×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

যোগের মুঠোয় সুগার

অমল কাঁড়ার
2019-01-25 17:06:38

আমাদের দেশে এখন যে রোগটি ভয়াবহ ভাবে বেড়ে চলেছে তা হল ব্লাড সুগার বা ডায়বেটিস। আমাদের প্যাংক্রিয়াস থেকে যে ইনসুলিন বেরোয় সেটা যদি ঠিক মতো না কাজ করে তাহলে ব্লাড সুগার বেড়ে যায়। আবার ইনসুলিন ঠিক মতো বেরোলেও রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোচ যা প্রধানত খাবারের মাধ্যমে আমরা নিই, সেটা ঠিক মতো ব্যবহৃতনা হলে ব্লাড সুগার বেড়ে যায়। লম্বা হচ্ছে সুগারের হাত।বিশেষজ্ঞদের আশষ্কা অদূর ভবিষ্যতে এদেশে মহামারী হয়ে উঠেবে সুগার।অন্যতম কারণ স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব।

নিঃশব্দ শরীরে বাসা বেঁধে শরীরকে ঝাঁঝরা করে দিতে পারে যে রোগ বা ব্যাধি, তার নাম সুগার। অথচ এই সুগারকে সহজেই বশে আনা যায়। সুগার বশীকরণের সেরা উপায় শরীরচর্চা। ওষুধ খেতে খেতে মানুষ এখন বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছেন।তার ওপর বিভিন্ন ওষুধের আবার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। তাই ন্যাচারাল বা প্রাকৃতিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যতটা রোগ নিরাময় হয় তত টাই শ্রেয়।যোগ আসন, ব্যায়াম বা শরীরচর্চা রোগ নিরাময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। তাই আসুন আমরা জেনে নিই কী কী ব্যায়াম ও আসন অভ্যাস করলে সুগার কে বশে রাখা যায়।

নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব

আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সুগারকে বশে রাখতে আপনার খাদ্যাভ্যাস যেমন কিছুটা বদলাতে হবে, সেই সঙ্গে নিয়মিত দরকার যোগাসন অভ্যাস।মিষ্টি ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য বর্জন করতে হবে। সকাল ও বিকেল হাঁটুন, দোকান-বাজার ইত্যাদি প্রাত্যহিক কাজ নিজে করুন।সাংসারিক কাজে হাত লাগান, দৈনন্দিন জীবনে যার যা কাজ সেই কাজ নিজে করুন। এমনকী নিজের অফিসে,  নিজে বস হলেও অধস্তন কর্মচারীকে ফাইল বয়ে আনা অথবা কোনও কাজের নির্দেশনা দিয়ে সেই কাজ নিজে করুন।অহেতুক টেনশন করবেন না। নিজেকে সারাদিন কাজের মধ্যে রাখুন।এতে মন সবসময় অন্য দিকে থাকবে।

প্রত্যহ যোগাসন, ধ্যান ও প্রাণায়াম অভ্যাস করুন।এতে শরীর ও মন দুই-ই ভালো থাকবে। সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সম্ভব হলে হেলথ ক্লাবে গিয়ে বডি জগিং মেশিনে কিছুক্ষণ হাঁটতে পারেন।

সুগার নিয়ন্ত্রণে যোগব্যায়াম

  • মরনিংওয়াক বা প্রাকভ্রমণ : প্রত্যেক দিন সকালে কিছুটা সময় বের করে নিয়ে প্রাতঃভ্রমণ করুন। শরীর ভালো থাকবে।সেই সঙ্গে সকালের শুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করলে শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া স্বাভাবিক থাকবে। এছাড়া প্রেসার ঠিক থাকবে এবং সুগার থাকলে তাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
  • জগিং: প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এবার হাত দুটো মুঠো করে কনুই থেকে ভাঁজ করতে হবে। মুঠো করা হাত দুটো বুকের দু’পাশে রেখে এক একটা পা ভাঁজ করে লাফাতে হবে।পা দুটি যতটা সম্ভব বুকের কাছে তুলতে হবে।
  • স্পট জাম্প: সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত দুটো কনুই থেকে ভাঁজ করে বুকের সামনে রাখতে হবে। এবার পায়ের ওপর ভর দিয়ে জোড়া পায়ে লাফাতে হবে। পা দুটো যাতে ভাঁজ হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
  • স্কিপিং বা দড়ি লাফ : হাতে লাফ দড়ি নিয়ে জোড়া পায়ে লাফাতে হবে।যতটা সম্ভব পা ভাঁজনা করে ওপরের দিকে লাফানো উচিত।দড়ি লাফ পাম-শ্যু পরে অথবা নরম মাটিতে করবেন।
  • সিটআপ : সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন।দু’হাত মাথার ওপর এবং কানের পাশ দিয়ে টান-টান করে সোজা করুন। পা দুটি   কে জুড়ে সোজা করে রাখুন। এই অবস্থায় গভীর শ্বাস নিয়ে মাটি থেকে ঝাঁকুনি দিয়ে কোমর থেকে শরীরে উপরের অংশকে তুলুন এবং শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাতের আঙুল পায়ের আঙুলে ঠেকানোর চেষ্টা করুন। এইভাবে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যান। এইভাবে ১০-১৫ বার দুই মাত্রায় অভ্যাস করুন।
  • ধনুরাসন : মেঝেতে উপুড় হয়ে শুতে হবে।এবার পা দুটি হাঁটুর কাছ থেকে ভেঙে পিঠের কাছে আনতে হবে।দু’হাত দিয়ে গোড়ালি শক্ত করে ধরতে হবে।হাঁটুর সাধ্য মতো ১০-১২ ইঞ্চি ফাঁক করতে হবে। এতে করে তল পেটকে বলামাত্র ভূমি সংলগ্ন  হবে এবং শরীরটাকে পিছন থেকে ধনুকের মতো বাঁকাতে হবে।
  • জানুশিরাসন : পা দুটো প্রথম সোজা মেলে বসুন। ডান পা ভাঁজ করে ডান গোড়ালি বাম উরু সন্ধি সংলগ্ন করুন। দু’পাশ থেকে দু’হাত মাথার  ওপর তুলে ধীরে ধীরে সামনে ঝুঁকে দু’হাতের সাহায্যে বাঁ-পায়ের পাতা চেপে ধরুন। মাথা পায়ে ঠেকিয়ে কনুই সোজা রাখার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে হাতের কনুই মাটিতে ঠেকান। এইভাবে ১৫-২০ সেকেন্ড থাকার পর পা বদল করে অভ্যাস করুন। এ অবস্থায় দম স্বাভাবিক রাখতে হবে।
  • পশ্চিমোহ্থানাসন :দু’পা সামনে ছড়িয়ে বসে দু’ হাতের আঙুল দিয়ে দু’পায়ের বুড়ো আঙুল ধরে শরীরে সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে  কপাল ও  মুখ হাঁটুতে ঠেকিয়ে দিতে  হবে এবং হাত দুটি কনুইয়ের কাছ থেকে ভেঙে কনুই হাঁটুর  কাছে মাটিতে ঠেকাতে  হবে।বুক ও পেট জানুর সঙ্গে ঠেকাতে হবে। দম স্বাভাবিক রাখতে হবে।
  • শলভাসন : উপুড় হয়ে শুয়ে হাত দুটি উরুর সঙ্গে লাগিয়ে  হাতের চেটো দুটি  মাটিতে রাখতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে কাঁধ ও কপাল যেন মাটি তে লেগে থাকে। এইবার দম নিয়ে পরে দম বন্ধ করে নাভি থেকে পা পর্যন্ত দেহ   শক্ত করে  শূন্যে তুলতে হবে। এই অবস্থায় যেন পায়ের আঙুল সরল থাকে। এই ভাবে এক পা করে তুলে অর্ধশত ভাসন  অভ্যাস করতে পারেন।
  • উষ্ট্রাসন : প্রথমে হাঁটু ভেঙে নিন। ডাউন ভঙ্গিতে বসে কোমর থেকে শরীরের ঊর্ধ্বাংশ কে পিছনের দিকে বাঁকিয়ে দুই হাত দিয়ে দুই পায়ের গোড়ালি ধরতে হবে এবং মাথা পিছনের দিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে।
  • নৌকাসন : উপুড় হয়ে শুয়ে মাথায় হাত দিয়ে নাভি মাটিতে রেখে মাথা ও পা একসঙ্গে তুলতে হবে।পায়ের  দুটি হাঁটু    ও  গোড়ালি জোড়া থাকবে।  এই অবস্থায় ১০-১৫ সেকেন্ড  থাকতে হবে।দম স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে।

এছাড়া সুগার ‍নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূজাঙ্গাসন, উথ্থিত  পদ্মাসন. পবনমুক্তাসন ও ভ্রমণপ্রাণায়াম অভ্যাস  করতে পারেন।

এইসব শরীর  চর্চার পাশাপাশি আপনার খাদ্য তালিকায় একটু বদল আনতে হবে।এছাড়া সুগার থাকলে নিয়মিত  চোখ, প্রেসার, কিডনি, হার্ট, ব্লাডসুগার পরীক্ষা, নার্ভাস সিস্টেম সংক্রান্ত রিপোর্ট ও রেকর্ড রাখা প্রয়োজন। নিয়মিত চেক আপে থাকা দরকার শরীর কি অবস্থা কেমন আছে তা জানার জন্য।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন