×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

কাদের মাসিক অনিয়মিত

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-16 15:46:59

মেয়েদের রজঃস্রাব বা মাসিক শুরু হয় সাধারণত নয় থেকে এগারো বছর বয়সের মধ্যে, যাকে বলা হয় মেনার্ক। এবং মেনোপজ অর্থাৎ রজঃস্রাব যখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় সেটার সময় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ। এই দুই সময়ের মধ্যে নিয়মিত মাসিক হওয়ার মেয়েদের জীবনে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে স্বাভাবিক এই ঘটনার শুরু ও শেষের পথটা সবসময়ই অনিয়মিত হতে পারে। এই দুই ক্ষেত্রেই চিকিৎসা কিন্তু হরমোন বা অপারেশন নয়। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র যদি বেশি রক্তক্ষরণ হয় তাহলে সেই রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য বা কমাবার জন্য হরমোন ছাড়া যেসব ওষুধ আছে সেগুলো খাওয়া যেতে পারে। আর যদি ব্যথা হয় তাহলে ব্যথা কমাবার জন্য হরমোন ছাড়া ব্যথার ওষুধ খাওয়া চলতে পারে। রজঃস্রাব বন্ধ হবার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই শরীর ফিমেল হরমোনের ঘাটতি দেখা যায়। ফলে মাসিকের যতরকম সমস্যা আছে অর্থাৎ বেশি হওয়া, কম হওয়া, অনেকদিন ধরে হওয়ার মতো ঘটনা যেকোনোটাই হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে সাধারণভাবে আমরা দেখি হরমোন দিয়ে অনেক ডাক্তারবাবু চিকিৎসা করেন। এখানে হরমোন বলতে গর্ভ নিরোধক পিল বা কনট্রাসেপটিভ পিল দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। কনট্রাসেপটিভ পিল দিয়ে চিকিৎসা করার ফলে যে অসুবিধাগুলি হয় তা হল---

  • কনট্রাসেপটিভ পিল খেলে রজঃস্রাব হবেই। কাজেই রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যাবার পরেও যদি কেউ কনট্রাসেপটিভ পিল খেতে থাকে সে তখন বুঝতে পারবে না এই রক্তক্ষরণটা রজঃস্রাব বন্ধ না হয়ে যাবার জন্য, না কনট্রাসেপটিভ পিল খাবার জন্য। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে অনিয়মিত রজঃস্রাব যখন হচ্ছে তখন কনট্রাসেপটিভ পিল খেলে নিয়মিত হবে। কিন্তু একটা সময় গিয়ে তো প্রকৃতির নিয়মে মেনোপজ হয়ে যাবে। তকনও যদি পিল খেতে থাকে কেউ তাহলে কিন্তু বুঝতে পারবে না কখন প্রকৃতি নিয়মে মেনোপজ হয়ে গিয়ে শুধুমাত্র পিল খাবার জন্য রজঃস্রাব হয়ে যাচ্ছে।
  • যে বয়সে মেনোপজ শুরু হয় সেই চল্লিশ বছরের ওপর সাধারণভাবে চিকিৎসকরা কনট্রাসেপটিভ পিল খেতে মানা করেন এবং পঁয়তাল্লিশ বছর পরে এই পিল কাওয়া উচিত নয়। অর্থাৎ চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ বছরে দিলেও দেওয়া যেতে পারে। তবে না দেওয়াই ভালো। কিন্তু পঁয়তাল্লিশের পর কখনোই নয়। কিন্তু এগুলো না জেনেই মহিলারে পিল কিনে খান।
এই মেনার্ক এবং মেনোপজের সময় ছাড়াও কখনো কখনোও অনিয়মিত রজঃস্রাব হয়। সেই অনিয়মিত রজঃস্রাব কীভবে হতে দেখা যায়? অনিয়মিত রজঃস্রাব অর্থাৎ মাসে মাসে ঠিক সময়ে রজঃস্রাব না হয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবে আঠাশ-ত্রিশ দিনের বদলে বত্রিশ-পঁয়ত্রিশ দিন, কখনো কখনো চল্লিশ-বিয়াল্লিশ দিন বা এক মাস বা দু’ মাস পিছিয়ে যায়। একেবারে চরম ক্ষেত্রে বছরে তিন বা চারবারের বেশি রজঃস্রাব হয় না। এটা যে কারণে হয় সেই একই কারণে রজঃস্রাবের পরিমাণও কমে যেতে পারে। অর্থাৎ আগে পাঁচদিন হত, এখন দু, দিন হচ্ছে। যে কারণে এই অস্বাভাবিক ঠিক একই কারণে উল্টোটাও হতে দেখা যায়। অর্থাৎ মাসে দু’বারও রজঃস্রাব হতে পারে। যদিও এটা বিরল ঘটনা। এইসব ঘটনার জন্য দায়ী থাকে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ বা পি.সি.ও। নামটা থেকে বোঝা যাচ্ছে পলি মানে অনেক সিস্ট অর্থাৎ ছোট ছোট জলভরা ফোস্কার মতো। এক্ষেত্রে সিস্টগুলো কিন্তু ওভোরিতে থাকে না।এখানে সিস্টগুলো না-ফাটা ডিম্বাণু। যে কারণে মেনার্ক বা মেনোপজের সময় রজঃস্রাবের গন্ডগোল হয়। কারণ ডিম্বাণু ঠিকভাবে প্রত্যেক মাসে বেরোয় না, ঠিক একই কারণে পলিসিস্টিক ওভারিতেও ডিম্বাণু না বেরোনোর জন্যই গন্ডগোল। গন্ডগোলটা পলিসিস্টিক ওভারিতে কীসের এটা মনে রাখতে হবে, পলিসিস্টিক ওভারিটা জন্মগত। এমন হয় পনেরো-ষোলোতে ধরা পড়ল না, পঁচিশ গিয়ে ধরা পড়ল। কেন? আসলে পলিসিস্টিক ওভারি প্রগ্রেসিভ—ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। জন্মগত, ধীরে ধীরে বাড়ে এবং সারে না। এটা বংশগত। অর্থাৎ যে মহিলা পলিসিস্টিক ওভারিতে ভুগছেন তারা বাড়িতে মা, ঠাকুমা, দিমিা, পিসিমা, মাসিমা কেউ না কেউ এই একই ধরনের গন্ডগোল আগে ভুগেছেন। কিন্তু আগেকার দিনে আলট্রাসনোগ্রাফি ছিল না বলে এই পলিসিস্টিক ওভারি নির্ণয় করা যেত না। পলিসিস্টিক ওভারি শুধুমাত্র আলট্রাসাউন্ড করেই নির্ণয় করা যায় তা নয়, বাহ্যিকভাবে দেখেও পলিসিস্টিক ওভারি নির্ণয় সম্ভব। তাই অনেক সময়ই ভুক্তভোগী মহিলাদের মধ্যে চেহারার সাদৃশ্য দেখা যায়। পলিসিস্টিক ওভারিতে হরমোন তার সামঞ্জস্য হারায় (টোটাল ডিসব্যালান্সড্)। শরীরে পুরুষ হরমোন প্রোজেস্টেরনের পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং স্ত্রী-হরমোন ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমতে থাকে। এর সাথে বিভিন্ন ধরনের হরমোন যেমন থাইরয়েড , ইনসুলিন, প্রোল্যাক্টিন হরমোন ইত্যাদি কমবেশি হয়। তাই পলিসিস্টিক ওভারির রোগীদের হরমোন চিকিৎসা না করে যদি হরমোনেক সামঞ্জস্যকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে রোগী দীর্ঘস্থায়ী ফল লাভ করে। যদিও চিকিৎসা এটা সম্পূর্ণভাবে নিমূল হয় না। পলিসিস্টিক ওভারি িহলে মনে রাখতে হবে এটার জন্য অপারেশন করার দরকার নেই। যদিও চিকিৎসকরা এটাকে সিস্ট বলেন, কিন্তু অপারেশন এটা সারে না। ওষুধেই এটা নিরাময় হবে। বারে বারে কিংবা এক মাস বা দু’মাস পর পর আলট্রাসনোগ্রাফি করানোরও দরকার নেই। অনেকেই ভাবে ওষুধ খেয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করে দেখে নিই কমেছে কি না। এসব ক্ষেত্রে আজকে কম থাকলে আবার দু’দিন পরে বাড়াবে। কাজেই বারবার পরীক্ষা করা অর্থহীন এবং ফালতু খরচ ছাড়া কিছুই নয়। পলিসিস্টিক ওভারির জন্য কিছুদিন খেয়ে যাবার পর নিয়মিত রজঃস্রাব হতে থাকলে তখন ওষুধ বন্ধ করে দিয়ে দেখদে হবে ওষুধ ছাড়াই নিয়মিত রাজঃস্রাব হচ্ছে কি না। যদি না হয় তাহলে সেই রোগীকে ওষুধ খেয়েই যেতে হবে। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন