×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

নাকি সুর বা খনার সমস্যা

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2019-01-25 14:06:00

আমরা যে কথা বলি,সেই কথা উচ্চারিত হয় শ্বাস ফেলার সময়। হাওয়া ফুসফুস থেকে ট্রেকিয়া বা শ্বাসনালীর মাধ্যমে স্বরযন্ত্রে পড়ে। এই স্বরযন্ত্রে ভোকাল কর্ড নামক যন্ত্রে বিভিন্ন প্রকার কম্পনের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম শব্দের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই শব্দ কোনোভাবেই ভাষা হিসাবে বোধগম্য নয়। ভোকাল কর্ড থেকে উৎপন্ন শব্দ গরার ভিতর দিয়ে মুখগহ্বর ও নাকে পৌঁছে যখন বাইরে আসে, এই শব্দ তখন ভাষা বা কথায় রূপ পায়। এর জন্য জিভ, তালু, ঠোঁটের সমন্বয়ে বিভিন্ন রকম নাড়াচড়ার ফলে বিভিন্ন রকম বর্ণের সৃষ্টি হয় এবং ভাষা বোধগম্য হয়। তাই এই অঙ্গগুলিকে বলা হয় ‘ Voice Articukator।এর সঙ্গে শব্দ যখন নাকের মাধ্যমে যায়, শব্দের একটা বিশেষ চরিত্রগত পরিবর্তন হয়। কারণ নাক এবং সাইনাসের মধ্যে হাওয়া ভর্তি থাকার কারণে এইগুলি একত্রে একটি অনুনাদি যন্ত্রের কাজ করে। তাইএদের বলা হয় Resonator।

যেমন তানপুরার খোল থাকার জন্য একটা বিশেষ ধরনের আওয়াজ হয়। এইভাবে ভোকাল কর্ড থেকে উৎপন্ন মূলগত শব্দ কথা বা ভাষার রুপ পায়।

নাকি সুরে কথা বা খনা

অনেক সময় লক্ষ করলে দেখা যাবে সাধারণত যে ভয়েসে কথা বলা হয় সেই ভয়েসে নাকের ভাব বেশি আসে অথবা নাক বন্ধ থাকে।

যারা এইরকম নাকে নাকে কথা বলেন তারা কী কথা বলচেন সেটা সহজে বোঝা যায় না। কিছুক্ষণ তাকে অনুসরণ করলে অবশ্য বোঝা যায় সে কী বলতে চাইছে। প্রধান সমস্যা এদের ক্ষেত্রে যেটা হয় সেটা হল কমিউনিকেট করা।

সমস্যা এখানে দু’রকম দেখা যায়-এক, কথা বলার মধ্যে নাকি সুর বেশি আসে এবং দুই, মানুষের নাকের সুরগুলো আসেই না বা নাকের ব্যবহারটা কমে যায়। একটা হাইপার নেজালিটি অর্থাৎ নাক বন্ধ থাকে। খুব সর্দি হলে যেমন হয় ঠিক তেমনি।

কারণ

এগুলোর অনেক কারণ আছে। যেমন জন্মগত ক্রুটি। যাদের ঠোঁট কাটা অথবা প্যালেট বা তালু কাটা—আলাদা আলাদা হতে পারে। একসাথে দুটোই হতে পারে। আবার আংশিক হতে পারে। প্রধানত এদের খাওয়ার সমস্যা থাকে। পরে এদের কথার সমস্যা হয়।

এছাড়া নাক ও গলার জন্মগত আরও কিছু কিছু সমস্যা থাকে।

গঠনগত কিছু সমস্যা একটা অর্গানের হতে পারে, আবার অনেক অর্গানের সমস্যাও হতে পারে। কিছু মেটাবলিক ডিজিজ আছে যেমন স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ইত্যাদি অনেক কারণেই জিভ এবং খাদ্যনালী ও ঢোক গেরার জায়গাগুলোতে প্যারালিসিস হতে পারে। সেই প্যারালিসিস একদিকে হতে পারে, দু’ দিকেও হতে পারে অথবা সেটা আংশিক হতে পারে। এইসব ক্ষেত্রে নাক-গলার নার্ভগুলো আক্রান্ত হয়। জিভের তালুতে টিউমার থেকেও সমস্যা হতে পারে টিউমার। ফলে শব্দের আর্টিকুরেশনের সমস্যা হয় এবং শব্দ প্রতিহত হয়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিউমারের অপারেশন করতে গিয়ে সমস্যা হতে পারে। নাকের, গলার টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে অপারেশনের জায়গার নার্ভগুরো নষ্ট হয়ে গিয়ে নাকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

হাইপো নেজালিটি অর্থাৎ নাক বন্ধ ভাব কখন হয়? এই অভিজ্ঞতা আমাদের সকলেরই কম বেশি আছে। সর্দি-কাশি, ঠান্ডা লাগলে অনেক সময় নাক বন্ধ হয়ে গিয়ে নাকের শব্দ পুরো বদলে যায়। ভোকাল কর্ডে জল জমে গিয়ে একটা পরিবর্তন হতে দেখা যায়। হঠাৎ করে ঠান্ডা বা গরম কিছু লেগে জিভ অসাড় হয়ে গেল বা পুড়ে গেল, তালুতে জিভ ঠেকানো যাচ্ছে না, তখন হতে পারে। বাচ্চাদের টনসিল অ্যাডিনয়েড বলে একটা গ্ল্যান্ড আছে, এগুলো খুব বেড়ে গেলে আওয়াজ নাকে পৌঁছাতে পারে না। তখনই হাইপো নেজালিটি হয়।

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে টিউমার থাকতে পারে। বড়দের ক্ষেত্রে টিউমার, পলিপ সমস্যা তৈরি করতে পারে। এগুলোতে নাক বন্ধ হয়ে যায়, আওয়াজ আসে না। ক্রনিক অ্যালার্জি থাকার জন্য দীর্ঘদিন নাক বন্ধ থাকায় নাকি সুর হতে পারে, তাই চিকিৎসা জরুরি।

চিকিৎসা

প্রথমত, নাক বন্ধ হয়ে গেলে অনেক চিকিৎসা আছে। যেমন ঠান্ডা লাগলে, সাইনুসাইটিস বা ফ্যারেনজাইটিস হলে তার চিকিৎসা করতে হবে। অ্যাডিনয়েড টনসিল বড় থাকলে প্রাথমিকভাবে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা আছে। নাক বন্ধ হলে, টনসিলের ওষুধ কিংবা প্রয়োজনে ওষুধ লাগে। কোনো টিউমার বা পলিপ থাকলে অপারেশন করে বাদ দেওয়া সম্ভব। নাকি সুর বা খানার ক্ষেত্রে প্রধানত ছোটদের ক্ষেত্রে দেখা যায় জন্মগত ‘ক্লেফ্ট লিপ’ ও ‘প্যালেট’ থাকে।

‘ক্লেফ্ট লিপ’ তিন মাস বয়সেই চিকিৎসা সম্ভব। আর ‘প্যালেট’ অর্থাৎ তালুতে যদি কাটা থাকে তবে এক বছর বয়সেই অপারেশন করা যায়। কিন্তু ‘ক্লেফ্ট লিপ’ ‘প্যালেট’ যদি ছ’সাত বছরের পর অপারেশন করা হয় তাহলে সেই নাকি সুর থেকে যাওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়।

নাকি সুর আগে ছিল নাকি হঠাৎ করে হয়েছে? এর সঙ্গে আরও কিছু লক্ষণ যদি থাকে, যেমন খাবার খেতে গেলে নাক-মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসার প্রবণতা, গিলতে সমস্যা ইত্যাদি, তবে সাবধান। অন্য কোনো অসুখের কারণে নাকের সমস্যা হচ্ছে কি না সেটা জানতে হবে। অনেকের বড় কোনো অসুখের কারণে এই ধরনের সমস্যা হয়।

নাকের অপারশনে তেকেও সমস্যা তৈরি হয় অনেকবার। এ সব ক্ষেত্রে চিকিৎসার আগে কাউন্সেলিং করে নিয়ে তবেই চিকিৎসা শুরু করা উচিত। রোগীকে জানতে হবে অপারেশনের পরে নাকি সুর এসে যাবে। তবে অপারেশনের পরে কিছু চিকিৎসা থাকে যেটার সাহায্যে জটিলতাটা কমানো সম্ভব। মাথা ও গলার অন্য কোনো রোগের অপারেশনের পর এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে রোগের গতিপ্রকৃতি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ অনেক ক্ষেত্রেই নাকিসুর বা খনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন