×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

ভয় পেলেই নিরাময়ে সমস্যা হবে

ডাঃ অমরনাথ মল্লিক
2018-12-21 12:23:09

মানুষ সুস্থ থাকতে চায়। সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ নীরোগ জীবনের জন্য নানা বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত বিদ্বজ্জল, ব্যায়াম শিক্ষক থেকে শুরু করে যোগচার্য ও ডায়েটিশিয়ানরা নানারকমের উপদেশ ও মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সুস্বাস্থ্যের মতো বিভিন্ন হেলথ ম্যাগাজিনে কী খাওয়া উচিত, কোন খাদ্য দ্রব্যের কী গুণ. বিভিন্ন ফলের উপকারিতা, মানসিক স্বাস্থ্যবিধি, কীভাবে মন তরতাজা থাকবে তার উপায়, কাউন্সেলিং ও টেনশন মুক্তির উপায় নিয়ে বিভিন্ন লেখা থাকে। এমনকী এত সবের পরেও যদি কোনো অসুখ করে তবে তার থেকে মুক্তির উপায়, অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, যোগাসন প্রভৃতি সব পদ্ধতিরই উপকার ও উপায় বিস্তৃত ভাবে জানানো হয়। প্রায় সব ‍অসুখের এমনকী ক্যানসারের মতো মারণব্যাধিও বিভিন্নভাবে নিরাময়ের কথা বলা হয়। বিভিন্ন চিকিৎসা কোথায় করাবেন, কতটা ব্যয় করতে হবে, নিরাময়ের গ্যারান্টির কথাও বলা হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষ এত সব জেনে ও বুঝেও অনেক সময় বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। কোন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করাবেন, কোথায় করাবেন ঠিক করে উঠতে পারেন না। আবার অ-সাধারণ মানুষরা ইন্টারনেটের সাহায্যে, গুগুল সার্চ করে সম্ভাব্য অসুখ, প্রতিকার, ওষুধের গুণাগুণ ও পার্শ্বাপ্রতিক্রিয়া, বিভিন্ন চিকিৎসকের ‘প্রোফাইল জেনে নেন। তাতে তাদের চিকিৎসার কতটা সুবিধা হয় জানি না, তবে তারা মনে করেন সহজে কেউ তাদের বোকা বানাতে পারবেন না! এই প্রসঙ্গে আমাদের দেশের অগণিত গ্রামের মানুষজনের চিকিৎসা পরিষেবার কথা এসে যায়। ভারতবর্ষের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামগঞ্জে থাকেন। সেখানে হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। বিভিন্ন বিষয়ের পারদর্শী চিকিৎসকের পরামর্শ পাওয়ার সুযোগও বেশি নেই। অনেককেই ‘খালি-পদ চিকিৎসক’ বা ‘বেয়ার ফুড’ ডাক্তার বা ‘না-পাশ’ করা ডাক্তার , হাতুড়ে চিকিৎসকের ভরসায় থাকতে হয়। চিকিৎসকের অভাব বা কুসংস্কারের কারণে গ্রামগঞ্জের অনেক মানুষের ভরসা দৈব চিকিৎসা, তাবিজ-মাদুলি প্রভৃতির ওপর। যাইহোক, মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত শিক্ষিত সম্প্রদায়, যারা অনেকেই স্বাস্থ্যসচেতন তারা বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে গিয়ে অনেক সময় দিশেহারা হয়ে পড়েন। এতে অবাক হবার কিছু নেই। যেমন সুস্বাস্থ্যের জন্য কী কী খাদ্যদ্রব্য ও অভ্যাস সতর্কভাবে পরিহার করা দরকার তাই বলি। বিভিন্ন স্বাস্থ্য পত্রিকা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী নিম্নলিখিত খাদ্যদ্রব্য, পানীয় ইত্যাদি বর্জন করা বা সতর্কভাবে এড়িয়ে চলা বা কম খাওয়া দরকার। যেমন—

  • চা, কফি, কোল্ড ড্রিষ্কস।
  • খাসি-ভেড়ার মাংস।
  • তেল, ঝাল, মশলাযুক্ত খাবার।
  • টিন ফুড, ফাস্ট ফুড।
  • চকোলেট।
  • মিষ্টি।
এছাড়া নেশার জিনিস যেমন সিগারেট, পান-মশলা, জর্দা প্রভৃতি তো কথনোই নয়। খুব দামী মদ, ব্রান্ডি, হুইস্কি, জিন এক-দু’পেগ নাকি ভালো। হার্ট ভালো রাখে। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম, হাঁটা, যোগাসান করা দরকার। সময়মতো ঘুম ও খাওয়া দরকার। রাত অবধি জেগে থাকা, বই পড়া, গান শোনা বা আড্ডা মারাও ঠিক নয়। বেলা অবধি বিছানায় শুয়ে থাকা অনুচিত। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও নিয়মাবিধি আছে। কী কী করবেন না প্রথমে বলি।
  • রাগ করবেন না।
  • টেনশন করবেন না।
  • বিরক্ত প্রকাশ করবেন না।
  • ধৈর্য হারাবেন না।
  • মুখ গোমড়া করে থাকবেন না।
  • অবৈধ প্রেম, বিবাহ বহির্ভূত প্রেম করবেন না।
  • অবাধ যৌনমিলন তো কখেনোই নয়।
এরপর সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলার, মনোবিদ ও মনোচিকিৎসকের মন সুন্দর, ভালো রাখার জন্য যে উপদেশ দেন তা হল—
  • বাব-মা, আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের সঙ্গে হেসে কথা বলবেন।
  • কেউ বিরক্তকর, কটু কথা বললেও রাগ না করে হাসবেন।
  • নিজের কাজ গুছিয়ে নেবার জন্য ভালো কথা বলা ও ভালো ব্যবহার দরকার। কাজ শেষ হয়ে গেলে মনে রাখার দরকার নেই।
  • ছেলেমেয়ে দুষ্টামি, বাঁদরামি করলেও ‘বাবা’, ‘বাছা’ বলে কথা বলা ও উৎসাহ দিতে হবে।
এখন সুস্বাস্থ্যের জন্যে ওপরে বর্ণিত কী করবেন আর কী করবেন না শুনে ও জেনে অনেকেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। প্রশ্ন তোলে, এত বাছবিচার করে খাওয়া, পরায় সুখ, শান্তি কোথায়? এত নিয়ম মেনে চললে মানুষ তো যন্ত্রমানব বা রোবট হয়ে যাবে?  রাত ন’টার মধ্যে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়লে রাতের সিনেমা দেখেবে কে? বন্ধু-বান্ধবের সাথে খোলামেলা আড্ডা, ইয়ার্কি না মারলে গোমড়া মন হালকা হবে কী করে। জীবনে যদি একটু বেহিসেবী ভাব, রোমাঞ্চ বা দুঃসাহসিক অভিযান না থাকে তবে লাইফটা কি খুব ‘জোলা’ হয়ে যাবে না? কিশোর-কিশোরীদের মনে তো অজানাকে জানা, নতুন স্বপ্ন দেখা, নতুন কিছু করে দেখানোর নেশা থাকবেই, সেটাই তো কৈশোরের স্বপ্ন। জীবনে একটাও সিগারেট খায়নি, মদ্যপান করেনি, নিয়মিত শরীর চর্চা করে, এমন মানুষেরও হার্ট অ্যাটাক হয়। নিয়ম মেনে খাওয়া, ঘুম, ব্যায়ামের পরও ডায়াবেটিস হচ্ছে, অন্যান্য অসুখ করছে। তখন বলা হচ্ছে এর জন্য ‘জিন’ দায়ী। মানুষের জেনেটিক প্রোফাইল নাকি খবর জানবে কার কোন রোগের সম্ভবনা আছে। জিন পরিবর্তন করে রোগ প্রতিরোধও করা যাবে। ভবিষ্যতে মানুষ সুস্থ থাকবার জন্য জিন চিকিৎসার ওপর নির্ভর করবে। এই লেখার উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যবিধিকে অমান্য বা অস্বীকার করা নয়। শরীর-স্বাস্থ্যের নিয়ম নিশ্চয় মেনে চলতে হবে কিন্তু তা যেন আমাদের যন্ত্রমানবে পরিণত না করে। শরীর থাকলে অসুখ করতেই পারে। সম্ভাব্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিশ্চয় গ্রহণ করতে হবে কিন্তু কখনও যেন তা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে না যায়। অনেকেরই অসুখ নিয়ে দুর্ভাবনা, দুশ্চিন্তা এত বাড়াবড়ির পর্যায়ে যায় যে তা থেকে মানসিক সমস্যা পর্যন্ত দেখা দেয়। অনেতেরই মারাত্মক সব অসুখ নিয়ে অহেতুক আতঙ্ক দেখা যায়। সুষম পুষ্টিকর খাদ্য বাছতে অনেকেই জেরবার হয়ে যান। সুন্দর মন নিয়ে বাঁচতে হবে। অসুখের চিন্তা করে দৈনন্দিন জীবনকে বিব্রত করার দরকার কী? ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন