙ্গে শুক্রাণুর নিষেক ঘটে। এবার এই নিষিক্ত ডিম্বাণু যাত্রা করে জরায়ুর দিকে। তবে এই ফ্যালোপিয়ান টিউব কোনো ভাবে যদি আগে থেকেই  অবরুদ্ধ থাকে, তাহলে ডিম্বাণুর আর শুক্রাণুর সঙ্গে দেখা হওয়ার কোনো পথ থাকে না। আবার অ্যান্ডোমেট্রিয়োসিস, পেলভিক ইনফ্লামেটরি সংক্রমণ অথবা কোনো ধরনের যৌনরোগের কারণে এই টিউবের ক্ষতি হতে পারে। ফ্যালোপিয়ান টিউবের সমস্যাতে গর্ভসঞ্চার ফ্যালোপিয়ান টিউবে সত্যিই অবরুদ্ধ কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চিকিৎসক ল্যাপারোস্কোপি বা হিস্টেরোস্যালপিঙ্গোগ্রাম পরীক্ষা করাতে পারেন। দ্বিতীয় পরীক্ষাটিতে ক্যাথিটারের মাধ্যমে যোনিদ্বারের মধ্যে দিয়ে বিশেষ ধরনের তরল প্রবেশ করানো হয় জরায়ুতে। তারপর এক্স-রে করে দেখা হয়, সেখানে কোনো রাস্তা বন্ধ আছে নাকি ওই তরল স্বাভাবিকভাবেই তলপেটে পৌঁছাতে পারছে। এই পরীক্ষার আরেকটি পন্থায় ব্যবহার করা হয় স্যালাইন আর বাতাস। যেখনে তরল লাগে না। আর এক্স-রে নয়, আলট্রাসাউন্ডের সাহায্য নেওয়া হয়। যদি সত্যিই ফ্যালোপিয়ান টিউবের সমস্যা বোঝা যায়, তবে সেই সমস্যা মেটানোর জন্য অপারেশন দরকার পড়তে পারে। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন