নিয়মিত করুন যোগ, দূর হবে স্নায়ুরোগ
হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2019-01-25 15:40:14
স্নায়ুসমূহের সক্রিয় সাহায্য ব্যতীত কোনো যন্ত্রই চলতে পারে না। যদি কোনো কারণে স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে দেহ দুর্বল হয়ে ও কোনো কোনো অঙ্গের কর্মক্ষমতা লোপ পায়। মানুষ কোনো কারণে যখন দ্রুত দৌড়ায় তখন সে হাঁপাতে থাকে। এর কারণ হল সেই মুহুর্তে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব ঘটে। আবার এই দ্রুত দৌড়ানোর ফলে হৃদপিন্ড, ফুসফুস প্রভৃতিকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। এই অতি পরিশ্রমের জন্য প্রয়োজন হয় দ্রুত শক্তি প্রবাহ। সেই শক্তি প্রবাহের জোগানদার হল স্নায়ুসমূহ। অর্থাৎ স্নায়ুই দেহযন্ত্রকে সচল ও কর্মক্ষম রাখে। সুতরাং স্নায়ুলোর যে যথেষ্ট সবল থাকা দরকার সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এই জগতে যে সমস্ত জড় এবং সচল বস্তু আছে তারা সকলেই শৃঙ্খলাবদ্ধ।আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহের কাজ করে হৃদপিন্ডের মাধ্যমে সুসম্পন্ন হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণার দ্বার প্রমাণ করেছেন যে আমাদের বিভিন্ন অনুভূতি ও আবেগের উৎসস্থল হল মস্তিষ্ক। মস্তিষ্কের কার্যাবলীর মধ্যে সুনির্দিষ্ট ছন্দ এবং শৃঙ্খলা বিদ্যমান। জৈবিক নিয়ম অনুসারে আমরা নিদ্রা, জাগরণ, আলস্য, ভয়, উত্তেজনা, ক্লান্তি, ববিাদ, অনুরাগ, বিরাগ ইত্যাদি আবেগ দ্বারা প্রতি মুহুর্তে প্রভাবিত হয়।
স্নায়ুরোগের লক্ষণ
কয়েকটি লক্ষণ দেখে বোঝা যায় স্নায়ু দৌর্বল্য হয়েছেন কি না—
- শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে।
- অল্প পরিশ্রমেই হাঁপ দেখা দেবে।
- হাঁটাচলার কষ্টবোধ হবে।
- শরীরের কোনো কোনো স্থান স্পন্দিত হবে।
- দৃষ্টিশক্তিতে ক্ষীণতা দেখা দেবে। ধূলিকণার মতো অজস্র জ্যোতিঃকণা সৃষ্টি হবে।
- কোন কাজেই মন বসবে না।
উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা স্নায়ুদৌর্বল্য দেখা দিয়েছে কি না বোঝা যায়। স্নায়ুদৌর্বল্য যদি খুব বেশি হয় তাহলে পক্ষাঘাতও আক্রমণ করে বসতে পারে।
রোগের কারণ
মানুষ যতক্ষণ কাজে ব্যস্ত থাকে ততক্ষণ স্নায়ুগুলোকে কাজ করে যেতেই হয়, যখন মানুষ বিশ্রাম করে বা ঘুমোয় তখন স্নায়ুগুলোও বিশ্রাম পায়। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা বিশ্রামের অভাবে বা নিদ্রাহীনতার জন্য এই সব স্নায়ু খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন যাবৎ এভাবে চলরে স্নায়ুদৌর্বল্য দিতে পারে। অজীর্ণ, অম্ল প্রভৃতি রোগের ফলেও স্নায়ুদৌর্বল্য দেখা যায়। তখন শরীরে রোগবিষ দেখা দেয়। ফলে রক্ত দূষিত হয়ে পড়ে। এই দূষিত রক্ত স্নায়ুগুলোকে উপযুক্ত পরিমাণে পুষ্টির উপাদান জোগাতে পারে না। এর ফলে স্নায়ুসমূহ দুর্বল হয়ে পড়ে। যে কোনো কঠিন রোগও স্নায়ুদৌর্বল্যর জন্য দায়।
চিকিৎসা
স্নায়ুসমূহকে সতেজ ও সুস্থ রাখতে পারলে স্নায়ুদৌর্বল্য দেখা যায় না। যোগক্রিয়া দ্বারা স্নায়ুসমূহকে সুস্থ ও সবল রাখা যায়।
- প্রাতে : ভ্রমণ-প্রাণায়াম, সহজ বস্থিক্রিয়া, মূলবন্ধ মুদ্রা ও সহজ প্রাণায়াম।
- মধ্যাহ্নে : বজ্রাসন ও শবাসন।
- ভ্রমণ প্রাণঅয়াম, মূলবন্ধ মুদ্রা, মহাবন্ধ মুদ্রা, তার পরে শীর্ষাসন, সহজ অগ্নিসার, পশ্চিমোত্তানাসন, সর্বাঙ্গাসন, হলাসন ও মৎস্যাসন। সবশেষে করবেন সহজ প্রাণায়াম।
পুষ্টিকর খাদ্য অবশ্যই প্রয়োজন। সহজে হজম হয় এমন খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। দুধ বেশি পরিমাণ খাওয়া দরকার। পাকা ফল খুব উপকারী। অম্ল হতে পারে এমন খাদ্য সম্পূর্ণ বর্জন করুন।
অধিক পরিশ্রম করবেন না। বিশ্রাম ও ঘুম বেশি পরিমাণে দরকার। গুরুপাক আহার গ্রহণ করবেন না। আধপেটা খেতে হবে। পানীয় জল বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। শরীরে বেশি ঠান্ডা বা বেশি উত্তাপ লাগানো অনুচিত। যারা শিল্পী, গান-বাজনা করেন তারা কিছুটা সুস্থ হবার পরে তবেই আবার আরম্ভ করবেন।
সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন