×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

ডায়াবেটিস থাকলে প্রসবকালে জটিলতা

ডাঃ তীর্থষ্কর চৌধুরী (ডায়াবেটোলজিস্ট, অ্যাপোলো গ্লেনিগ্যালস হসপিটাল)
2019-02-06 12:32:15

দ্রুত পাল্টাচ্ছে সময়। আর সেই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরও দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে আমাদের জীবনযাত্রার। জীবনযাত্রার এই পরিবর্তন অনেকসময় মহিলাদের দেহে বিভিন্ন রোগ বহন করে আনে। এর মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস। কিছু কিছু অভ্যাস এই ডায়াবেটিসের আরও ত্বরান্বিত করে। যেমন—

  • সাধারণত বেশিরভাগ বাড়িতেই মহিলারা সবাইকে পরিবেশন করার শেষে নিজেরা খান। এতে খাওয়ার মাঝখানে অনেকটা ব্যবধান হয়ে যায়, যা শরীরের পক্ষে মোটেই ভালো নয়। ডায়াবেটিকদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা সুগারের পরিমাণ আকস্মিক কমে যেতে পারে।
  • অনেকে আছেন যারা স্বামীকে অফিসে এবং বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানোর পর ব্রেকফাস্ট সারেন। এতে লাঞ্চ ও ব্রেকফাস্টের মাঝখানের ব্যবধান অনেক বেড়ে যায়। এই প্রভাব ব্লাড গ্লুকোজ লেভেলের ওপর পড়ে।
  • যারা ঘন ঘন উপোস করেন, তাদের দৈনন্দিন রুটিন অনেকটাই ব্যাহত হয়। এতে গ্লুকোজ লেভেল স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে বা কমে যেতে পারে।
  • অনেক মহিলা আছেন যারা ওজন কমানোর জন্য ব্রেকফাস্ট খান না। এই অভ্যেস একেবারেই ভালো নয়। ব্রেকফাস্ট দিনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ খাবার, সেটা না করলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।

প্রেগনেন্সি ও ডায়াবেটিস

প্রেগনেন্সির সময় হরমোনে পরিবর্তনের কারণে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস দেখা যায়। এক থেকে তিন শতাংশ মহিলাদের প্রেগনেন্সির সময় জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হয়। এই সময় শরীর রক্তের গ্লুকোজ আগের মতো ব্যবহার করতে পারে না। ফলে ব্লাড সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক অবস্থা থেকে বেড়ে যায়। এই রোগে চোখের সমস্যা হয়, ঘন ঘন জল তেষ্টা পায়, ত্বকে ব্লাডারে এবং ভ্যাজাইনার সংক্রমণ হতে পারে। অল্পেই ক্লান্তি এসে যায়। প্রেগনেন্সির চব্বিশ টলারেন্স টেস্ট জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত সন্তান হয়ে যাওয়ার পর জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস সেরে যায়।

কাদের জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের জন্য পরীক্ষা করানো আবশ্যক—

  • যারা ওবিস বা ওভার ওয়েট।
  • যাদের প্রথম সন্তানের ওজন জন্মের সময় সাড়ে চার কেজির বেশি হয়।
  • পরিবারে কারও ডায়াবেটিস থাকলে।

এশীয় মহিলাদের মধ্যে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস দেখা যায় বেশি।

খাদ্যতালিকা

  • একবার অনেকটা না খেয়ে ছোট ছোট ভাগে খাবার খান। দু’টো বড় খাবারের মাঝে খিদে পেলে দু’-তিনবার স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স খান।
  • ব্রেকফাস্টে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ সকালের দিকে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স বেশি থাকে। চিনি ও ফ্যাটযুক্ত খাবারও কম খাবেন। ফল, সবজি, সিরিয়াল বেশি করে খান। দিনে অন্তত আট গ্লাস জল খান।
  • দিনে অন্তত চারবার দুগ্ধজাত বা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন, যাতে আপনার ও আপনার বাচ্চার প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটে। মাছ, সবুজ সবজি, ডিম ইত্যাদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খান। ভিটামিন-এ, সি, ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন গাজর, কমলালেবু, কাবুলি চানা খাদ্যতালিকায় রাখুন। অ্যালকোহল, কফি পারতপক্ষে খাবেন না।
  • প্রেগনেন্সির সময় ডায়াবেটিসের জন্য খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখলেও ওজন কমানোর চেষ্টা করবেন না।

চিকিৎসা

  • ব্লাডসুগার লেভেল কম রাখার চেষ্টা করুন। তাতে সন্তান হওয়ার সময় জটিলতার আশষ্কা কম থাকে।
  • নিয়মিত ব্লাডসুগার মনিটর করুন।
  • যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
  • সাধারণত বাড়ির কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শে হাঁটাহাঁটি, সাঁতার কাটা বা সাইক্লিং করা যেতে পারে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্লাড সুগার লেভেল স্বাভাবিক রাখার জন্য ওষুধ খান। এই সাধারণ নিয়মগুলো মেনে চললে সব রকমের জটিলতা অনায়াসে এড়াতে পারেন।

জটিলতা

যে সব মহিলাদের আগে থেকে ডায়াবেটিস আছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রেগনেন্সির সময় কিছু জটিলতা দেখা যায়।

  • বাচ্চার আয়তন খুব বড় হয়ে যায়, তাই ডেলিভারির সময় সমস্যা হতে পারে।
  • মিসক্যারেজ ও ইন্ট্রাইউটেরাইন ডেথের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • বাচ্চার জন্মগত শারীরিক ত্রুটি হওয়ার আশষ্কা বেড়ে যায়। হার্ট, নার্ভাস সিস্টেম, পেশিতে কনজেনিটাল ডিফেক্ট থাকতে পারে।
  • প্রেগনেন্সির শেষের দিকে প্রেসার বেড়ে গিয়ে প্রি-এক ল্যাম্পশিয়া হতে পারে।

তার মানে এই নয় যে, ডায়াবেটিস থাকলে সুস্থভাবে ডেলিভারি হওয়া সম্ভব নয়। প্রেগনেন্সির সময়ে একটু সচেতনও অনুশাসনে থাকলে ডেলিভারির সময় কোনোরকম সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। পুরো প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে যদি ব্লাড গ্লুকোজ লেভেল ১৩০ মিলির কম রাখা যায়, তাহলে ডেলিভারি নিয়ে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

প্রি-প্রেগনেন্সি কেয়ার

  • কনসিভ করার আগেই ডায়াবেটিক কাউন্সেলিং করিয়ে নিন কীভাবে প্রেগনেন্সির সময় ডায়াবেটিস ম্যানেজ করবেন জানতে পারবেন। সেই অনুযায়ী নিজের খাওয়া-দাওয়া, এক্সারসাইজ প্ল্যান করে নিলে দেখবেন প্রেগনেন্ট অবস্থায় অসুবিধে হবে না।
  • নিয়মিত মেডিক্যাল চেক-আপ করান। ব্লাড সুগার লেভেল মনিটর করুন। সুগার খুব কমে গেলে বা হঠাৎ খুব বেড়ে গেলে কী করতে হবে আগে থেকে জেনে নিয়ে সব সময় প্রস্তুত থাকুন। কোনো সমস্যা হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

  • সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন