শীতেও ছাতাটা মাথায় রাখুন
হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-16 11:58:39
শীতকালে আমাদের সানবার্নটা সহজেই হয়। কারণ রোদটা আমাদের ভালো লাগে। যতক্ষণ পারি আমরা রোদটা গায়ে মাখি। তার ফলস্বরূপ ত্বকে ছোট ছোট কালো স্পট, মেচেতা, তিল দেখা যায়। এছাড়াও ঋতু পরিবর্তনের সময় স্কিন ড্রাই বা শুকনো হয়ে যায়। যাদের ত্বক বেশি ড্রাই তাদের মধ্যে রৃক্ষতা বেশি আসে। এ সময় বডি অয়েল ব্যবহার করা ভালো। স্নানের আগে লাগালে স্নানের জলের সঙ্গে তেলটা বেরিয়ে যায়। তাছাড়া তেলটা আগে মাখলে রোমকূপের মধ্যে জলটা ঠিকমতো প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ত্বক আর্দ্রতাটা ধরে রাখতে পারে না। সেজন্য স্নানের পর ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ ভিটামিন ‘ই’ ও অ্যালোভেরাযুক্ত বডি অয়েল ব্যবহার করা ভালো। যেমন DERMADEW, CUTINORM বা গ্লিসারিন বেস ক্রীম, ALOEKIN ক্রীম, NMFE ভিটামিন ও অ্যালোভেরা যুক্ত ALOPKIN জাতীয় ক্রীম ব্যবহার ত্বক ভালো থাকে। এছাড়া ত্বক ভালো রাখার জন্য বেশি করে জল, ফল (মরশুমি) ও বিভিন্ন সবজি যা শীতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় সেগুলো খাওয়া দরকার। অনেকে শীতের ভয়ে জলটা এ সময় কম খান। তার ফলে ত্বকে রক্ষতা আসে। সেজন্য বেশি করে জলটা খাওয়া দরকার। স্নান করার জল কিন্তু খুব ঠান্ডা কিংবা খুব গরম হওয়া উচিত নয়। ইষৎউষ্ণ জলে স্নান হল আদর্শ স্নান। সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি এই সময় ত্বকে সোজাসুজি প্রবেশ করে বলে মেলাসমা ফ্রেকলস হয়। এগুলো সাধারণত সূর্যের তাপে বেশি হয়। সেজন্য রোদে বেরোনোর আধঘন্টা আগে সানস্ক্রিন লোশন মুখে গলায় ও হাতে ব্যবহার করা উচিত এবং অবশ্যই ছাতা, সানগ্লাস বা রোদ চশমা ব্যবহার করুন। এর ফলে কিছুটা হলেও সূর্যের আলো প্রতিহত করা যায়। র্সর্যের আলো লেগে যে ক্ষতিটা হয় তা গাজর বেশি করে খেলে কিছুটা প্রতিরোধ করা যায়। শীতকালে মাথায় খুশকির প্রবণতা বাড়ে। আবার খুশকির মতো যখন গায়েও হয় তখন তাকে সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বলে। এটা এক ধরনের চর্মরোগ। সিবেসাস গ্ল্যান্ড শরীরে যেখানে বেশি থাকে সেখানে সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বেশি দেখা যায়। খুশকির জন্য চুল উঠে যায়, মুখ চুলকায়, গা চুলকায়। তাই এক্ষেত্রে অ্যান্টি ফাংগাল শ্যাম্পু ও সাবান ব্যবহার করা দরকার। ডার্মাটাইটিসের জন্য স্টেরয়েড মলম কম সময়ের জন্য ব্যবহার করা উচিত। এরপর ময়েশ্চারাইজার জন্য ব্যবহার করা উচিত। এরপর ময়েশ্চারাইজর ব্যবহার করা যেতে। খুশকির জন্য সপ্তাহে দু’দিন ভালো করে চল পরিষ্কার করে শ্যাম্পু দিয়ে খোয়া উচিত। চুল ভালো করে না ধুলে অনেক সময় সাবানের ফেনার থেকেও খুশকি হয়। তাছাড়া ধোঁয়া, ধুলো ইত্যাদি তো আছেই। শীতকালে সোরাইসিসের প্রবণতা বেশি থাকে। সোরাইসিস মাথা, শরীরের কিছু অংশে হতে পারে। অনেকে এটাকে খুশকি বলে মনে করেন। এটা সোরাইসিস ও খুশকির মাঝামাঝি, মাছের আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে। এই সময় গোড়ালি ফেটে যায়। যারা জলের কাজ বেশি করেন কিংবা জল ঘাঁটেন বেশি তাদের ক্ষেত্রে রোগটা বেশি হয়। পা ফেটে ইনফেকশন হয়। এক্ষেত্রে কোনও ভালো ময়েশ্চার ব্যবহার করা যেতে পারে। SA ৬% অয়েনমেন্ট ব্যবহার করা হয় এইসব কারণে। অ্যান্টিবায়োটিক ক্রীম লাগিয়েও যদি না কমে সেক্ষেত্রে কোনও ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাবান ব্যবহার করা ভালো। কারণ অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার করলে চামড়ায় রক্ষতা আসে। এই সময় আমরা আর একটা জিনিস লক্ষ করি। সেটা হল ঠোঁট ফাটার প্রবণতা। সেজন্য ভালো লিপ-বাম কিংবা জলের সঙ্গে গ্লিসারিন মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেকের স্বভাব ঠোঁট জিভ দিয়ে চাটা। তার জন্যও ঠোঁটটা শুকিয়ে কুঁচকে টান ধরে। এরকম হলে ঠোঁটে ভেসলিন জাতীয় ক্রীম লাগানো ভালো। সোরাইসিস জাতীয় রোগ ইনফেকশন হলে বাড়তে থাকে, স্ট্রেস থেকে বাড়ে, চুলকালে বাড়ে এবং ওয়েদার চেঞ্জ হলেও বাড়ে। প্রথমগুলো হাতের কন্ট্রোলের মধ্যে। সেজন্য কিছুটা সময় নিয়ে পরিচর্যা করলে সেরে যায়। কিন্তু ওয়েদার চেঞ্জের জন্য যে সমস্যা হয় সেটা আমাদের কিছুটা সমস্যায় ফেলে। তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতেই হয়। আর এক ধরনের রোগ দেখা যায় এই সময়। সেটা হল অ্যাটপি ডার্মাটাইটিস। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। হাঁটু, কনুই, কঁচকির খাঁজে হয়। জিায়গাটা ড্রাই হয়ে যায় এবং চুলকায়। ডার্মাডিউসোম, অটোলোশন লাগানো যেতে পারে। আর হাতে-পায়ে মাছের আঁশের মতো হয় যে রোগটি সেটি জন্মগত। ইকথায়োসিস ভালগরিস। ইউরিয়াযুক্ত ময়েশ্চারাইজার লাগালে উপকার হতে পারে। শীতকালে শরীরে আর্দ্রতা বজায় রাখতে নিয়মিত স্নান, ময়েশ্চারাইজার মাখা দরকার। মুখের জন্য ক্রীম মাখতে হবে। ৮-১০ গ্লাস জল পান করতে হবে। সেই সঙ্গে ফল, সবজি, হালকা ব্যায়াম ও মনিং ওয়াক শরীরকে ঠিক রাখবে। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন