ভয় পেলেই নিরাময়ে সমস্যা হবে
ডাঃ অমরনাথ মল্লিক
2018-12-21 12:23:09
মানুষ সুস্থ থাকতে চায়। সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ নীরোগ জীবনের জন্য নানা বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত বিদ্বজ্জল, ব্যায়াম শিক্ষক থেকে শুরু করে যোগচার্য ও ডায়েটিশিয়ানরা নানারকমের উপদেশ ও মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সুস্বাস্থ্যের মতো বিভিন্ন হেলথ ম্যাগাজিনে কী খাওয়া উচিত, কোন খাদ্য দ্রব্যের কী গুণ. বিভিন্ন ফলের উপকারিতা, মানসিক স্বাস্থ্যবিধি, কীভাবে মন তরতাজা থাকবে তার উপায়, কাউন্সেলিং ও টেনশন মুক্তির উপায় নিয়ে বিভিন্ন লেখা থাকে। এমনকী এত সবের পরেও যদি কোনো অসুখ করে তবে তার থেকে মুক্তির উপায়, অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, যোগাসন প্রভৃতি সব পদ্ধতিরই উপকার ও উপায় বিস্তৃত ভাবে জানানো হয়। প্রায় সব অসুখের এমনকী ক্যানসারের মতো মারণব্যাধিও বিভিন্নভাবে নিরাময়ের কথা বলা হয়। বিভিন্ন চিকিৎসা কোথায় করাবেন, কতটা ব্যয় করতে হবে, নিরাময়ের গ্যারান্টির কথাও বলা হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষ এত সব জেনে ও বুঝেও অনেক সময় বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। কোন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করাবেন, কোথায় করাবেন ঠিক করে উঠতে পারেন না। আবার অ-সাধারণ মানুষরা ইন্টারনেটের সাহায্যে, গুগুল সার্চ করে সম্ভাব্য অসুখ, প্রতিকার, ওষুধের গুণাগুণ ও পার্শ্বাপ্রতিক্রিয়া, বিভিন্ন চিকিৎসকের ‘প্রোফাইল জেনে নেন। তাতে তাদের চিকিৎসার কতটা সুবিধা হয় জানি না, তবে তারা মনে করেন সহজে কেউ তাদের বোকা বানাতে পারবেন না! এই প্রসঙ্গে আমাদের দেশের অগণিত গ্রামের মানুষজনের চিকিৎসা পরিষেবার কথা এসে যায়। ভারতবর্ষের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামগঞ্জে থাকেন। সেখানে হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। বিভিন্ন বিষয়ের পারদর্শী চিকিৎসকের পরামর্শ পাওয়ার সুযোগও বেশি নেই। অনেককেই ‘খালি-পদ চিকিৎসক’ বা ‘বেয়ার ফুড’ ডাক্তার বা ‘না-পাশ’ করা ডাক্তার , হাতুড়ে চিকিৎসকের ভরসায় থাকতে হয়। চিকিৎসকের অভাব বা কুসংস্কারের কারণে গ্রামগঞ্জের অনেক মানুষের ভরসা দৈব চিকিৎসা, তাবিজ-মাদুলি প্রভৃতির ওপর। যাইহোক, মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত শিক্ষিত সম্প্রদায়, যারা অনেকেই স্বাস্থ্যসচেতন তারা বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে গিয়ে অনেক সময় দিশেহারা হয়ে পড়েন। এতে অবাক হবার কিছু নেই। যেমন সুস্বাস্থ্যের জন্য কী কী খাদ্যদ্রব্য ও অভ্যাস সতর্কভাবে পরিহার করা দরকার তাই বলি। বিভিন্ন স্বাস্থ্য পত্রিকা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী নিম্নলিখিত খাদ্যদ্রব্য, পানীয় ইত্যাদি বর্জন করা বা সতর্কভাবে এড়িয়ে চলা বা কম খাওয়া দরকার। যেমন—
- চা, কফি, কোল্ড ড্রিষ্কস।
- খাসি-ভেড়ার মাংস।
- তেল, ঝাল, মশলাযুক্ত খাবার।
- টিন ফুড, ফাস্ট ফুড।
- চকোলেট।
- মিষ্টি।
- রাগ করবেন না।
- টেনশন করবেন না।
- বিরক্ত প্রকাশ করবেন না।
- ধৈর্য হারাবেন না।
- মুখ গোমড়া করে থাকবেন না।
- অবৈধ প্রেম, বিবাহ বহির্ভূত প্রেম করবেন না।
- অবাধ যৌনমিলন তো কখেনোই নয়।
- বাব-মা, আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের সঙ্গে হেসে কথা বলবেন।
- কেউ বিরক্তকর, কটু কথা বললেও রাগ না করে হাসবেন।
- নিজের কাজ গুছিয়ে নেবার জন্য ভালো কথা বলা ও ভালো ব্যবহার দরকার। কাজ শেষ হয়ে গেলে মনে রাখার দরকার নেই।
- ছেলেমেয়ে দুষ্টামি, বাঁদরামি করলেও ‘বাবা’, ‘বাছা’ বলে কথা বলা ও উৎসাহ দিতে হবে।