×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

ডায়াবেটিস নিরাময়ে ম্যাজিকের মতো কাজ করে যোগাপ্যাথি

ডাঃ দিব্যসুন্দর দাস
2019-02-06 12:57:55

বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস এদেশে এখন মহামারি। তাই রোগটি কী, কীভাবে এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় তা এখন প্রত্যেকেরই জানা দরকার।

যখন রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার পরিমাণ অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায় তখনই দেখা দেয় ডায়াবেটিস মেলাইটিস। আমরা যাকে বলি ডায়াবেটিস। অগ্ন্যাশয় থেকেই ইনসুলিন ক্ষরণ সম্পর্ণ বা আংশিক বন্ধ কিংবা কমে যেতে থাকলে ডায়াবেটিসের উপসর্গ দেখা দেয়। ইনসুলিনের অভাবে শরীরের অভ্যন্তরীণ পদার্থের রাসায়নিক রূপান্তর ঘটে পদার্থের রাসায়নিক রূপান্তর ঘটে ও রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। অনেক দিন ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে শরীরের বিভিন্ন কোষের গঠনমূলক ও ক্রিয়ামূলক কাজের স্থায়ীভাবে পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে বিশেষ  করে রক্ত চলাচলকারী ধমনী, যকৃত, স্নায়ুতন্ত্র ও চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মনে রাখবেন যারা দৈহিক পরিশ্রম কম করেন, চিন্তাশীল ব্যক্তি, বুদ্ধিজীবী, ব্রেন ওয়ার্ক বেশি করেন তাদের ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি।

মেহনতি মানুষ অর্থাৎ যারা প্রতিদিন দৈহিক পরিশ্রম করেন, মেহনত করে জীবিকা নির্বাহ করেন, যাদের মাথা বা ব্রেনের থেকে দেহের ব্যায়াম বা কসরত বেশি হয়, সাধারণত তাদের ডায়াবেটিস বা মধুমেহ বা বহুমূত্র রোগ হয় না বললেই চলে। রক্তে শর্করা বা মিষ্টিভাব পরিলক্ষিত হয় বলে এই রোগকে মধুমেহ রোগ বলে অনেকে উল্লেখ করেন।

সমাজে যারা চিন্তাশীল ব্যক্তি বা বুদ্ধিজীবী কিংবা এক্সিকিউটিভ পার্সন তাদের ব্রেনের কাজ বেশি অথচ ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি প্রায় একেবারেই নেই বললেই চলে। যাদের বসে বসে কাজ, বা চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ অথবা টেনশন প্রসূত কাজ, তাদেরই দেখা যায় এই রোগের প্রকোপে বেশি ভুগতে। আজকাল চিকিৎসা শাস্ত্রে বহুমূত্র বা ডায়াবেটিসকেও তাই বলা হয় টেনশন অরিয়েন্টেড ডিজিজ, মাইন্ড রিলেটেড সিনড্রোম।

আর এদের মধ্যেই দেখা যায় পলিডিপসিয়া, পলিফেজিয়া এবং পলি ইউরিয়া ডায়াবেটিসের এই তিনটি প্রধান লক্ষণ।

পলিডিপসিয়া অর্থাৎ অতিতৃষ্ণা, পরিফেজিয়া অতি ক্ষুধা ও পলি ইউরিয়া অতি প্রস্রাব। এই রোগে বার বার মূত্রত্যাগের প্রবণতা দেখা যায় বলে একে বহুমূত্র বলেও অনেক অভিহিত করেন। দীর্ঘদিন বহুমূত্র বা মধুমেহ রোগ চলতে থাকলে পরিশেষে ডায়াবেটিস নেফ্রোপ্যাথি তথা মূত্রযন্ত্র সহ কিডনির রোগ এবং ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি অর্থাৎ চোখের রোগ দেখা দিতে পারে।

বংশগত ধারায় আক্রান্ত (জুভেনাইল ডায়াবেটিস) হলেও দৈহিক পরিশ্রম ব্যায়াম ও যোগাসনের বহুমূত্র বা মধুমেহ রোগ সারাতে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। শারীরিক কসরতের মাধ্যমে মেহনত করলে মধুমেহ বা মূত্রমেহ বা ডায়াবেটিস রোগ অন্তত শিশুদের ক্ষেত্রে নিবারণ করা যায়। ব্যায়াম ও যোগাসন অভ্যাসকারীর দৈহিক পরিশ্রম হয় বলে দেহের আভ্যন্তরীন কলকজ্বা ঠিক থাকে। সমস্ত ফিজিওলজিক্যাল সিস্টেম সুষ্ঠভাবে সুনিয়ন্ত্রিত হয়। ইনসুলিনের যথাযথ ক্ষরণ বজায় থাকে ফলে সহজে মধুমেহ রোগ আক্রমণ করতে পারে না।

পর্যায়ক্রমে ডায়াবেটিসকে দুটো শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। যেমন, টাইপ-ওয়ান বা ইনসুলিন নির্ভর এবং টাইপ-টু যা ইনসুলিন নির্ভর নয়।

আমরা বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস যাকে বলি সেটা হল ডায়াবেটিস মেলাইটাস। এছাড়া ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস বলে আর এক প্রকার ডায়াবেটিসের নাম শোনা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে এ রোগের প্রধান কারণ আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের ভ্যাসোপ্রেসিনের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে যাওয়া। এছাড়াও অবশ্য বিভিন্ন কারণ আছে।

যে প্রকার ডায়াবেটিসই হোক না কেন, উল্লেখযোগ্য যোগাসনগুলো হল—জানুশিরাসন, পদহস্তাসন, পবনমুক্তাসন, ধনুরাসন, অর্ধমৎসোন্দ্রাসন, শশাঙ্গাসন, মৎস্যাসন, শীর্ষাসন, যোগমুদ্রা, মহামুদ্রা ইত্যাদি। তার সঙ্গে সূর্যভেদ প্রাণায়াম, ভ্রামরী, ধ্যান বা মেডিটেশন এবং শবাসন সঙ্গে রিলাক্সেশন করলে প্রভূত ফল হয়।

ব্যায়াম ও যোগাসন শরীর ও মন উভয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আসন ও ব্যায়ামের ফলে মানুষের দেহকোষগুলোর ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। ফলে ওরাল ওষুধপত্র বা ইনসুলিনের ডোজ বাড়াবার প্রয়োজন হয় না বরং কমে যায়। কার্ডিওভাসকুলার রোগের সম্ভাবনা কমে যায়। ব্যায়াম ও আসনের পরিশ্রমে ক্যালরি ক্ষয় হয়। ফলে দেহের অতিরিক্ত ওজন কমে। তাছাড়া ব্যায়াম ও আসন স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। যোগাসন অভ্যাসে মানসিক অবসাদ দূর হয়।

আসন ও ব্যায়ামের পরিশ্রমে মাংসপেশির শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালরির যোগান দিতে রক্ত থেকে গ্লুকোজ কোষে চলে যায় এবং সেখানে গ্লুকোজের জারণ ঘটে। দেহের ইনসুলিন খুব দ্রুত কাজ শুরু করে দেয় ফলে নিয়মিত ওষুধ বা আলাদা করে ইনসুলিনের ডোজ কমিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। তাই যোগাসন ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতে বড় হাতিয়ার বলাবাহুল্য।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন