×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

শীতকালে সাবধানে থাকবেন শ্বাসকষ্টের রোগীরা

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-15 15:21:54

শীতের মতো এত মনোরম ঋতু আমাদের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে আর নেই। শীত আমাদের কাছে একান্ত উপভোগের হলেও এমন অনেকেই আছে শীত জুড়েই সর্দি-হাঁচি-কাশি আর শ্বাসকষ্ট তাদের নিত্যসঙ্গী। সকালবেলা উঠলেই ঢোঁক গিলতে গলাটা ব্যথা করে। মাথা ভার, যন্ত্রণাও হয় অনেক সময়। তাই এদের দাপট সামলাতে সামলাতেই যে কখন শীত আসে আর কখন যায় তা খেয়ালই থাকে না। তাই অনেকে শীতকালে অপছন্দ করেন। শীতকাল শহরের মানুষদের জন্যও এখন আর বড় একটা সুখের সময় নয়। যাইহোক শ্বাসের সমস্যা লেখার আগে শ্বাসনালির গঠন সম্পর্কে একটু জেনে নিই। আমাদের শ্বাসনালি শুরু হয় নসট্রিল বা নাসারন্ধ্র থেকে। তারপর আসছে ন্যাসো ফ্যারিংস। তারপর ট্র্যাকিয়া বা বয়ুনালি। এ পর্যন্ত হল আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট। ট্র্যাকিয়া দু’ভাগে ভাগ হয়- একেকটি ভাগকে বলে ব্রম্কাস। দুটো ব্রম্কাস ক্রমে শাখা –প্রশাখার ভাগ হয় যাদের বলে ব্রঙ্কিওলাস। টার্মিনাল রেসপিরেটরি ব্রম্কিওলসগুলোর শেষ থাকে অ্যালভিওলাস বা বায়ুথলি। আমাদের লাংস বা ফুসফুস অসংখ্য অ্যালভিওলাই দিয়ে তৈরি। আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্টের সমস্যার মধ্যে খুব কমন কয়েকটা হল ফ্যারিঞ্জাই টিস, ল্যারিঞ্জাইটিস, সাইনুসাইটিস ইত্যাদি। লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্টের সমস্যা হল ব্রম্কাইটিস,ব্রম্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা  বা হাঁপানি প্রভৃতি। শীত ঝামেলা পাকার বেশি করে শুরুতে এবং শেষে। প্রশ্ন হল, সারা বছরই তো কারোর না কারোর সর্দিকাশি এবং শ্বাসের সমস্য হয় তাহলে শীতের হঠাৎ এদের দাপট বাড়ে কী করে? এর কারণ দুটো। প্রথম কারণ হল তাপমাত্রার পার্থক্য, শীতের প্রারম্ভে তাপমাত্রা হঠাৎই বেশ কিছুটা নেমে যায়। শেষের দিকে তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে দেহের তাপমাত্রার ওপর। দেহ পরিবেশের এই তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিচুটা সময় নেয়। যাদের জীবনীশক্তি কিছুটা দুর্বল থাকে, এই সময়ের মধ্যেই তাদের আক্রমণে করে সর্দিকাশির ভাইরাস। তাই সর্দিকাশির প্রকোপ শীতের শুরুতে এবং শেষের দিতে বাড়ে। সর্দিকাশি ছোয়োচে হওয়ায় পরিবোরের একজনের থেকে অতি সহজেই অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় কারণ হল শীতের পরিবেশ। শীতের শুরুতে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যায়। ফলে ধুলোর পরিমাণ অত্যন্ত বেড়ে যায়। শহরের বাতাস এমনিতেই মিশে থাকে গাড়ির জ্বালানি এবং কলকারখানা থেকে বেরোনো বিষাক্ত গ্যাস কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন ও সালফার অক্সাইড। শীতের কুয়াশার সাথে মিশে এইসব গ্যাস তৈরি করে ধোঁয়াশা। এর সাথে মেশে বিভিন্ন ফুলের রেণু। বাতাস ভারী থাকায় এই ধোঁয়াশা নেমে আসে মাটির আরও কারছ। শুরু হয় নাকের ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ। নাকটানা, নাক দিয়ে কাঁচা জল পড়া, হাঁচি জাতীয় সমস্যা দেখা যায়। যাদের ধোঁয়া ও ধুলোর অ্যালার্জি আছে তাদের নাকে এগুলো প্রবেশ করা মাত্র শুরু হয় হাঁচি। শহরের আকাশ সমস্ত দিনই থাকে ঘোলাটে। এর সাথে ধোঁয়াশায় কস্ট পায় শিশু, বয়স্ক সবাই। তাই এখনও এ ধরনের রোগীল সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। শীতকালে অনেকের সিজনাল অ্যালর্জিক রাইনাইটিস দেখা যায়। লক্ষণ হল অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে জল পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। কারো কারোচোখ দিয়ে জল পড়ে এবং চোখ লাল হয়ে যায়। শীতে দূষণ বাড়ার কথা তো আগেই বলেছি, তার সাথে সাথে লেপ-কম্বল তুলোর ধুলো এই হাঁচির সমস্যা আরো বাড়িয়ে  দেয়। অ্যালার্জি সংক্রান্ত সমস্যা বা ফুসফুসের অসুখ কিংবা হার্টের সমস্যা থাকলেও অনেক সময় বুকে সর্দি বসে যায়। যেমন হাঁপানি, ক্রনিক ব্রম্কাইটিস, ব্রম্কিয়েকটেসিস, সাইনুসাইটিস প্রভৃতি থাকলে বা হার্টের বিভিন্ন অসুখ যেমন মাইট্রাল-স্টেনোসিস, লেফট ভেন্টিকুলার ফেলিওর প্রভৃতির কারণেও বুকে সর্দি বসে। বয়স্ক বা শিশুরা সর্দিকাশিতে বেশি ভোগেন। আর যারা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না তারাও বেশি ভোগে কারণ শরীরটা লড়াই করে যে সব হাতিয়ার নিয়ে, তারা বেশির ভাগই প্রোটিন জাতীয়। খাদ্যতালিকায় তাই অবশ্যই সৃষম খাদ্য থাকতে হবে। ব্রম্কাসের লাইনিং যখন প্রদাহিত বা ইনফ্লেমড হয় এবং ফসফুসের বাতাস চলাচলের পথ সরু হয়ে যায় তখন শুরু হয় শ্বাসকষ্ট, ঘন ঘন শ্বাসের সঙ্গে বাঁশির মতো শব্দ হয়, শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট, আর দমটা যেন আটকে আসতে চায়। একে আমরা বলি হাঁপানি বা অ্যাজমা। যখন এই শ্বাসকষ্ট শুধুমাত্র শরীরে ঢুকে পড়া অবঞ্ছিত কণার জন্য বা অ্যালার্জির কারলে হয় তখন তাকে বলে ব্রম্কিয়াল অ্যাজমা। আর যদি তার আগেই সিগারেট খাওয়া বা অন্য কোনো কারণে শ্বাসনালির গঠনের পরিবর্তন হয়ে গিয়ে থাকে অর্থাৎ শ্বাসনালি ইতিমধ্যেই ইনফ্লেমড হয়ে থাকে ডাক্তারি ভাষায় তখন সেই শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাকে বলা হয় ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সি.ও.পি.ডি। নিউমোনিয়া মারাত্মক রকমের শ্বাসকষ্ট যা অনেক সময় প্রাণঘাতি হয়ে ওঠে। সুতরাং সুচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। প্রতিকার কথায় বলে ‘প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর’। শীতকালে যাদের ঠান্ডা লাগার ধাত আছে তারা হালকা গরম জলে স্নাস করুন। যারা শীত এলেই সর্দিকাশির কবলে পড়েন তাদের উচিত স্নানের আগে ভালো করে সারা গায়ে তেল মেখে স্নান করা। পরিবেশ উপযোগী পোশাক পরা। শীতবস্ত্র, টুটি, মোজা প্রভৃতি ব্যবহার করা। খাদ্যতালিকা অবশ্যই সুষম হতে হবে। ঋতু অনুযায়ী শাকসবজি, ফল খেতে হবে। বিশেষত শীতের কমলালেবু। অবশ্যই পরিমিত জল পান করতে হবে। ধোঁয়া, ধুলো-বালি প্রভৃতি থেকে দূরে থাকা। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করা দরকার। বুকে শ্লেষ্মা অনুভূত হলে বাড়িতে গরম জলের ভাপ বা ভেপারও নেওয়া যেতে পারে। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা হোমওিপ্যাথিতে শ্বাসের সমস্যায় ভালো চিকিৎসা করলে অবশ্যই সুফল পাবেন। প্রাথমিক অবস্থায় অ্যাকোনাইট-৩০, ব্রায়োনিয়া-৩০, রাসটক্স-৩০, আর্সেনিক-৩০ প্রভৃতি লক্ষণ অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে। ক্রনিক অবস্থায় ব্যাসিলিনাম, ন্যাট্রাম সালফ, সালফার, সোরিনাম, সিফিলিনাম, থুজা প্রভৃতি ওষুধ খুবই ফলপ্রদ। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন