×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

টনসিলাইটিস নেই অপারেশন নয়

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-16 11:43:00

টনসিল নিয়ে নানা সমস্যা ও মানুষের মনে যে চিন্তাভাবনা সেটা বহু বছরের পুরনো। প্রশ্ন হল, টনসিল জিনিসটি প্রকৃতপক্ষে কী? টনসিল হল ক্যাপসুরেটেড লিম্ফাটিক টিস্যু অর্থাৎ এক বিশেষ ধরনের গ্ল্যান্ড যাকে বলে লিম্ফগ্ল্যান্ড। এটি মুখের ভিতরে জিভের পিছনে আলজিভের দুপাশে অবস্থিত। স্ট্রেপটোকক্কাস জীবাণুর সং ক্রমণে ফুলে গিয়ে প্রদাহ হলে তাকে টনিসলাইটিস বলে। মানুষ যখন জন্মগ্রহণ করে তখন মায়ের কাছে থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা পায়। এরপর সে যখন বড় হয় তখন শরীরের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বিভিন্ন ভাবে তৈরি হয়। লিম্ফয়েড টিস্যু এমনই একটা জিনিস যা কিনা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা উৎস। ‘বি’ লিম্ফোসাইটি ‘টি’ লিম্ফোসাইট এরাই আমাদের শরীরে ইমিইনিটি তৈরি করে। এই দুটো লিম্ফোসাইট অ্যালার্জি থেকে যতরকম রোগই হোক প্রতিরোধের যতরকম প্রক্রিয়া তার সাহায্যকারী হিসাবে কাজ করে। টনসিলটা হচ্ছে এমনই একটা অর্গান যে রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা নেয়। আমাদের টনসিলের চারধারে খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী রয়েছে। এই দুটো পথেরএকটায় যাচ্ছে খাবার, অন্যটায় যাচ্ছে হাওয়া। এই পথে যা কিছু যাবে তার প্রহরী হিসাবে থাকছে টনসিল। যেমন আমাদের বাড়িতে কে ঢুকেছে কে বার হচ্ছে তার স্ক্রিনিং করার জন্য দারোয়ান থাকে, তার অনুমতি ছাড়া ঢোকা যায় না। ঠিক তেমনই আগে কোনো ভাইরাস গেছে কি না বা শরীরে কোনো ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে কি না, তা লক্ষ রাখে দারোয়ান ‘টনসিল’। টনসিল হল লিম্ফয়েড টিস্যুর সব থেকে বড় অংশ। বড় করে হাঁ করলে যেটা দেখা যায়। বাচ্চাদের গলায় ওইরকমই আর একটা অর্গান থাকে তাকে বলে অ্যাডিনয়েড। নাকের রাস্তা দিয়ে শ্বাসের সঙ্গে যত ব্যাক্টেরিয়া ভাইরাস ঢোকে সেগুলোকে ঠেকিয়ে রাখে ওই দারোয়ান। তারা জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। জিভের চারধারে একদম পিছনের অংশে বিভিন্নভাবে লিম্ফোসাইটগুলো রয়েছে। এদের সবার বড় দাদা হল ‘টনসিল’। টনসিলে প্রদাহ সৃষ্টি ব্যাক্টেরিয়া অথবা ভাইরাস। জীবাণু আর ভাইরাসের লড়াই চলে লিম্ফয়েড টিস্যুর সাথে ক্রমান্বয়ে। লড়াই করতে করতে যখন টনসিল হেরে যায় জীবাণুশক্তির প্রচন্ডতার কাছে তখনই প্রদাহ তৈরি করে। ব্যাক্টেরিয়ার যে টক্সিন মানে বিষ সেটা সারা শরীরে ছড়িয়ে যায়, তার পরিণামে জ্বর, গাঁটে-গাঁটে ব্যথা শুরু হয়। প্রদাহ একবার হলে পরে আবারও আসতে পারে, কিন্তু টনসিল জিতে গেলে প্রদাহ হয় না। নচেৎ আবার প্রদাহ শুরু হয়ে যেতে পারে। মাসে কিংবা দু’মাস অন্তর যদি একবার করে জ্বর হয়, খাবার খেতে অসুবিধা হয় তখন ডাক্তারবাবুরা চিন্তাভাবনা শুরু করেন যে টনসিলটা কাটা হবে কি না। টনসিলাইটিস কাদের হতে পারে বাচ্চা থেকে বড় সবারই হতে পারে। কিন্তু বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরালো না হওয়ার কারণে ছোট বাচ্চারা বেশি আক্রান্ত হয়ে পড়ে। টনসিলে প্রদাহ তৈরি জন্য সবথেকে খারাপ ধরনের কী ইনফেকশন হতে পারে? স্ট্রেপটোক্কাল জীবাণুটাই হল সব থেকে খারাপ ধরনের জীবাণু। এর টক্সিনটা একবার শরীরে এসে গেলে যদি অনেকদিন ধরে থাকে তখন শরীরে নানান জায়গায় বাসা বাঁধার চেষ্টা করে।   কোথায় কোথায় বাসা বাঁধতে পারে? যেমন হার্টে, কিডনিতে, জয়েন্টে বাসা বাঁধার চেষ্টা করে। আর্থ্রাইটিস, রিউম্যাটিক আর্থ্রাইটিস, নেফাইটিস ইত্যাদি সমস্যা তৈরি করে। তাহলে কাদের ভাবা উচিত টনসিল কাটার কথা? সবথেকে খারাপ ইনফেকশন স্ট্রেপটোকক্কাসে যারা ভুগছেন তাদের কিন্তু বিশেষ করে ভাবতে হবে টনিসল বাদ দেওয়ার কথা। টনসিলাইটিসের লক্ষণটা কী করে বোঝা যাবে? প্রথমে টনসিলের দুইদিকে কিংবা একদিক ফুলতে থাকে ও সুপারির মতো বড় হয়। আলজিভটি ফুলে লাল বর্ণ হয়। খাদ্য গ্রহণের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। মুখ দিয়ে লালা ঝরে, চোয়াল ব্যথা হয়, জ্বর ১০২ ডিগ্রি থেকে ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত হয়। অনেকের মধ্যে প্রবণতা থাকে বারবার এই রোগে আক্রান্ত হবার। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্টও বৃদ্ধি পায়। টনসিলে অনেক সময় ডিপথেরিয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। অনেক সময় বাচ্চা বা বড়রা ডিপথেরিয়ার ক্যারিয়ার হয়। সেক্ষেত্রে টনসিল কাটার কথা ভাবতে হয়। এটা কী করে বোঝা যাবে যে কেই ডিপথেরিয়ার বাহক? বারবার জ্বর হলে কালচার করে তার জার্ম পাওয়া যাবে অথচ তার কোনো প্যাচ বা সাদা দাগ দেখতে পাওয়া যায় না। টনসিলে কি কোনো টিউমার হতে পারে? টনসিলে বিনাইন এবং ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হয়। ক্ষতিকারক হল ম্যালিগন্যান্ট। ম্যালিগন্যান্সি থেকে ক্যানসার হয়, লিম্ফোমা হয়। এই সমস্ত রোগ হলে ডাক্তারবাবুরা টনসিলটাকে অপারেশন করে দেন। ১৯৭০ সালের আগে অ্যান্টিবায়োটিকের এত চল হয়নি। তাই সেই সময় বেশি পরিমাণে টনসিল কাটা হত। বর্তমানে প্রচন্ড শক্তিশালী সব অ্যান্টিবায়োটিক বাজারে এসে গেছে যা খুব ভালোভাবে লড়াই করতে দিতে পারে। তাই টনসিল অপারেশন এখন অনেক কমে গেছে। এটা রোগীদের কাছে একটা আশীর্বাদস্বরূপ। অনেক সময় দেখা যায় কোনো বাচ্চার বারবার সর্দি-কাশি জ্বর হচ্ছে। মা-বাবার ভীত হয়ে পড়েন। ভাবেন বাচ্চার বোধহয় টনসিলাইটিস হয়েছে। তা কিন্তু নয়। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় এগুলো ভাইরাস ইনফেকশন থেকে হয়। যেহেতু বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কম থাকে তাই ভাইরাসটা এসে থাবা বসায়। এদের দেখা যায় গলা-ব্যথার থেকে সর্দি-কাশিটা বেশি হয়। সুতরাং যাদের সর্দি-কাশির বেশি গলা ব্যথা কম, সেই সব কেসমকে টনসিলাইটিস বলি না এবং অপারেশন করি ন। অনেকে এটা করে থাকেন কিন্তু আখের কোনো লাভ হয় না। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন