×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

অসমান দাঁত-উঁচু দাঁত ভুলে যান

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-11-17 12:28:49

মানুষের বাইরের চেহারা মানুষের প্রকৃত পরিচয় নয়। তবু চেহারার সামান্য কিছু খঁত বা ক্রটি জীবনের নানারকম সমস্যা তৈরি করে। যেমন শুধুমাত্র উঁচু দাঁতের কারণে আমাদের পাড়ার রেখার বিয়েটা ভেঙে গেল। বেচারি! বাব-মা যদি একটু সচেতন হয়ে ছোটবেলায় কোনো অর্থোডেন্টিস্টকে দেখিয়ে চিকিৎসা করাতের তাহলে এইরকম সমস্যা তৈরি হত না। এরকম আরও আছে। রূপেশের কথাই ধরুন। কোনোদিন প্রাণ খুলে হাসতে পারে না কারণ হাসলেই তার অসমান দাঁতের সারি দেখতে বিশ্রী লাগে। ফলে সে হীনস্মন্যতায় ভোগে। জীবনের একটা সময়ে সব বাচ্চারই দুধে দাঁত পড়তে থাকে ছয়-সাত বছর থেকে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবে কিছুটা উঁচু নীচু হয়ে যায় দাঁতগুলো। আট-নয় বছর থেকেই মুখের ভিতরের অসমান দাঁতের সারি বোঝা যায়। তবে সব ক্ষেত্রেই যে এই ধরনের সমস্যা তৈরি হয় তা নয়। অসমান, উঁচু ও অবিন্যস্ত দাঁতের সারি সবসময় বাইরে বেরিয়ে থাকে। তার ফলে মুখের বাইরে বেরিয়ে থাকা মাড়ি আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। ফলে অনেক সমস্যা তৈরি হয়। যেমন দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন অসুখ, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, তাড়াতাড়ি দাঁত পড়ে যাওয়া ইত্যাদি। এছাড়া অসমান দাঁতের কারণে শক্ত কোনো কিছু খেতে না পারার সমস্যাও হয়। ওপরের সারির দাঁত সামনের দিক এগিয়ে থাকায় নীচের সারির দাঁত ওপরের মাড়িকে ক্রমাগত আঘাত করে দুর্বল করে ফেলে। কারো কারো ক্ষেত্রে সমস্যাটা শুধু দাঁতের মধ্যেই থাকে না, চোয়ালের গঠনেও অসঙ্গিত থাকে। সমস্যা দাঁতের গঠনগত ক্রটি অনেক সময় বংশগত-ভাবে দেখা যায়। অর্থাৎ পরিবারের কারো এই ধরনের উঁচু দাঁত থাকলে তা সন্তানের মধ্যেও দেখা যেতে পারে। ছোটবেলা থেকে বাচ্চাদের কিছু অভ্যাস বড় হবার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। কোনো কোনো বাচ্চার মধ্যে হাতের বুড়ো আঙুল চোষার প্রবণতা দেখা যায়। কেউবা লেখাপড়ার সময় মুখে পেন বা পেনসিল ঢোকায়, আবার কারো কারো নাকের কিছু সমস্যা যেমন--- অ্যাডিনয়েড, সেপট্রাম বা অ্যালার্জি থাকে তাদের ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যার ফলে তারা মুখের সাহয্যে শ্বাস-প্রশ্বাস চালায়। ফলে ক্রমশ ওপরের চোয়ালটা ছোট হয়ে যাওয়ায় নাকের মধ্যে হাওয়া-বাতাস নেওয়ার জায়গাটা যেমন বড় হয় না, তেমনি ওপরের দাঁতগুলো নীচের দাঁতের তুলনায় ছোট হয়। এদের একটা অভ্যাস হয়ে যায় জিভ দিয়ে দাঁত ঠেলা। যেহেতু এরা হাঁ করে থাকে তাই জিভ দিয়ে চাপ দেয়। বাইরে থেকে ঠোঁটটা চেপে ধরে না বলে দাঁতগুলো উঁচু হয়ে বেরিয়ে থাকে। সামনের দাঁত উঁচু বা অসমান হতে শুরু করেছে, এটা বুঝতে পারলেই একজন অর্থোডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসা উঁচু, নীচু বা অসমান দাঁত কিংবা চোয়ালের গঠন অস্বাভাবিকতার চিকিৎসা যে কোনো বয়সেই করা যেতে পারে। যদি না রোগীর শারীরিক অন্য কোনো সমস্যা থাকে। অধিকাংশ মানুষের মাড়ি ও দাঁতের পরিচর্যা ঠিকমতো না হওয়ার ফলে নানারকম সমস্যা দেখা যায়। এছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এসব এসে যখন শরীরে যুক্ত হয় তখন দাঁতের সমস্যাও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। আর। এই সময় দাঁতের চিকিৎসায় নানরকম জটিলতা তৈরি হয়। তাই যত কম বয়সে চিকিৎসা শুরু করা যায় ততই ভালো। বেশি বয়সে চিকিৎসা শুরু করলে শতকরা একশোভাগ সফলতা প শহরে অত্যন্ত সুদক্ষ কিছু অর্থোডেন্টিস্ট রয়েছেন যারা মুখের ভিতর কিছু ছোট যন্ত্রপাতি বসিয়ে ছ’ থেকে আঠারো মাসের চিকিৎসায় মুখের গঠনকে বদলেই শুধু দিচ্ছেন না, এনে দিচ্ছেন মুক্তোর মতো দাঁতের সারিতে ঝকঝকে হাসি। তাই লজ্জায় আর মুখ লুকোতে হবে না। যেখানে রোগীদের চোয়ালের গঠনটাই মূল দায়ী থাকে দাঁতের সেটিংয়ের ব্যাপারে, সেখানে শুধুমাত্র ব্রেসেস লাগিয়ে কিছু হয় না। এক্ষেত্রে হাড় কেটে বা মুখের ভিতর মাংসপেশির কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে চিকিৎসা করা হয়। সেই চিকিৎসায় শুধুমাত্র অর্থোডেন্টিন্ট নন, তার সাথে ম্যাক্সিলো হয়ে একটি টিম হিসাবে কাজ করতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় নীচের চোয়ালটা বাড়ছে না কিংবা ওপরের চোয়ালটা বেশি বাড়ে যাচ্ছে। কম বয়সের রোগী হলে গ্রোথ মডিফিকেশন করা সম্ভব। বাচ্চার বেড়ে ওঠার সাথে সাথে তার খারাপের দিকটাকে আটকানো সম্ভব। মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি বা রজঃস্রাব শুরু হওয়ার আগেই করা উচিত।ছেলেদের ক্ষেত্রে দু’এক বছর দেরি করা যেতে পারে। সাধারণত ফিক্সড ব্রেসেস ১২ বছরের আগে পরানো হয় না। চিকিৎসার জন্য সময় লাগে আঠারো মাস। এই চিকিৎসাগুলো কোনোটাই যন্ত্রণাদায়ক নয়। কিন্তু চিকিৎসা সময়কাল যেহেত যথেষ্ট সময় নিয়েই হয় তাই অধৈর্য হয়ে তাড়াতাড়ি করলে চলবে না। এতে হিতে বিপরীত হবে। বর্তমানে আঁকা-বাঁকা অসমান দাঁতের সারিকে ঠিক করা কোনো শক্ত কিছু ব্যাপার নয়। সহজেই করে ফেলা সম্ভব। রোগী ও তার বাড়ির লোকজনের একটু  সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ অন্য দাঁতগুলোকে বাঁচিয়ে নার্ভ ব্লাড ভেসেলকে পুরো অটুট রেখে চিকিৎসা করতে হয় ধীর গতিতে। ক্ষেত্রবিশেষ সময় লাগে ছয় থেকে আঠারো মাস। জীবনশৈলির বদল এখনকার দিনের বাচ্চারা চিবিয়ে খেতে চায় না। এর জন্য দায়ী আমাদের জীবনশৈলি বা লাইফস্টাইল। বাচ্চাদের সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে একবাটি মুড়ি কিংবা দুটো রুটি খেতে বসিয়ে দিলে আর স্কুলে যাওয়ার সময় হয়ে উঠবে  না, এবং বাবা-মায়েরও সেই সময় ধৈর্য নেই। কেননা তাদেরও অফিস যাওয়ার তাড়া থাকে। তাই পইরুটি, বিস্কুট, চাউমিন বা হেলথ ড্রিঙ্কস্ ধরিয়ে দেয়। এইসব হেলথ ড্রিঙ্কসের বাজারি প্রচারে বাবা-মা মুগ্ধ হয়ে শিশুকে খাওয়ান এবং শিশুর দাঁতের ক্ষতি করে ফেলেন নিজেদের অজান্তেই। চিবিয়ে খাবার খেলে চোয়ালের ব্যায়াম হয়, খাবার ঠিকমতো হজম হয়। এখনকার শিশুরা চিবিয়ে খাওয়ার সময়ই পাই না। আগেকার গরিব-গুর্বোরা মাইলো, ভুট্টা, যব খেত। এগুলো এখন বড়লোকরা খায়। দাঁতের রোগ আটকাতে গেলে এই ধরনের জিনিস খাওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ফলকে রস না করে কেটে চিবিয়ে খেতে হবে। চিবিয়ে না খাওয়ার ফলে চোয়ালের যে অল্প অসঙ্গতি রয়েছে সেটা বাড়ছে। দুধের দাঁত ঠিক সময়ে পড়ছে না। এমনকী দুধে দোঁতের জন্যও স্পেশালিস্টের প্রয়োজন পড়ছে। নির্দিষ্ট বয়সে যে দাঁতগুলো ওঠার কথা তা সময়ে উঠছে না। এই সব নানান সমস্যায় দন্ত চিকিৎসকের কাছে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগে চল্লিশ বছরে আগে দাঁতের ডাক্তারের কাছে শতকরা এক ভাগ লোকও যেতেন না। বর্তমানে বাচ্চাদের মধ্যে শতকরা পঁচিশ জন এবং যারা অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম তাদের মধ্যে নিরানব্বই জন দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন অতি অল্প বয়সেই। এর একমাত্র কারণ খাদ্যভ্যাসের বদল এবং ভুল নিউট্রিশন। ছোট থেকে বাচ্চাদের দাঁতের যত্ন শেখান। প্রত্যেকটি খাবার যাতে সে চিবিয়ে খায় সেদিকে সচেতন থাকুন। এই একটু সচেতনতাই আপনাকে এবং আপনার সন্তানকে ডেন্টিস্টের কাছ থেকে দূরে রাখবে।