বয়সে প্রবীন ,স্বাস্থ্যে নবীন
হ্যালো ডাক্তার ব্লগ টিম
2018-10-22 14:06:00
যুক্তরাষ্ট্রে Harvard ও Yale বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলো থেকে জানা গেছে যে প্রবীণ বয়স সম্বন্ধে যাদের ধারণা পজিটিভ ,মাঝবয়সী থেকেই তারা পক্বকেশ আর কিঞ্চিত কুঞ্চিত চর্মের মানুষদের প্রতি একটা অদ্ভদ শ্রদ্ধা পোষণ করতেন । যারা প্রবীণত্ব থেকে তফাতে থাকতে চাইতেন ,তাদেরই কপালেই বুঝি জোটে স্মৃতির অবক্ষয় আর হৃদরোগের মত জরার সমস্যা । বয়স বেড়ে গেলে সেই বার্ধক্যকে স্বাগত জানান - জয়মাল্য দিয়ে বরণ করেন ,তারা অন্যদের চাইতে সাড়ে ৭ বছর বেশি বাচেন এবং নবীনত্বকে সঙ্গী করে । এইদিকে যুক্তরাষ্ট্রের oxford-এ অবস্থিত Dr.Zhavoronkov - এর Biogetology Research Foundation থেকে অতি অভিনব কিছু খবর পাওয়া গেল ।ঐ সংস্থা থেকে এমন সব আশ্চর্য গবেষণা প্রকল্প নিয়ে কর্মব্যস্ত যে কর্ণধার Dr.Zhavoronkov আশা করেন বার্ধক্যকে রুখে দেবার বড়ি বয়স্কদের বয়সের ভারে শিথিল ,ক্ষণস্থায়ী সম্পন্নদের হাতের মুঠোই অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এসে পড়বে ।যুক্তরাষ্ট্রের the life Extensiojn foundation সঙ্গে oxford এর ওই সংস্থার এটা একটা যৌথ উদ্দ্যোগ । বাজারে কিনতে গেলে বড়িগুলোর দাম মাল্টি-ভিটামিন পিলের চাইতে খুব একটা বেশি আর হবেনা । ওই বড়িগুলোর কাজ কি হবে জানাতে গিয়ে প্রচন্ড আশাবাদী ওই বিজ্ঞানী বলছেন যে আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর ও মগজের যেসব জৈবক্রিয়ার কর্মদক্ষতা ক্ষীণ হয়ে আসে , geroprotector গোষ্ঠীর দাওয়াই সেগুলোর মেরামতির কাজ লাগবে । নিয়মিত শরীরচর্চা ,ব্যায়াম , পরিকল্পিত খাদ্যাভাস -এগুলো আংশিক পদক্ষেপ মাত্র সুস্বাস্থ্য বজায় রেখে দীর্ঘায়ু হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য , Dr.Zhavoronkov একটা অনেক বিশাল আকারের স্বপ্ন দেখিয়েছেন । আত্র লক্ষ হল আয়ুকে বাড়িয়ে পাঁচটা সেঞ্চুরী করা -অর্থ্যাৎ ৫০০-র কোটায় নিয়ে যাওয়া । যদিও এই ধরণের চিন্তাধারা আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব ও অবাস্তব ।বর্তমানে অনেক বিজ্ঞানীই ওই অমৃতকুম্ভের সন্ধানে দৌড়াচ্ছেন । ২০১৩ সালে google স্থাপন করে একটা স্বতন্ত্র R&D biotech সংস্থা ,বার্ধক্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার উদ্দ্যেশে । John Yun নামের চিকিৎসক ও venture capitalist ২০১৪ সালে সূত্রপাত করেন একটি বিশেষ Longevity Prize -এর । বার্ধক্যের সমস্যার সমাধান যে প্রথম করতে পারবে , তার প্রাপ্য হবে ১ মিলিয়ন ডলার । ইতিমধ্যে University College London এবং Harvard এর বিজ্ঞান কর্মীরা লক্ষ করেছেন যে lithium ,যেটা দুই মেরুর মনের অসুখ বা bipolar disorder - এর ক্ষেত্রে রোগীকে নিতে বলা হয় ,কোষগুলো অবক্ষয়ের হাত থেকে বাচাতে ,তার নাকি জুড়ি নেই । Wales এর Cardiff University -র মানুষের উপরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে দেখা যাচ্ছে metformin ,যেটা সাধারণত ডায়াবেটিসের রোগীদের দেওয়া হয় , সেটাও গড়ে ৩ বছর আয়ু বাড়াতে পারে । যাই হোক , Oxford- Dr.Zhavoronkov নিজের উপরেই পরীক্ষা চালাচ্ছেন নানান রকমের geroprotector রসায়নের cocktail তৈরী করে খেয়ে । এই ধরণের পরীক্ষা নিজের উপরেই করলেই ফল বোঝায় যায় অল্প সময়ের মধ্যে এবং অত্যান্ত প্রত্যক্ষভাবে ।ওই বিরাট ঝুকির ফলত তিনি জানালেন যে ৩৭ বছর বয়সে তার প্রকৃত বয়সের চাইতে অন্তত বেশ কয়েক বছর কম অনুভুব করেত পারছেন তিনি তার কর্মদক্ষতা ও প্রাণশক্তির মান ও মাত্রার দৌড় দেখে । প্রতিদিন প্রায় ১০০ রকমের বিভিন্ন ওষুধ ও Supplement নেওয়া ছাড়াও ওই বিজ্ঞানী নিয়মিত শরীর চর্চা করেন । তিনি নানান পরীক্ষার মুখোমুখী হন এবং নিজের রক্ত পরীক্ষা ও কোষের পরিসংখ্যান করান -তার যে সাধনা প্রতিটি মানুষের সুখ শান্তি বাড়ানো ,সেটারই অঙ্গ হিসাবে ।অবশ্য তার সমসাময়িক অন্য বিজ্ঞানী যারা ওই একই ধারণা প্রকল্পে নিযুক্ত ,তারা তার বক্তব্যগুলো কখনোই পুরোপুরি মানেন না । আমেরিকার California University-র Dr.Nazif Alic বলেন এখনো পর্যন্ত সেরকম কোনও জোরদার প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে ৫০০ বছর পর্যন্ত একজন মানুষ আয়ু বাড়ানো যেতে পারে । ডাঃ আলিফ ক্যালিফোনিয়া ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিঊট আও এজিং এর সঙ্গে যুক্ত । পুনশ্চঃ বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক মাসিক পত্রিকা ‘সুস্বাস্থ্য’ এ প্রকাশিত প্রবন্ধ অবলম্বনে রচিত.