×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

শীতের শেষ-অ্যালার্জির শুরু

ডাঃদেবাশীষ দত্ত
2019-02-01 12:19:06

ইয়োসিনোফিল শ্বেতকণিকার একটা অংশ। এটা সাধারণত মানুষের দেহে থাকে তিনটে। যখন এই সংখ্যাটা বেড়ে যায় অর্থাৎ পাঁচ-ছ’টা বা তার বেশি হয় তখন শারীরিক নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। সাধারণত ইওসিনোফিল কিছু কিছু কারণে বাড়ে এবং সেই কারণগুলো জেনে রাখাটা খুব দরকার।

আমাদের শরীরে অনেক রকম জিনিস থাকে যেটা মার্কার হিসেবে কাজ করে। ইওসিনোফিল হল সেইরকম একটা জিনিস। আমাদের শরীরে যদি অ্যালার্জি হয় সেটা এই মার্কারের সাহায্যে জানা যায়।খাদ্য দ্রব্যের কারণে হোক বা রোগের কারণে হোক, শরীরে যখন অ্যালার্জেণ ঢোকে তখন ইওসিনোফিলের লেভেলটা দেখে বোঝা যায়। অ্যালার্জির সম্ভাবনা বাড়ে।মানুষ রোগগ্রস্থ হয়ে যায়। ইওসিনোফিল অ্যালার্জিটাকে চিহ্নিত করে, অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়াকেও চিহ্নিত করে।

অ্যালার্জি কী কী কারণে হয়

অ্যালার্জি হওয়ার হাজার একটা কারণ থাকে।পশু পাখির লোম, তুলো, বিভিন্ন ফুলের রেণু, ধুলো প্রভৃতি থেকে অ্যালার্জি হয়।

ইওসিনোফিল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ কী কী

চোখ দিয়ে জল পড়ে, সারা শরীরে চুলকানি অথবা বিশেষ কোনো জায়গায় চুলকানি, তার সাথে হাঁচি। শরীরের কিছু কিছু জায়গা ফুলে যেতে পারে অথবা লাল হয়ে উঠে। এগুলো দেখলে বোঝা যায় শরীরে ইওসিনোফিল বেড়েছে। এই লক্ষণ গুলো দেখলে বাইরে থেকেই বোঝা যায় অ্যালার্জি হয়েছে।

এছাড়া আর কী কারনে হতে পারে

প্রধানত ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় যেমন অ্যাডিনো ভাইরাস, রাইনো ভাইরাস এরা বাতাসে ঘুরে বেড়ায়, সাধারণত এরা শরীরে ঢুকে অ্যালার্জি তৈরি করে।

ব্যাক্টেরিয়াল কিছু কিছু সংক্রমণ আছে তাতেও আমাদের শরীরে অ্যালার্জি বাড়ে। যেমন জি.আই. ট্রাক্টে হুকওয়ার্ম সংক্রমণ।বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমে, গ্রামের মানুষদের মধ্যে এই হুকওয়ার্ম মাটি থেকে হাত বা পায়ের মাধ্যমে ঢুকে ব্লাড সার্কুলেশনের মাধ্যমে জি.আই. ট্রাক্টে গিয়ে বসে থাকে। অ্যাসকেরিস (একধরনেরপোকা) খায় এবং শরীরে এদের টক্সিনের কারণে ইওসিনোফিল বাড়তে থাকে।

কিছু কিছু রোগের কারণে ইওসিনোফিল বাড়ে।ক্রোনস ডিজিজ, বিভিন্ন আলসারেটিভ কোলাইটিসের কারণে ইওসিনোফিল কাউন্ট টা বাড়ে।

কিছু কিছু লিভার ডিজিজে যেমন হেপাটাইটিস, লিভারে প্রদাহ, লিভার কোষের অসুস্থতায় ইওসিনোফিল কাউন্ট বাড়ে।

এক্ষেত্রে লক্ষণ গুলো অর্গান অরিয়েন্টেড হবে। যদি রোগীর রাইনো ভাইরাস বা অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তবে হাঁচি বা কাশি দিয়ে শুরু হতে পারে। চোখ দিয়ে জল পড়া বাড়তে পারে, জ্বর আসতে পারে, গা-হাত-পায়ে চুলকানি হতে পারে।এগুলো রেসপিরেটরি সংক্রমণ হয়েছে। এর জন্য হোল ব্লাড অ্যালার্জি প্রোফাইল পরীক্ষা করা হয়।রক্তের সমস্ত কিছু পরীক্ষা হয়। কোন কোন খাদ্যদ্রব্য থেকে সমস্যা হতে পারে এই রিপোর্ট থেকে জানা যায়।

এছাড়া যারা পশু-পাখি ভালোবাসে, মুরগি পোষে, বিড়াল পোষে এদের লোম মানুষের শরীরে খাবারের মাধ্যমে বা বাতাসের মাধ্যমে প্রবেশ করে সেই সব ক্ষেত্রেও ইওসিনোফিল কাউন্ট বাড়তে পারে।এটা বোঝা যায় অ্যালার্জি প্রোফাইলের দ্বারা।

বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে গমজাত দ্রব্যে অনেকের অ্যালার্জি হয় ,গ্লুটেন এনটারোপ্যাথি বলে একটা রোগ আছে যেটা কিনা হুইট প্রোডাক্ট রিলেটেড ডিসঅর্ডার। যার কারণে ইওসিনোফিল বেড়ে যায়।

ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ, ক্রোনস ডিজিজ এসব রোগে জি.আই. ট্রাক্টে প্রদাহ হয়।এর ফলে রোগীর ডায়রিয়া হতে পারে, অ্যাবডোমিনাল পেন, ক্র্যাম্প হতে পারে, মিউকাস ডায়রিয়া হতে পারে।এছাড়া রোগীর হাইপার অ্যাসিডিটি হতে পারে, রিফ্লাক্স হতে পারে, জ্বর আসতে পারে। বমি ও পায়খানা হতে পারে। রোগী কোনো খাবারই সহ্য করতে পারেনা। এই সব সমস্যায় ইওসিনোফিল বেড়ে যেতে পারে।

যত রকম রোগের কথা বলা হল এগুলোর ক্ষেত্রে অ্যালার্জি পরীক্ষা ছাড়া অন্যান্য কিছু পরীক্ষাও করা হয়, যেমন লিভার ফাংশন টেস্ট, স্টুলের পরীক্ষা, কোনো ভাইরাস আছে কিনা তার জন্য মার্কার পরীক্ষা করা হয়, কোনো ব্যাক্টেরিয়া আছে কিনা সেটাও দেখা হয়।টাইফয়েডের কারণেও ইওসিনোফিল বাড়তে পারে।

এইভাবে সঠিক ডায়াগনোসিসের পরেই চিকিৎসা করা হয়।কিছু কিছু ভাইরাল সংক্রমণে বিভিন্ন ওষুধের সাথে অ্যান্টি ভাইরাল ট্যাবলেট ও অ্যান্টিভাইরল ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়।

যে  যে কারণে ইওসিনোফিল বাড়ছে সেগুলো কে প্রতিরোধ করতে হবে। কারো যদি ঠান্ডা জিনিস অ্যালার্জি থাকে সে ঠান্ডা জিনিস খাবেনা।যে যে খাবার খেলে অস্বস্তি হয় সেগুলো বাদ দিতে হবে। ফুলের রেণু থেকে যাদের অ্যালার্জি হয় তাদেরও সাবধানে থাকতে হয়।বাড়ির পাশে রাধাচূড়া-কৃষ্ণচূড়া গাছ থাকলে গাছটা তো কেটে ফেলা যায় না বরং ওই জায়গাটা থেকে নিজেকে প্রোটেক্ট করতে হবে। যেসব জায়গায় তুলোর কারখানা আছে সেখানে তুলো বাতাসে ওড়ে। ওই এরিয়াতে কেউ যদি এক্সপোজ হয় তাহলে তার সিভিয়ার অ্যালার্জি হতে পারে। তাই যাদের অ্যালার্জির সমস্যা তারা ওই সব জায়গায় যাবেন না কারণ তার ফলে ইসিনোফিল বাড়তে পারে।

রোগী চিকিৎসার জন্য এলে আগে তার ইতিহাস নেওয়াটা জরুরি, কীভাবে সে লাইফ লিড করছে।যে সব সময় ঘরে রয়েছে তার এক রকম অ্যালার্জি, বাইরে যে কাজ করছে তার আর এক রকম অ্যালার্জি—এইসব দেখে চিকিৎসা ব্যবস্থা ঠিক করা হয়।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন