×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

ঠিক সময়ে এবং সঠিক চিকিৎসায় কোলন ক্যানসারের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2019-01-25 13:14:15

শতকরা ৬ জন মানুষের জীবদ্দশায় কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির কারণে এবং জনমানসে সচেতনতা আসার জন্য আজকাল এই রোগ তেমন ভয়ের নয়। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে এবং ঠিকমতো চিকিৎসার সুযোগ পেলে এই রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।

ক্যানসার কী

ক্যানসার হল আমাদের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। ক্যানসারের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল আশপাশের এবং দূরের অঙ্গকে ধরে ফেলা। তাই প্রাথমিক অবস্থায় সুচিকিৎসা না হলে মৃত্যু ত্বনান্বিত হয়।

কী কী উপসর্গ দেখলে রোগীরা ক্যানসারের কথা ভাববেন

  • কোনো তিল বা জরুলের হঠাৎ করে বৃদ্ধি।
  • স্তনের মধ্যে শক্ত অংশ।
  • খাবার হজম না হওয়া এবং তা যদি দু’ সপ্তাহ চিকিৎসার পরও না কমে, তাহলে ডাক্তার দেখনো উচিত।
  • কাশি যদি এক মাসের বেশি স্থায়ী হয় বা গলার স্বর বসে যায়।
  • পায়খানার সাথে বা বমি-কাশির সাথে রক্ত পড়া।
  • কোনো ঘা যা দীর্ঘ চিকিৎসা সত্বেও শুকোচ্ছে না।
  • হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া। (তিন মাসের মধ্যে ১০ শতাংশ বা তার বেশি ওজন কমে যাওয়া)।

কাদের বৃহদন্ত্রের ক্যানসার হবার সম্ভবনা বেশি

যাদের ফ্যামিলিতে এই ক্যানসার হয়েছিল। যদি মা-বাব, ভাই-বোন, মামা-মাসী বা দাদু-দিদিমার এই রোগ হয় তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা থাকে। সবচেয়ে বেশি রিস্ক যদি নিকট আত্মীয়দের মধ্যে এই রোগ হয়। এছাড়া দীর্ঘদিনের কোলনের রোগ যেমন, আলসারেটিভ কোলাইটিস বা ক্রোন্স ডিজিজ যদি ১০ বছরেরও বেশি দিনের পুরনো হয় তাহলে ঝুঁকি বাড়ে। কতকগুলো ফ্যামিলি ক্যানসার সিনড্রোম আছে। যেমন, ফ্যাসিলিয়ান অ্যাডিনোসেটাস পলিপসিস, হেরিডিটারি নান পলিপসিস কোলন ক্যানসার, পিউজজাগার সিনড্রোম ইত্যাদি।

কোলন ক্যানসারের উপসর্গ

  • পায়খানার অভ্যাস বদল। যেমন হঠাৎ করে কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডাইরিয়া হওয়া। একবার কোষ্ঠকাঠিন্য তারপর ডায়রিয়া হওয়া ইত্যাদি।
  • পায়খানার সাথে রক্ত পড়া।
  • তলপেটে ব্যথা।
  • হঠাৎ করে রক্তাল্পতা হয়ে দুর্বল হয়ে যাওয়া। বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঘোরা, অল্প কাজেই ক্লান্ত হয়ে পড়া।
  • কোনো কোনো ক্ষেত্রে পায়খানা বন্ধ হয়ে পেট ফুলে যাওয়া।

যাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি, তারা যদি এই ধরনের উপসর্গ নিয়ে আসেন তাহলে সবসময় ভালো করে পরীক্ষা করা উচিত। সব ক্ষেত্রেই পায়খানার রাস্তায় আঙুল দিয়ে দেখা উচিত। মনে রাখবেন পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত পড়া মানেই পাইলস নয়, মারাত্মক রোগও হতে পারে।

কী কী পরীক্ষা করা হয়

প্রথমে একটা কমপ্লিট হিমোগ্রাম করা হয়, তারপর কোলোনোস্কোপি। যদি এতে প্রমাণিত হয় যে ক্যানসার হয়েছে তাহলে বুকের এক্স-রে, পেটের সিটি স্ক্যান করা হয়। এর সাথে লিভার ফাংশান টেস্ট (এল. এফ.টি) এবং রক্তের সি.ই.এ মাপা হয়।

চিকিৎসা

কোলন ক্যানসারের চিকিৎসা মূলত সার্জারি। সার্জারি নির্ভর করে বৃহদন্ত্রের  কোন অংশে ক্যানসার হয়েছে তার ওপর। যদি ডানদিকের কোলনে ক্যানসার হয় তাহলে রাইট হেমিকোলেকটমি, বামদিকে হলে লেফট হেমিকোলেকটমি, রেক্টামে হলে অ্যানটেরিয়র রিসেকশন বা মলদ্বারের খুব কাছে হলে অ্যাবডোমিনো পেরিনিয়াল রিসেকশন। শেষ পদ্ধতিতে রোগীর পায়খানার রাস্তা পেটের সামনের দিকে করে তাতে ব্যাগ লাগানো হয়। অপারেশনের পর ক্যানসারের স্টেজ অনুযায়ী কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি দেওয়া হয়। এতে রোগীর আয়ু বাড়ে এবং পুনরায় ক্যানসার হবার সম্ভবনা কমে। দেখা গেছে, দশ শতাংশ রোগী যখন ডাক্তারবাবুর কাছে আসেন তখন ক্যানসার অনেক দূর ছড়িয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে কেমো বা রেডিও থেরাপিই একমাত্র চিকিৎসা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পায়খানা বন্ধ হয়ে গেলে কোলোস্টোমি করার দরকার হতে পারে। তবে এই সব রোগীর আয়ু বেশিদিন হয় না।

সার্জারি বা চিকিৎসার পর

চিকিৎসার পর এইসব রোগীর আয়ু নির্ভর করে রোগটা কোন স্টেজে ধরা পড়েছে তার ওপর। স্টেশ-ওয়ানের ক্ষেত্রে ৮০-৯০ শতাংশ রোগী, স্টেজ-টু হলে ৬০-৭০ শতাংশ,স্টেজ-থ্রি হলে ৩০-৪০ শতাংশ এবং স্টেজ-ফোর-এ  ৫-১০ শতাংশ রোগী ৫ বছরের বেশি বাঁচেন।

এছাড়া অপারেশনের পর প্রথম দু’বছর ৩ মাস অন্তর, দুই থেকে পাঁচ বছর ৬ মাস অন্তর এবং পাঁচ বছরের পর একবার ডাক্তার দেখানো উচিদ। সঙ্গে সি.ই.এ চেষ্ট এক্স-রে, কোলোনোস্কোপি প্রয়োজনমতো করতে হবে।

কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত

  • যে যে উপসর্গের কথা বলা হয়েছে সেগুলো দেখলেই অভিজ্ঞ ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • পঞ্চাশ বছরের বেশি বয়স অথবা বংশে কারও কোলন ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে ভালোভাবে পরীক্ষা করা উচিত।
  • বেশি অ্যানিম্যাল ফ্যাট ও প্রোটিন না খাওয়া উচিত। বেশি করে সবুজ শাবসবজি ও ফাইবারজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা দরকার।
  • ওজন বেশি না হতে দেওয়া।
  • প্রতিদিন নিয়ম করে যোগব্যায়াম করা উচিত।
  • ধূমপান পারত্যাগ করা উচিত।
  • ভালো করে ফ্যামিলিরি ইতিহাস জানা দরকার এবং প্রয়োজন মতো জেনেটিক কাউন্সেলিং করা দরকার।

ওপরের নিয়মগুলো মেনে চলরে কোলন ক্যানসার হবার সম্ভবনা যেমন কমে, তেমনি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

পরিশেষে বলি, কোলনের ক্যানসার হলে ভয় না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সুস্থ স্বাভাবিক জীবন ফিরে পান।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন