×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

অকালে চুল পড়া রুখে দেয় ভেষজ

ডঃ মদনমোহন বেরা
2019-01-28 11:46:44

মাথায় চুল নিয়ে সকলেরেই প্রায় কিছু না কিছু সমস্যা থাকে।

চুলের এ হেন সমস্যা ও তার প্রতিকার নিয়ে নারা বিশ্বে প্রতিনিয়ত গবেষণা চলছে। আর তারই কারণে দিনে দিনে নানা ওষুধ বাজারে আসছে। মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিগুলো ভালো ব্যবসাও করে নিচ্ছে। ভারতীয় অতি প্রাচীন ভেষজ পদ্ধতি নিয়ে বিজ্ঞানীমহল সম্প্রতি নানাভাবে গবেষণা ও অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মতে, ভেষজ দ্বারাই চুলের রোগ সারানো যেতে পারে। চুলের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের বিষয়েও ভেষজগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

উল্লেখ্য, অনেক ভেষজ আছে যেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে দেহের প্রায় সব রকম রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করা যায়। চুল পড়ার ব্যাপারেও চুলের যত্ন নিলে ও কয়েকটি ভেষজ নিয়মিতভাবে খেলে চুল পড়া কিংবা চুলের রোগ রোধ করা যায়।

নিম্নোক্ত ভেষজগুলো দেহের সংশ্লিষ্ট রোগ নিরাময়ের সঙ্গে চুল পড়া রোধ করতে পারে।

  • আমলকী মানবদেহের সব রকম রোগ শোকে খুবই উপকারী। মানবদেহের অনাক্রম্যতা বদ্ধিতে খুবই সাহায্য করে। চুল পড়ার জন্য বাজারজাত বেশির ভাগ হার্বাল মেডিসিনে এই দ্রব্যটিকে রাখা হয়। সাধারণভাবে মুখশুদ্ধি রূপে কিংবা সকালে ও বিকেলে একটি করে প্রমাণ সাইজের আমলকী খেলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়।
  • দুর্বা গাছের সমূহ অংশ থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ তৈরি হয়। এক্ষেত্রে বিশেষত চুল পড়ে গেলে দুর্বা গাছের রস গায়ে মাখা তেলের সঙ্গে মিশিয়ে হালকা গরম করে পরে দিনে দু’-তিনবার করে মাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
  • মেহেন্দি গাছ চুল উঠে যাওয়া ও পাকার জন্য ভালো ফল দেয়। এক্ষেত্রে হরিতকী একটি ও সামান্য মেহেন্দি পাতা একটু ছেঁচে সামান্য সেদ্ধ করে ঠান্ডা হলে পরে ছেঁকে তলল অংশকে পরিষ্কার বোতলে রেখে দিতে হবে। দু’-তিন দিন মাথায় মেখে অন্তত আধঘন্টা পরে স্মান করলে ফলাফল তাড়াতাড়ি বোঝা যায়। প্রয়োজনবোধে আরো কয়েকদিন মাখতে হতে পারে।
  • ভৃঙ্গরাজ বা কেশুত গাছ কেবলমাত্র মাথার চুল নয় দেহের বহু রোগ উপশমে সহায়ক। এক্ষেত্রে টাটকা গাছের পাতার রস দুপুরবেলার দিকে ভালেঅ করে মাথায় মেখে পরে স্মান করা যায় কিংবা স্মান না করলেও চলে। মতান্তরে গায়ে মাখা তেলের সঙ্গে মিশিয়েও মাথার মাখা চলে। তবে অন্যান্য ভেষজ অপেক্ষা আমার মনে হয় এই গাছটি বেশি উপকারী।
  • বাজার জাত ধনে চুল পড়ে যাওয়া ও মাথার খুসকিতে ভালো ফল দেয়। এক্ষেত্রে দু’শো গ্রাম খাঁটি তিল তেলের মধ্যে দশ চামচ মতো টাটকা ধনে আট-দশদিন রেখে ওষুধটি তৈরি করতে হয়। মাঝে মাঝে একটু নেড়ে দিলে ভালো। পরে দিনে অন্তত দু’বার করে তেলটি মাথায় মাখতে হবে। মতান্তরে তেলটিকে রোদে কিংবা উনুনে রেখে হালকা গরম করে পরে মাখলে ভালো।
  • চিরতা গাছের ব্যবহারও চুলের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। এক্ষেত্রে টাটকা চিরতা গাছকে ভালো করে ধুয়ে পরে ছেঁচে পাওয়া রস এক চামচ পরিমাণে নিয়ে জলের সঙ্গে মিশিয়ে কিংবা সরাসরি রস খেয়ে পরে এক গ্লাস জল খেলে উপকার পাওয়া যায়। আসলে এই গাছটি দেহের অন্যান্য উপসর্গ সারানোর সঙ্গে সঙ্গে যকৃতকে সুস্থ-সবল করার মাধ্যমে চুলের উপকার করে।
  • কাঁকরোল গাছের পাতা, ফল, বীজ ও মূল থেকে অতি উপকারী ভেষজ ওষুধ তৈরি হলেও এই গাছের মূল চুল পড়ার জন্য ভালো ফল দেয়। দশ গ্রাম মতো টাটকা মূল ভালো করে বেটে নিয়ে আধ কাপ মতো জলে গুলে পরে ছেঁকে নিয়ে ওই জল দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে। একদিন অন্তর ভেষজটি ব্যবহার করলে খুব তাড়াতাড়ি চুল ওঠা বন্ধ হয়।
  • ন্যাসপাতি গাছের পাকা ফলের রস পেটের গন্ডগোল থেকে মাথার চুল ওঠা ও খুসকিতে খুবই উপকার দেয়। এই ফলের রস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে সিকি কাপ আন্দাজ পরিমাণে নিয়ে প্রয়োজন মতো জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হয়। দু’-তিনদিনের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যায়।
  • চা গাছের টাটকা পাতা সেদ্ধ জলে প্রত্যেকদিন অন্তত একবার করে মাথা ধুলে কয়েকদিনের মধ্যে চুল ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, এই গাছের পাতার রস ফুসফুস, যকৃত, ত্বক, চোখ ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে টাটকা পাতাই উপযোগী।

বিশেষ পরামর্শ

চুল নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে প্রথমে তো সুচিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে। আগে থেকে চুলের ব্যাপারে সতর্ক হলে বা সচেতন হলে অনেকাংশে চুলের সমস্যাগুলোকে অনেকটাই এড়িয়ে থাকা যায়। অনেক সময় বংশগত চুল পড়া বিষয়টাকে সচেতনার মাধ্যমে বিলম্বিত করা যায়। এক্ষেত্রে টাক যদিও হয় তবে একটু বেশি বয়সের দিকে হবে। তখন এ নিয়ে অতটা মনোকষ্ট আসে না। সম্প্রতি পাশ্চত্য বিজ্ঞানীরা অন্যান্য বহু রোগ নিরাময়ের সঙ্গে সঙ্গে চুলের রোগ নিরাময়ে পার্শ্বাপ্রতিক্রিয়াহীন ও সহজলভ্য ভেষজ দ্রব্য বা হার্বাল দ্রব্যের ব্যবহার সম্বন্ধে সুপারিশ করে থাকেন। তাদের মতে, ভেষজ ব্যবহারের মাধ্যমে দেহের অন্যান্য রোগশোক নিরাময়ের সঙ্গে চুলের সমস্যা দূরীভূত হয়।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন