×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

ডায়াবেটিসে পায়ের বিশেষ যত্ন নিন

ডাঃ সঞ্জয় কুমার শীল
2019-01-25 16:20:13

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগের কথা আমাদের সকলের জানা। এই রোগে রক্তে সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পায় তা আমরা জানি।কিন্তু সেটা ছাড়াও এই রোগের সমস্যাটি আরও সুদূর প্রসারি। শরীরে আমাদের যে ক’টি সিস্টেম বা তন্ত্র আছে তাদের সকলেই এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়।যেমন চোখ, কিডনি, হার্ট ও রক্ত সংবহনকারী নালী এবং স্নায়ু তন্ত্র।আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় বস্তু ডায়াবেটিক রোগীদের পায়ের যত্নের প্রয়োজনীয় প্রসঙ্গে।

এই রোগের পায়ের কী সমস্যা হয় তা বোঝার জন্য কয়েকটি তথ্য সর্ব প্রথম জানা অবশ্যই দরকার।ডাক্তারি পরিভাষায় দুটো শব্দ বহুল প্রচারিত---ম্যাক্রো ও মাইক্রো অ্যাঞ্জিও প্যাথি।ম্যাক্রোঅ্যাঞ্জিওপ্যাথি হল বড় ব্লাড সেলের মধ্যে চর্বি জমা হয়ে তার চ্যানেল বা লিউমেনটি সরু হয়ে যাওয়া এবং অনুরূপ প্রক্রিয়া ছোট ছোট ব্লাড ভেসেল হলে তাকে বলা হয় মাইক্রো অ্যাঞ্জিওপ্যাথি।এই মাইক্রো অ্যাঞ্জিওপ্যাথি সাধারণত চোখ, কিডনি এবং নার্ভের ব্লাড ভেসেল কে আক্রান্ত করে এবং এই সমস্ত জায়গায় রক্তের প্রবাহ অনেক কমে যায়।ডায়াবেটিসে পায়ের সমস্যা বোঝার জন্য এই দুটো প্যাথোলজিক্যাল প্রসেস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।কারণ পায়ের মধ্যে অবস্থিত ছোট, বড় ও মাঝারি ইত্যাদি সবরকম রক্তবাহী নালিতেই এই রোগে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস হওয়ার জন্য অত্যন্ত সরু হয়ে যায় এবং রক্ত সরবরাহে সষ্কুলান ঘটে।এছাড়াও আরও দুটো ঘটনা যেমন নিউরোপ্যাথি এবং সেপসিস অর্থাৎ ইনফেকশনের সহযোগে পায়ের সমস্যা আরও বেড়ে যায়।অর্থাৎ রক্তের সরবরাহ আরও কমে যাওয়া।লোকাল নার্ভের অসাড় হওয়া এবং সংক্রমণ এই তিনের সমন্বয়ে পায়ের যে দুর্দশা হয়, এক কথায় তাকেই আমরা বলি ডায়াবেটিক ফুট।

সাধারণত যারা ডায়াবেটিক ফুট-এ ভোগেন তারা নিম্নো লিখিত ক্লিনিক্যাল পিকচার নিয়ে ডাক্তারের কাছে উপস্থিত হন---

  • নিউরোপ্যাথিক ফিচার : সেনসরি /মোটর/অটোনমিক (নার্ভ জনিত রোগ)।
  • ইসকিমিক ফিচার : ম্যাক্রোএবংমাইক্রোঅ্যাঞ্জিওপ্যাথি (কম রক্ত সরবরাহ জনিত রোগ)।
  • সেপসিস : শরীরের টিস্যু তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকায় ব্যাক্টেরিয়া এবং ফাংগাসের সংক্রমণ অধিক মাত্রায় হয়।

সাধারণত পায়ের ত্বকের অনুভূতি শক্তি চলে যায়।ত্বকের আকৃতির পরিবর্তন হয় এবং ঘা বা আলসার দেখা যায়।

যদি ইসকিমিকি কারণে ঘা হয় তাতে অত্যন্ত ব্যথা হয়।কিন্তু নিউরোপ্যাথিক আলসার দেখা যায় এবং পরবর্তী কালে অ্যাবসেস, অস্টিওমায়লাইটিস (হাঁড়ে পঁচন) এবং সর্বোপরি গ্যাংগ্রিনের আকার ধারণ করতে পারে।তাই ‘প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর’ এই আপ্ত বাক্যটি স্মরণে রাখা বিশেষ প্রয়োজন।

তাই ডায়াবেটিক রোগীদের পায়ের যত্নের বিষয়ে করণীয় হল—

  • সতর্কতার সঙ্গে প্রতি দিন পা পরিষ্কার করা এবং পা’কে শুকনো রাখা।
  • প্রতিদিন পায়ের ইনফেকশন লক্ষ্য রাখা।
  • পায়ের আঙুলের নখেরও লক্ষ্য রাখুন।
  • প্রতিদিন পায়ে অ্যান্টি-ফাংগাল পাউডার ব্যবহার করুন।

এবার আসি যা যা করবেন না—

  • খালি পায়ে হাঁটবেন না।
  • ঢিলে ঢালা জুতো ব্যবহার করুন।
  • গরম জলের বোতল সঙ্গে রাখুন এবং মাঝে মাঝে পায়ে সেঁক দিন।
  • পায়ে যাতে কোনও আঘাত না লাগে সেদিকে সতর্ক থাকুন।

তাই উপরিউক্ত সতর্ক গুলো অবশ্যই মেনে চলা উচিত।তানা হলে পায়ের অংশ কোনও কারণে পচে গেলে তখন অ্যাম্পুটেশন করে  তা বাদ দেওয়া ছাড়া কোনও গতি থাকেনা।

চিকিৎসার  অন্যান্য মোডালিটির মধ্যে অ্যাঞ্জিওপ্যাথি বা  আর্টেরিয়াল বাইপাস গ্রাফট ইত্যাদিও গুরুত্বপূর্ণ, যার  দ্বারা পায়ের রক্ত চলা চলের পরিমাণ বাড়ানো যায়।এভাবে টিস্যুর চিকিৎসার পর নিউরোপ্যাথির চিকিৎসা প্রয়োজন।

তাই  ডায়াবেটিক  ফুটের  চিকিৎসার জন্য  সার্জেন এবং  ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞর যৌথ চিকিৎসা প্রয়োজন।এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ হল  প্রপার ডায়াবেটিক কনট্রোল (ওষুধ যেমন ইনসুলিন বা ওরাল মেডিসিন এবং খাদ্য – খাবারের নিয়ন্ত্রণ) এবং ধূমপান না  করা এবং  নিয়মিত  ব্যায়াম করা।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন