বার্ধক্যের সমস্যা থেকে রেহাই
হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-10-20 14:09:44
যৌবনে জীবনযাত্রা কেমন ছিল তার উপর অনেকটাই নির্ভর করে বার্ধক্যের রোগজ্বালা কেমন হবে । তাই সর্দি কাশি রোগ জ্বালা থেকে শুরু করে উচ্চরক্ত চাপ , ডায়াবেটিস ,বাত প্রভৃতি জটিল রোগ হওয়ার আশঙ্কা বাড়তে থাকে ।বৃদ্ধ বয়সের কয়েকটি রোগ নিয়ে আলোচনা করা হল । উচ্চ রক্তচাপঃ মধ্য বয়সের পর থেকে পুরুষ ও মহিলাদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভবনা আরম্ভ হয় । উচ্চ রক্তচাপের অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষণ থাকে না । কিন্তু উচ্চ রক্তচাপজনিত কারনে রোগীর হার্ট ,কিডনি,রক্তজালিকা ও শরীরের অন্যান্যা অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে ।তাই সতর্ক থাকতে হবে । লবণযুক্ত খাবার, মিষ্টি ,মাংশ, কোল্ডড্রিঙ্কস প্রভৃতি খাবার নিয়ন্ত্রন করতে হবে । ছোট্মাছ , মৌসুমী ফল, শাকসবজি খাওয়া একান্ত প্রয়োজন । ধূমপান ও মদ্যপান ছেড়ে দিতে হবে । হোমিওচিকিৎসাঃ উচ্চ রক্তচাপের জন্য লক্ষণ অনুযায়ী অরাম মেট ,ইগ্নেশিয়া,ক্যালি ফস ,রাউলফিয়া প্রভৃতি হোমিও ওষুধ খুবই কার্যকরী । ডায়াবেটিসঃ রক্তে শর্করা পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি থাকলে আমরা তাকে ডায়াবেটিস বা মধুমেয় বলে থাকি । ডায়াবেটিস হলেও অনেক সময় লক্ষণ দেখা যায় না ।কিন্তু ডায়াবেটিস হলে শরীর ভেঙ্গে যায় ,নার্ভ দুর্বল হয় ,চোখ ,হার্ট ,কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে । পায়ে ঘা হলে ,যদি ডায়াবেটিস থাকে ,তাহলে আলসার হয়ে যায় । নিয়ন্ত্রিত সুষম আহার ,নিয়মিত শরীর চর্চা এই রোগকে নিয়ন্ত্রিত করে । হোমিওচিকিৎসাঃ ডায়াবেটিস রোগে অ্যাসিড ফস ,সিসিজিয়াম ,মোমোডিকা , ল্যাকটিক অ্যাসিড ,নেট্রাম মিউর প্রভৃতি ওষুধ লক্ষণ অনুযায়ী ব্যবহার করা হয় । শ্বাসকষ্টঃ বৃদ্ধ বয়সে শ্বাসকষ্ট খুব সাধারণ সমস্যা । এই রোগ সহজে সারতে চায় না । বিশেষ করে যারা অতীতে ধূমপান করেছেন তাদের শ্বাসকষ্ট প্রায় নিত্যসঙ্গী হয়ে যায় । এছাড়া অন্যান্য রোগের জন্যও শ্বাসকষ্ট হতে পারে । হোমিওচিকিৎসাঃ লক্ষণ অনুযায়ী আর্সেনিক এলব , নেট্রাম আর্স ,জাস্টেশিয়া ,ব্যাসেলিনাম প্রভৃতি ওষুধ উপকারী । প্রস্টেট সমস্যাঃ বৃদ্ধ বয়সে কমবেশি সভাই প্রস্টেট সমস্যায় ভোগেন ।আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে যদি দেখা যায় প্রস্টেটগ্ল্যান্ড বড় আছে এবং তার জন্য শরীরে সমস্যা হচ্ছে তার চিকিৎসা প্রয়োজন। হোমিওচিকিৎসাঃ লক্ষন অনুযায়ী কোনিয়াম ,থুজা,ক্যান্থরিস প্রভৃতি ওষুধ কার্যকরী । গাঁটে ব্যথ্যাঃ বৃদ্ধ বয়সে বেশির ভাগ মানুষ গাঁটের ব্যাথায় কষ্ট পায় ।বিশেষ করে হাটুর ব্যাথায় , যাকে চিকিৎসা ভাষায় অস্টিওআর্থ্রাইটিস বলে । এই সময় হাড়ের ক্ষয় হয় ,তার সাথে সাথে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায় ,হাঁড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে । এই সময় ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি গরম সেঁক বা ঠান্ডা সেঁক দিতে হয়, ব্যায়াম করতে হয় ।বিশেষ কিছু খাবার ( যেমন শাকপাতা ,মাংশ , টমেটো প্রভৃতি ) বদ্ধ রাখতে হবে । হোমিওচিকিৎসাঃ লক্ষণ অনুযায়ী রাসটক্স ,ম্যাগফস, রুটা ,ব্রায়োনিয়া ,ক্যালফস প্রভৃতি ওষুধ উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্যঃ বৃদ্ধ বয়সে কোষ্ঠকাঠিন্য একটা বড় সমস্যা । তাই ছিবড়ে যুক্ত অর্থ্যাৎ ফাইবারযুক্ত খাবার খাবেন । কোষ্ঠকাঠিন্য না থাকলে আর্শ ,ফসার, রেক্টাল প্রোলান্স হওয়ার হওয়ার আশঙ্কা থাকতে না । হোমিওচিকিৎসাঃ লক্ষন অনুযায়ী নাক্সভমিকা ,কার্বোভেজ ,লাইকোপোডিয়াম প্রভৃতি ওষুধ ব্যবহার করা হয় । এছাড়া, বৃদ্ধ বয়সে কানে শুনতে না পাওয়ার সমস্যা দেখা যায় । এতে চিনোপোডিয়াম ,ফেরাম পিক্ক্রিয়াম ভাল ওষুধ । দৃস্টি শক্তির সমস্যা দেখা যায় , তাতে ক্যাল ফ্লোর ,কস্টিকাম , সিনেরিয়া কার্যকরী। তাছাড়া হার্টের সমস্যা ,কিডনীর সমস্যা ,ডিমেনেশিয়া , দুর্বলতা প্রভৃতি রোগ হতে পারে।তাই পরিবারের লোকজনদের সব সময় সতর্ক থাকতে হতে পারে ।এখানে যে হোমিওওষুধগুলোর নাম দেওয়া হল ,সেগুলো হোমিওমতে ভাল ওষুধ । তবে চিকিৎস তার অভিজ্ঞতার আলোকে ওষুধ ও তার শক্তি নির্বাচন করে । তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়ানো উচিত নয় । পুনশ্চঃ বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক মাসিক পত্রিকা ‘সুস্বাস্থ্য’ এ প্রকাশিত প্রবন্ধ অবলম্বনে রচিত.