×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

কী নিয়ে পড়বে সায়েন্স নাকি আর্টস

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2019-01-25 14:27:01

পল গঁগা, অ্যান্টন চেকভ কিংবা জর্জ ফ্রেডরিক হ্যান্ডেল-এর নাম আপনারা কেউ কেউ শুনেছেন নিশ্চয়। এদের মধ্যে মিল কি জানেন?

কিংবা আমাদের ঘরের ছেলে শান্তনু মৈত্র আর ইউফোরিয়ার পলাশ সেন।

প্রথম তিসজন বিশ্বজয়ী দিকপাল মানুষ। পরের দু’জন সে সব কিছু হননি এখনও কিন্তু নিজেদের মতো করে বলতে পারেন—সফল পেশাদার।

এরা সকলেই জীবন শুরু করেছিলেন একভাবে। পল গঁগা ছিলেন ব্রোকার, চেকভ চিকিৎসক, জর্জ ফ্রেডরিক হ্যান্ডেল নিতান্ত বেরসিক এক ডাক্তারের ছেলে। কিন্তু এরা খুব শিগগিরিই বুঝতে পারেন যে বাবা-মায়ের চিনিয়ে দেওয়া বাঁধা পথে চললে জীবন ‘চলবে না’। তাই গঁগা রঙ তুলি হাতে নেন পঁচিশ বছর বয়সে, চেকভ হয়ে ওঠেন বিশ্বজয়ী লেখক, আর হ্যান্ডেল মন দেন মিউজিক কম্পোজিশনে।

অন্যদিকে, কে না জানে পলাশ সেন শুরুতে ডাক্তার ছিলেন আর পরিণীতার মিউজিক কম্পোজার শান্তনু আসলে অর্থনীতির স্নাতক।

কাজেই জীবনে তুমি কী হবে সেটা ঠিক করার দায়িত্ব হাতেই তুলে নাও। বড়দের পরামর্শ ঠিকই কিন্তু দিনের শেষে নিজরে মনের কথাটা শুনতে কখনো ভুলে যেও না।

নিজের মনের কথা শোনো

পিগম্যালিয়ন নাটকের ধ্বনিবিজ্ঞানী প্রফেসর হিগিনস তার বন্ধুকে বলেছিলেন, যে লোক জীবিকার সঙ্গে তার ‘হবি’কে মিশিয়ে দিতে পারে সে-ই পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী।

আমি আরও একধাপ এগিয়ে বলব, যা আমাদের ভালো লাগে, যা করতে আমরা চাই সারা জীবন, তাই-ই যেন করতে পারি। এটা দেখাই আমাদের কর্তব্য, নিজেদের প্রতি।

সায়েন্স না আর্টস

হয়তো তুমি ইতিহাস পড়তে খুব ভালোবাসা। লালকেল্লার সামনে দাঁড়ালে বা মিশরের পিরিমিডের কথা ভাবলে তোমার, যাকে বলে রোমাঞ্চ হয়, অথচ মাধ্যমিক তোমার সবচেয়ে বেশি নম্বর ইঠেছে অঙ্কে। তাহলে তুমি কী করবে? এরকম একটা পরিস্থিতি হলেই বাবা-মা, মাসি-পিসি সবাই মিলে বলাবলি শুরু করবেন অঙ্কে, বিজ্ঞানে এত ভালো নম্বর পেয়েছিস, তুই তোসায়েন্সের যোগ্য। আর বেশি চিন্তা করিস না, চোখ-কান বুজে সায়েন্সটা নিয়ে ফেল।

তোমার মনের অবস্থা তখন কীরকম? আজ এতদিন পর পিছন ফিরে তাকালে সেটা বেশ বুঝতে পারি। একে তো বাবা-মা-বন্ধুবান্ধবদের প্রত্যাশা আর হাজার রকম প্রশ্ন, অন্যদিকে নিজের মনেও একটা আবছা দ্বন্দ্ব ক্রমশ ছায়া ফেলতে থাকে। বারবার মনে হতে খাকে, একা একা একটা এত বড় সিদ্ধান্ত নিলাম, পরে যদি সিন্ধান্ত ব্যাক ফায়ার করে?

সবার মতো না নিজের মতো

যে পথে বেশি লোক যাচ্ছে, সেই বাঁধানো রাস্তায় চলার হাতছানি এড়ানো শক্ত। ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে অথবা একটা নামী ইনস্টিটিউট থেকে এম.বি.এ করলে ঠিক সময়ে চাকরি, রোজগার ও তার সঙ্গে কিছু বিশেষ সুবিধা যাকে বলে, পাওয়া যাবেই। জীবনে চলবার জন্য একটা বাঁধা পথ পেয়ে যাওয়ার সুবিধেটা অনেক বুদ্ধিমান লোকও চট করে ফেলতে পারে না।

এতকাল সবাই যা করেছে, আমিও তাই করব তাহলে ঠকে যেতে হবে না। কিন্তু এই ধরনের যুক্তির পেছনে অনেক সময়ই বড় গলদ থাকে। সেই যুক্তির ভুলগুলো জেনে রাখা ভালো।

 বাঁধা যুক্তি বনাম পাল্টা যুক্তি

ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং বা এম.এ কোর্সে একবার ঢুকতে পারলেই যে সব কিছু সহজ হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। এটা নির্ভর করছে তুমি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করলে, তোমার স্পেশালাইজেশন কী এবং তোমার বিষয়টাতে তুমি সেরাদের একজন হতে পারলে কি না তার ওপর।

আর একেই বলে ‘ক্যাচ’। যে জিনিস পড়তে তোমার একেবারে নিরস লাগে সে বিষয়ে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকে ভালো নম্বর পাওয়া যায় হয়তো কিন্তু আরো উঁচু ক্লাসে ওঠার পর এই ভালো নম্বর ধরে রাখা মুশকিল। মনে রাখবে, সব বিষয়েই ওপরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অরিজিনালিটি বা স্বতন্ত্র চিন্তার ওপর জোর দেওয়া হতে থাকে। বিষয়টাকে ভালো না বাসলে ব্যতিক্রমী চিন্তার বিদ্যুৎ তোমার মনে খেলবে কী করে?

কাজেই সবার মতো না চলে নিজের মনের মতো বিষয় নিয়ে পড়লে শেষ পর্যন্ত তোমারই লাভ।

যদি রেজাল্ট খারাপ হয়

কিন্তু যতি তোমার পছন্দের বিষয়ে তোমার রেজাল্ট নিতান্তই খারাপ হয়, তাহলে কী করবে?

সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় একটু ভালো করে সময় নিয়ে ভাবতে হবে। যদি দেখ গত চার-পাঁচ বছর এই বিষয়টাতে তোমার পারফর্মেন্স বেশ ভালো ছিল শুধু এইবারেই খারপ, তাহলে কুছ পরোয়া নেই। মোটামুটি একটা ভালো জায়গায় ওই বিষয়ে পড়তে শুরু কর।

কিন্তু যদি দেখ গত কয়েখ বছর ধরেই এই বিষয়ে তোমার রেজাল্ট ভালো নয় তাহলে কিন্তু আর একটু ‍ুসিরিয়াস ভাবনা-চিন্ত করতে হবে। এই রেজাল্ট নিয়ে হয়তো তুমি কোনো ভালো জায়গায় চান্স পাবে না। আর মধ্যমানের প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষণের মানও মাঝারি হবে বলেই ধরে নিতে হবে। ঠিকঠাক গাইডেন্স বা প্রতিযোগিতার অভাব কিন্তু তোমার হতাশার দিকে ঠেলতে পারে। সেক্ষেত্রে যে বিষয়ে তোমার রেজাল্ট একটু বেশি ভালো, এমন বিষয়ে নিয়েই পড়তে শুরু করো, বাকিটা পরে ভাবা যাবে।

চান্স না পেলে হতাস হবে না

অনেক সময় আমরা যা চাই তা নিয়ে পড়ে উঠতে পারি না। রেজাল্টের জন্যই হোক বা টাকার অভাবে কিংবা পরিবারের চাপে। এমন হলে জীবন ব্যর্থ এভাবে ভেবো না। চারদিকে দৃষ্টি ফেরালেই দেখতে পাবে এমন অনেক মানুষ, যারা পেশা বা প্রধান জীবিকার পাশাপাশি এমন জিনিসের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে, যেটা তাদের হৃদয়ের কাছাকাছি। হয়তো তোমার পাড়াতেই আছেন এমন কোনো বেহালাবাদক, ফার্মাসিস্ট কিংবা পাহাড়ে চড়া স্কুলশিক্ষিকা।

কী ভালো লাগেযদি বুঝতে না পারো

এমন অনেকেই আছেন যারা বুঝে উঠতে পারে না তারা ঠিক কী চায়। কখনো মনে হয় বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়ি। আবার মনে হয় কেমিস্ট্রিটাও তো বেশ। তাদের বলব, সময় থাকতে থাকতে একজন দক্ষ সাইকিয়াট্রিস্ট-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে একটা অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট বা তোমার স্বাভাবকি ক্ষমতা ও প্রবণতার পরীক্ষা করিয়ে নাও।  তাতে তোমার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সহজ হবে।

সবশেষে আবার আগের কথাতেই ফিরে যাই। জীবনের চৌমাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে যখন কেরিয়ার সম্বন্ধে সিদ্ধান্ত নিতে হয় তখন সবার কথার পাশাপাশি নিজের মনের কথাকেও অগ্রাহ্য কোরো না। পৃথিবীতে একবারই বাঁচব আমরা, সেই বাঁচাটা যেন নিজের শর্তে হাসিমুখে বাঁচতে পারি।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন