×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

কোলেসস্টেরল রোখার খাওয়া-দাওয়া

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2019-01-25 12:59:19

মনুষ্য জীবনে হৃদয়ের মাহাত্ম্য অপরিসীম। এই হৃদয়কে সুন্দর রাখা অথবা সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমাদের। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের খাদ্য গ্র্রহণও নিয়মমাফিক হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সব থেকে সমস্যা হল কী খাব এবং কখন খাব এই ব্যাপারটা। খাবার সম্বন্ধে অনেক মুনির অনেক মত। তাই আমরা খুব দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়ি খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে। সেজন্য কোনো নিউট্রিশনিস্ট অথবা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ একান্ত প্রয়োজন। জেনে রাখা দরকার, কোলেস্টেরল সবসময় ক্ষতি করে না। কারণ স্বাভাবিক মাত্রায় আমাদের শরীরে প্রয়োজন আছে কোলেস্টেরল।

লিভার স্যাচুরেটেড ফ্যাটের সাহায্যে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। তাই আমাদের রোজগার খাদ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ অবশ্যই কমাতে হবে। হোল মিল্ক, চিজ, মাখন, ক্রিম, রেড মিট, নারকেলের তেল ইত্যাদির ব্যবহার কমাতে হবে।

সোয়াবিন অথবা যেকোনো সোয়া প্রোডাক্ট কোলেস্টেরল লেভেল ঠিক রাখতে অথবা হাই কোলেস্টেরল লেভেলকে কমাতে সাহায্য করে। তাই ২৫ গ্রাম সোয়াবিন রোজ খাওয়া উচিত। ওট, ওটস, ব্র্যান, আপেল, গাজর ইত্যাদি নানারকম সবজি ও ফল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ডিম,হোল মিল্ক, পাঁঠার মাংস আামাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এগুলো অয়েল ব্যবহার করতে পারলে খুব ভালো, নয়তো পরিমাণ মতো সরষে ও সাদা তেল ব্যবহার করতে হবে।

স্বাস্থ্যকর খাদ্য

  • ফল বা ফলজাতীয় খাদ্য।
  • সবজি, ডাল,বিনস।
  • ছোট মাছ, চিকেন, ডিমের সাদা অংশ।
  • শস্যজাতীয় খাদ্য।
  • ফ্যাটবিহীন দুধ, দই, ছানা ইত্যাদি।

রান্নার মাখন বা ঘিয়ের পরিবর্তে মার্জারিন ব্যবহার করা যায়। এছাড়া সানফ্লাওয়ার, সোয়াবিন, অলিভ, তিল তেল ব্যবহার করা উচিত। মাখন তোলা দুধ, দই ইত্যাদি খেতে হবে। মাছ যেন ছোট এবং টাটকা হয়। টিনে মজুত মাছ অথবা বরফে রাখা মাছ খাওয়া যাবে না। মুরগির মাংস পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। ডাল অথবা বিনস খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। সবজি (পাতা জাতীয় সবজি) প্রত্যহ অন্তত ৪০০ গ্রাম খাওয়া দরকার। হোল গ্রেন, লাল আটার রুটি খেতে হবে। আখরোট, ফ্ল্যাক্স সিড (শন বা তিসি) এগুলো খেলে হার্টের উপকার হয়।  সেদ্ধ, ভাপিয়ে বা কম তেলে রান্না করতে হবে। মাখন, ক্রিম দিয়ে রান্না না করে মাখন তোলা তুধের দই রান্নায় দেওয়া যেতে পারে। বেকিং করার সময় মাখন বা তেল ব্যবহার না করে লো ফ্যাটি মিল্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। মাখন পাউরুটিতে না লাগিয়ে ভেজিটেবল অয়েল থেকে প্রস্ত্তুত অন্য কোনো প্রোডাক্ট লাগানো যেতে পারে। যেসব মাছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আছে, যা রক্তচাপ কমাতে এবং  রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে সেইসব মাছ যারা খায় না তারা ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের জন্য ফ্ল্যাক্স সিড (শন বা তিসি) অথবা ফিশ অয়েল খেতে পারে। আখরোট, আলমন্ড, ফ্ল্যাক্স এগুলো খাওয়া যেতে পারে।

বর্জনীয় খাদ্য

পেস্টিং, পিংজা, চিপস, ফিস ফ্রাই এসব যতটা সম্ভব পরিত্যাগ করা দরকার। কেক, চকলেট বর্জন করা দরকার। মাংসের লিভার, কিডনি না খেয়ে কম প্রোটিনযুক্ত খাদ্য খেতে হবে। অর্থাৎ এমন খাবার খেতে হবে যা হাই কোলেস্টেরলকে রোধ করতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, স্ট্রবেরিতে থাকা Nrf2 খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। জাষ্ক ফুড, অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া, বসে বসে কাজ করা ইত্যাদিও ডায়াবেটিসের সঙ্গে কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া অধিক ক্যালোরি গ্রহণ করার পাশাপাশি ক্যালোরি ক্ষয় যদি কম হয় তাহলেও কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘ফিলিং ফুড’ নির্বাচর করতে হবে। ওটস, লাল আটার রুটি, কর্নফ্লেক্স, রাজমা, সোয় প্রোডাক্ট ইত্যাদি তন্তুযুক্ত খাবার খেতে হবে।  কমলালেবু, মোসাম্বি, আপেল প্রভৃতি ফাইববার যুক্ত খাবার খেতে হবে। আম, কলা, সবেদা এসব উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন ফল—এসব পরিহার করাই শ্রেয়। শরীরে ফ্যাট ব্রেকডাউন করে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে হবে। কিন্তু কোনো খাবারই বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়, চাই মডারেশন। নিরাপদ খাবার বলে যেমন কিছু হয় না, তেমনি খাদ্য বলেও কিছু হয় না। প্রত্যেখ খাবারেই কিছু না কিছু খাদ্যগুণ থাকে যা শরীরের পক্ষে দরকারী। সুস্থ থাকতে হলে বুঝে শুনে খাবার নির্বাচন করতে হবে।

জানা দরকার

  • বেশি ফাইবারযুক্ত খাদ্যের জন্য আমরা আটা বা লাল আটা খেয়ে থাকি। কিন্তু এগুলো বেশি পরিমাণে খেলে এতে থাকা অত্যধিক তন্ত্ত বা ফাইবার ক্যালসিয়াম ও মিনারেলস-এর সঙ্গে এক হয়ে শরীরের শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বরং সাধারণ গম, জোয়ার, বাজরা, রাগির আটা খাওয়া ভালো।
  • ‘আটিফিশিয়াল সুইটনার’ যদি আমরা বেশি পরিমাণ খায় তাহলে জেনে রাখা দরকার এর মধ্যে থাকা রাসায়নিক আমাদের ব্রেন ফাংশন, হরমোন ইমব্যালান্স, চুল পড়া প্রভৃতির কারণ হতে পারে। পরিমাণ মতো চিনি খাওয়া যেতেই পারে।
  • শুধুমাত্র স্যুপ এবং স্যালাড খেলে কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া হয় না। স্যুপ বেশি ফোটালে তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কালার জলের সঙ্গে তার কোনো পার্থক্য থাকে না। স্যালাডে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার থাকলেও ব্যালান্স মিলের সঙ্গে না মেলায় সেই পুষ্টি শরীরের কোনো কাজে আসে না।
  • বেকড চিপ্স, মাল্টিগ্রেন বিস্কুটে প্রচুর পরিমাণে প্রিজারভেটিভ থাকে যা শরীরের ক্ষতি করে। কিন্তু লো ক্যালোরিযুক্ত খাদ্য আমরা বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলি।
  • লো ফ্যাটযু্ক্ত বাটার, ঘি-এ স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকলেও ট্রান্স ফ্যাট অনেক বেশি থাকে যা শরীরে ফ্যাটের সামঞ্জস্য রক্ষা করতে দেয় না। বাড়িতে তৈরি বাটার, ঘি কম পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
  • লো ফ্যাট চিজ নানা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে যায় বলে ক্যালসিয়িাম ও প্রোটিন সবই বেরিয়ে যায়।
  • কাটা ফলের মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ সবই প্রায় নষ্ট হয়ে যায় চারপাশের আলো ও তাপে। ফলের রস না খেয়ে গোটা ফল খাওয়া অনেক স্বাস্থ্যকল।

শরীর যেহেতু আমার, তাই তাকে সুস্থ রাখার দায়িত্বও আমার। খাদ্য নির্বাচনে সুবিবেচনা থাকা একান্ত প্রয়োজন। নানারকম খাবার পরিমাণ মতো খেতে হবে। খুব ভালো হয় কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে খাদ্য তালিকা প্রস্ত্তুত করা যায়।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন