×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

বুকের দুধেই শিশুর সুরক্ষা

হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-10-17 15:52:50

প্রোটিনঃ বড়দের শরীরের ওজনের ২০ শতাংশই প্রোটিন ।আমাদের শারীরিক বৃদ্ধির প্রধান উৎসই প্রোটিন । শরীরের বৃদ্ধি ,গঠন, বিপাক,শরীরের প্রতিটা কোষের ডি.এন.এ  আর. এন .এ  থেকে শুরু করে সব ধরনের হরমোন ,উৎসেচকও প্রোটিন-নির্ভর । প্রতিটা প্রোটিন অণুকে পুঁতির মালার সঙ্গে তুলনা করা যায় । পুঁতির মালায় যেমন অনেক রকমের রং-বেরঙের পুঁতি পরপর সাজিয়ে মালা তৈরী করা হয় ,তেমনী ২৪ রকমের আম্যাইনো অ্যাসিড পর পর জোড়া লেগে তৈরী হয় এক একটা প্রোটিন অণু । এই আম্যাইনো অ্যাসিডগুলো বিভিন্ন প্রকার সজ্জায় সেজে প্রয়োজনমতো ছোট বা বড় আকারের অসংখ্য  ধরণের প্রোটিন তৈরী করতে পারে ,আর এই বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনের কাজও বিভিন্ন ।

  1. প্রোটিনের প্রধান কাজ দেহ বৃদ্ধি করা । পেশি, চর্ম ,চোখ, হৃৎপিণ্ড ,ফুস্ফুস,মস্তিষ্ক এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নির্মাণের জন্য প্রোটিনের দরকার । এছাড়া শরীরের কোথাও কোনো ক্ষত হলে সে ক্ষত নিরাময়ও প্রোটিন-ই করে ।
  2. প্রোটিন রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরী করে ।আমাদের হজম এবং শরীরের অন্যন্যা বিপাকীয় কাজকর্ম করার জন্য যে সব উৎসেচকর দরকার হয় তাও প্রোটিনই তৈরী করে ।
  3. শরীরের সুরক্ষার জন্য যে সকল জীবাণূ প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডি দরকার হয় , সে সবও এক প্রকার প্রোটিন ।
কাজেই প্রোটিন ছাড়া শরীর অচল ।প্রোটিন ক্যালরি বা শক্তিও যোগায় । শরীরের মোট চাহিদার প্রায় ১৫ শতাংশ শক্তি এই প্রোটিন থেকে আসা প্রয়োজন । তাই প্রোটিনের যোগান কম হলে শিশুর বৃদ্ধি ঠিকমত হবে না ,তেমনী রোগ প্রতিরোধ শক্তিও কমে যাবে । বয়সের সঙ্গে সঙ্গে প্রোটিনের চাহিদার তারতম্য ঘটে ।একদম ছোট বয়সে এই চাহিদা বেশি থাকে । প্রথম ৬ মাসে প্রতিদিন কিলোপ্রতি ওজনের জন্য ২ গ্রাম প্রোটিনের প্রয়োজন । এক বছর বয়সে এই চাহিদা কিলোপ্রতি ১.৫ গ্রাম , ৫ বছর বয়সে ১.২ গ্রাম এবং ১০ বছরের ১ গ্রাম প্রতিদিন । যে সব শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মায়, তাদের স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য আরও বেশি প্রোটিনের দরকার । কম ওজনের ছোট শিশুর প্রতিদিন কিলোপ্রতি ৩.২-৩.৫ গ্রাম প্রোটিনের দরকার হয় । প্রোটিন এবং বুকের দুধঃ দুধে দু' রকমের প্রোটিন থাকে ।
  1. কেসিন জাতীয়ঃ এই প্রোটিন পাকস্থলীতে গিয়ে জমে গিয়ে দই তৈরী করে ।
  2. হোয়ে প্রোটিনঃ পাকস্থলীতে এই প্রোটিন জমে না ,তরল থাকে ,ফলে এই প্রোটিন সহজেই হজম হয় ।
  3. মানুষের বুকে দুধে সহজপাচ্য হোয়ে প্রোটিনের পরিমাণ মোট প্রোটিনের ৬০-৮০ ভাগ শতাংশ ,আর কেসিন জাতীয় প্রোটিনের  পরিমাণ ২০-৪০  শতাংশ । বুকের দুধে হোয়ে ও কেসিনের অনুপাত ৮০-২০ । গরুর দুধে এই হোয়ে প্রোটিনের পরিমাণ মাত্র ১৮ শতাংশ । বিভিন্ন গুঁড়ো ও কেনা দুধেও এই প্রোটিনের পরিমান কম থাকে ।কাজেই এটা পরিষ্কার যে বুকের দুধ হজম করা শিশুর পক্ষে অনেক সহজ ।
দুধে মোট প্রোটিনের পরিমাণঃ কোলস্ট্রামে (প্রথম ৫ দিনের মধ্যে) ১ গ্রাম প্রতি ১০০ মিলিমিটারে ।গরুর দুধে এই পরিমাণ ৩.৭ গ্রাম , ছাগলের দুধে ৩.৪  গ্রাম ।প্রসঙ্গত বলি , কুকুরের দুধে প্রোটিনের পরিমাণ ৭.৯ গ্রাম ,তাই কুকুরের বাচ্চারা তুলনামূলক তাড়াতাড়ি বড় হয়ে ওঠে । বুকের দুধে আর যে সব গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন তাকে তাদের মধ্যে ইমিউনোগ্লোবিন ,আলফা-ল্যাকটাল্বুমিন ও ল্যাকটোফেরিন উল্লেখযোগ্য ।  আমাদের শরীরকে সুরক্ষা দেয় যে প্রতিরোধ বাহিনী তার মধ্যে বিভিন্ন কোষ যেমন আছে ,তেমনি আছে ইমিউনোগ্লোবিন নামক এক প্রকার প্রোটিন ।  ইমিউনোগ্লোবিন ৫ রকমের হয় ।এরা কেউ রক্তে থেকে রক্তের মধ্যে প্রবেশ করে জীবাণু ধ্বংস করে ,কেউ অন্যভাবে কাজ করে ।বুকের দুধে থাকে ইমিউনোগ্লোবিন-এ । এই প্রোটিন পাকস্থলীর উৎসেচকে নষ্ট হয় না ,এরা সরাসরি গিয়ে মুখগহ্বর,শ্বাসনালী , খাদ্যনালী, অন্ত্র -সব কিছুর ভিতরে রক্ষাকারী আবরণ তৈরী করে ।ফলে বাইরে থেকে আসা রোগজীবাণুর সংক্রমণ সহজে হয় না । শিশু ৬ মাস বয়সের আগে নিজ প্রয়োজনীয় ইমিউনোগ্লোবিন-এ তৈরী করতে পারে না ,বুকের দুধই তাকে সুরক্ষা দেয় ।  ইমিউনোগ্লোবি-এ শিশুকে পেটের রোগ সৃষ্টিকারী  ই-কোলাই ও কলেরার ব্যকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে ,এ ছাড়া সর্দি-কাশির ভাইরাস পোলিও ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসকে প্রতিহত করে । এলার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থকে খাবারের সঙ্গে রক্তে ঢুকতে দেয় না , শিশুকে এলার্জির হাত থেকে বাচায় । বুকের দুধে প্রতি লিটারে প্রায়  ৩ গ্রাম আলফা-ল্যাকটালবুমিন থাকে । পাকস্থলিতে গিয়ে এই প্রোটিন একপ্রকার ফ্যাটি  অ্যাসিডের সঙ্গে মিলে তৈরী করে হ্যামলেট নামক এক প্রকার প্রোটিন যৌগ , যা ক্যান্সারের কোষকে ধ্বংস করে ।কাজেই বুকের দুধ খাওয়া শিশুর ক্যান্সারের সম্ভবনাও কমে যায় । ল্যাকটোফেরিন জাতীয় প্রোটিন শিশুর অন্ত্রর থেকে রক্ত তৈরীতে প্রয়োজনীয় আয়রন গ্রহনে সহায়তা করে । পুনশ্চঃ বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক মাসিক পত্রিকা ‘সুস্বাস্থ্য’ এ প্রকাশিত প্রবন্ধ অবলম্বনে রচিত.