একবার চেষ্টার পরও কেউ কেউ ফের আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন
হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2019-01-25 15:05:18
আত্মহত্যা-প্রবণ স্কেল। পেনসিলভানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা মনস্তাত্ত্বিক অ্যারন টি. বেক ও তার সহকর্মীরা মিলে এই স্কেলটি তৈরি করেন। মূলত যারা আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেও বেচে গেছেন, তাদের মনে আত্মহত্যার তীব্রতা কতটা অবশিষ্ট আছে সেটা বুঝে নেওয়ার জন্য এই স্কেল ব্যবহার করা হয়। প্রশ্নপত্রের আদলে তৈরি এই স্কেলটি মনস্তাতাত্ত্বিক চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত হয়। একটু যত্ন ও আন্তরিকভাবে ব্যবহার করলে এই স্কেল থেকে আত্মহত্যার তীব্রতা কতখানি অবশিষ্ট আছে, তা খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। এই স্কেলে একটি প্রধান প্রশ্ন আছে, যার তিনটি করে সম্ভব্য উত্তর দেওয়া আছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এই তিনটির মধ্যে থেকে সঠিক উত্তরটি বেছে নিতে হবে। মোট ১৫ টি প্রশ্ন আছে। সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলে উত্তর পত্রের নির্দেশ মতো অঙ্ক কষে আত্মহত্যার প্রবণতা মেপে নেওয়া প্রশ্নসমূহ নীচে দেওয়া হল।
উদ্দেশ্যমূলক পরিস্থিতির সাথে আত্মহত্যার প্রচেষ্টার সম্পর্ক—
- বিচ্ছিন্নভাবে/একাকী-
ক. কেউ একজন উপস্থিত ছিল।
খ. কেউ একজন কাছাকাছি ছিল বা দেখা যাচ্ছিল বা কথাও বলা হচ্ছিল।
গ. কাছাকাছি কেউ ছিল না, দেখা যাচ্ছিল না কাউকে বা কাউকে কিছু বলা হয়নি।
- সময়—
ক. ঘটনার সময় যে কেউ চলে আসতে পারত।
খ. কেউ আসুক চাইনি।
গ. কোনোভাবেই চাইনি কেউ আসুক।
- সতর্কতা: কেউ যাতে না দেখে—
ক. কোনো সতর্কতা ছিল না।
খ. হালকা সতর্কতা থাকলেও দরজা বন্ধ করা বা কাউকে ঘরে ঢুকতে না দেওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গ. দারুণ সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল। দরজা বন্ধ রাখা হয়।
- প্রচেষ্টা সময় বা পরে সাহায্য চাওয়া হয়---
ক. সম্ভাব্য সাহায্যকারীকে প্রচেষ্টার ব্যাপারে জানানো হয়।
খ. সম্ভাব্য সাহায্যকারীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও প্রচেষ্টা ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
গ. সম্ভাব্য সাহায্যকারীর সাথে যোগাযোগ করা বা বলা হয়নি।
- মৃত্যুর আশংকা করে চূড়ান্ত কিছু করা হয়েছিল, যেমন উইল, বীমা ইত্যাদি—
ক. না।
খ. ভেবেছিলাম বা কিছু আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলাম।
গ. সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেছিলাম বা সমস্ত ব্যবস্থাপনা শেষ করেছিলাম।
- প্রচেষ্টার আগে সক্রিয় ব্যবস্থপনা—
ক. না।
খ. মোটামুটি।
গ. ব্যাপকভাবে।
- আত্মহত্যার চিঠি (সুইসাইড নোট)—
ক. না।
খ. লিখেছিলাম কিন্তু ছিঁড়ে ফেলি/চিঠির ব্যাপারে ভেবেছিলাম।
গ.চিঠি লিখেছিলাম।
- প্রচেষ্টার আগে আত্মহত্যার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করা হয়—
ক. না।
খ. স্বার্থবোধক প্রকাশ করা হয়েছিল।
গ. দ্বার্থহীন ভাবে প্রকাশ করা হয়।
আত্ম-তথ্য
- প্রচেষ্টার উদ্দেশ্য নিয়ে অভিযোগ ছিল---
ক. পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে/ চেয়েছিলাম/দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলাম/ প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম।
খ. ওপরের ও নীচের কারণগুলোই ছিল উদ্দেশ্য।
গ.মুক্তি পেতে চেয়েছিলাম/অব্যাহতি চাইছিলাম/সমস্যার সমাধান চাইছিলাম।
- এই মারাত্মক অবস্থায় ঠিক আগে কী প্রত্যাশা ছিল--
ক. মৃত্যুটা যথাযথ নয়।
খ. এভাবে মৃত্যু সম্ভব কিন্তু মানতে পারছিলাম না।
গ.ভেবেছিলাম মৃত্যুটাই যথাযথ বা সুনির্দিষ্ট।
- প্রাণনাশের পদ্ধতিগত ধারণা—
ক. যতটা ভয়ংকর হবে ভেবেছিলাম সেটা আমার ক্ষেত্রে খুব কমই হয়েছে।
খ. কতটা ভয়ংকর হবে কী হবে সে ব্যাপারে ঠিক নিশ্চিত ছিলাম না।
গ.যতটা ভয়ংকর হবে ভেবেছিলাম প্রায় ততটাই বা তার বেশিই ঘটেছে মনে হচ্ছে।
- প্রচেষ্টার আন্তরিকতা—
ক. জীবন শেষ করে দেবার মতো দৃঢ় ও আন্তরিক ছিলাম না।
খ. জীবন শেষ করে দেবার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম না।
গ জীবন শেষ করে দিতে আন্তরিক চেষ্টাই নিয়েছিলাম।
- জীবন ও মৃত্যুর ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি কী—
ক. মরতে চাই না।
খ. কোনটা জরুরি নিশ্চিত নই।
গ. অবশ্যই মরতে চেয়েচিলাম।
- চিকিৎসায় বেঁচে যাওয়ার ব্যাপারে ধারণা কী—
ক. চিকিৎসা হলে বেঁচে যাবে এমনটা ধারণা ছিল।
খ. নিশ্চিত ছিলাম না বেঁচে যাব কি না।
গ.চিকিৎসা হলেও মৃত্যু ঘটবে নিশ্চিত ছিলাম।
- আত্মহত্যার প্রচেষ্টা কতটা পূর্বকরল্পিত—
ক. ছিল না, হঠাৎ আবেগ তাড়িত হই।
খ. প্রচেষ্টার ঘন্টাতিনেক আগে মনস্থির করি।
গ.প্রচেষ্টার আগে তিন ঘন্টার বেশি সময় ধরে মনস্থির করি।
উত্তর-পত্র
আত্মহত্যাপ্রবণ স্কেলের ১৫টি প্রশ্নের উত্তর থেকে যতগুলো ‘ক’ পেয়েছেন তার প্রত্যেকটির জন্য ‘০’, ‘খ’-এর জন্য ‘১’ এবং ‘গ’ এর জন্য ‘২’ সংখ্যা বসিয়ে মোট যোগফল বার করুন এবং নীচের ফলাফল থেকে তীব্রতার পরিমাণ বার করুন।
১৫-১৯ কম তীব্রতা।
২০-২৮ মাঝারি তীব্রতা।
২৯+ উচ্চ তীব্রতা।
উল্লেখ্য, উচ্চ তীব্রতার প্রার্থীরা পুনরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করতে পারে।
সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন