×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

সব ব্যথাই রোখা যায় ব্যায়ামে

অমল কাঁড়ার
2019-02-01 13:15:47

কোমরে ব্যথা, পায়ে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা –ব্যথার জেরবার আমরা। আজকাল রাস্তাঘাটে, বাসে-ট্রামে একটু চোখ ঘোরালেই অহরহ দেখতে পাবেন লোকের গলায় কলার বাঁধা। ডাক্তারি ভাষায় এই রোগের নাম সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস। আবার কিছু লোকের কোমরে বেল্ট বাঁধা। ডাক্তারি ভাষায় এই রোগের নাম লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস। এ সব রোগই স্বাস্থ্য সচেতনার অভাবে সৃষ্ট। একটু সচেতন হলে এবং সকাল অথবা বিকেলে পনেরো-কুড়ি মিনিট ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ আর কিছু যোগাসন অভ্যাসের আগে প্রয়োজনীয় ম্যাসাজ নিলে এইসব রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।

মাথাব্যথা

প্রায়শই মাথাব্যথা বা যন্ত্রণা হলে মোটেই অবহেলা করবেন না। মরে রাখবেন মাথা ব্যথা কিন্তু অনেক রোগের উপসর্গ। যাতে জীবন সংশয়েরও ভয় থাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাথা ব্যথা চলতে থাকলে ডাক্তারি পরামর্শ নিন।

যে সব কারণে মাথাব্যথা হয়: সাধারণত দুর্বল শরীর, টেনশন, দুশ্চিন্তা, ঘুম না হওয়া, মেয়েদের ঋতু রোগ, জ্বর, সর্দিকাশি, মানসিক অবসাদ, অত্যধিক রাত জাগা ইত্যাদি।

যেসব জিনিস এড়িয়ে চলবেন:

  • রোদে ছাতা ছাড়া বেরোবেন না।
  • রোদ-চশমা ব্যবহার করুন।
  • একটানা অনেকক্ষণ পেট খালি রাখবেন না।
  • একটানা বই পড়া বা টি.ভি দেখা নয়।
  • লঘু সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন।

যেসব ক্রিয়া বা আসন অভ্যাস করবেন:

মাথা ব্যথা হলে তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য মাথা ম্যাসাজ করাতে পারেন। প্রত্যহ সকালে অথবা সন্ধ্যায় মনোসংযোগ ক্রিয়া, শবাসন, পদ্মাসন, অর্ধসমআসন, সহজ প্রাণায়াম প্রভৃতি যোগাসন বা ক্রিয়া অভ্যাস করুন, দেখবেন ফল হাতেনাতে।

মনঃসংযোগ ক্রিয়া

যেকোনো ধ্যানাসনে বসতে হবে (পদ্মাসন, বজ্রাসন)। চোখ বন্ধ করে মনটাকে একেবারে স্থির করতে হবে, যাতে বাইরের কোনো আওয়াজ কানে প্রবেশ না করে। এবার দশ থেকে শূন্য পর্যন্ত সংখ্যাগুলোকে দু’টো ভ্রূ’র মাঝখানে রেখে মনে মনে চিত্র অষ্কন করতে হবে। শরীর একেবারে হালকা থাকবে।

পদ্মাসন

বাঁ জানুন ওপর ডান এবং ডান জানুর ওপর বাঁ পা রেখে এমনভাবে বসতে হবে এবং যাতে মেরুদন্ড সোজা থাকে। হাত দু’টো হাঁটুতে বা কোলে রাখতে হবে।

শবাসন

চিৎ বা উপুড় হয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ করে হাত ও পা দু’টোকে লম্বা করে ছড়িয়ে দিয়ে হাত দু’টো শরীরের দু’পাশে রেখে সমস্ত শরীরকে শিথিল করে মৃতের ন্যায় শুয়ে থাকতে হবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে।

ঘাড়ে ব্যথা

ঘাড়ে ব্যথা অর্থাৎ ডাক্তারি নাম আর সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস।

কেন হয়: ক্রমাগত সামনে ঝুঁকে বসে কাজ, উঁচু বালিশে শোওয়া, ঘাড়ে আঘাত, ভারী হেলমেট বা ব্যাগ দিনের পর দিন ব্যবহার, শোওয়ার দোষ। এছাড়া সামনে ঝুঁকি ভারী মাল বহন করলে হতে পারে অথবা অত্যধিক ডেস্ক ওয়ার্ক করলে হতে পারে ঘাড়ের সমস্যা।

যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন: রেড মিট, ডিম, মাটির নীচের খাবার, ঘি, মদ ইদ্যাদি।

যেসব আসন অভ্যাস করবেন:  স্ট্যাটিক নেন এক্সারসাইজ (ঘাড় সামনে না ঝুঁকিয়ে ব্যায়াম), ভূজঙ্গাসন, তারাসন, যষ্ঠিআসন।

স্ট্যাটিক নেক এক্সারসাইজ

  • মেরুদন্ড সোজা করে বসুন বা দাঁড়ান। বাঁ গালে হাত চেপে রাখুন এবং ঘাড় দিয়ে ওই চাপ প্রতিহত করুন। অনুরূপ ভাবে ডান হাত দিয়েও ডান গালে এটা করুন দশবার।
  • এবার কপালে হাত রেখে চাপুন। এবং সেই চাপ কপালে দিয়ে প্রতিহত করুন।
  • ঘাড়ের পিছনে হাত রেখে ঘাড় পিছনের দিকে ঠেলুন এবং হাত দিয়ে সেই চাপ প্রতিহত করুন। উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। কানের সঙ্গে লাগিয়ে দু’টো হাত সামনে প্রসারিত করুন। এই অবস্থায় মাথা উঁচু করুন। দশবার।

ভূজঙ্গাসন

উপুড় হয়ে শুয়ে হাতের তালু দ’টো বুকের পাশে মাটিতে রাখুন, যেন হাত কাঁধের লেভেলে থাকে। হাতের কনুই পিঠে ঠেকে থাকবে। এই অবস্থায় নাভি মাটিতে রেখে শরীরের ওপরের অংশ সামনের দিকে তুলে মাথা পিছনের দিকে হেলিয়ে দেবেন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক। এভাবে পনেরো থেকে কুড়ি সেকেন্ড অভ্যাস করুন।

শবাসন শুয়ে পড়ুন। শ্বাস নিয়ে শরীরটাকে টান টান করুন। যেন কেউ আপনাকে দু’দিকে থেকে টানছে। এই অবস্থায় দশ থেকে পনেরো সেকেন্ড থেকে ছেড়ে দিন।

যা করণীয়:

  • বালিশ ছাড়া শোওয়া অভ্যাস করুন।
  • শক্ত বিছানা ব্যবহার করুন।
  • দেহের ওজন যেন না বাড়ে লক্ষ্য রাখবেন।
  • ঠান্ডা লাগানো চলবে না।

কোমরে ব্যথা

কোমরে ব্যথার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরাই দায়ী। নিয়মিত শরীরচর্চা না করা, ওজন বৃদ্ধি, শরীরে বাড়তি মেদ জমা এ সবই কোমর ব্যথার কারণ। এই রোগের বাড়াবাড়িতে ডাক্তারি পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

কেন হয়: ভারী কোনো জিনিস তুললে হতে পারে। সামনে ঝুঁকে কাজ করলে হতে পারে, মহিলাদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব, প্রচন্ড কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে এমন ব্যথা হতে পারে।

কী করবেন:

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন, ওজন কমিয়ে ফেলুন।
  • খাওয়া-দাওয়া অভ্যাস পাল্টিয়ে এই সমস্যার সমাধান সহজেই করা সম্ভব।

যে সমস্ত আসন বা ব্যায়াম করবেন : অর্ধ শলভাসন (আপ ডাউন), কোমরে হাত দিয়ে ভূজঙ্গাসন (আপ ডাউন), উথ্থিত পদ্মাসন, পেলভিক রিজ।

কোমরে হাত দিয়ে ভূজঙ্গাসন

উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবারে দু’হাত দিয়ে কোমরে চেপে ধরুন। কোমরে ব্যথা থাকলে একটু কম উঁচু করবেন। তা না হলে এক ফুট মতো উঁচু করুন। এইভাবে দশবার।

অর্ধ শলভাসন আপ ডাউন

উপুড় হয়ে শুয়ে শরীরের পাশে হাত রাখুন। এবার হাতের তালুর জোরে বাঁ-পা তুলুন। পূর্বাবস্থায় ফিরে ডান পা ওঠান। দু’টো পা একসঙ্গে ওঠাল সংশ্লিষ্ট সন্ধিতে আকস্মিক চাপ লাগতে পারে। যা শুরুতে কখনোই উচিত নয়।

পেলভিক ব্রিজ

চিৎ হয়ে শুয়ে পা দু’টো হাঁটুর কাছ থেকে ভেঙে নিতম্বের সঙ্গে লাগাতে হবে। এরপর হাত দু’টো মাথার ওপর লম্বাভাবে নিতে হবে, এবার শ্বাস নিতে নিতে হাত কোমরের পাশে মাটিতে রাখতে হবে এবং কোমর যতটা সম্ভব ওপর দিকে তুলতে হবে। আবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমর নামাতে হবে। এবং হাত দু’টো মাথার ওপর নিয়ে যেতে হবে। এইভাবে বারোবার করে দু’টো সেট করতে হবে।

বক্রাসন

পা ছড়িয়ে বসে ডান পা হাঁটু থেকে ভেঙে বাঁ পায়ের হাঁটু সিধে রাখতে হবে। এরপর বাঁ হাতটা ডান পায়ের চেটোর কাছে এনে ডান হাতের চেটোতে রাখতে হবে। মুখটা রাখতে হবে কাঁধের সোজাসুজি, দম থাকবে স্বাভাবিক। একইভাবে পা পাল্টে করতে হবে।

যারা পারবেন অর্ধমৎসেন্দ্রাসন করতে পারেন।

যা কখনোই করবেন না:

  • মানসিক দুশ্চিন্তা চলবে না।
  • সামনে ঝুঁকে কোনো কাজ করবেন না।
  • আচমকা কোনো ভারী জিনিস ওঠাবেন না।
  • মাটিতে উবু হয়ে বসবেন না।
  • বেশি সিঁড়ি ব্যবহার বা হাঁটাহাঁটি করবেন না।
  • সাইকেল বা বাইক চালাবেন না।
  • বাসের পিছনের সিটে বসবেন না।

পায়ে ব্যথা

মানুষের শরীরে সব থেকে বড় জোড় হল হাঁটু। এই কারণে চোট লাগার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। শোওয়া, বসা, ছাড়া দেহের সব ওজন হাঁটুকেই নিতে হয়। আর হাঁটা, দাঁড়ানো, লাফানো ইত্যাদি থেকে হাঁটুর বাত হতে পারে। রোগীর পা মুড়ে বসা চলবে না। বেশি হাঁটাচলা করা চলবে না। খেলাধুলো, ছোটাছুটি বন্ধ রাখতে হবে। মনে রাখবেন হাঁটুর ব্যথা এক ভয়ানক যন্ত্রণা, আপনি না পারবেন হাঁটতে না পারবেন বসতে। উপায় একটাই বিশ্রাম।

কেন হয়: যে কোনো আঘাত অথবা দুর্ঘটনাজনিত আঘাত থেকে হতে পারে।

কী করবেন: রোজ নিয়শ করে সমতল জায়গায় হাঁটুন। অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ অনুসারে সাপোর্টিভ ডিভাইস লাগিয়ে। এছাড়া হাঁটুর কিছু ব্যায়াম অবশ্যই অভ্যাস করুন। টিস্যু ম্যাসজও করাতে পারেন।

যে ব্যায়াম আসন করবেন: হাঁটু সামনের দিকে ছড়িয়ে হাঁটুর সন্ধিস্থল সংলগ্ন মাংসপেশি শক্ত করুন। এই অবস্থায় এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয় গুণুন। এবার ছাড়ুন। এভাবে অন্তত শুরুতে পঁচিশবার এবং দিনে তিনবার। চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসুন। কাউকে বলুন পায়ের গোড়ালির সন্ধিস্থল হালকা চেপে ধরতে। এবার আপনি এই ব্যক্তির ‘চেপে ধরা’ হাতটাকে পা দিয়ে ঠেলে সরিয়ে দিন। শুরতে তিনবার করুন। দিনে এটা একবার করুন।

এছাড়া উথিক পদ্মাসন, উৎকটসন, তারাসন অভ্যাস করুন

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন