×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

(+88) 09666741741

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
(+88) 09666741741
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

আলসারেটিভ কোলাইটিস সম্পূর্ণ সেরে যায়

ডাঃ অভিজিৎ মজুমদার
2019-03-08 14:47:15

কোনো কারণবশত কোলনের মিউকাস স্তরের স্ফীতির ফলে কোলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রক্তপাত হয়, এই ঘটনাকে এককথায় আলসারেটিভ কোলাইটিস বলে। প্রায় এক তৃতীয়াংশ রোগীর ক্ষেত্রে রোগটি রেক্টোসিগময়েড রিজিয়নে, অপর এক তৃতীয়াংশের ক্ষেত্রে রোগটি স্প্লেনিক ফ্লেক্সার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়, যাকে লেফট সাইডেড কোলাইটিস বলে এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ রোগীর ক্ষেত্রে রোগের বিস্তৃতি আরও একটু বেশি হতে পারে, যাকে এক্সটেনসিভ কোলাইটিস বলে। রোগের লক্ষণ নির্ভর করে রোগটি কতদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে তার ওপর। মজার বিষয় হল আলসারটিভ কোলাইটিস মূলত তাদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যায় যারা ধূমপান করেন না বা অনেকদিন আগেই ছেড়ে দিয়েছেন। যারা ধূমপায়ী তাদের ক্ষেত্রে এই রোগের প্রবণতা কম। বরং যারা ধূমপান হঠাৎ বন্ধ করে দিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ তীব্র ভাবে আসতে পারে। অ্যাকিউট অ্যাপেন্ডিসাইটিস জনিত কারণে যদি কুড়ি বছরের কম বয়সি কারো অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন হয়ে থাকে তার পরবর্তীকালে আলসারেটিভ কোলাইটিস হবার প্রবল সম্ভাবনা থাকে।

লক্ষণ

ডায়রিয়ার সাথে রক্ত পড়া আলসারেটিভ কোলাইটিসের প্রধান লক্ষণ। অর্থাৎ রক্ত মিশ্রিত পাতলা পায়খানা হতে থাকে। এছাড়া রোগীকে জিজ্ঞাসা করা হয় দিনে কতবার পায়খানা হচ্ছে, পায়খানার সাথে কতটা করে রক্ত পড়ছে, পেটে যন্ত্রণা আছে কি না, হাতে-পায়ে টান ধরছে কি না, পেট কামড়িয়ে পায়খানা পাচ্ছে কি না প্রভৃতি যার ওপর নির্ভর করে রোগের গুরুত্ব নির্ধারণ করা হয়।

  • পেট পরীক্ষা করলে পেরিটোনিয়ামের স্ফীতি লক্ষ্য করা যায়, এছাড়া পেটে ব্যথা থাকে।
  • সাধারণত রোগের ভয়াবহতা কম থাকলে দিনে মোটামুটি চার-পাঁচবার পাতলা পায়খানা হতে পারে এবং মাঝে মাঝে রক্ত পড়ে। পায়খানার সাথে আমাশাও থাকতে পারে। এবং পায়খানার বেগ আসা মাত্রই ছুটতে হয়। সাধারণত তলপেটের বাম পাশে ব্যথা থাকে যা পায়খানা হবার পর কিছুটা কমতে যায়। গায়ে জ্বর থাকতে পারে, সাথে অ্যানিমিয়া। রক্তে অ্যালবুমিনের মাত্রাও কমতে পারে।
  • রোগের ভয়াবহতা খুব বেশি হলে দিনে ছ’ থেকে দশবার পর্যন্ত পায়খানা হতে পারে। পায়খানার সাথে রক্ত পড়ে। মারাত্মক অ্যানিমিয়া লক্ষ্য করা যায়। দেহে জলের ভাগ অত্যন্ত কমে যায়, পেটে কামড়ানো ব্যথা থাকে। রোগীর অবস্থা খুব দ্রুত খারাপ হতে থাকলে এবং রোগের তীব্রতা অত্যন্ত গুরুতর হলে তাকে ফুলমিন্যান্ট কোলাইটিস বলে।

কারণ

আলসারেটিভ কোলাইটিসের নির্দিষ্ট কারণ এখনো অজানা থাকলেও যে সব কারণে রোগটি হবার সম্ভাবনা বেশি হয়, সেগুলো হল—

  • অত্যধিক মানসিক দুশ্চিন্তা।
  • ইনফেকশন জনিত কারণ।
  • গ্যাসট্রোএন্টেরাইটিস জনিত কারণ।
  • অনিয়ন্ত্রিত অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ গ্রহণ।
  • NSAID গ্রুপের ওষুধ অত্যধিক গ্রহণে।

জটিলতা

  • লাইফ থ্রেটনিং কোলোনিক ইনফ্লামেশন।
  • অত্যধিক মাত্রায় রক্তপাত।
  • এন্টেরোএন্টেরিক ফিসচুলা।
  • ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম।
  • ক্যানসার।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

  • টোটাল হিমোগ্রাম।
  • পায়খানা পরীক্ষা।
  • সেরাম অ্যালবুমিন।
  • সিগময়েডোস্কপি উইথ বায়োপসি।
  • প্রয়োজনে এম.আর.আই করা হতে পারে।

করণীয়

  • মদ্যপান বন্ধ করতে হবে।
  • তেল-ঝাল-মশলা কম খেতে হবে।
  • নিয়মিত যোগাসন করতে হবে।
  • মানসিক দুশ্চিন্তা কমাতে হবে।
  • দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা অত্যন্ত জরুরি।

চিকিৎসা

আলসারেটিভ কোলাইটিসের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় স্থায়ী আরোগ্য হয়। তবে রোগীকে খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয় এবং নিয়মিত যোগাসন করলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়। সাধারণত যে ওষুধগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলো হল অ্যালিয়াম স্যাটিভা, মার্ক ডাল, আর্জ নিট, কুপরাম, ক্যাল, বিচ, মার্ক কোর, সালফার, টেরেবিনথিয়া, ইউরেনিয়াম, নাইট্রিক অ্যাসিড, নাক্স ভম, ট্রোমবিডিয়াম প্রভৃতি। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ গ্রহণ করা অনুচিত। এবং নিয়মিত চিকিৎসকের ফলো-আপে থাকা কর্তব্য।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন