×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

অসময়ে গর্ভধারণের বিপদ

ডাঃ মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায় (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, অ্যাপেলো গ্লেনিগালস হসপিটাল)
2019-02-06 13:27:21

অসময়ে গর্ভ ধারণের বিপদ সাধারণত দু’রকম হতে দেখা যায়।–

  • খুব অপরিণত শরীরে মা হতে যাওয়া যা কিনা মা এবং শিশুমৃত্যুর জন্য দায়ী থাকে। কারণ নির্দিষ্ট বয়স না হলে মায়ের শরীর ঠিকভাবে তৈরি হয় না। যে নিজেই অপুষ্টি থাকে সে কীভাবে আর একজনের জন্মটাকে সুস্থ, সুন্দর করে তুলবে? যেটা গ্রামাঞ্চলে খুব বেশি দেখা যায়। এর জন্য চাই সচেতনতা।
  • বেশি বয়সে মা হতে চাওয়াকেও অসময়ে গর্ভধারণ বলতে হবে। একটু বেশি বয়স হয়ে যাওয়া মানে শরীরে নানা ধরনের রোগের সম্ভাবনা, অনেক সময় কারো খুব তাড়াতাড়ি মেনোপজে হয়ে যায়। এছাড়া যেটা খুবই মারাত্মক হয়ে ওঠে সেটা হল বাচ্চার ক্রোমোজমের অস্বাভাবিকত্ব, যা একটি বাচ্চাকে প্রতিবন্ধী করে দেয়। সারা জীবনের জন্য মা ও শিশুর কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও অনেক সময়ই ভ্রণটি অ্যাবরশন হয়ে যায়, প্রি-ম্যাচিওয় ডেলিভারি এবং শিশুমৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

সাধারণত আঠেরো বছর বয়সের মেয়েদের প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে ধরা হয়। তবে আঠেরো বছর বয়সকে মেয়েদের মাতৃত্বের সঠিক বয়স বলে মনে করলে কিন্তু ভুল করা হবে। মাতৃত্বের জন্য কুড়ি থেকে পঁয়ত্রিশ বছর পর্যন্ত বয়সকে সঠিক বয়স মনে করা হয়। কুড়ির আগে গর্ভধারণ এবং পঁয়ত্রিশের পরে মাতৃত্ব আসাটা ডাক্তারি শাস্ত্রে অসময়ে গর্ভধারণ।

কুড়ি বছর বয়সের আগে মেয়েদের জননেন্দ্রিয় এবং স্তন ঠিকভাবে গঠিত হয় না। তাই এই সময়ে গর্ভধারণ করলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মিস ক্যারেজ হতে দেখা যায়।

দ্বিতীয়ত, বাচ্চার গ্রোথ কম হয় অর্থাৎ বাচ্চার বৃদ্ধি ঠিকমতো হয় না।

তৃতীয়ত, সময়ের আগেই ডেলিভারি বা প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারি হওয়ার সমস্যা তৈরি হয়।

চতুর্থত, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে কমবয়সী মেয়েদের পেটের মধ্যে যে ইউটেরাস আছে তা ঠিকমতো বেড়ে ওঠে না। ফলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর ইউটেরাস ডেভেলপ করার জায়গা পায় না। অর্থাৎ ইউটেরাসকে বাড়তে দিতে গেলে পেটে যথেষ্ট পরিমাণে জায়গা থাকা দরকার। যদি সেটা না হয় তাহলে একটা সময়ের পর ইউটেরাস বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ফলে বাচ্চার গ্রোথও ব্যাহত হয়।

যখন কেউ পঁয়ত্রিশ বছরের পর গর্ভধারণ করে তখন হয়তো গ্রোথ সংক্রান্ত সমস্যাটা থাকে না কিন্তু ক্রোমোজোম সংক্রান্ত কিছু কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তার জন্য মায়ের বয়সকেই দায়ী করা হয়।

এই ক্রোমোজোমের সমস্যাগুলো বাইরে থেকে দেখে চট করে বোঝা যায় না। দেখে মনে হয় শিশুটি হয়তো বিকলঙ্গ, মানসিক প্রতিবন্ধক। এই সমস্ত রোগের বৈজ্ঞানিক নাম যেগুলো আমরা জানি তা হল ডাউন সিনড্রোম, ২১ নং ক্রোমোজোমের গন্ডগোল বা টার্নার সিনড্রোম বা এডওয়ার্ড সিনড্রোমের মতো ঘটনা। বাইরে থেকে দেখে এগুলোকে আলাদা করা যায় না। শুধুমাত্র শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধি বলেই মনে হয়।

মায়ের বয়স ৩৫/৪০-এর পরে যত বাড়তে থাকবে সমস্যাগুলোর প্রকোপও তত বাড়ে। ৪০-এর পর যদি কেউ গর্ভবতী হন তাহলে বিশেষ বিশেষ পরীক্ষা করে ক্রোমোজোমের কোনোরকম সমস্যা আছে কি না দেখে নেওয়া ‍উচিত। ৪০-এর পরে বা তার আশেপাশে মেনোপজ হয়ে যাবার প্রবণতা থাকে সেজন্য মেনোপজের আগে শরীরে হরমোনের ঘাটতি এবং ডিম্বাণুর পরিমাণ কমে যায়, তাই সাধারণভাবে প্রেগন্যান্সি আসতেই চায় না এবং এলেও যে ডিম্বাণুগলো শরীরে অবশিষ্ট থাকে তাদের গুণগত মান ভালো না থাকার মিস ক্যারেজের সম্ভাবনা থাকে। প্রথম দিকের মিস ক্যারেজের সম্ভাবনা কাটিয়ে উঠলে পরবর্তীকালে দেখা যায় যে বাচ্চার গ্রোথের কিছু সমস্যা হচ্ছে।

যেহেতু চল্লিশ বছর বয়সে সাধারণভাবেই সুগার, প্রেসার, থাইরয়েড, কোলেস্টেরল ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হয়,তাই যখন একটু বেশি বয়সে প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা তৈরি হয় তখন ওই প্রেসার, সুগার, থাইরয়েড ও কোলেস্টেরলের সমস্যা তৈরি হয়, তাই যখন একটু বেশি বয়সে প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা তৈরি হয় তখন ওই প্রেসার, সুগার, থাইরয়েড ও কোলেস্টেরলের সমস্যা আরো বেশি মাত্রায় দেখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ওইসব রোগের চিকিৎসা করতে হবেযাতে কোনোরকমভাবে প্রেগন্যান্সির ক্ষতি না হয়।

এইসব রোগের কিছু কিছু ওষুধ প্রেগন্যান্সিতে দেওয়া যেতে পারে আবার এমন কিছু ওষুধ থাকে যা প্রেগন্যান্সির ক্ষতি করে সেগুলো অ্যালাও করা হয় না।

কারোর হয়তো আগে ব্লাডপ্রেসার ছিল। দেখা গেছে তিনি হয়তো নিয়মিত ওষুধ নেন কিন্তু প্রেগন্যান্সি আসার কারণে প্রেসার আরো বেশি বর্ধিত হবে। তখন কিন্তু আগের ওষুধ খাওয়া যাবে না, বদলে অন্য কোনো ওষুধ দিতে হবে। আসলে প্রেসার, থাইরয়েড, কোলেস্টেরল, সুগার যথাযথ ভাবে চিকিৎসা না করলে গর্ভাবস্থায় শিশুমৃত্যু অথবা সন্তানের জন্মের পরও কয়েকমাস বাদে ঘটে যেতে পারে ওই নবজাত শিশুটির মৃত্যু। এছাড়া অসময়ে মা হতে গিয়ে নর্মাল ডেলিভারি করা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, সেক্ষেত্রে সিজারিয়ান সেকশন করানো আবশ্যিক হয়ে ওঠে।

একটু বেশি বয়সে বাচ্চাদের ওজন স্বাভাবিক অবস্থায় যে সব বাচ্চা জন্মায় তাদের থেকে কম হতে দেখা যায়। এই সব কারণে সঠিক সময় বাচ্চার জন্মদানের কথাটা মনে রাখতে হবে যাতে মা এবং শিশু দু’জনেই সুস্থ থাকে।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন