×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

প্রেসারের ওঠাপড়ায় ভয়ঙ্কর বিপদ

ডাঃ সৌমিত্র রায়
2018-12-08 14:50:07

ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ চিরচঞ্চল। এই রক্তচাপ কখনো এক জায়গায় স্থির থাকে না। এমনকী কয়েক মিনিট বাদেই আগের প্রেসার প্রথমবারের সঙ্গে মেলে না। তাহলে রক্তচাপের ওঠানামা ব্যাপার কী? সেটা কতটাই বা গুরুত্বপূর্ণ? সাধারণ মানুষ উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসারের থেকেও বেশি ভাবনায় পড়েন রক্তচাপের ওঠানামায়। অনেকে আবার এসে বলেন ডাক্তারবাবু, আমার প্রেসারটা খুব ফ্ল্যাকচুয়েট করছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর মানে হচ্ছে প্রেসার বেড়েছে, যেটা তিনি ঠিক স্বীকার করতে ভয় পাচ্ছেন! ওঠানামা বোঝার আগে বোঝা যাক স্বাভাবিক রক্তচাপ কত। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে ওপরের প্রেসার (সিস্টোলিক প্রেসার) ১১০ থেকে ১৪০ মিলিমিটার পারদের চাপ, আর নীচের প্রেসার অর্থাৎ ডায়াস্টোলিক ৬০ থেকে ৯০ মিলিমিটার পারদের চাপ, যা স্বাভাবিক বা নর্মাল। এর বেশি রক্তচাপ হলে চিকিৎসা দরকার। আর এর কম হলে প্রেসারের ওষুধ কমানো দরকার বা ওষুধ না চললে কেন কম রক্তচাপ হল তার কারণ খোঁজা দরকার। এবার বোঝা যাক ওঠানামা ব্যাপারটা কী? সিস্টোলিক বা ডায়াস্টোলিক ব্লাড প্রেসারের খুব বেশি পরিবর্তনই ওঠানাম। স্বাভাবিক যে রেঞ্জ দেওয়া হল তার মধ্যে এই ওঠানামা সীমাবদ্ধ থাকলে তা নিয়ে সাধারণত মাথা ঘামাবার দরকার হয় না। কিন্তু সীমার বাইরে গিয়ে রক্তচাপ ওঠানামা করলে তা ভাবনার বিষয়। আমাদের রক্তচাপ নানারকম শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার ওপর নির্ভরশীল। যেমন কাজের চাপ, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা, নিদ্রাহীনতা, বেশি রাগের প্রবণতা ইত্যাদিতে বাড়ে। স্বভাবতই যারা হঠাৎ রেগে যান বা হঠাৎ টেনশন বা অ্যাংজাইটিতে আক্রান্ত হন তাদের রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে নিয়মিত ওষুধ দেওয়া বিপজ্জনক। কারণ রক্তচাপ খুব নেমে গিয়ে মাথা ঘুরে যেতে পারে। এখানে সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা হচ্ছে যোগ, প্রাণায়াম এবং মানসিক স্থিতি (মেন্টাল রিল্যাক্সেশন)। আবার অনেকের রক্তচাপ চিকিৎসকের চেম্বারে এলে বেড়ে যায়। বাড়িতে এদের স্বাভাবিক রক্তচাপ থাকে। যদি এই ধরনের সন্দেহ হয় বা পরীক্ষার বৈপরীত্য পাওয়া যায়, তবে ‘অ্যাম্বুলেটরি ব্লাড প্রেসার মনিটরিং’ করা উচিত যাতে বাড়ির পরিবেশ স্বয়ংক্রিয় মেশিনের সাহায্যে ২৪ ঘন্টার রক্তচাপ মাপা যায়। বৃদ্ধ মানুষদের অনেক সময় শোয়া অবস্থায় রক্তচাপ বেশি হয়, কিন্তু দাঁড়াতে গেলেই তাদের রক্তচাপ হঠাৎ নেমে গিয়ে মাথা ঘুরে যায়। বয়সের সঙ্গে শিরা ও ধমনীর পরিবর্তন এই ‘পশ্চারাল হাইপোটেনশনে’র কারণ। ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য কিছু অসুখেও নার্ভ শুকিয়ে গিয়ে এই ঘটনা ঘটতে পারে। এর চিকিৎসা বেশ জটিল এবং অনেক ক্ষেত্রেই পুরোপুরি কার্যকরী হয় না। প্রেসারের ওষুধ বেশি খাওয়ালে এই প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে রক্তচাপ কিছু বেশি এটা মেনে নিতে হয় এবং প্রেসারের ওষুধ কমিয়ে বা বন্ধ করে দিতে হয়। আবার অনেক সময় অল্পবয়সী মেয়েদের বিশেষ করে স্কুলের প্রেয়ার লাইনে গরমে দাঁড়িয়ে থাকলে রক্তচাপ কমে গিয়ে মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাবার ঘটনা ঘটে। এই একই জিনিস হয় ব্যাঙ্ক বা অফিসের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলে বা অনেকের হঠাৎ চোট লাগলে বা রক্ত দেখলে। এই ‘ভাসোভেগাল সিনকোপ’-এ হঠাৎ শরীরের সব রক্ত মাথার দিক থেকে পায়ের দিকে চলে যায় পালস এবং রক্তচাপ একেবারে নেমে যায়। এক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়তে হবে, যেখানেই থাকুক না কেন। পারলে পায়েল দিকটা উঁচু এবং মাথার দিকটা নীচু করে। যতক্ষণ না সম্পূর্ণ সুস্থ বোধ করছেন ততক্ষণই শুয়ে থাকুন। নুন জল খান। গরমের দিনে নুনজল খাবেন বারে বারে। জ্বর বা পেট খারাপ থাকলে বেশিক্ষণ একভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। উচ্চ রক্তচাপ কোনো কোনো অসুখে এই ওঠানামা বেশি হয়। যেমন ফিওক্রোমাসাইটোমা (pheochromacytoma)  বা অনেক সময় কিডনির কারণে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখিয়ে নেওয়া উচিত। হঠা’ রক্তচাপ বেড়ে গেলে মাথার শিরা ছিঁড়ে গিয়ে স্ট্রোক হতে পারে বা হঠাৎ হার্টের ওপর চাপ পড়ে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। চোখ বা কিডনির ক্ষতি হওয়াও সম্ভব। তাই রক্তচাপের রোগীদের উচিত চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করা, মাঝে মাঝে রক্তচাপ দেখা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ না কমানো বা বাড়ানো। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন