×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

রক্তচাপ আলবৎ স্বাভাবিক রাখা যায়

ডাঃ বেদীমাধর দাস অধিকারী
2018-12-14 13:04:23

শরীরে রক্তের চাপ স্বাভাবিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ রক্তের চাপ বেশি হলে যে রকম বিভিন্ন উপসর্গ ও জটিলতা সৃষ্টি হয়, সেইরকম কম হলেও বিভিন্ন আপদকালীন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, বাস্তব অভিজ্ঞাতায় দেখেছি বহু ব্যক্তি রক্তচাপের বিশেষত উচ্চ রক্তচাপের বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে সচেতন নয়। শুধু অসচেতন নয়, অজ্ঞ এবং অবৈজ্ঞানিক বিভিন্ন ধারণার ফলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। প্রথমে উচ্চরক্তচাপের প্রসঙ্গে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা আবশ্যক। চিনের একটি প্রবাদ আছে, হা হল,  If you plan for one year, plant rice, if you plan for ten years plant tree, but if you plan for one thousand years educate the people. হ্যাঁ, প্রবাদটি এই জন্যই উল্লেখ করলাম, কারণ আমাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত অধিকাংশ অতীতে এমন জীবন যাপন করেছেন যে, রোগটি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাই ভবিষ্যতে শুধু উচ্চরক্তচাপ নয়, অন্যান্য রোগসমূহকে প্রতিরোধ করতে হলে অনেক আগে থেকে জীবনশৈলী ঠিক করতে হবে। সংক্ষেপে উচ্চরক্তচাপের কারণগুলো হল বংশগত, পরিবেশ ও ব্যক্তিত্ব, মানসিক চাপ, বেশি তেল, ঘি. মশলা, লবণ জাতীয় খাদ্য, বেশি শারীরিক ওজন, ধূমপান, মদ্যপান, গর্বনিরোধক বড়ি, অত্যধিক চা-কফি, বৃক্কের বিভিন্ন রোগ, গর্ভাবস্থা, অন্তঃস্রাবী গ্রন্থিসমূহের গোলযোগ প্রভৃতি কারণে উচ্চরক্তচাপ হতে পারে। মানসিক শান্তির জন্য জটিল ও মানসিক চাপযুক্ত জীবনশৈলী এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে থানকুনিপাতা, ব্রাক্ষী, সুষনিশাক, সজিনাশাক সপ্তাহে একদিন, দু’দিন নিয়ম করে খেতে হবে। ঘুম না হলে সুষনিশাক, জটামাংসী, অশ্বগন্ধা, শঙ্খপুষ্পী প্রভৃতি রাত্রে শোয়ার পূর্বে খেলে উপকার হবে। অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাদ্য খাওয়া বন্ধ করতে হবে। চর্বিজাতীয় খাদ্য, স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন ঘি, মাখন, গরু ও মোষের দুধ, দুগ্ধজাত পদার্থ, রেডমিট, মেটে, কাঁকড়া, চিংড়ি প্রভৃতি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়। এটি খারাপ লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা কমিয়ে, ভালো হাইডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে এরকম বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ সপ্তাহে দু’তিন দিন নিয়মিত খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়। যারা নিরামিষাশী, তাদেরকে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের জন্য গম, বাজরা, বরবটি, রাজমা, সয়াবিন, মেথি, সবুজ শাকপাতা প্রভৃতি নিয়মিত খেতে হবে। কায়িক পরিশ্রম বা শরীরচর্চা, স্থূলতা প্রতিরোধের জন্য উপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপান ও ধূমপান, দিনে ঘুমোনো প্রভৃতি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। কোলেস্টেরল কমাতে নিয়মিত পিঁয়াজ, রসুন, গুগগুল, অগ্নিমন্থ, তেঁতুল, জিরে, আদা, পুষ্করমূল প্রভূতি মাঝেমধ্যে নিয়মিত খেতে হবে। উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্রাক্ষীযোগ নামক একটি ওষুধ—ব্রাক্ষী, বচ, জটমাংসী ও অর্জুন ছাল সমানমাত্রায় নিয়ে চূর্ণ করে তিনগ্রাম মাত্রায় দিনে তিনবার জলসহ নিয়মিত খেলে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রসঙ্গত যারা বেশি ব্লাডপ্রেসারের জন্য ওষুধ খাচ্ছেন, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারেই ওষুধ খেতে যাবেন। যোগাসন শবাসন, পবনমুক্তাসন, উথ্থানপাদ আসন, ভোরে বস্তিক্রিয়া, বজ্রাসন, অর্ধ শলভাসন প্রভৃতি করলে উপকার হয়। ব্লাডপ্রেসার মাপার বিষয়ে পালনীয় কর্তব্য

  • শিক্ষিত চিকিৎসকের কাছেই ব্লাডপ্রেসার মাপাবেন।
  • পারদ বা ব্যারোমিটার ব্লাডপ্রেসার যন্ত্র বা স্ফিগমোম্যানোমিটারে পরীক্ষা করতে হবে।
  • ব্লাডপ্রেসার মাপার পূর্বে রোগী যেন পনেরো মিন্টি শান্ত পরিবেশে বিশ্রাম নেন। এক ঘন্টা পূর্বে যেন চা, কফি , মদ্যপান এবং পনেরো মিনিট পূর্বে সিগারেট না খান। তাছাড়া মানসিক উত্তেজক কোনো ওষুধ যেন পূর্বে না খেয়ে থাকেন। মূত্রথলি যেন মূত্রপূর্ণ না থাকে।
  • সম্ভব হলে ঘুম থেকে ওঠার পর ব্লাডপ্রেসার মাপতে পারলে খুবই ভালো হয়। যা বাস্তবে সবসময় সম্ভব নয়।
নিম্ন রক্তচাপ উচ্চ রক্তচাপের মতো ভয়ঙ্কর না হলেও নিম্ন রক্তচাপ বা হাইপোটেনশনে নানা লক্ষণ তথা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। সাধারণত অঙ্গীয় নিম্ন রক্তচাপ বা পশ্চারাল হাইপোটেনশান, পুষ্টিগত কারণে বা নিউট্রিশানাল হাইপোটেনশন। অঙ্গীয় নিম্ন রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ওষুধের মাত্রা বেশি হলে, রক্তক্ষরণ, জলাভাব, গর্ভাবস্থায় জটিলতা, বহুমূত্রীয় রোগ, হঠাৎ কোনো কারণে শারীরিক প্রতিক্রিয়ায় রক্তের চাপ কমতে পারে। তাছাড়া যক্ষ্মা, বিভিন্ন জ্বরের পরও রক্তচাপ কমে। এক্ষেত্রে রক্তচাপ কমার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা করতে হবে। পুষ্টিগত কারণে রক্তচাপ কমলে: বেশি ক্যালরিযুক্ত খাদ্য, প্রোটিন, বিভিন্ন ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্যাদি খেতে হবে। নিম্ন রক্তচাপ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত লবণাযুক্ত খাবার, স্বাভাবিক মাত্রায় ফ্যাট জাতীয় খাদ্য খেতে হবে। যারা নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন অথচ নির্দিষ্ট কোনো কারণ নির্ণয় করা যাচ্ছে না তারা অর্জুন গাছের ছাল বাইশ গ্রাম, দুধ দেড়শো মিলিলিটার, জল একশো মিলিলিটার সেদ্ধ করে, দুদ্ধাবশেষ থাকতে নামিয়ে, ছেঁকে সকাল ও বিকেলে টিফিনের পর নিয়মিত কিছুদিন খেলে উপকার হবে। তাছাড়া কাঁচকলা, মোচ, থোড়, কুলেখাড়া, বাদাম, সয়াবিন প্রভৃতি খাদ্য হিসেবে খাবেন। সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন