পিত্ত পাথুরি তে হোমিওপ্যাথি
হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2019-01-25 15:22:29
পিত্তরসের মধ্যেকার পিত্তরঞ্জক বা বাইল পিগমেন্ট, ক্যালসিয়াম ও কোলেস্টেরল গলব্লাডার বা বাইল ডাক্টের মধ্যে থিতিয়ে পড়ে জমাট বেঁধে পিত্তপাথুরির সৃষ্টি করে। পিত্তপাথুরি বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, যেমন—
- কোলেস্টেরল স্টোন
- বিলিরুবিন স্টোন
- মিক্সড স্টোন
কোলেস্সিটাই টিস অর্থাৎ গলব্লাডেরর প্রদাহ, যার প্রধান কারণ সংক্রামণ। পিত্তরসে কোলেস্টেরল সল্ট এবং ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। সংক্রমণের সময় এই বাইল সল্ট বেশি বেশি পরিমাণে গলব্লাডারে শোষিত হয়। যেহেতু কোলেস্টেরল থিতিয়ে পড়ে সেই কারণে তা গলব্লাডারের মধ্যে স্টোনের সৃষ্টি করে। কিছু ব্যাক্টেরিয়া Esch coil, `Salm Typhi’, Strep-tococci, Staphylococci যেগুলো প্রধানত গ্যাসট্রাইটিস, ডিওডেনাইটিস, টাইফয়েড জ্বর, মুখে ঘা থেকে ছড়ায় তারাই এই সংক্রমণের জন্য দায়ী। একবার স্টোনটা গঠন হয়ে যাবার পরে এই সংক্রকগুলো প্রভাব কমে যায়।
গর্ভবস্থার মাঝামাঝি সময়ে পিত্তরসের গাঢ়ত্ব বাড়ে। সেক্ষেত্রে পিত্তরসে কোলেস্টেরলেরও ঘনত্ব বাড়ে। এক্ষেত্রেও গলস্টোন হবার সম্ভবনা থাকে।
গলব্লাডার থেকে পিত্তরস নির্গমনের মাত্রা বা হার কমে গেলে সেখানে বেশি সময় পিত্তরস জমে থোকে। ফলে পিত্তরসের গাঢ়ত্ব বাড়ে। ফলে গলব্লাডারের মধ্যে ইরিটেশন হয় যার প্রভাবে গলব্লাডারের প্রদাহ হয় এবং যা সংক্রমণের আদর্শ ক্ষেত্র হিসাবে দেখা দেয়।
অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাদ্য গ্রহণ, প্রধানত যাদের অতিরিক্ত মেদ আছে তাদের ক্ষেত্রে গলস্টোন হবার সম্ভবনা বেশি থাকে।
কিছু কিছু রোগ যেমন পারনিসিয়াস অ্যানিমিয়া, ব্ল্যাক-ওয়াটার-ফিভার ও জনডিসের ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে বাইল পিগমেন্ট নির্গত হয়। এই পিগমেন্ট থেকে বিলিরুবিন স্টোন হবার সম্ভবনা থাকে।
লক্ষণ
- পেটের ডানদিকের হাইপোকনড্রিয়াম এবং এপি গ্যাস্ট্রিয়াম অংশে যন্ত্রণা হতে পারে, যা নাভি, পিঠের পাঁজর, বুকে, মেরুদন্ডে এবং কিছুক্ষেত্রে হাতের আঙুলে পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে।
- বমি এবং সাথে ঠান্ডা ঘাম হয়।
- হিক্কা, খিঁচুনি, মূর্চ্ছা যেতে পারেন।
- হাতে পায়ে টান ধরা।
- কোষ্ঠকাঠিন্য।
- নাড়ি ধীর ও দুর্বল।
- জনডিস, যতক্ষণ পর্যন্ত বাইল ডাক্ট আটকে থাকে।
- অল্প স্পর্শেই যন্ত্রণা বাড়ে।
- পেটের ডান দিকের ওপরের অংশ ফুলতে পারে।
জটিলতা
- গলব্লাডার ফুটো হলে, অথবা বাইলারি ডাক্ট ফুটো হয়ে পেরিটোনিয়াম বা ইনটেস্টাইনে মিশনে পরিস্থিতি বেশ জটিল।
- গলব্লাডারে সংক্রামণ এবং প্যাংক্রিয়াসের প্রদাহ।
- কিছুক্ষেত্রে ক্যানসারের সম্ভবনা।
চিকিৎসা
যদিও একই লক্ষণ অন্যান্য কিছু রোগের ক্ষেত্রেও হতে পারে। ইউ.এস.জি করেই সঠিক ডায়াগনোসিসে আসা যেতে পারে যে এটি গলস্টোনের ব্যথাই।
সেক্ষেত্রে বেশ কিছু ওষুধ আছে যার দ্বারা অ্যাকিউট অবস্থায় গলস্টোনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। পরবর্তী ধাপে চিকিৎসার মাধ্যমে গলস্টোন গলিয়ে ফেলা যায়। তবে তা স্টোনের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। সাধারণত বারবেরিস ভালো, বোলডোয় ফ্রাগর্যানস, ক্যালকেরিয়া কার্ব, কারডাস মেরিনাস, চেলিডোনিয়াম, চিওন্যানথাস সিষ্কোনা, ডায়োসকোরিয়া, ফেল টাউরি, হাইড্রাসটিস, কোলেস্টেরিনাম, ফাবিয়ান-আই, ইথার, অ্যাট্রোপাইন সালফ প্রভৃতি ওষুধ ব্যবহার করা হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধই ব্যবহার অনুচিত।
সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন