আপৎকালীন জন্মনিয়ন্ত্রণ পন্থা
গৌতম দে
2019-02-01 15:19:42
২৫-৩০ বছর ধরে সন্তান উৎপাদনে সক্ষম মহিলাদের মধ্যে সবসময় সতর্কতা নিয়ে মিলন সম্ভব হয়ে ওঠে না। অনেতেই হয়তো জানেন যে প্রতি বছরে ভারতে প্রায় ২৫ মিলিয়ন জীবিত সন্তান ভূমিষ্ট হয় আর যত জীবিত সন্তান প্রসব হয় তার মধ্যে কুড়ি শতাংশ অর্থা ৫ মিলিয়ন সন্তান অনাকাঙিক্ষত বা অবাঞ্ছিত। ভারতে অনেক মহিলারই১৮ বছর বয়সে বিবাহ হয়ে থাকে, এবং রজঃচক্র শেষ হতে হতে সেই ৪৮-৫০ বছর বয়স। এই দীর্ঘ সময়কাল অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স থেকে ৪৮ বছর বয়স পর্যন্ত ওই মহিলাটি সন্তান উৎপাদনে সক্ষম থাকেন। অষ্কের হিসাবে এই সময়কালটা প্রজননক্ষম যার সময়সীমা দাঁড়াচ্ছে প্রায় দীর্ঘ ২৭ থেকে ৩০ বছর। এই বয়সের বিবাহিতা মহিলাদেরই পরিসংখ্যানবিদের পরিভাষায় বলা হয় প্রজননক্ষম মহিলা বা MWRA বা ম্যারেড ওম্যান অফ রিপ্রোডাক্টিভ এজ।
নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রণ পন্থা ব্যবহারে ভয় ও অনীহা
পরিতাপের বিষয় যে, অনেক দম্পতিই কোনো পন্থার ধার ধারেন না। হয়তো শিক্ষার অভাবই এর কারণ। ভারতেই এমন কয়েক কোটি প্রজননক্ষম মহিলা আছেন যারা কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পন্থা ব্যবহার করতেই গররাজি থাকেন। এর পেছনে নানা ধর্মীয় ও সামাজিক কারণ আছে। যদিও মুখ্যত শিক্ষার অভাবই জন্মনিয়ন্ত্রণ পন্থা না ব্যবহার করার মুখ্য কারণ বলে সব দেশে চিহ্নিত হয়ে এসেছে।
ভারতে মোট প্রজননক্ষম মহিলাদের প্রায় ১৪ শতাংশ মহিলা আছেন যারা মনে মনে এখনই সন্তান চান না, আবার কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পন্থাও ব্যবস্থা করে যৌনজীবন পালন করে চলেন না। এই শ্রেণীর মহিলাদের বলা হয় ‘আনমেট নীড অব কন্ট্রাসেপটিভস’।
সুতরাং ভারতে এক বিপুল সংখ্যক মহিলার যেকোনো মাসে অনাকাঙিক্ষত গর্ভসঞ্চার হবার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে এবং বাস্তবে তা (অযাচিত গর্ভসঞ্চার) হয়েই চলেছে।
নিয়মিত পন্থা ব্যবহারে না হয় আপত্তি থাকতে পারে, কিন্তু মাসে একদিন একটা আপৎকালীন বড়ি খেতে আপত্তিটা কিসের? বা এইসব নিয়ে জেনে রাখতে অসুবিধা কোথায়?
কোন দিন কখন দুম করে অসতর্ক মিলন হয়ে যাবে আগাম তা কে আঁচ করতে পারে? আর এখানেই নানে আপৎকালীন জন্মনিয়ন্ত্রণ পন্থা সম্বন্ধে একটা জ্ঞান থাকা আবশ্যিক।
এই শ্রেণীর দম্পততিদের মধ্যে (আনমেট নীড অব কন্ট্রাসেপটিভস) কারও যদি দৈবাৎ ঝোঁকের মাথায় ডিম্বস্ফোটনের সময়কালে মিলন হয়েই যায় তাহলে কী করে গর্ভসঞ্চার এতদিন এড়ানো হত, কী ছিল সেই সব পন্থা।
এর জন্য নব্বইয়ের দশক থেকেই ভারতে এসেছিল নানা ধরনের ‘লিভোনরজেস্টেরল’ জাতীয় আপৎকালীন প্রোজেস্টেরন বড়ি বা মোটামুটি কার্যকরী। এইগুলির বাজারি নাম হচ্ছে ‘আই পিল’, ‘পিল-৭২’, ‘নরলিভো’, ‘প্রিভেন্টল’, ‘ই-পিল’ ইত্যাদি।
এমনকী যারা নিয়মিত পন্থায় আছেন,যারা নিয়মিত কনডোম ব্যবহার করে চলেছেন অথবা তাদেরও এই বয়সে এই বিপত্তারিণী ওষুধ সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা উচিত। মনে মনে হয়তো বা ভাবছেন কেন এসব কথা আসছে। কিন্তু যারা বহু বছর ধরে কনডম ব্যবহার করে চলেছেন তাদের মধ্যে কারও কারও কোনোদিন কনডোম বার্স্ট বা স্লিপ করেনি একথা হলফ করে বলা যাবে না। আর যদি মিশ্রিত পিলের কথা বলেন যেমন মালা ডি, নভেলন, সুখী ইত্যাদি ইত্যাদি তবে মাথায় রাখতে হবে, দুনিয়ার এমন মহিলা পাওয়া যাবে না যাদের দু’একদিন বিড়ি বাদ পড়েনি। ভারতীয় মহিলাদের যে আরও বেশি হারে ভুল হয় সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর কে না জানে দুদিনের বেশি বড়ি বাদ গেলে অনাকাঙিক্ষত গর্ভাসঞ্চার হয়ে যেতে পারে। আপৎকালীন বড়ি খেয়ে সেই অনভিপ্রেত গর্ভসঞ্চার রুখে দেওয়া যায়।
অসতর্ক সহবাসের পরে আর একটি পন্থা হচ্ছে কপার আই.ইউ.ডি যা খুবই স্বল্পসংখ্যত মহিলা পারে নেন। আই.ইউ.ডি পরে গর্ভসঞ্চার এড়াতে হলে অসতর্ক সহবাসের ৫ দিনের মধ্যে তা পরে নিতে হবে। তারা অবশ্য খুব বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন, বিশেষত যারা আই পিলের বদলে কপার আই.ইউ.ডি নেন। কারণ তাতে করে এখনকার গর্ভসঞ্চার যেমন এড়ানো যাবে তেমনি পরবর্তী ১০ বছর নিরাপত্তা পাওয়া যাবে।
অনেক দেরি করে হুঁশ হলে আই পিল কাজ করবে না। তখন?
প্রতিদিন বেশ কয়েক লক্ষ ভারতীয় মহিলা অসতর্ক মিলনের অনেক পরে অথাৎ ৭২ ঘনটা পরে সমাধানের রাস্তা খোঁজেন। কারণ সন্তান নেব কি নেব না এই চিন্তা করতে করতে তাদের অনেকেরই দু’-পাঁচদিন কেটে যায়। সিদ্ধান্তহীনতার মুখ্য কারণ হচ্ছে কনডোম ফেটে গেলে বা বড়ি খেতে ভুলে গেলে তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান। অসতর্ক মিলনের ৭২ ঘন্টা পরে হুঁশ হলে তখন আই পিল জাতীয় (লিভো-নরজেস্ট্রেল) বড়ি ভালো কাজ দেবে না। চাই আরও কার্যকরি বড়ি। এই নতুন ধরনের এমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ আপৎকালীন বড়ি মিলনের প্রায় ৭ দিন পর খেলেও কাজ দেবে। যেটা ‘আই পিল’, ‘ই.সি-২’, ‘প্রিভেন্টলের’ কাছে আশা করা যায় না।
এই পৌষে হল পরিচয়
আজ আমাদের সাথে এই অত্যাধুনিক গর্ভনিরোধক বড়ির (পোস্ট কয়টাল পিল) বা এমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভের সাথে পরিচয় করিয়ে দিই। কানাঘুষোতে শোনা যাচ্ছে ২০১৫-এর শেষের দিকে এটি ভারত সরকার বাজারে ছাড়ার অনুমতি দেবেন। তাহলে আগাম জেনে নেওয়া যাক কেন এই বিশেষ শ্রেণীর ওষুধ বাজার চলতি অন্যান্য আপৎকালীন বড়ির চেয়েও অনেক উপকারী ও কার্যকরি।
তুমি তার নাম বলে দাও
২০০৯সাল থেকেই বিদেশের বাজারে এক নতুন ধরনের ‘আপৎকালীন গর্ভনিরোধক বড়ি’ খুব জনপ্রিয় হয়েছে। এই বড়ির ব্র্যান্ড নাম ‘Ella One’ (ইলা ওয়ান)। এই শ্রেণীর বড়িটির সুবিধাগুলি এইরূপ—
- অসুরক্ষিত মিলনের ১২০ ঘন্টা এমনকী ১৪৪ ঘন্টা পরে খেলেও কার্যকরি হবে। এই বড়িটি আদতে ইউলি-প্রিসট্রল অ্যাসিটেট (Ulipristal-30 mg)। এটি এক ধরনের ‘প্রোজেস্টেরনের রিসেপটর মডিউলেটর’।
- তাছাড়া যেসব মহিলা স্থূলকায়া অর্থাৎ বি.এম.আই ৩০-এর বেশি তাদের ক্ষেত্রে এই শ্রেণীর পিল খুব বেশি হারে কাজ দেয়।
- যেসব মহিলার অসুরক্ষিত মিলনটি ফার্টাইল ফেজে হয়েছে (রজঃচক্রের ১০ম দিন থেকে ১৫তম দিনে) তাদের ক্ষেত্রেও এই নতুন ধরনের আপৎকালীন পিল পুরোনো আমলের পিলের (লিভোনরজেস্ট্রেল) চেয়েও খুব কার্যকরি। সেজন্যই বিদেশে এই বড়ি লিভোনরজেস্ট্রেলের (আই.পিল) চেয়েও জনপ্রিয় হয়েছে।
নতুন ধরনের আপৎকালীন বড়ির অসুবিধা
এই ওষুধটি একই রজঃচক্রে দু’বার ব্যবহার করার অনুমোদন মেলেনি যেখানে লিভোনরজেস্টল (আই পিল,ই-পিল, পিল-৭২) জাতীয় বড়ির ক্ষেত্রে নিষেধ নেই। যা এই নতুন শ্রেণীর বড়ির একটি সীমাবদ্ধতা বিশেষ। সেরকটা হলে অর্থাৎ একই রজঃচক্রে দ্বিতীয়বার অসতর্ক মিলনের জন্য গর্ভসঞ্চার এড়ানোর প্রয়োজনবোধ হলে সেই পুরোনো শ্রেণীর আই পিল খেতে হবে। অর্থাৎ একই রজঃচক্রে দুৎবার অসতর্ক মিলন হলে প্রথমবারে কেউ হয়তো ‘ইলা-ওয়ান’খেলেন। কিন্তু ওই একই মাসে যদি দ্বিতীয়বার অসতর্ক মিলন হয়েই যায় তাহলে তাকে ‘আই পিল’খেতে হবে। যেহেতু ‘ইলা-ওয়ান’ একটু কড়া জাতের ওষুধ সেজন্য ঘন ঘন খাওয়া বারণ।
অসতর্ক সহবাসের সমস্যার বারমাস্যা
- অনেকেই দেরি করে পরামর্শ চাইতে আসেন। অসুরক্ষিত মিলনের ৭২ ঘন্টার পর থেকে শুরু করে ১২০ ঘন্টার মধ্যে কোনো মহিলা সেই মাসে গর্ভসঞ্চার এড়ানোর পরামর্শ চাইতে এলে তখন ‘আই পিল’ ভালো কাজ দেবে না। যদিও এটি দামে বেশ সস্তা। এইরকম পরিস্থিতিতে ‘ইউলিপ্রিস্টল অ্যাসিটেট’ বড়িটি বেশি কার্যকরি হবে, যদিও এইসব ‘দেরি করে আসা’ মহিলাদের পক্ষে কপার আই.ইউ.ডি বেশ কার্যকরি। তবে জানেন তো, অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও বহু মহিলাই কপার আই.ইউ.ডি পরতে চান না। কপার আই.ইউ.ডি পরার অনীহা হচ্ছে অসতর্ক মিলনের পরে গর্ভসঞ্চার প্রতিরোধের দ্বিতীয় সমস্যা বিশেষ যা সব স্বাস্থ্যকর্মীই হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করে থাকেন।
- এস্কিমোদের দেশে একটা ফ্রিজ বিক্রি করতে গেলে যা পরিশ্রম করতে হয় তার চেয়েও যেন বেশি পরিশ্রম করতে হয় একটি মহিলাকে আই.ইউ.ডি পরাতে রাজি করাতে। আই.ইউ.ডি-র উপকার নিয়ে বলতে বলতে মুখ ব্যথা হয়ে গেলেও তিনি শুধু ঘাড় নেড়েই চলেন। অর্থাৎ কপার আই.ইউ.ডি-তে তার সম্মতি নেই। তাতে অসতর্ক মিলনের পর গর্ভসঞ্চার হয় হোক। এতটাই দম্পতিরা জেদী থাকেন। কী আর করা যাবে। অগত্য নতুন ধরনের বেশি কার্যকরি বড়ি (ইলা-ওয়ান) আমদানি করতে হবে!
- পিরিয়ড না হয় শুরু হবে। পরে ভবিষ্যতে কি সাবধানতা অবলম্বন করবেন? আদৌ কোনো পন্থাই তারা নেবেন কি? আপৎকালীন বড়ি অর্থাৎ ‘লিভোনরজেস্ট্রেল’ বা ‘ইউলিপ্রিস্টল’ জাতীয় বড়ি খাওয়ার পরে পরবর্তী মাসগুলিতে কী জন্মনিয়ন্ত্রণত পন্থা অবলম্বন করা উচিত হবে তা নিয়ে অনেক দম্পতিদের মধ্যে কোনো স্বচ্ছ ধারণা নেই। ‘লং টার্ম’ কী কী বন্দোবস্ত গ্রহণ করা উচিত তা নিয়ে কেউ চিন্তাভাবনাও করেন না। সবারই এক কথা—এমনটা আর হবে না। এবার ঝোঁকের মাথায় অসতর্ক মিলন হয়ে গেছে। যা হোক একটা বড়ি লিখে দেন, যাতে পিরিয়ডটা এ বারের মতো চালু হয়ে যায়।
কিন্তু সেই যে বড়ি লিখে নিয়ে তিনি ঘরমুখো হলেন---আর তার দেখা মেলে না। একবার বিপদমুক্ত হয়ে গেলে অর্থাৎ পিরিয়ড চালু হয়ে গেলে আর তিনি বা তার স্বামী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরামর্শ চাইতে আসেন না। এ বড় আফশোসের কথা। এ সবই শিক্ষার অভাব। স্বাস্থ্য সচেতনতার ঘাটতি।
এমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ বড়ি খাবার পরবর্তীকালে অন্য কী পন্থা ব্যবহৃত হবে
লিভোনরজেস্ট্রেল জাতীয় আপৎকালীন বড়ি (আই পিল) খাবার পরের দিনই যেকোনো সস্তার মিশ্রিত বড়ি শুরুকরা যেতে পারে। তবে ‘আই পিল’ খাবার পরবর্তী ৭ দিন মিশ্রিত বড়ি খাবার সাথে সাথে কনডোম ব্যবহার করতে হবে। এটিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিদান।
ইউলিপ্রিস্ট্রল (ইলা-ওয়ান) বড়ি খাবার ক্ষেত্রেও পরের দিন থেকে সাধারণ লো-ডোজ মিশ্রিত বড়ি খাওয়া যেতে পারে। তবে ‘আই পিল’ খাবার মতোই এক্ষেত্রেও ৭ দিন বাড়তি সাবধানতা (কনডোম) অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু কেউ কেউ যদি একেবারে হাল আমলের ন্যাচারাল ইস্ট্রোজেন দেওয়া মিশ্রিত পিল খাবেন বলে ঠিক করে থাকেন তাহলে ‘ইলা-ওয়ান’ খাবার পরবর্তী ১৪ দিন সাবধানদা অবলম্বন করতে হবে। মাত্র ৭ দিন সাবধান থাকলে হবে না। এই ভুলটা অনেক বিদেশিনি করে ফেলেন। সঠিক প্রচারের অভাবে।
কাকে বলে ন্যাচারাল ইস্ট্রোজেন দেওয়া নতুন শ্রেণীর মিশ্রিত পিল
এখন বিদেশেন বাজারে অনেক নতুন মিশ্রিত বড়ি এসেছে। যেমন Klaira, Alaire Nztazic (Bayer)। এইসব নতুন মিশ্রিত গর্ভানিরোধক বড়ি ভারতে এখনও পাওয়া য়ায় না। কিন্তু এই ধরনের বড়িতে উচ্চমানের ‘ন্যাচারাল ইস্ট্রোজেন’ অর্থাৎ ‘ইস্ট্রোডায়োল ভ্যালোরয়েট’ ব্যবহৃত হয়েছে।
বিদেশে এই ধরনের মিশ্রিত বড়ি বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। বছরের পর বছর ধরে মিশ্রিত পিল খান। হার্ট অ্যাটাক হবে না। বাজারে আরও এরকম ন্যাচারাল ইস্ট্রোজেন দেওয়া মিশ্রিত বড়ি পাওয়া যায় যার নাম ‘Zoley’, যেখানে ‘মাইক্রোনাইজড ইস্ট্রোজেন’ ব্যবহৃত হয়েছে। তবে এইসব বড়ি ভারতে পাওয়া যায় না। আপৎকালীন বড়ি খাবার পরে এইসব বড়ি খাওয়া মনস্থ করলে এই নতুন ধরনের মিশ্রিত বড়ি খাওয়া যায় বটে, কিন্তু বেশিদিন বাড়তি সাবধানতা (১৪ দিন) মেনে চলতে হবে।
নতুন ধরনের মিশ্রিত বড়ি খাবার কথা ভাবলে
‘লিভোনরজেস্ট্রেল’ জাতীয় আপৎকালীন বড়ি খাবার পরের দিন থেকেই যেমন সাধারণ মিশ্রিত বড়ি খাওয়া যায়, তেমনি ৩ দিন বিরতি দিয়ে একেবারে হাল আমলের গর্ভনিরোধক বড়ি যেমন `QLAIRA’ খাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মাত্র ৩ দিন বাড়তি সাবধানতার প্রয়োজন হবে।
কিন্তু ‘ইউলিপ্রিস্টল’ ওষুধ যদি আপৎকালীন বড়ি হিসাবে খাওয়া হয় তখন নতুন ধরনের মিশ্রিত বড়ি (QLAIRA জাতীয় বড়ি) খাওয়া শুরু করলে পরবর্তী প্রায় ১৪ দিন একটানা কনডোম ব্যবহার করতে হবে। এটি নতুন ধরনের মিশ্রিত বড়ির অসুবিধা বিশেষ। যদিও এতে খুব ভালেঅ জাতের ইস্ট্রোজেন দেওয়া আছে যাতে করে দীর্ঘদিনি ‘QLAIRA’ মিশ্রিত বড়ি খেলেও হার্ট অ্যাটাক, ব্রেন স্ট্রোক বা পায়ের শিরাতে থ্রম্বোসিস হবে না বললেই চলে। সাধারণ মিশ্রত পিলে (পুরোনো আমলের পিলের) একটু হলেও কড়া জাতের ইস্ট্রোজেন (সিন্থেটিক) আছে।
বিজ্ঞানীদের দাবি যে, স্বাভাবিক (ন্যাচারাল) ইস্ট্রোজেন আছে এই শ্রেণীর মিশ্রিত বড়ি দীর্ঘদিন খেয়ে গেলেও হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোক অথবা শিরাতে থ্রম্বোসিস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই নগণ্য। বিদেশে এসব বড়ি বেশ কয়েক বছর ধরে চালু হয়েছে।
সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন