×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

গর্ভাবস্থায় কেন হয় কোমরে ব্যথা

ডাঃ সবুজ সেনগুপ্ত (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ; মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল, চার্নক হসপিটাল)
2019-02-01 13:00:40

সেই কালিদাসের আমল থেকে হালের হিন্দি চলচ্চিত্রের গীতিকার অবধি কমবেশি প্রায় সবাই নারীদের কোমর নিয়ে বড়ই আদিখ্যেতা দেখিয়েছেন। কিন্তু কোমর ব্যথা নিয়ে মহিলারা (অবশ্য পুরুষরাও) যে কীরকম জর্জরিত সে নিয়ে কিন্তু কবিরা কোনো টু শব্দ করেননি। তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার ছাড়া কোনো গতি নেই। অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, অল্টারনেটিভ মেডিসিন, ন্যাচারোপ্যাথি কোনো কিছুই অনেক সময় কোনো উপশম এনে দিতে পারে না।

যে মেয়ের কোনোদিন কোমর ব্যথা হয়নি সে যখন মা হতে গিয়ে কোমর ব্যথা নিয়ে কষ্ট পায় তখন চিকিৎসকের কাছে তার প্রথম প্রশ্ন হয়—কেন আমার এই ব্যথা হল।

চিকিৎসক তখন তাকে বুঝিয়ে বলেন, যে তোমরা মাতৃত্বই এর জন্য দায়ী—যে বাচ্চা তুমি শরীরে করে নিয়ে যাচ্ছে তার জন্য ক্রমবর্ধমান জরায়ু এবং শারীরিক হরমোনের তারতম্য তোমাকে এই কষ্ট দিচ্ছে।

বেড়ে যাওয়া জরায়ু শরীরের সেন্টার অব গ্র্যাভিটিকে স্থানচ্যুত করে দেয়, পেটের মাসলগুলোকে ঢিলে করে দেয়। দাঁড়ালে শরীরের যে ভারসাম্য তাকে পাল্টে দেয় আর পিছনের দিকে ভার পড়ে। তাছাড়াও যদি কোনো নার্ভের ওপর চাপ পড়ে তো কোমর ব্যথা হতেই পারে। তার ওপর যে অতিরিক্ত ওজন মা’কে বইতে হচ্ছে তার জন্য মাসলগুলোকে বেশি বেশি কাজ করতে হয়। তার ফলশ্রুতি সব হাড়ের জোড়গুলোর ওপর চাপ পড়া—তাই দিনের শেষে এই কোমর ব্যথা অসহ্যের কাছে পৌঁছে যায়।

গর্ভাবস্থায় হরমোনের যে তারতম্য হয় তার জন্য সব জয়েন্ট বা লিগামেন্টগুলো ঢিলে হয়ে যায়। সুতরাং গর্ভবতী মেয়ে হাঁটলে, চললে, অনেকক্ষণ বসে থাকলে বা কিছু জিনিস নীচু হয়ে তুললে হঠাৎ ব্যথা হতেই পারে।

কমবেশি তিন-চতুর্থাংশ গর্ভবতী মেয়েই কখনো কখনো গর্ভাবস্থার কোনো একটা সময়ে কোমর ব্যথায় কষ্ট পায়। যতই দিন বাড়ে ব্যথাও বেড়েই চলে। সাধারণত প্রসব হবার পরও কিছুদিন এই ব্যথা থাকে, তারপর চলে যায়।

গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথার সাথে মায়ের ওজন বাড়া, ব্যায়াম করার কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু কিছু ব্যাপার যেমন অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, বসে থাকা, সামনে ঝোঁক, হাঁটা বা ভারী জিনিস নীচু হয়ে তুললে হঠাৎ ব্যথা হতেই পারে।

কমবেশি তিন-চতুর্থাংশ গর্ভবতী মেয়েই কখনো কখনো গর্ভাবস্থার কোনো একটা সময়ে কোমর ব্যথায় কষ্ট পায়। যতই দিন বাড়ে ব্যথাও বেড়েই চলে। সাধারণত প্রসব হবার পরও কিছুদিন এই ব্যথা থাকে, তারপর চলে যায়।

গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথার সাথে মায়ের ওজন বাড়া, ব্যায়াম করার কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু কিছু ব্যাপার যেমন অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, বসে থাকা, সামনে ঝোঁকা, হাঁটা বা ভারী জিনিস তোলা জিনিস হঠাৎ কোমর ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। এই ব্যথা কখনো কখনো পায়ের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ রাত্রিতে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করেন, আবার কেউবা দিনে বেলায়।

দু’রকমের কোমর ব্যথা গর্ভাবস্থায় দেখা যায় বলে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথম হচ্ছে লাম্বার পেন। যেটা লাম্বার ভার্টিব্রাতে পিছন দিকে অনভূত হয়। দ্বিতীয়টি হচ্ছে পস্টিরিয়ার পেলভিক পেন যেটা পশ্চাতদেশে অনুভূত হয়। কোনো কোনো মা দু’ রকমের ব্যথা অনুভব করেন।

লাম্বার পের গর্ভাবস্থার আগেও অনেক মেয়েই অনুভব করে থাকে। ঠিক কোমরের লাইনে হয়। পায়ের দিকেও ছড়িয়ে যেতে পারে এ ব্যথা।

পস্টিরিয়ার পেলভিক পেন শুরু হয় আরো অনেকটা নীচুতে। পায়ের পিছল দিকে ছড়িয়ে যেতে পারে। সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা, হাঁটা-চলা এমনকী বিছানায় গড়াগড়ি খেলেও হঠাৎ শুরু হয়ে যেতে পারে।

‘ডাক্তারবাবু, আমার কি সায়টিক হয়েছে’?

এটা প্রায়শই শুনতে হয় ডাক্তারবাবুদের। সত্যিকারের সায়টিকা গর্ভাবস্থায় খুব একটা হয় না। সত্যিই যদি সায়টিকা হয় তো পায়ের ব্যথ কোমর ব্যথার থেকে বেশি হয়। হাঁটুর নীচেও কেউ কেউ এটা অনুভব করে থাকেন যা পা বা আঙুলের দিকেও চলে যেতে পারে।

একটু অবশ অবশ ভাবের সাথে দু’ পায়ে ঝিনঝিন করে ব্যথা হচ্ছে সায়টিকার লক্ষণ। একটু গুরুতর সায়টিকাতে ‍কুঁচকিতে অবশ ভাব বা যোনিদ্বারেও অবশ ভাব হতে পারে। টয়লেটে যাওয়াও কষ্টকর হতে পারে। তাই সায়টিকা বলে সন্দেহ হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

কে বেশি আক্রান্ত হতে পারে এই কোমর ব্যথায়?

অতি স্বাভাবিক ভাবেই যার প্রথম গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হয়েছিল তার বেশি সম্ভাবনা, যার মাতৃত্বের আগেও কোমর ব্যথা ছিল তার, যমজ বাচ্চা গর্ভে এলে তার, আর অবশ্যই তার যে গর্ভাবস্থায় আগে কোনোরকম ব্যায়াম-ট্যায়াম করেনি।

গর্ভবতী মায়ের হয়তো কোমর ব্যথার সময় ইচ্ছে করবে বিছানায় একটু শুয়ে নিই। কিন্তু অনেকক্ষণ বিছানায় পড়ে থাকাও উচিত নয়। যেটা দরকার সেটা হচ্ছে ব্যায়াম।

ব্যায়ামের আগে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয় উচিত। কোনো কোনো সময়ে গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম একদম নিষিদ্ধও হতে পারে। স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ, যোগব্যায়াম অত্যন্ত জরুরি। সাঁতার অত্যন্ত উপকারী ব্যায়াম।

শরীরের কথা শোনা উচিত। যেটাতে কষ্ট হবে সেটা কিছুতেই করতে নেই। অনেকক্ষণ ধরে একটানা দাঁড়িয়ে থাকা অনুচিত।

সারাদিন বসে যাদের কাজ করতে হয় তারা সোজা হয়ে বসবে, মাঝে মাঝেই উঠে একটু হাঁটাচলা করবে।

কোমর ব্যথা নিয়ে মা হয়ে যাওয়ার পরেও অনেকের কিন্তু ব্যথা কোমর ছেড়ে যায় না। এটা আরও বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায় যদি সিজারিয়ান ডেলিভারিতে স্পাই নাল অ্যানাস্থেশিয়া দেওয়া হয় (কোমরে ইঞ্জেকশন দিয়ে)। সহানুভূতি আর ব্যথার ওষুধ (পেনকিলার) ছাড়া আর তেমন কিছুই করার নেই। ব্যায়াম ধীরে ধীরে শুরু করতে পারলে এ ব্যথার উপশম হতে খুব বেশি সময় লাগবার কথা নয়।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন